Monday, September 10, 2012

ব্যাংকপাড়ায় ১০ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি


ব্যাংকপাড়ায় ১০ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি
দেশের ব্যাংকিং খাতে হরিলুট চলছে। জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর শীর্ষ কর্তাদের সহায়তায় শক্তিশালী চক্র নানা কায়দায় ব্যাংকের টাকা লুটে নিয়ে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। আর এ সব লুটপাটে সহায়তা করছে এক ব্যাংক আরেক ব্যাংককে। এরই মধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে উধাও হয়ে গেছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে হলমার্কসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠানের চার হাজার কোটি টাকার সন্ধান মিললেও অবশিষ্ট ছয় হাজার কোটি টাকার কোনো হদিস নেই। জানা গেছে, এই বিপুল অংকের টাকা লুটপাট করতে নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলের জমির ভুয়া দলিল, ভুয়া নথিপত্র, ভুয়া এলসি, ভুয়া ড্রাফটসহ বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়। নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ী এবং ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওই চক্রটি জালিয়াতির মাধ্যমে এই বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিতে সরকারের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির কাঁধে ভর করে। হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে ব্যাংক ঋণের নামে গ্রাহকদের শত শত কোটি টাকা আত্দসাতের চমকপ্রদ সব কেচ্ছাকাহিনী। ব্যাংকপাড়ায় ১০ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি দেশের ব্যাংকিং খাতে শুধু নয়, সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, বেসরকারি ব্যাংকের করপোরেট ঋণের নামে যে করপোরেট লুটপাট চলছে তা অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যাপ্ত নজরদারির অভাব এবং নিয়মিত অডিট না হওয়ায় ব্যাংকগুলো চলছে যাচ্ছেতাইভাবে। ব্যাংক ঋণের নামে লুটপাট হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। লুটপাটের একটি অংশও যাচ্ছে রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের পকেটে। এ সব অর্থের বেশিরভাগই আর ফেরত পাওয়া যাবে না বলে সংশয় প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জানা গেছে, হলমার্কের পিলে চমকানো আর্থিক কেলেঙ্কারিতে সোনালী ব্যাংকসহ দেশের সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশি মোট ২৬টি ব্যাংকের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, হলমার্ক জালিয়াতিতে এক ব্যাংক অপর ব্যাংককে সাহায্য করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং খাতে অর্থ জালিয়াতির ঘটনা বাড়ছে, এটা খুবই উদ্বেগজনক। এ সব ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকও সমানভাবে দায়ী। তবে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত বিচার হওয়া দরকার। আর যেহেতু সোনালী ব্যাংক একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক তাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব সরকারেরই। এ ধরনের ঘটনা ব্যাংকিং খাতের জন্য কোনোভাবেই সুখকর নয়।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ড. খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেন, হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনা ব্যাংকিং খাতের ইতিহাসে ন্যক্কারজনক। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও সরকার সমানভাবে দায়ী। শোনা যাচ্ছে এ ঘটনায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকজনও জড়িত। তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। যারা দোষী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালকরা এ সব অনিয়মের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছেন। এদের অধিকাংশেরই ব্যাংক পরিচালনার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা নেই। এমনকি ওই পরিচালকদের দাপটে প্রকৃত ব্যাংকিং জানা পরিচালকরা থাকছেন কোণঠাসা। এ কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে চাপের মধ্যে পড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এ সব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রীর কাছে চিঠিও দিয়েছেন। সরকারি ব্যাংকগুলোতে তিন বছর ধরে অবিরাম লুটপাট ও অনিয়ম চললেও অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর প্রধান কার্যালয়ের নজরে আনা হয়নি। এমনকি ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ অডিটেও সেগুলো ধরা পড়েনি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, হলমার্কের ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারির পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবারই প্রথম পরিদর্শন দল তৈরি করেছে। পরিদর্শন দল ব্যাংকের ঋণ সম্পর্কিত বিষয়গুলো তদারকি করবে।

