Thursday, September 13, 2012

পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পাঁচ বছর যথেষ্ট নয় : প্রধানমন্ত্রী


undefined

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের হাতে নেওয়া উন্নয়ন পরিকল্পনার সময় পাঁচ বছরের ভেতরে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় ।
তবে  জনগণ সচেতন হলে এসমস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা আরো এগিয়ে নেয়া সম্ভব।  এজন্য জনগণকে সচেতন করতে তিনি অর্থনীতিবিদদের প্রতি  আহ্বান জানান।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি জানান, সময় একটা ব্যাপার। তারা পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। তাদের হাতে যে উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে, তা পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
এছাড়া অর্থনীতিবিদদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “আপনারা যদি জনগণকে সচেতন করতে পারেন। তাহলে আমরা আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবো।”
অনুষ্ঠানে  প্রধানমন্ত্রী  চারজনের হাতে অর্থনীতি সমিতির সম্মাননা পদক তুলে দেন।

তোফায়েল মেননের মন্ত্রিত্ব প্রত্যাখ্যান



undefinedঘটনাটি একেবারেই নাটকীয়। কেউ কেউ বলছেন, মেলোড্রামা, অতি নাটকীয়। আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রিত্ব গ্রহণে রাজি হলেন না। 'বিনয়ের' সঙ্গে বললেন, মন্ত্রী হতে চাই না, দলের জন্য কাজ করতে চাই। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননও মন্ত্রী হতে শেষ পর্যন্ত সম্মত হলেন না। তার প্রত্যাখ্যানের প্রেক্ষাপট অবশ্য ভিন্ন। মন্ত্রী হতে ব্যক্তিগতভাবে তিনি মোটেই অনাগ্রহী ছিলেন না। বুধবার রাতে তার সঙ্গে কথা বলে সমকালের মনে হয়েছিল মেনন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে প্রস্তুত। তার ইচ্ছায় বাদ সাধলো তার দলের পলিটব্যুরো। মেননের সভাপতিত্বে সভা করে ওয়ার্কার্স পার্টি পলিটব্যুরো জানিয়ে দিল, সরকারের সময় প্রায় ফুরিয়ে এসেছে, এখন আর মন্ত্রিত্ব নয়। একটি সংবাদ সংস্থা এই দুই প্রবীণ রাজনৈতিক নেতার মন্ত্রী হওয়ার অনিচ্ছাকে সুন্দর শিরোনাম দিয়েছে 'উপেক্ষার জবাব প্রত্যাখ্যানে'।
মন্ত্রিত্ব গ্রহণে দুই বর্ষীয়ান নেতার অস্বীকৃতিতে ভাগ্য খুলে গেল একদা আমলা ও কূটনীতিক এবং বর্তমান সংসদের দুই এমপির। তারা হলেন দিনাজপুর-৪ আসনের এমপি সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও যশোর-২ আসনের এমপি সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ। তারা দু'জনই পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন। মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদকে টেলিফোনে যখন মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয় তখন তিনি রীতিমতো হতবাক। তার ধারণা ছিল, সম্ভবত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ভুল করেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান গতকাল দুপুরে স্বয়ং তোফায়েল আহমেদকে টেলিফোনে মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাবে রাজি হতে অনুরোধ করেছিলেন। তিনি এ অনুরোধে সাড়া দেননি।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তোফায়েলকে তিনি টেলিফোন করেননি বলে জানিয়েছেন। তবে রীতি অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিবই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করেন। তোফায়েল আহমেদের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল। বুধবার গভীর রাতে সমকাল যোগাযোগ করলে তোফায়েল আহমেদ জানান, তিনি মনস্থির করতে পারেননি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা টেলিফোন করলে তোফায়েল আহমেদ দুপুর ১টা পর্যন্ত সময় নেন। তবে এ সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই মন্ত্রী হতে তার অপারগতার কথা তিনি সাংবাদিকদের জানান। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সমকালকে বলেছেন, তোফায়েল আহমেদের মতো
একজন প্রবীণ নেতা ও ক্ষুরধার পার্লামেন্টারিয়ানকে প্রায় ৪ বছর মন্ত্রিত্ব থেকে দূরে সরিয়ে রাখা এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে সুবিবেচনার কাজ হয়নি। সঙ্গত কারণেই তোফায়েলের মনে ক্ষোভ জমেছিল। ওয়ান ইলেভেনের সময় তার ভূমিকা নিয়ে হাইকমান্ডে নানা প্রশ্ন রয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের চেয়ে এ মুহূর্তে জরুরি ছিল অদক্ষ ও নানা অভিযোগে অভিযুক্ত মন্ত্রীদের সরিয়ে দেওয়া। রাষ্ট্রপতির অনুরোধেও তোফায়েল আহমেদ সাড়া না দেওয়ায় অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তারা এ ঘটনাকে স্বাভাবিক মনে করছেন না।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তোফায়েল আহমেদের মন্ত্রী না হওয়াসহ প্রাসঙ্গিক বিষয় জানতে চান। এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, 'আমি তাকে (তোফায়েল আহমেদ) টেলিফোন করিনি। আমি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। আমার টেলিফোন প্রত্যাখ্যান করলে তার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয় আসত। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হওয়ার জন্য ক্যাবিনেট বিভাগ থেকে অনেককে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যারা রাজি হয়েছেন তারা শপথ নিয়েছেন। তাছাড়া আমি সাতজনকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী করতে চেয়েছিলাম। সাতজনই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন।'
