স্বাস্থ্য


লাল মাংস অল্প খান, শরীর সুস্থ রাখুন


কোরবানির ঈদ এলেই রেডমিট বা লাল মাংস খাওয়া বেড়ে যায়। গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ, উট কিংবা দুম্বার গোশতকে রেড মিট বা লাল মাংস হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিভাগের বিশেষজ্ঞ ড: ওয়াল্টার উইলেট এক গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, যারা লাল মাংস আহার করেন, তাদের হৃদরোগে মৃত্যু ঝুঁকি ১৬ ভাগ বেশি এবং ক্যান্সারে মৃত্যু ঝুঁকি স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ ভাগ বেশি।

আমেরিকান ক্যানসার ইন্সটিটিউট ফর রিসার্চ (AICR) ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ক্যানসার রিসার্চ ফান্ড (WCRF-UK) -এর বিজ্ঞানীরা বলেছেন, অতিরিক্ত লাল মাংস মানব দেহে ক্যানসার তৈরি করতে পারে। তাই বিজ্ঞানীরা ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর জন্য লাল মাংস খাওয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৭০ গ্রাম এবং সপ্তাহে ৫০০ গ্রামের বেশি লাল কিংবা প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যর জন্য ঠিক হবে না।

অন্যদিকে আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির বিশেষজ্ঞ মিস মার্জি ম্যাককুলাউ লাল মাংস-প্রেমীদের হতাশ না করে সপ্তাহে একদিন পরিমাণ মতো মাংস খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, লাল মাংসে এক ধরনের রঞ্জক পদার্থ থাকে, যা পাকস্থলীর পরিপাক প্রক্রিয়া কোষের ডিএনের ক্ষতি সাধন করে ক্যানসার সৃষ্টির প্রাথমিক যাত্রা শুরু করে।

তবে ক্যানসারের ঝুঁকি কম থাকলেও হৃদরোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে লাল মাংসের ভূমিকা অনেক বেশি। পুষ্টিবিদ এবং বিজ্ঞানীরা বলেন, লাল মাংসে প্রচুর স্যাচুরেটেড (সম্পৃক্ত) ফ্যাট বা চর্বি রয়েছে যা রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল ( LDL) বা লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিনকে বাড়িয়ে রক্তনালিতে চর্বি জমায়, হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক রক্ত চলাচলকে ব্যাহত করে, রক্তচাপ বাড়ায় এবং পরবর্তীতে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের আশংকা সৃষ্টি করে। এছাড়া ডায়বেটিস এবং স্থুলতা বাড়াতেও লাল মাংস সাহায্য করে।
তাই যারা স্থূলতা, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ বা হৃদেরাগে ভুগছেন, তারা অবশ্যই ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমিত লাল মাংস খাবেন। ভাজা, গ্রিল ও অতিরিক্ত তেলের মাংস পরিহার করতে হবে এবং যতটা সম্ভব চর্বি ফেলে দিয়ে অল্প তেল দিয়ে রান্না করতে হবে। দিনের একবেলা মাংস খাওয়া হলে অন্য দু’বেলা সবজি ও মাছ খাবেন। নিয়ম করে প্রতিদিন ব্যয়াম করবেন এবং প্রচুর পরিমাণে পানি খাবেন।

ঈদে পরিমিত মাংস আহার করুন, শরীরকে সুস্থ্য রাখুন।

ডিম খেতে নেই মানা!






ডিম হৃদযন্ত্রের জন্য ধূমপানের মতোই ক্ষতিকর, সম্প্রতি এই দাবি করে কানাডীয় বিশেষজ্ঞরা পুষ্টিবিদদের তোপের মুখে পড়েছেন।

কানাডীয় দলটি তাদের নতুন গবেষণার পর মত দিয়েছেন, ডিমের কুসুম হৃদযন্ত্রের শিরা গুলোতে ঘন আস্তর তৈরি করে যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। সপ্তাহে তিনটি ডিম খেলে ধূমপায়ীর সমান ক্ষতিই ডেকে আনা হবে।
কিন্তু ব্রিটিশ পুষ্টিবিদ আমান্ডা আরসেল মোটেই বিষয়টি মেনে নিতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, কানাডার বিশেষজ্ঞদের ধারণা সঠিক নয়। সেখানেই ক্ষান্ত হননি, মানব স্বাস্থ্যের জন্য ডিম কতটা শ্রেয় একটি খাদ্য তার ব্যাখ্যাও তুলে ধরেছেন আমান্ডা।