সূত্র জানায়, ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে সোনালী, রূপালী, অগ্রণী, জনতা, কৃষি ও বেসরকারিসহ ২৫টি ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়। ব্যাংকগুলো রপ্তানি মূল্য কম দেখিয়ে এবং আমদানি মূল্য বেশি দেখিয়ে এ সব টাকা লোপাট করেছে। ব্যাংকগুলো থেকে এই বিপুল অর্থ সরিয়ে ফেলার সঙ্গে ব্যাংকের ঊধর্্বতন কিছু কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতার প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে এলসি খুলে এ সব ব্যাংকের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করা হয়েছে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক তদন্তে দেখা গেছে, করপোরেট গ্রাহকের অনুকূলে ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই শাখা ব্যবস্থাপকরা ক্ষমতাবহিভর্ূতভাবে ঋণপত্র স্থাপন করেছেন। কোনো ধরনের সহায়ক জামানত ছাড়াই অনেক সময় নন-ফান্ডেড ঋণ (ডেফার্ড এলসি ও সাইট এলসি) সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নিরীক্ষায় সোনালী ব্যাংক থেকে ৩ হাজার ৬০৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা সরিয়ে ফেলার তথ্য বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে হলমার্ক গ্রুপ একাই তুলে নেয় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি। এখন দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আত্দসাতের ঘটনা যে কোনোভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অথচ বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা ওপর মহলের চাপে এ কাজে বাধ্য হয়েছে বলে জানালেও সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ সব দায় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের উপর চাপিয়েছে। আর অর্থ আত্দসাতের দায় স্বীকারের পরও হলমার্কের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় অর্থ ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাথমিক তদন্তে হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারিতে এ দেশে ব্যবসারত ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ব্যাংক আল ফালাহ লিমিটেড এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া লিমিটেডের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া সোনালী ব্যাংক ছাড়াও আরও ২২টি ব্যাংকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। ব্যাংকগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এলসি বিল কিনে পে-অর্ডার ও ড্রাফটের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা অন্যত্র সরিয়ে নিতে সহায়তা করেছে। নিয়ম অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এলসি বিল কিনতে পারে। তবে এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে সংশ্লিষ্ট এলসি বিলের বৈধতা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু হলমার্কের ক্ষেত্রে এলসি বিলগুলো বৈধ কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। শীর্ষ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা ছাড়া এ ধরনের অনিয়ম করা সম্ভব নয় বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, বৈধতা নিশ্চিত না করে ব্যাংকগুলো কেন এ ধরনের ভুয়া এলসি বিল কেনার সঙ্গে জড়িত হলো তার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। তবে তারা খোঁড়া যুক্তি উপস্থাপন করে বলছেন, সোনালী ব্যাংক গ্যারান্টার হওয়ায় তারা এ সব বিল কিনেছে। এ ধরনের যুক্তি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ যে কোনো ধরনের ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যাংকের নিজস্ব নিরাপত্তা কার্যক্রম রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে এ অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের মতো সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোরও শীর্ষ কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভুয়া এলসি, ভুয়া ড্রাফট ছাড়াও ভুয়া জমির দলিল বা অল্প মূল্যের জমি বেশি মূল্য দেখিয়ে দলিল জমা দিয়ে বিপুল অংকের টাকা ঋণের নামে লুটে নিচ্ছে চক্রটি। সূত্র জানায়, মিরপুর এলাকার একাধিক মালিকানা দাবির জমির দলিল, ভুয়া দলিল জমা দিয়ে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্দসাৎ করছে। এছাড়া অল্প মূল্যের জমিও কয়েকগুণ বেশি দেখিয়েও হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্দসাৎ করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, হলমার্ক গ্রুপ আত্দসাতের অর্থ ফেরত দিতে এরই মধ্যে নগদ ও এঙ্পোর্ট বিল বাবদ ২৭৭ কোটি টাকা দিয়েছে। আর বন্ধক হিসেবে সাভারের হেমায়েতপুর এলাকায় ২১৪৩ শতাংশ জমির কাগজপত্র জমা দিয়েছে। যার মূল্য ধরা হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রতি শতাংশ জমির দাম ধরা হয়েছে ৯৩ লাখ ৩২ হাজার টাকা। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ এলাকার উঁচু জমির দাম সর্বোচ্চ শতাংশ প্রতি ৫ লাখ টাকা। ফলে সোনালী ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখা জমির মূল্য বাজার দরের চেয়ে ১৯ গুণ বেশি দেখিয়েছে হলমার্ক গ্রুপ।

এছাড়া ব্যাংক জালিয়াতির আরও অভিনব ফাঁদ আবিষ্কার করেছে চক্রটি। জালিয়াত চক্রের সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি যোগ দিয়েছেন ব্যাংকের কর্মকর্তাও। চক্রের সদস্যদের মধ্যে একই ব্যক্তি বিভিন্ন ছদ্মনাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে এমনকি ভুয়া পিতার নাম, ভুয়া জন্মতারিখ ও নীলক্ষেত থেকে ভুয়া জাতীয়তার সনদ তৈরি করে রাজধানীতে বেসরকারি ১৬টি ব্যাংক, একটি সরকারি ব্যাংক এবং চট্টগ্রামের একটি ব্যাংকে একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলে। পরে সেই ব্যক্তিই আবার এক ব্যাংক থেকে টাকা সরিয়ে আরেক ব্যাংকে জমা করে এবং সেই টাকা কৌশলে তুলে নিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে তারা ব্যাংক কর্মকর্তার সহায়তায় ভুয়া ব্যাংক ভাউচার, ভুয়া জমার রসিদ, পে-অর্ডার প্রভৃতিও তৈরি করে। চক্রটি সোনালী ব্যাংক মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট শাখা থেকে কৌশলে ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা সরিয়ে ওই ১৮টি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে তুলে নেয়।

এরও আগে ২০০২ সালে ওম প্রকাশ আগারওয়াল নামে এক ব্যবসায়ী পাঁচটি ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা তুলে নিয়ে উধাও হয়ে যান।

এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট পাঁচটি ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ করে। এর আগে আশি ও নব্বই দশকেও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার সংস্কৃতি চালু ছিল। তবে সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি ও অর্থ জালিয়াতির ঘটনা সব অতীতকে হার মানিয়েছে।

জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন বি. চৌধুরী


জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন বি. চৌধুরী

অরাজকতা, গুম, হত্যা, অপহরণ, দুর্নীতি প্রতিরোধ করে স্বপ্নের গণতন্ত্র বাস্তবায়ন করতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাব অডিটরিয়ামে বিকল্প যুবধারা আয়োজিত ‘জাগো যুব বাঁচাও দেশ এবং রাজনীতি কী এভাবে চলবে, নাকি যুবসমাজ পরির্বতন আনতে পারবে’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঐক্যের ডাক দেন। অনুষ্ঠানে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান, জাতীয়তাবাদী যুবদল সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. নুরুল আলম দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও মহাজোট সরকারের দুর্নীতি বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিকল্পধারার যুগ্ম-মহাসচিব মাহি বি. চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন যুবধারা কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ওবায়দুর রহমান মৃধা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই উপস্থিত সব নেতা একে অপরের হাত ধরে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার স্লোগান ধরেন। পরে বিকল্পধারার দলীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়।
অধ্যাপক বি. চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনার কর্মকাণ্ড এবং বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে আপনি দায়িত্ব পালন করছেন না। ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। দয়া করে ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। ক্ষমতার অপব্যবহারের পরিণাম ভালো হয় না।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে আরও বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার আগে বলেছিলেন দুর্নীতি বন্ধ করবেন। আপনি দুর্নীতি বন্ধ করতে পরেননি। বরং দুর্নীতিবাজদের দেশপ্রেমিক বলে দুর্নীতি করতে আরও উত্সাহী করেছেন।
ড. কামাল হোসেন বুয়েটের ভিসিকে অপসারণ করার জন্য রাষ্ট্রপতির প্রতি আহ্বান জানান। তিনি সরকারের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, এভাবে দেশ চলতে পারে না। আসুন, আমরা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দেশ থেকে চিরতরে দুর্নীতি দূর করি, স্বপ্নের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাবস্থায় বিকল্পধারা প্রেসিডেন্টকে রেললাইনের ওপর বসে হামলা করেছিল। তার বাসভবনে আগুন লাগিয়েছিল। শুধু তাই নয়, বি. চৌধুরীর পা ভেঙে দিতে চেয়েছিল। আজ তারা আপনার কাছে ধরনা দিচ্ছে। বিষয়টি দেখে ভালোই লাগছে।
তিনি মহাজোট সরকারের সমালোচনা করে আরও বলেন, শেখ হাসিনা বাপের ধনে পোদ্দারি করছেন। সময় এসেছে এই পোদ্দারি আর করতে পারবেন না। কারণ, পাকিস্তানের দালালদের আপনি তোয়াজ করছেন আর বঙ্গবন্ধুর ডাকে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তাদের কোমরে দড়ি লাগাচ্ছেন। এর জবাব আপনি পাবেন।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, দেশে রুগ্ন রাজনীতি চলছে একথা অস্বীকার করা যাবে না। যারাই দুর্নীতি করছে তাদেরকেই বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশপ্রেমিক উপাধি দিচ্ছেন। আমি বলব, রাষ্ট্রের প্রধান যিনি থাকেন তাকে সবদিক খেয়াল করে চলতে হবে। আমরাও ক্ষমতায় ছিলাম। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও যে শতভাগ পবিত্র সে কথা বলছি না।

হলমার্ককাণ্ডে মামলার নির্দেশ

হলমার্ককাণ্ডে মামলার নির্দেশ


হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করতে সোনালী ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

একইসঙ্গে সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবিরসহ সন্দেহভাজনদের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকারও নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

আলোচিত হলমার্ক গ্রুপের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় মামলা হচ্ছে- অর্থমন্ত্রী একথা জানানোর পরদিনই অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে সরকারি মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের বর্তমান এমডি’র কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই দুই নির্দেশ দেয়া হল।

৯ সেপ্টেম্বর ইস্যু করা চিঠিটি সোমবার পাঠানো হয় বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, হলমার্কের সাম্ú্রতিক ঘটনায় যে সব ক্ষেত্রে বিভাগীয় (প্রযোজ্য) ও ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহন করা যায়- সে সব ক্ষেত্রে তা গ্রহণ করতে আদেশক্রমে নির্দেশ দেয়া হল।

চিঠির শেষে বলা হয়েছে, সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবিরসহ যাদের এই ঘটনার সঙ্গে সম্úৃক্ত থাকার বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতেও নির্দেশ দেয়া হল।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রোববার বলেন, হলমার্কের অর্থ কেলেঙ্কারি সঙ্গে আরো ‘অনেকে’ জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে শিগগিরই মামলা করা হবে।

একইসঙ্গে টাকা উদ্ধারের ‘বিভিন্নমুখী’ উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও মন্ত্রী জানান।