তোফায়েলের বক্তব্য
তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, 'আমাদের বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যরা সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি সব সময় পরিশ্রম করছেন। সঠিকভাবে সরকার পরিচালনা করছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ করি। আমি আওয়ামী লীগের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। এখানে ভুল বোঝাবুঝির কোনো সুযোগ নেই।' তিনি বলেন, 'যারা এখন মন্ত্রী আছেন বাকি দিনগুলোতে তারাই ভালো করে কাজ করতে পারবেন। নতুন যারা যোগ দিয়েছেন, তারাই যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। আমার মতো একজন তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রিসভায় যোগদান না করলে তাতে কিছুই যায় আসে না। সরকার পরিচালনায় আওয়ামী লীগ সফল হলেই হলো। আমি আওয়ামী লীগকে ভালোবাসি।' তবে তোফায়েল আহমেদের এ বক্তব্য ও মনের কথার মধ্যে কতখানি মিল রয়েছে তা নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয় রয়েছে।
মন্ত্রী না হওয়ার সিদ্ধান্ত বিরোধী দলকে সমালোচনার সুযোগ করে দিতে পারে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিরোধী দল তো সব বিষয়েই সুযোগ নিতে চায়। এ আর নতুন কী। কোনো ধরনের হতাশা থেকে এ সিদ্ধান্ত কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমার মধ্যে কোনো ক্ষোভও নেই। হতাশাও নেই।'
আ'লীগের দু'নেতার ভিন্নমত
তোফায়েল আহমেদের এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারেননি আওয়ামী লীগে তার দুই সহকর্মী সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ও কাজী জাফর উল্লাহ। কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, তোফায়েল আহমেদকে মন্ত্রিসভায় নিতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বানে সাড়া দেননি। কেন তিনি মন্ত্রী হননি, সেটা তিনিই বলতে পারেন।
কাজী জাফর উল্লাহ বলেছেন, 'কমিউনিকেশন গ্যাপে'র কারণেই এমন অপ্রিয় ঘটনা ঘটেছে। ক্যাবিনেট সচিবের আগে তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কথা বললে এ অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটত না। তবে মন্ত্রী না হওয়ার ব্যাপারে তোফায়েল আহমেদের সিদ্ধান্তে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এই দুই নেতার জায়গায় দু'জন সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূতকে মন্ত্রী করায় অবাক হয়েছেন কাজী জাফর উল্লাহ।
নেতাকর্মীদের প্রতিক্রিয়া
তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চেয়েছেন, কী কারণে তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রী হলেন না। এর কোনো সদুত্তর মেলেনি। এ অবস্থায় তোফায়েল আহমেদের সিদ্ধান্তকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করেছেন দলের নেতাকর্মীরা। তোফায়েল আহমেদ ওয়ান ইলেভেনের সময় নেতিবাচক পরিস্থিতিতে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন। মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর নেতাকর্মীদের একাংশ এ বিষয়টিকেই আলোচনার পুরোভাগে নিয়ে এসেছেন।
রাজনীতির হিসাব-নিকাশ রাখেন এ রকম কয়েকজন নতুন করে আরও নাটকীয় ঘটনা দেখার অপেক্ষায় থাকার কথা বলেছেন।
ওয়ার্কার্স পার্টির বক্তব্য
রাশেদ খান মেননের মন্ত্রিত্ব গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তোপখানা রোডের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর জরুরি বৈঠক বসে। চার ঘণ্টার এ বৈঠকে মেননের মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব গ্রহণ না করার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে যোগ দেন দলের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মলি্লক, পলিটব্যুরো সদস্য বিমল বিশ্বাস, নূরুল হাসান, শফিউদ্দিন আহমেদ, ফজলে হোসেন বাদশা, নূর আহমদ বকুল, ইকবাল কবির জাহিদ ও কামরুল আহসান। তবে সরকারে যোগ না দিলেও ওয়ার্কার্স পার্টি সংসদ এবং সংসদের বাইরে সক্রিয় থেকে ১৪ দল ও মহাজোটকে ঐক্যবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে দৃঢ় ভূমিকা রাখবে বলে অঙ্গীকার করা হয়েছে।
এ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের রাশেদ খান মেনন জানান, মন্ত্রী হিসেবে তার শপথ না নেওয়ার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত দিয়েছে দলের পলিটব্যুরো। তিনি এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন।