কম ক্যালরি: আমান্ডা জানান, ডিমে ক্যালরির পরিমাণ কমেছে। ৮০’র দশকে এসে প্রতিটি মাঝারি আকারের ডিমে ১২ ক্যালরি কমে যায়। আগে প্রতিটি ডিমে ৭৮ ক্যালরি ছিলো যা কমে ৬৬ ক্যালরিতে দাঁড়ায়। গবেষকদের মতে, আগে মুরগি খেতো মাংস ও হাড্ডিজাতীয় খাবার। কিন্তু এখন উচ্চ-আমিষযুক্ত কৃত্রিমভাবে তৈরি খাদ্য দেওয়া হয় ফলে এসব মুরগির ডিমে ক্যালরির পরিমাণ কমে যাচ্ছে।

কম চর্বি: আমান্ডা জানান, আজকালের ডিমে আগের তুলনায় ২০ শতাংশ চর্বি কম পাওয়া যাচ্ছে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমেছে এক পঞ্চমাংশ। স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে রক্তে কোলেস্টরেলের পরিমাণ বাড়ায় এবং হৃদরোগের শঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। সুতরাং এই চর্বি ডিমে কমে যাওয়া মানেই হচ্ছে ক্ষতির আশঙ্কা কমে যাওয়া।

ডিম পেট ভরিয়ে রাখে: আমেরিকার রচেস্টার সেন্টারের স্থুলতাবিষয়ক গবেষকরা তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন সকালের নাস্তায় যারা দুটি সিদ্ধডিম খেয়ে ফেলছেন তারা নাস্তায় যারা ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার পছন্দ করছেন তাদের তুলনায় দিনে সব মিলিয়ে ৪০০ ক্যালরি কম গ্রহণ করছেন। যেকোনো আমিষ-সমৃদ্ধ খাবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে এক্ষেত্রে ডিমের কার্যকারিতা একটু বেশিই।

কলেস্টেরল কম: ২০০৯ সাল অবধি বিশেষজ্ঞরা সপ্তাহে ৪টি ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিতেন। তাদের আশঙ্কা ছিলো ডিমের কোলেস্টেরল রক্তের কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়।
কিন্তু আজকের পুষ্টিবিদরা বলছেন, বিপদটি ঘটায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা আসে বিস্কুট, চর্বিযুক্ত মাংসের টুকরো থেকে। আর এ ধরনের খাবার যকৃৎকে বেশিমাত্রায় সক্রিয় করে ফরে তৈরি হয় আরো বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এছাড়াও একটি ডিম ৮০’র দশকে যতটুকু কোলেস্টেরল ধারণ করতো বর্তমানে তার পরিমাণ অন্তত ১০ শতাংশ কমেছে।

ভিটামিন ডি: তেলসমৃদ্ধ মাছের পাশাপাশি ডিমও এমন একটি খাবার যা মানব শরীরে ভিটামিন দেয়। শরীরের হাড়ে ক্যালসিয়াম টেনে নিতে এই ভিটামিনই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর অতীতে একটি ডিম যতটা ভিটামিন ডি দিতো এখন তার তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।

মিনারেল সেলেনিয়াম: ডিম মিনারেল সেলেনিয়ামের একটি বড় উৎস, যা মানবদেহে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। এছাড়াও পুরুষের যৌন সক্ষমতা বাড়াতে এবং মুড ঠিক রাখতে এই সেলেনিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

আমিষ: প্রতিটি ডিমে ৮ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। মানবদেহে ত্বক ও পেশিসহ সকল অংশে কোষগুলোকে সঠিকভাবে কাজ করাতে ও তা রক্ষণাবেক্ষণে এই প্রোটিন ভূমিকা রাখে।