স¤প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নিরীক্ষায় সোনালী ব্যাংক থেকে তিন হাজার ৬০৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা সরিয়ে ফেলার তথ্য বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে হলমার্ক গ্রুপ একাই তুলে নেয় দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি।

দুর্নীতি দমন কমিশন এ অভিযোগের তদন্ত করছে। সোনালী ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। 

হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের শাস্তি চায় এফবিসিসিআই


হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের শাস্তি চায় এফবিসিসিআই

ছবি: আশিক/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: হলমার্কসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অনিয়ম রোধের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা বেসরকারিকরণের প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীদের র্শীষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। একই সঙ্গে হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও ব্যাংকারদের গ্রেফতার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

সোমবার এফসিসিসিআই সম্মেলনকক্ষে ‘হলমার্কসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়নের বিরূপ প্রভাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর প্রথম সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিনসহ পরিচালকরা।

এ কে আজাদ বলেন, “সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারির মধ্য দিয়ে বলা যায়,  ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হুমকির মধ্যে আছে। অনিয়মের জন্য প্রকৃত শিল্প উদ্যোক্তারা ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যাংকগুলো অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ীদের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা মূলধন আটকে আছে।”

তিনি আরো বলেন, “রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি এবং অনিয়ম দেশের সার্বিক অর্থনীতির জন্য ভালো নয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে সরকারের কাঙ্ক্ষিত ৭.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে নয়।”

শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য এফবিসিসিআইর অন্যান্য প্রস্তাব হচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পরিবর্তে বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের একক নিয়ন্ত্রণে রাখা, ব্যাংকিং খাতের বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যাক্তিদের ব্যাংক হিসাব জব্দসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা।

অপেক্ষার ইতি টানছে আইফোন ৫!


অপেক্ষার ইতি টানছে আইফোন ৫!

ভক্তদের অধীর অপেক্ষায় রেখেছে অ্যাপল। কারণ আইফোন-৫। এরই মধ্যে অনেকবার আসি বলেও ধরা দেয়নি আইফোন-৫। তবে ১২ সেপ্টেম্বরে নতুন প্রত্যাশা জাগিয়েছে আইফোন-৫। সংবাদমাধ্যম সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

এরই মধ্যে আগামী ১২ সেপ্টেম্বরে একটি বিশেষ আয়োজনের জন্য দাওয়াতপত্র বিলি করতে শুরু করেছে অ্যাপল। এ অর্থে এবার আইফোন-৫ আত্মপ্রকাশের সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত করেছে অ্যাপল। উৎপাদন ব্যবস্থায় গতি আর দিনরাত পণ্য তৈরিতে চীনের সাংহাই এখন মুখর। কারণ আইফোন-৫ এর জন্য খুচরা পণ্য প্রস্তুত।

আইফোন-৫ মডেলের হাত ধরে বিশ্বপ্রযুক্তিতে ‘ন্যানো-সিম’ এর আর্বিভাব হচ্ছে। এ ছাড়াও আছে ১৯ পিনের পাওয়ার এবং কেন্দ্রীয় সংযোগ ব্যবস্থা (কানেক্টর)। এর আগে ২০০৩ সালে থার্ড জেনারেশন আইপডে ৩০ পিনের আধুনিক প্রযুক্তির আর্বিভাব হয়।

এদিকে আইফোন-৫ মডেলে থাকছে ফোর জেনারেশন (ফোরজি) ব্রডব্যান্ড ব্যবহারের সুবিধা। তবে শুরুতে এ নেটওয়ার্ক শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই ব্যবহারযোগ্যতা পাবে। তবে ইউরোপ ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি দেশে দ্রুতই এ নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হবে।

অ্যাপলই হবে বিশ্বের প্রথম ‘ন্যানো সিমকার্ড’ উদ্ভাবিত প্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে অ্যাপল, নকিয়া এবং ব্ল্যাকবেরি নির্মাতা রিম চিপকার্ড ব্যবহারযোগ্য করে সেট তৈরি করেছে। তবে এখনও এসব সেট ভোক্তাদের নাগালে আসেনি।

ন্যানো-সিম প্রযুক্তির কারণে স্মার্টফোনের অবয়ব ৪০ ভাগ ছোট হয়ে এসেছে। এরই মধ্যে মাইক্রো-সিমযুক্ত স্মার্টফোন বাজারে এসেছে। এ তালিকায় আইফোন ৪এস, স্যামাসাং গ্যালাক্সি এস৩ এবং নকিয়া লুমিয়া মডেল অন্যতম। গত ১২ মাসে এ মডেলগুলো বিশ্বপ্রযুক্তির বাজার মাতিয়ে রেখেছে।

এখন তাই আইফোন-৫ নিয়ে ঘণ্টার প্রতীক্ষা শুরু হয়েছে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বরেই এ সুদীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। এতে দুটি সংস্করণ থাকবে। একটি থ্রিজি। অন্যটি থ্রিজিএস। ভবিষ্যতের স্মার্টফোন বিশ্বের চেহারাই বদলে দেবে আইফোন-৫। এমনই তথ্য দিচ্ছে বিশ্বের কয়েকটি নির্ভরযোগ্য তথ্যমাধ্যম।