৪০ হাজার টাকা খরচে মালয়শিয়ায় কাজ


undefined
দুদেশের সরকারি পর্যায়ে চুক্তির আওতায় বাংলাদেশিরা ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা অভিবাসন ব্যয়ে মালয়শিয়ায় কাজ করতে যেতে পারবে বলে জানিয়েছেন বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বৃহস্পতিবার এক যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে সফররত মালয়শিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এস সুব্রামানিয়াম বলেন, অভিবাসন প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য দূর করতে সরকারি পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মালয়শিয়ায় বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে দুদেশের সরকার একমত হয়েছে।.

পাঁচ বছর বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধ থাকার পর পুনরায় অভিবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য আলোচনা করতে দুই দিনের সফরে ১২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফরে আসেন মালয়শীয় মন্ত্রী। এ বিষয়ে দুদিন ধরে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা হয় মালয়শীয় প্রতিনিধি দলের।

খন্দকার মোশাররফ জানান, অভিবাসন ব্যয় একজন শ্রমিকের তিন মাসের বেতনের বেশি হবে না। মালয়শিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি প্রক্রিয়া শুরু করতে দেড় মাসের মধ্যে দুই দেশের সরকার একটি সমঝোতা স্মারক সই করবে।

তিনি বলেন, “আমরা সরকারি পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সেদেশে শ্রমিক পাঠাতে চাই। কারণ, আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে মালয়শিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজ পেতে দুই লাখ থেকে চার লাখ টাকা খরচ হতো।”

বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী আরো বলেন, উচ্চ অভিবাসন ব্যয়ের কারণে প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক মালয়শিয়ায় অবৈধ হয়ে গেছে। কিন্তু সুসংবাদ হচ্ছে মালয়শিয়ার সরকার তাদেরকে বৈধ করার উদ্যোগ নিয়েছে।

নতুন বাংলাদেশি শ্রমিকরা পাঁচ বছর মালয়শিয়া থাকতে পারবে এবং আরো পাঁচ বছর মেয়াদ বাড়ানো যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেবে। এমওইউ চূড়ান্ত করতে এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে একটি যৌথ খসড়া কমিটি মালয়শিয়া সফর করবে।”

মোশাররফ বলেন, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বাংলাদেশে ফেরত আসার টিকেটের খরচ বহন করবেন এবং মালয়শিয়া যাওয়ার টিকেটও তারা দেবেন। তবে তারা শ্রমিকদের বেতন থেকে কিস্তিতে তা কেটে রাখবেন।

মন্ত্রী এস সুব্রামানিয়াম বলেন, পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ আছে। কিন্তু তার সরকার শ্রমিক নেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে সোর্স কান্ট্রি হিসেবে বিবেচনা করছে।

কতজন শ্রমিক নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তা শ্রমবাজারই নির্ধারণ করবে। প্ল্যান্টেশন ও ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে আমাদের শ্রমিক দরকার।”

বর্তমানে প্রায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশি মালয়শিয়ায় কাজ করছেন। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ে বিচারপতি খায়রুলের সই


ঢাকা: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা (সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী) বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ে সই করেছেন রায় ঘোষণাকারী সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক।