মেধাশক্তি: প্রতিটি ডিমে ২৫০ মিলিগ্রাম কোলাইন পাওয়া যায়। এটি একধরনের বি-ভিটামিন যা মস্তিষ্ক রাসায়নিকের একটি উপাদান হিসেবে স্মৃতিশক্তি নিয়ন্ত্রণ করে। অন্তঃসত্ত্বা কোনো নারী দিনে ৫৫০ মিলিগ্রাম কোলাইন গ্রহণ করলে তা তার গর্ভে বেড়ে ওঠা সন্তানের মস্তিষ্কগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। 

ঋতু পরিবর্তন : বাড়ছে জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসজনিত রোগের প্রকোপ 

ঋতু বৈচিত্র্যের ভিন্নতায় বদলে গেছে আবহাওয়া। মিলছে শীতের আভাস। এই গরম তো এই ঠাণ্ডা—আবহাওয়ার এমন বৈপরীত্যে বাড়ছে রোগব্যাধির প্রকোপও। দেশ জুড়ে ঘরে ঘরে দেখা দিচ্ছে জ্বর ও সর্দি-কাশি। নানা বয়সী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, সিপিওডি ও ব্রঙ্কোলাইটিসে। দেখা দিচ্ছে টাইফয়েড, প্যারা টাইফয়েড কিংবা ডেঙ্গুজ্বর। পেটের পীড়া ও আমাশয় নিয়েও মানুষ আসছে চিকিত্সকদের কাছে।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে ঋতুভিত্তিক এসব রোগের প্রকোপ শুরু হয়েছে। চিকিত্সকদের ব্যক্তিগত চেম্বারের পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও ভিড় বাড়ছে রোগীদের। রাস্তার ধুলোবালি, নোংরা আবর্জনা ও অসতর্কতা প্রকোপের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে শিশু, নারী ও বয়স্কদের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ সকালের খবরকে বলেন, শীত জেঁকে না বসা পর্যন্ত রোগব্যাধির এ প্রকোপ থাকবে। এ সময় সতর্ক না থাকলে সাধারণ ব্যাধিই জটিল হয়ে উঠতে পারে। অবশ্য আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আগামী দুয়েক দিনের মধ্যেই বর্ষা বিদায় নেবে। নভেম্বরের শেষের দিকে শীত নামলেও জেঁকে বসবে ডিসেম্বরের শেষের দিকে। তবে অক্টোবরের শেষের দিকে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমতে থাকবে।
অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, মূলত জ্বর ও সর্দি-কাশিই বেশি দেখা দিচ্ছে। নাক দিয়ে পানি পড়া বা সর্দি ও খুসখুসে কাশি দেখা দিলে কুসুম গরম পানি পান করা যেতে পারে। এ সময় মধু, আদা, এলাচ বা তুলসী পাতার রস খেলে উপকার হবে। তবে সর্দি বা কাশির মাত্রা যদি বেশি হয় তাহলে কফ সিরাপ বা অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ সেবন করতে হবে। জ্বর হলে সাধারণ প্যারাসিটামল ও খাবার স্যালাইনই যথেষ্ট। তবে জ্বর, সর্দি বা কাশি ৪-৫ দিনের মধ্যে ভালো না হলে অবশ্যই চিকিত্সকের শরণাপন্ন হতে হবে। এ সময়টা গরম ও ঠাণ্ডার ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, অবশ্যই ঘুমানোর আগে ফ্যান বা এসি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কিছুটা কমিয়ে দিতে হবে। পায়ের কাছে বা শিয়রে পাতলা চাদর বা কাঁথা রাখতে হবে যাতে ভোর রাতে শীত অনুভূত হলে গায়ে মোড়ানো যায়। বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। প্রচুর পানি বা তরল খাবার খেতে হবে।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রুহুল আমীন বলেন, এ বছর আবহাওয়ার বৈচিত্র্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রোগ ও আক্রান্তের ধরন কিছু বদলেছে। সাধারণ সর্দি-কাশির পাশাপাশি নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কোলাইটিস, অ্যাজমা এবং শ্বাসনালি ও ফুসফুসে প্রদাহের প্রকোপ বেশি। অন্যান্য বয়সের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাই। এ সময়টায় শিশুদের বেশি বাইরে না বের করানোই ভালো। সর্দি-কাশির জন্য লেবুর শরবত খাওয়ানো যেতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে নসরোল নামে এক ধরনের নরমাল স্যালাইন দিয়ে শিশুদের নাক ধুয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে। এ সময় জ্বর ৪-৫ দিন স্থায়ী হবে। জ্বরের মাত্রা ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠতে পারে। কিছুতেই ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না। খাবার গরম করে খেতে হবে। শিশুদের উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করাতে হবে। বিশেষ করে শীতের জন্য ব্যবহূত পুরনো পোশাক ট্রাঙ্ক বা সুটকেস থেকে বের করে টানা কয়েক ঘণ্টা রোদে রেখে তারপর ব্যবহার করতে হবে। ঠাণ্ডা-সর্দি খুবই ছোঁয়াচে। তাই প্রত্যেকের নাকের পানি মোছার জন্য ব্যক্তিগত রুমাল বা কাপড় ব্যবহার করা উচিত।