এদিকে তাইওয়ানের ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ডিজিটাইমস জানিয়েছে, আইফোন-৫ প্রস্তুত প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন করতে চীনের সাংহাইয়ে অবস্থিত অ্যাপল পণ্যনির্মাতা পেগাট্রোন এখন দারুণ কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছে। কাজ চলছে দিনরাত। এ প্রতিষ্ঠানটি তৃতীয় প্রজন্মের আইপ্যাড তৈরিতেও কাজ করছে।

এ বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে একটি চালান প্রস্তুত করতেই পেগাট্রোন এখন অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে।

সব ঠিক থাকলে ১২ সেপ্টেম্বরে গণমাধ্যমের আনুষ্ঠানিকতার পর ২১ সেপ্টেম্বর শুক্রবারেই অ্যাপল আইফোন-৫ মডেলের বিপণন শুরু করবে। স্টিভ জবস ছাড়া অ্যাপলের ইতিহাসে এটিই হবে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় যাত্রা।

বিমানবন্দরে জব্দ স্বর্ণ এক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যের!


বিমানবন্দরে জব্দ স্বর্ণ এক গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যের!

ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জব্দ করা সাড়ে ১৩ কেজি স্বর্ণ একটি শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য আজিজ নামক এক ব্যক্তির! এ ঘটনায় আটক মনোয়ারুল হক পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ এ তথ্য দিয়েছেন।

সোমবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এএসপি মিনহাজ এ কথা জানিয়েছেন।

তিনি জানান, এপিবিএন’র জিজ্ঞাসাবাদে মনোয়ারুল জানিয়েছেন, দুবাইয়ের মাড়োয়ারি ব্যবসায়ী দেবু বাবু  নামের এক ব্যক্তি এ স্বর্ণের মালিক।  দুবাই থেকে ফেরদৌস নামের অপর এক ব্যক্তি তাকে হযরত শাহজালাল আন্তজাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য আজিজের কাছে এগুলো হস্তান্তর করার জন্য দেন।

মনোয়ারুল জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় ফ্লাই দুবাই এর এফজেড-৫৮৩ ফ্লাইটে দুবাই থেকে হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন তিনি। এ পর্যন্ত তিনি পাঁচ  বার  দুবাই গেছেন এবং একাধিকবার সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া গেছেন।

মনোয়ারুলের পাসপোর্টে  কালিগঞ্জ গাজীপুরের একটি ঠিকানা থাকলেও তিনি পুলিশকে জানান, বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটে তার একটি চশমার দোকান রয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার সকালে হযরত শাহজালাল আন্তজাতিক বিমানবন্দরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যরা মনোয়ারুল হক (৪৬) নামের ওই ব্যক্তিকে বোডিং ব্রিজ-১ আগমনী গেট দিয়ে বের হয়ে ছোট ট্রলিব্যাগসহ টয়লেটে প্রবেশ করতে দেখেন। সন্দেহ হওয়ায় সাদা পোশাকে কয়েকজন পুলিশ বাথরুমে ঢোকেন।

টয়লেটের বাইরে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় তাদের সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়। এক পর্যায়ে মনোয়ারুল বাথরুম থেকে বের হয়ে গেলে এক এপিবিএন সদস্য মনোয়ারুলকে অনুসরণ করেন। এ সময় ওই সদস্য বাথরুমের ফ্লাশ ট্যাংকের ঢাকনা কিছুটা উঠানো দেখতে পান এবং গাঢ় কফি রংয়ের একটি পলিথিনে মোড়ানো প্যাকেট দেখতে পেয়ে দায়িত্বরত এপিবিএন’র এএসপি মিনহাজুল ইসলামকে অবহিত করেন।

এএসপি মিনহাজ সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেটসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে বাথরুমের ফ্লাশ ট্যাংকের ভিতর থেকে পলিথিনে মোড়ানো ৬টি স্বর্ণবার আকৃতির দণ্ডে স্কচটেপে মোড়ানো স্বর্ণের বিস্কুটসহ ১১৭টি  বিস্কুট উদ্ধার করেন।

স্বর্ণের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর এপিবিএন’র গোয়েন্দা সদস্যরা  মনোয়ারুলকে অনুসরণ করতে থাকেন। পরে তাকে  বিমানবন্দরের আগমনী কনকোর্স হল থেকে আটক করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, মনোয়ারুল রোববার সকালে দুবাই যান এবং সোমবার ফেরত আসেন। স্বর্ণ ছাড়াও তার সঙ্গে থাকা লাগেজে তল্লাশি করে সনি এরিকসনের পাঁচটি দামী মোবাইল,  বেশ কিছু মেমোরি কার্ড ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স মালামাল পাওয়া গেছে যার আনুমানিক মূল্য ৩ লাখ টাকা।

এ ব্যাপারে মনোয়ারুলসহ সোনা পাচারে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। 

মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা ২৩ নভেম্বর

মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা ২৩ নভেম্বর


জটিলতার অবসান ঘটার পর মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আগামী ২৩ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষা হবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক খন্দকার মো. সিফায়েতউল্লাহ বিডিনউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করা যাবে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে।

এ বছর আগের নিয়মে অর্থাৎ, পরীক্ষার মাধ্যমে মেডিকেলে ভর্তি হচ্ছে। 

আইএমএফের ৮৪ কোটি ডলার ঋণ স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা

আইএমএফের ৮৪ কোটি ডলার ঋণ স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৮৪ কোটি ডলারের ঋণসহায়তা স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বাতিল এবং ব্যাংকিং খাতে নানা অনিয়মের ঘটনায় এ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সংস্থাটির এই ঋণসুবিধা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে মন্ত্রণালয়। সরকারও উদ্বিগ্ন। সম্প্রসারিত ঋণসহায়তা কর্মসূচির আওতায় আগামী তিন বছরে এই ঋণসুবিধা দেওয়ার কথা। দু’বছরেরও বেশি সময় চেষ্টার পর আইএমএফের পরিচালনা পর্ষদ গত মার্চে ইসিএফের আওতায় বাংলাদেশকে ৯৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করে। গত এপ্রিলে ঋণের প্রথম কিস্তি হিসেবে ১৪ কোটি ডলার পায় বাংলাদেশ। ইসিএফ ঋণের বাকি ৮৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার ছাড়ের অনিশ্চয়তা দূর করতে সম্প্রতি সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সংস্থাটির দেওয়া শর্ত অনুসারে, আর্থিক খাতের সংস্কার ত্বরান্বিত করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে কূটনৈতিক যোগাযোগকে কাজে লাগানোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সংস্থার নেওয়া সিদ্ধান্তে বলা হয়, আর্থিক খাতের সংস্কারসহ বিভিন্ন শর্ত পরিপালনের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে একাধিক কিস্তিতে ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে। জানা গেছে, সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনায় সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল কিছু দিনের মধ্যেই ঢাকা আসবে। ঠিক এই সময়ে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন ও সোনালী ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারিসহ নানা ঘটনায় উদ্বিগ্ন সরকার। উল্লেখ্য, দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা 
সেতু নির্মাণে ১২০ কোটি ডলার ঋণসহায়তা দেওয়ার কথা ছিল বিশ্বব্যাংকের। কিন্তু প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ করে গত ৩০ জুন ঋণচুক্তি বাতিল করে সংস্থাটি। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংস্থার টানাপড়েন চলছে। এদিকে গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঋণ কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল শাখা হলমার্ক নামে একটি অখ্যাত ব্যবসায়ী গ্রুপসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে অনিয়মের মাধ্যমে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। আইএমএফ এ বিষয়গুলোকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা। আর তাতে ঋণের বাকি অর্থ ছাড়করণ স্থগিত হয়ে যেতে পারে। এমন বাস্তবতায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আলোচিত সারসংক্ষেপে বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের (২০১২-১৩) সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় চিহ্নিত নীতি-কৌশল ও করণীয় বিষয়ক এক সারসংক্ষেপে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। সম্প্রতি এই সারসংক্ষেপ অনুমোদন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এই সারসংক্ষেপের অনুমোদিত সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশ দেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সারসংক্ষেপে চলতি বাজেটের অর্থ পদ্মা সেতু প্রকল্পে ব্যবহারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, যাতে উন্নয়ন সহযোগীদের বিষয়টি সাংঘর্ষিক হয়ে না পড়ে। এ ক্ষেত্রে পদ্মা সেতুসহ অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিদ্যুত্ প্রকল্প বাস্তবায়নে আগামী তিন বছরের জন্য সম্পদের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়েছে। 
পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রাখতে তিনটি সুপারিশ করা হয়েছে সারসংক্ষেপে। এর মধ্যে রয়েছে পুঁজিবাজারের সঙ্গে রাজনীতির সম্পৃক্ততা না থাকা, পেশাজীবীদের মাধ্যমে পুঁজিবাজার পরিচালনা ও পুঁজিবাজার বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়ানো।
ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনী প্রস্তাব জাতীয় সংসদে উত্থাপনের সুপারিশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়া আর্থিক খাত সংস্কারের অংশ হিসেবে আর্থিক খাতের পরিচালকদের ওরিয়েন্টেশন ও তাদের জন্য আচরণ বা পথনির্দেশ আইন প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে। আর্থিক খাত সংস্কারের বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত উত্তম মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ঋণশ্রেণীকরণ ও ঋণ প্রভিশনিং, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষায় ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং আইন দ্রুত প্রণয়নের মাধ্যমে রেগুলেটরি কাউন্সিল গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। 
টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ, সভরেন বন্ড ইস্যুর বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রেমিট্যান্স ও প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানো ব্যবস্থা নিতে বলা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। 
সারসংক্ষেপে মুদ্রাস্ফীতি সহনীয় রাখার লক্ষ্যে অনুত্পাদনশীল খাতে ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও রাজস্ব ঘাটতি সহনীয় রাখার তাগিদ দেওয়া হয়। বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে অনুমোদিত ‘প্রতিযোগিতা আইন’-এর বাস্তবায়ন এবং কার্যকর বাজার নজরদারির সুপারিশ করা হয়েছে। 
বৈদেশিক অর্থায়ন বাড়াতে পাইপলাইনে থাকা বৈদেশিক সাহায্য দ্রুত ছাড় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে। আটকে থাকা অর্থ ছাড় করতে ১০ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প নিয়মিত পরীবিক্ষণ করার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট ৫০টি বড় প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে সার্বিক উন্নয়ন করার জন্য অনুন্নয়ন বাজেটের আওতায় ব্যয় সীমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে নতুন দফতর প্রতিষ্ঠা ও নতুন ভাতা প্রচলন না করা এবং বিদ্যমান ভাতার হার না বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। গাড়ি কেনা, ভ্রমণ, লোকবল নিয়োগসহ স্বেচ্ছাধীন খাতে ব্যয় কমিয়ে আনা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার প্রকল্পে জোর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। 
সরকারের ভর্তুকি কমাতে বেশ কিছু নির্দেশ রয়েছে অর্থমন্ত্রীর। সরকারি ভর্তুকি ব্যবস্থাপনার একটি সমন্বিত নীতি-কৌশল নির্ধারণ, বিদ্যুত্ উত্পাদনে দক্ষতা বাড়িয়ে ইউনিটপ্রতি উত্পাদন ব্যয় কমানোর কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্র থেকে বিদ্যুত্ কেনার পরিমাণ কমিয়ে আনা, দক্ষতা বাড়িয়ে জ্বালানি ব্যয় কমানোর কথা বলা হয়েছে। 
এতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে লোকসান কমাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী দু’একটি করপোরেশন সরকারি খাতে রেখে বাকি সব বেসরকারিকরণ করতে হবে। এছাড়া সরকারি সব কোম্পানির ব্যালেন্স শিট পর্যালোচনা করে একটি বার্ষিক প্রতিবেদন অর্থ বিভাগের মনিটরিং সেলের মাধ্যমে অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটিতে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।