৩৪২ পৃষ্ঠার এ রায়ে বৃহস্পতিবার তিনি সই করেছেন বলে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার একেএম শামসুল ইসলাম বিকেলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ওই রায়ে সই করেছেন। এখন ওই রায়ে আপিল বিভাগে ওই সময় যারা ছিলেন তারা সবাই সই করলে এটি প্রকাশ করা হবে।

সুপ্রিম কোর্টের ছুটি শেষে এটি প্রকাশ হতে পারে বলেও তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১০ মে এ রায় দেওয়ার সময় এবিএম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি ছিলেন।

ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার সংক্ষিপ্ত রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অবৈধ ও বাতিল  ঘোষণা করেছিল আপিল বিভাগ। তবে দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে আরো দুই দফা (টার্ম) এ ব্যবস্থা বহাল রাখার কথা বলা হয়। এরপর পূর্ণাঙ্গ রায় আসার আগেই এ রায় বাস্তবায়ন হয়ে যায়। একই বছরের ৩০ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় সংসদে। রায়ের কপি প্রকাশের আগেই রায় বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।

ওই রায়ে বলা হয়, সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে আপিল মঞ্জুর করা হলো। সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধনী) আইন, ১৯৯৬ (আইন-১: ১৯৯৬) এখন থেকে বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হলো।

দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন উল্লিখিত সংশোধনীর অধীনে হতে পারে। কারণ আইনের বহু পুরোনো নীতির কোনো কিছু বেআইনি হলেও প্রয়োজনের তাগিদে তা আইনসম্মত। রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তাই হচ্ছে সর্বোচ্চ আইন। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নিয়োগের বিধান বাতিলে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে সংসদের স্বাধীনতা রয়েছে।

যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা:
সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়। এ ব্যবস্থা ১৯৯৬ সালের ২৮শে মার্চ রাষ্ট্রপতির সম্মতি পায়। এর আগে ষষ্ঠ সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গৃহীত হয়। এরপর সপ্তম, অষ্টম ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ ব্যবস্থার অধীনে হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে অগণতান্ত্রিক ও সংবিধানবহির্ভূত আখ্যা দিয়ে অ্যাডভোকেট এম. সলিমউল্যাহ, রুহুল কুদ্দুস ও মো. আবদুল মান্নান খান হাইকোর্টে একটি রিট করেন। হাইকোর্টে তিন বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে রিটের শুনানি হয়। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বৈধ বলে রায় দেয়।

হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধানসম্মত ও বৈধ। এ সংশোধনী সংবিধানের কোন মৌলিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেনি।

পরে রিট আবেদনকারীরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যান। আপিল বিভাগ এ মামলায় এমিকাস কিউরি (আদালতকে সহায়তাকারী) হিসেবে দেশের বিশিষ্ট আট জন সংবিধান বিশেষজ্ঞের বক্তব্য শোনেন।

তাদের কাছে আদালতের প্রশ্ন ছিলো, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং বিচার বিভাগ পৃথককরণের পরিপন্থি কিনা? আট এমিকাস কিউরির মধ্যে সাতজনই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিদ্যমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার পক্ষে আদালতে অভিমত দেন।

গাজীপুর-৪ আসনের উপনির্বাচনে চাচার সঙ্গে রিমির লড়াই



গাজীপুর-৪ আসনের উপনির্বাচনে কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় আজ বৃহস্পতিবার তিনজন প্রার্থীকেই বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়। 
আজ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) উপনির্বাচনে আজ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সময়সীমার মধ্যে তিনজন প্রার্থীর কেউই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় তাঁদের প্রার্থী হিসেবে গণ্য করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ। তবে কাল শুক্রবার সকালে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের পর তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে এই নির্বাচনে প্রার্থী বলে গণ্য হবেন। 
যাঁরা প্রার্থী হিসাবে গণ্য হয়েছেন তাঁরা হলেন—আওয়ামী লীগ মনোনীত সিমিন হোসেন রিমি, তাঁর চাচা স্বতন্ত্র প্রার্থী আফসার উদ্দিন আহমেদ খান ও বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি মনোনীত প্রার্থী আসাদুল্লাহ বাদল।
এর আগে এই উপনির্বাচনে ৩ সেপ্টেম্বর আটজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাঁদের মধ্যে ঋণখেলাপী, শতকরা এক ভাগ ভোটারের সমর্থন না থাকা ও হলফনামায় ত্রুটি থাকার কারণে ৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিন পাঁচজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। 
নির্বাচন কমিশনের তফশিল অনুযায়ী এই উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল ৩ সেপ্টেম্বর। ৫ সেপ্টেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিন। আর আজ ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এই আসনে ৩০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান জানান, গাজীপুর-৪ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ১১ হাজার ৮৮৪ জন। ৩০ সেপ্টেম্বর উপনির্বাচনে ১০২টি কেন্দ্রে ৪৭২টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে।


