Sunday, September 30, 2012

কক্সবাজারের সহিংসতায় সরকারই মদদ যগিয়েছে: খালেদা জিয়া
















কক্সবাজারের রামু উপজেলায় যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তাতে সরকারই মদদ যুগিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

রোববার রাতে এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, কক্সবাজারের রামু ও সন্নিহিত এলকায় শনিবার রাত থেকে বৌদ্ধ ও হিন্দু মন্দির এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, হামলা ভাঙচুর লুটতরাজ ও ত্রাস সৃষ্টির ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমি এই ঘুণ্য তৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাস ও ধর্মীয় মানুষ আবহমানকাল ধরে শান্তি ও সম্প্রীতির মধ্যে পাশাপাশি বাস করে আসছে। এই ধর্মীয় সম্প্রীতি আমাদের উজ্জ্বল ঐতিহ্যের অংশ। উত্তেজনা উস্কানি ও নৈরাজ্য সৃষ্টি মাধ্যমে যারা এই ঐতিহ্যকে ধ্বংস করতে চায়, তারা বাংলাদেশের শত্রু। তারা ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী নয়। কোনো ধর্মপ্রাণ মানুষ কোনো অজুহাতেই এ ধরনের সন্ত্রাস ও হাঙ্গামার পথ বেছে নিতে পারে না।

এই গুরুতর ঘটনার সূত্রপাতের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দলের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও অন্যান্য নেতকর্মী ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি প্রশমনের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছেন। ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারেনি। এর জন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।

আমি মনে করি সরকারি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সময়মতো উপযুক্ত পদক্ষেপ নিলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারতো না। কাজেই তাদের এই শৈথিল্যের কারণ খতিয়ে দেখা খুবই জরুরি।

আমরা জানতে পেরেছি যে ফেসবুকে আপলোড করা ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করার মতো একটি ছবিকে কেন্দ্র করে রাতের অন্ধকারে মিছিল-সমাবেশ ও হামলার ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা আরও জানতে পেরেছি যে, স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতার নামে পরিচালিত ওইসব অপতৎপরতায় সরকারি দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরাই নেতৃত্ব দিয়েছে। সে কারণেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সময়মতো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বিষয়টি গভীর উদ্বেগজনক এবং এর পেছনে একটি অতি সুপরিকল্পিত দুরভিসন্ধি রয়েছে বলে আমরা মনে করি। সকল দিক থেকে ব্যর্থ ও গণবিচ্ছিন্ন হয়ে সরকার জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন পথে পরিচালিত ও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অসৎ উদ্দেশ্যেই এ ধরনের ঘৃণ্য তৎপরতার মদদ যুগিয়েছে বলে আমাদে বিশ্বাস। ইতিমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রী ও সরকারি দলের নেতারা বিরোধী দলের দিকে ইঙ্গিত করে যেসব বিত্তিহীন উদ্দেশ্যেমূলক ও আপত্তিকর উক্তি করেছেন, তা থেকেই সরকারেরন হীন মতলব পরিষ্কার হয়ে গেছে। এ ধরণের মন্তব্য সুষ্ঠু তদন্তকে বাধাগ্রস্ত ও বিপথগামী করবে বলে আমরা মনে করি।

বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় ও ধর্মপ্রাণ মানুষকে আমি এই ঘৃণ্য চক্রান্ত রুখে দাঁড়াবার আহ্বান জানাচ্ছি। যে কোনো মূল্যে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক শান্তি ও সম্প্রীতির সুমহান ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রাখার জন্য আমি দল-মত-গোষ্ঠী-সম্প্রদায় নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। সকলের প্রতি আমার আহ্বান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের জান-মাল-ইজ্জত-আবরু-সম্পদ ও উপসনালয়কে পবিত্র আমানতের মতো সুরক্ষা করুন।

বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কঠোর হাতে দমনের মাধ্যমে শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আমি সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। উপযুক্ত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জড়িত অপরাধী ও নেপথ্যের উস্কানিদাতাদের খুঁজে বের করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। 

অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানে রফিক-উল হকের সম্মতি : রফিক-উল হকের ব্যাপারে বিএনপি রাজি - মোশাররফ

নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হওয়ার জন্য ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের বক্তব্যকে সাধুবাদ জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
এ ব্যাপারে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিলে তার দেয়া এ প্রস্তাবে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তাই সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল না করলে তার এ প্রস্তাব কোনো কাজে আসবে না।
গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবিধানিক অধিকার ফোরাম আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতে দুর্নীতি ও
অনিয়ম : দেশের উন্নয়ন গণতন্ত্র হুমকির মুখে’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মোশাররফ আরও বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে দেশের জনগণ অংশ নেবে না তার প্রমাণ আজকের গাজীপুরের কাপাসিয়ার নির্বাচন। সেখানে ভোটারশূন্য সব কেন্দ্র খাঁ খাঁ করছে। জানি না দিনের শেষে কোন ডিজিটাল ফলাফল ঘোষণা দেয়া হবে।
তিনি বলেন, দুই দল বসে ব্যারিস্টার রফিকের এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। তবে তার সংলাপের এজেন্ডার মধ্যে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি থাকতে হবে।
হলমার্কসহ সব ক্ষেত্রে সরকারের দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পরিষদ গঠন করার কারণে দুর্নীতি হচ্ছে। সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সরাসরি হস্তক্ষেপ করে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ঋণ দেয়ার কারণেই হলমার্ক কেলেঙ্কারীর এ ঘটনা ঘটেছে।
তিনি অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংককে সোনালী ব্যাংকসহ সব ব্যাংক কেলেঙ্কারীর ঘটনার শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান।
হলমার্কের এমডি তানভীরকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বললেন তানভীরের সঙ্গে হাওয়া ভবনের সম্পর্ক ছিল। তাহলে তিনি কীভাবে এখনও বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন? এ সরকারের সর্বোচ্চ মহলের সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে সে কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন ড. মোশাররফ।
প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বব্যাংক সংস্কারের প্রস্তাবের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নিজের মন্ত্রী-এমপিরা দিনে-দুপুরে চুরি করছেন তার সংস্কার না করে তিনি বিশ্বব্যাংক সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এমন অসংলগ্ন বক্তব্যে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সাংবিধানিক অধিকার ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা সৈয়দ মার্গুব মোরশেদের সভাপতিত্বে আরও বক্তৃতা করেন বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল ও হেলেন জেরীন খান।