গর্ভবতী মা ডিম খেলে সন্তানের রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের আশংকা কমে

গর্ভবতী মা ডিম খেলে তাতে সন্তানের রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস হওয়ার আশংকা কমে যায়।  সাধারণত এ সব অসুখকে  দেহের বিপাকতান্ত্রিক বা মেটাবোলিক এবং পীড়ন সংক্রান্ত অসুখ-বিসুখ বলা হয়।  আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষায় এ কথা উঠে এসেছে।
এতে দেখা গেছে, গর্ভবতী মায়ের খাবারে বেশি মাত্রায় কোলিন নামের পানিতে দ্রবণীয় একটি পুষ্টি-উপাদান থাকলে তাতে পরবর্তী জীবনে সন্তানদের ডায়াবেটিস বা রক্তচাপের মতো অসুখ হওয়ার আশংকা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
গর্ভকালে মা নানা কারণে মানসিক পীড়নের মুখে পড়তে পারেন। এতে মায়ের দেহে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় তা থেকে গর্ভের সন্তানকে রক্ষা করতে সহায়তা করে কোলিন নামের উপাদান। ডিম কোলিনের চমতকার উতস এবং প্রতিটি ডিমে ১২৫ এমজি করে কোলিন আছে। ডিমের কুসুমে কোলিন থাকলেও সাদা অংশে থাকে না।
কোলিন নিয়ে এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরি কাউডিল। তিনি আরো বলেন, ভ্রূণ এবং শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কোলিন। মস্তিষ্কের যে অংশ স্মৃতি ও জীবনভর শিক্ষার সঙ্গে জড়িত সে অংশের বিকাশে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এই পুষ্টি উপাদান।
ডিমে যে শুধু কোলিনই থাকে তাই নয় সেইসঙ্গে এতে উচ্চমানের আমিষ ও লৌহসহ আরো কিছু উপাদান থাকে যা গর্ভবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

স্ট্রোক প্রতিরোধ করে টমেটো

সুষম খাবারের সঙ্গে টমেটো খেলে স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি কম থাকে। স্ট্রোক প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে টমেটো। সম্প্রতি ফিনল্যান্ডের গবেষকরা এ তথ্য জানান। নিউরোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত নিবন্ধে গবেষকরা জানান, তারা ১ হাজার ৩১ জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ওপর গবেষণা করেন, যাদের উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান লাইকোপেন কম ছিল। গবেষণার শুরুতে এসব ব্যক্তির রক্তে লাইকোপেনের পর্যায় পরীক্ষা করা হয়। এরপর এসব ব্যক্তিকে পরবর্তী ১২ বছর পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তাদেরকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়। কম লাইকোপেনের উপস্থিতি আছে এমন ২৫৮ ব্যক্তির মধ্যে ২৫ জনের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। আর বেশি লাইকোপেনের উপস্থিতি আছে এমন ২৫৯ ব্যক্তির মধ্যে ১১ জনের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। এতে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, যারা নিয়মিত টমেটো খেয়েছেন তাদের স্ট্রোকের আশঙ্কা অন্যদের তুলনায় ৫৫ শতাংশ কমে গেছে। 

 