যে কারণে মন্ত্রী হলেন না


আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভার চতুর্থ দফা সম্প্রসারণে মন্ত্রী হতে দলটির জ্যেষ্ঠ নেতা তোফায়েল আহমেদ এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা সে প্রস্তাবে রাজি হননি। কেন তাঁরা মন্ত্রিসভায় যোগ দিলেন না, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য হলো তাঁরা দলের ও মহাজোটের হয়ে কাজ করতে চান।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বনানীর বাসভবনে তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের কাছে এবং ওয়ার্কার্স পার্টির এক বিজ্ঞপ্তিতে রাশেদ খান মেননের মন্ত্রিসভায় যোগ না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

তোফায়েল আহমেদ: ‘আমার মতো তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রিসভায় না এলে কিছু যায় আসে না।’ মন্ত্রী হিসেবে শপথ না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গত সরকারের শিল্পমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রথমত, এই মুহূর্তে আমি রাজনৈতিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত নই। দ্বিতীয়ত, আমাকে কাপাসিয়া উপনির্বাচনের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এখন আমি নির্বাচন পরিচালনার সেই দায়িত্বই ভালোভাবে পালন করতে চাই।’
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মন্ত্রিত্ব থেকে দল অনেক বড়। নিজেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ধন্য মনে করি। সেই লক্ষ্যে নিয়েই দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি। দলের হয়ে কাজ করে যাই।’
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘যাঁরা মন্ত্রী আছেন, বাকি দিনগুলো তাঁরা ভালোভাবে কাজ করতে পারবেন। এ ছাড়াও যাঁরা নতুন করে যোগ দিয়েছেন, তাঁরাও যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। আমার মতো একজন তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রিসভায় যোগদান না করলে তাতে কিছুই যায় আসে না। দলের প্রতি আমার কোনো ক্ষোভ, হতাশা ও বঞ্চনা নেই।’ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কোনো ভুল-বোঝাবুঝি নেই বলেও তিনি জানান। কোনো ধরনের হতাশা থেকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না, সাংবাদিদের এমন প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ এ সব কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন: মন্ত্রিসভা গঠন ও রাষ্ট্র পরিচালনায় ওয়ার্কার্স পার্টিসহ ১৪ দলের কোনো ধরনের অংশগ্রহণ ছিল না। মূলত এ কারণে এক বছর আগে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
মন্ত্রিসভায় যোগ না দিলেও ওয়ার্কার্স পার্টি সংসদে ও সংসদের বাইরে সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। মন্ত্রী হওয়ার আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মহাজোটের শরিক এই দলটি। মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পাওয়ার পর আজ দুপুরে বৈঠকে বসে পার্টির পলিটব্যুরো। আর বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।
দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বলা হয়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২৩ দফার ভিত্তিতে ১৪ দলের দীর্ঘ ধারাবাহিক আন্দোলন ও মহাজোটভিত্তিক নির্বাচনেরই ফলাফল। সেই ধারাবাহিকতায় মহাজোট সরকারে ১৪ দলের শরিক হিসেবে ওয়ার্কার্স পার্টি অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু মন্ত্রিসভা গঠনসহ রাষ্ট্র পরিচালনার কোনো ক্ষেত্রেই ওয়ার্কার্স পার্টিসহ ১৪ দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অথবা আওয়ামী লীগের এ যাবত্ কোনো আলোচনা হয়নি। এ বিষয়ে ওয়ার্কার্স পার্টি ১৪ দলকে সক্রিয় করার জন্য বারবার তাগাদা দিয়েছে। কিন্তু কোনো ফল হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সিদ্ধান্ত নেয়, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিসভায় ওয়ার্কার্স পার্টির যোগদানের আর কোনো অবকাশ নেই। তবে ওয়ার্কার্স পার্টি সংসদে ও সংসদের বাইরে সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে এবং একইভাবে ১৪ দলসহ অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যকে আরও দৃঢ় করে বিএনপি-জামায়াতসহ দক্ষিণপন্থী সাম্প্রদায়িক শক্তির ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করবে।