নূর চৌধুরীকে ফেরত দেবে না কানাডা



বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে ফেরত দেওয়া অসম্ভব বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সফরে আসা সে দেশের এমপি মাইকেল প্রু। 
কানাডার ইস্ট ইয়র্ক প্রদেশের এ এমপি রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে মিট দ্য প্রেসে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে ফেরত দেওয়া অসম্ভব। কানাডার আইনে কোনো মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিকে এমন কোনো দেশে হস্তান্তর করা যায় না, যে দেশে মৃত্যুদ- আইন রয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকার যদি লিখিতভাবে জানায় যে তাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হবে না, তাহলে এটা কানাডার সরকার বিবেচনা করতে পারে।
প্রু বলেন, নূর চৌধুরী কানাডার স্থায়ী নাগরিক। তিনি কিভাবে নাগরিকত্ব পেয়েছেন এটা সম্পূর্ণ গোপনীয় ব্যাপার। তবে নূর চৌধুরী কানাডার নাগরিকত্ব লাভ করার সময় যদি তার মৃত্যুদ-ের শাস্তির বিষয়টি গোপন করে থাকেন তাহলে তার নাগরিকত্ব বাতিল হতে পারে।
এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নূর চৌধুরীকে তৃতীয় কোনো দেশে, যে দেশে মৃত্যুদ- আইন নেই, সে দেশে হস্তান্তর করা যেতে পারে। তবে কানাডায় এ ধরনের নজির খুব কম।
তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ আইনগত ব্যাপার। ৫০ বছর আগে কানাডায় মৃত্যুদ- আইন ছিল। মানুষই আইন তৈরি করে। দেশের আইনপ্রণেতারা যদি মনে করেন আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন তাহলে তারা করতে পারেন। তবে বর্তমান আইনে এটি অসম্ভব।
প্রু বলেন, আমি শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় যাচ্ছি কমনওয়েলথ কনফারেন্সে যোগ দিতে। নিজ খরচে এখানে এসেছি বাংলাদেশকে জানতে। তিনি বলেন, কানাডায় আমার নির্বাচনী এলাকায় ১০ হাজার বাংলাদেশি বাস করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছ?া প্রকাশ করেন।

ইরাকজুড়ে বোমা বিস্ফোরণে নিহত শতাধিক

ইরাকজুড়ে বোমা বিস্ফোরণে নিহত শতাধিক


ইরাকের পলাতক সুন্নি ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক আল হাশেমির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পরপরই বাগাদাদের শিয়া প্রধান এলাকাগুলোতে ধারাবাহিক বোমা হামলা হয়েছে। এতে রোববার ইরাকজুড়ে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা ১শ’ ছাড়িয়ে গেছে।

চলতি বছরের সবচেয়ে রক্তাক্ত দিনগুলোর একটি ছিল রোববার।

জ্যেষ্ঠ সুন্নি রাজনীতিবিদ হাশেমির দণ্ড ও চলমান সহিংসতার কারণে শিয়া সরকার পরিচালিত ইরাকে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করছে। নয়মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদল ইরাক ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে, সরকারকে সুন্নি বিদ্রোহীদেরও মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