টি প স : ব্রণ দূর করার আছে যে উপায়

ত্বকের ঔজ্জ্বল্য এবং সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয় ব্রণ। মুখে এসব ব্রণের দাগের জন্য চিন্তায় কাটাচ্ছেন? চিন্তার কোনো কারণ নেই। ব্রণ থেকে বাঁচতে কিছু উপায় অবলম্বন করুন। দেখুন আপনি অনেক ভালো থাকবেন।
— ব্রণ হলে একেবারেই আচার খাবেন না। তবে মিষ্টি চাটনি খেতে পারেন।
— বেশি পরিমাণে নিরামিষ খাবার খান। আমিষ খাবার যতটা সম্ভব না খাওয়ার চেষ্টা করুন।
— ডেইরি প্রোডাক্টসের মধ্যে হরমোনাল উপাদান বেশি পরিমাণে থাকে বলে তা খুব সহজে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। এ কারণেই পনির, দুধ এবং দই কম খান।
— কোল ড্রিঙ্কস খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দিন।
— খুব বেশি পরিমাণে পানি খান। দিনে যদি দু লিটার পানি খেতে পারেন তা আপনার স্বাস্থ্য এবং ত্বকের ক্ষেত্রে ফলদায়ক হবে। পানি বেশি খাওয়ার ফলে শরীর থেকে পিত্ত বেরিয়ে যাবে। আপনি ব্রণের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন।
— আয়ুর্বেদের মতে অতিরিক্ত ক্রোধের ফলে শরীরে পিত্ত সঞ্চিত হয়। তাই ক্রোধ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন।

ব্রণের দাগ দূর করতে ভেষজ পদ্ধতি
— কমলা লেবুর খোসা শুকিয়ে মিক্সিতে গুঁড়ো করে নিন। মসুরির ডাল আর চাল ভিজিয়ে ভালো করে পিষে নিন। ওই পেস্টের মধ্যে চন্দন পাউডার, মুলতানি মাটি, কমলালেবুর খোসার গুঁড়ো মিশিয়ে ভালো করে মিলিয়ে নিন। এই মিশ্রণের মধ্যে দুই চামচ দুধও মিশিয়ে নিতে পারেন। মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর ধুয়ে নিন। এই প্যাকটা নিয়মিত মুখে লাগান। ত্বকের জেল্লা বাড়বে। ব্রণের দাগও দূর হয়ে যাবে।

ব্রণ দূর করবে নিম
— চার-পাঁচটা নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে পিষে নিন। এর মধ্যে এক চামচ মুলতানি মাটি, অল্প গোলাপ জল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটা যদি গাঢ় হয়ে যায় তাহলে এর মধ্যে গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে বেশ কিছুক্ষণ রেখে দিন। প্যাকটা মুখে শুকিয়ে গেলে হালকা পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। সূত্র : ইন্টারনেট

স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা


 মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, দেশে প্রতি বছর প্রায় ২২ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং তার মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার মারা যান। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যেগে সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে এই বিপুল সংখ্যক নারীর জীবন রক্ষা করা সম্ভব।

আহ্ছানিয়া মিশন ক্যান্সার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল ও দেশের সব কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যৌথভাবে দরিদ্র নারীদের স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভব বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডি আহ্ছানিয়া মিশন মিলনায়তনে, আহ্ছানিয়া মিশন ক্যান্সার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর আয়োজিত স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাসের কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন প্রতিমন্ত্রী।

প্রতি বছর অক্টোবর মাস স্তন ক্যান্সারের সচেতনতা মাস হিসাবে পালন করা হয়। এ উপলক্ষে আহ্ছানিয়া মিশন ক্যান্সার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল, মাসব্যাপী বিনা খরচে নারীদের ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্ণয়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করবে।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রেসিডেন্ট কাজী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মেহের আফরোজ চুমকি, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের উপদেষ্টা দীনা হক, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের পরিচালক ড. সৈয়দ ফজলে রহিম এবং প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. সৈয়দ আকরাম হোসেন, ড. হারুন-উর-রশিদ প্রমুখ।

মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, “এই রোগ সম্পর্কে জনসাধারণের প্রাথমিক জ্ঞান নেই এবং সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এই রোগটি মেয়েদের একটি গোপন অংশের রোগ। তাই আমাদের দেশের মা ও বোনেরা এই রোগ সম্পর্কে অজ্ঞ অথবা লজ্জার কারণে এই রোগ সর্ম্পকে কাউকে জানাতে চায় না। এ দুই সমস্যা দ‍ূর করতে পারলে ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসার মাধ্যমে দূর করা সহজ হবে। শুধু সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা ব্রেস্ট ক্যান্সার এর মতো একটি মরণব্যাধির হাত থেকে বহু মা ও বোনকে রক্ষা করতে পারি। ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতা মাস পালন একটি মহৎ উদ্যোগ এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ।”

ড. সৈয়দ ফজলে রহিম বলেন, “প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নিরুপন হলে এবং চিকিৎসা করালে অনেকদিন সুস্থ থাকা যায়। সার্জারি করার সময় টিউমার বগলের লসিকা গ্রন্থিসহ অপসারণ করলে এই রোগ পুনরায় দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। অসম্পূর্ণ টিউমার অপসারণ করলে এই রোগ আবার হতে পারে। তবে এ রোগের চিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই সম্ভব।”

বক্তারা আরও বলেন, ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে  প্রয়োজন ব্যাপক প্রচার। এ ক্ষেত্রে সংবাদপত্র ও সমাজের শিক্ষিত মেয়েদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। যখন প্রাথমিক নির্ণয়ের মাধ্যমেও দ্রুত চিকিৎসায় আমাদের মা-বোনদের এই ক্যান্সার থেকে রক্ষা করতে পারবো তখনই এই কার্যক্রমগুলো সফল হবে।
ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও চিকিৎসা কেন্দ্রে চলছে ভয়ঙ্কর প্রতারণা








কয়েক বছর ধরে চালানো ধূমপানবিরোধী প্রচারণা সত্ত্বেও উন্নয়নশীল দেশগুলোর পাঁচ ভাগের দুই ভাগ লোক এখনও ধূমপানে আসক্ত, আর নারীদের মধ্যে অল্পবয়সেই ধূমপানে আসক্ত হয়ে পড়ার সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। সম্প্রতি ল্যানচেট চিকিৎসা সাময়িকী পরিচালিত এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় দরিদ্র দেশগুলোতে তামাক ব্যবহারের এই ‘উদ্বেগজনক চিত্র’ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার গবেষণাটির ফলাফল সাময়িকীটিতে প্রকাশ পেয়েছে। এতে দেখা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বব্যাপী ধূমপানবিরোধী ব্যাপক প্রচারণা সত্ত্বেও অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশে ধূমপান ত্যাগের হার খুব কম আর তামাকের অর্ধেক ব্যবহারকারীর মৃত্যুর কারণ হতে পারে। গবেষকরা দেখতে পান, নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে ধূমপানের প্রচলন অত্যন্ত বেশি।
৪১ শতাংশ ধূমপান আসক্ত পুরুষের তুলনায় নারী মাত্র ৫ শতাংশ। তামাক ব্যবহারকারী ৬৪ শতাংশ তৈরি করা সিগারেট ব্যবহার করে। তবে ভারত ও বাংলাদেশে তামাক পাতা ও গুড়া তামাকের ব্যাপক ব্যবহার আছে। বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে চীনে ধূমপায়ীর সংখ্যা বেশি। দেশটিতে তামাক ব্যবহার করে ৩০ কোটি ১০ লাখ মানুষ। এরপর আছে ভারত। এখানে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২৭ কোটি ৫০ লাখ। অন্যান্য যেসব দেশে গবেষণাটি পরিচালিত হয় সেগুলো হল বাংলাদেশ, মেক্সিকো, ফিলিপাইনস, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, ইউক্রেন, উরুগুয়ে এবং ভিয়েতনাম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, তামাক ব্যবহারের কারণে বিশ্বে প্রতিবছর ৬০ লাখ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ পরো ধূমপানে মারা যায়। বর্তমান ধারা চলতে থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ ধূমপানে প্রতিবছর ৮০ লাখ মানুষ মারা যাবে বলে মনে করে ডব্লিউএইচও

No comments:

Post a Comment