গত ডিসেম্বরে শিয়া প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকির কঠোর সমালোচক হাশেমির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলে তিনি তুরস্কে পালিয়ে যান। ভাইস প্রেসিডেন্ট হাশেমির পলায়নে ইরাকে শিয়া, সুন্নি ও কুর্দিদের মধ্যে সরকারের অংশীদারিত্ব নিয়ে করা চুক্তি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

রোববার আদালতের রায় ঘোষণার পর বাগাদাদের শিয়া প্রধান ছয়টি এলাকায় গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে একটি রেস্তোরাঁ ও একটি ক্যাফে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকায় বিস্ফোরিত আরেকটি বোমার আঘাতে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।

এর আগে একই দিন ইরাকজুড়ে ১১টি বোমা হামলায় আরো অন্তত ৫৮ জন মানুষ নিহত হয়।

মালিকি সরকারের বিরুদ্ধে দেশের বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধীদলীয় সুন্নি নেতাদের দমনচেষ্টার অভিযোগ এনেছেন পলাতক হাশেমি। বিচারে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে আদালতে হাজির হতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। তুরস্ক থেকে সম্ভবত তিনি আর ফিরবেন না।

বিচার বিভাগের মুখপাত্র আব্দুল সাত্তার আল বারকদার জানান, এক নারী আইনজীবী ও এক নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগে হাশেমি ও তার জামাতাকে তাদের অনুপস্থিতে দোষী সব্যস্ত করা হয়েছে।

হাশেমির সুন্নি প্রভাবিত ইরাকিয়া পার্টির সদস্য আইনজীবী জাবের আল জাবেরি আদালতের রায়কে “রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত” বলে উল্লেখ করেছেন।

হাশেমির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে ইরাকজুড়ে ধারাবাহিক কয়েকটি বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় অন্তত ৫৮ জন নিহত হয়। ওই সময় বাগদাদের ৩শ’ কিলোমিটার দক্ষিণে নাসিরিয়া শহরে ফরাসি কনস্যুলার ভবনের বাইরেও একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।


বাগদাদের বাইরে সবচেয়ে মারাত্মক হামলাটি হয় ৩শ’ কিলোমিটার দক্ষিণের আমারা শহরে। এখানে একটি শিয়া মাজারের বাইরে ও একটি বাজারে গাড়িবোমা হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত হয় বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এছাড়া কিরকুক, বাকুবা, সামরা, বসরা ও তুজ খুর্মাতো শহরে আরো কয়েকটি বোমা হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হন। 

‘পালানোর পথ নেই’

‘পালানোর পথ নেই’


ঢাকা, সেপ্টেম্বর ১০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- হলমার্কসহ বর্তমান সরকারের সময় হওয়া ‘সব অর্থ কেলেঙ্কারির’ জবাব অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকেই দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল বলেন, “পুঁজিবাজার, ডেসটিনি, কুইক রেন্টাল পাওয়া প্ল্যান্ট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। হলমার্কের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের অর্থ লুট হয়েছে। পদ্মাসেতু প্রকল্পে ঘটে গেছে বিশাল দুর্নীতি। এসবের জবাব অর্থমন্ত্রীকেই দিতে হবে।’’

“উনি (অর্থমন্ত্রী) বলেছেন, গত ৯ মাস ধরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা তাকে বলতে চাই- বাংলাদেশের উত্তরে পর্বতমালা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর আর তার মাঝে ১৬ কোটি জনগণ। এসব কেলেঙ্কারির জবাব না দিয়ে আপনাকে পালিয়ে যেতে দেয়া হবে না। আপনার সরকারেরও পালানো কোনো পথ নেই”, হুঁশিয়ার করেন ফখরুল।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নিরীক্ষায় সোনালী ব্যাংক থেকে তিন হাজার ৬০৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা সরিয়ে ফেলার তথ্য বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে হলমার্ক গ্রুপ একাই তুলে নেয় দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি।

এই কেলেঙ্কারির ঘটনায় ঘরে বাইরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন অর্থমন্ত্রী মুহিত। ওই অর্থ ‘খুব বেশি নয়’ মন্তব্য করে পরে আবার তা প্রত্যাহারও করেন।

অর্থমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সোমবার একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি গত নয় মাস ধরে দায়িত্ব থেকে ‘পালানোর চেষ্টা’ করলেও পারেননি। তবে পদত্যাগ বা অবসরের ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।

পদত্যাগের দাবি তোলায় রোববার মির্জা ফখরুলেরও সমালোচনা করেন মুহিত। তিনি বলেন, “উনি প্রায়ই অসত্য বক্তব্য দেন। আমি উনাকে খুব বেশি চিনি না। একটু একটু পরিচয় আছে। কিন্তু আমি দেখি, উনার স্টাইলটা এ রকম- অসত্যটা উনি খুব ভাল করে সামনে তুলে ধরেন।”