| ||||||||
|
Saturday, September 8, 2012
ভিসায় শর্ত শিথিল করল ভারত-পাকিস্তান
‘ঘুম নিয়ে সমস্যায় অর্ধেক নারী’
| ||||||||
|
লাক্স-চ্যানেল আই বিজয়ী কুমিল্লার সামিয়া সাঈদ
লাক্স-চ্যানেল আই বিজয়ী কুমিল্লার সামিয়া সাঈদ

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘লিভ বিউটিফুল’ স্লোগানে আয়োজিত ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার ২০১২’ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় হলেন যথাক্রমে ময়মনসিংহের প্রসূন আজাদ ও পাবনার সামিহা হোসেন খান। সেরা পাঁচ-এ অন্য দুই প্রতিযোগী ছিলেন ময়মনসিংহের ফাতিমা তুজ্ জোহরা এবং মানিকগঞ্জের সাদিয়া আনজুমান্দ বানু।
এবারের ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতার বিজয়ী পেয়েছেন একটি নতুন গাড়ি। এ ছাড়া প্রথম রানারআপ পাঁচ লাখ টাকা ও দ্বিতীয় রানারআপ পেয়েছেন তিন লাখ টাকা। চতুর্থ থেকে দশম স্থান পাওয়া প্রতিযোগী প্রত্যেকের জন্য ছিলো এক লাখ টাকা করে। এ ছাড়া রয়েছে অভিনয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক শিক্ষাবৃত্তি ও বিভিন্ন উপহারসামগ্রী।
প্রতিযোগিতায় চূড়ান্ত আসরে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, তৌকীর আহমেদ ও তারিন। তাদের সঙ্গে বিশেষ বিচারক হিসেবে ছিলেন আসাদুজ্জামান নূর ও শাইখ সিরাজ।
বিজয়ীর মাথায় মুকুট পরিয়ে দেন গতবারের ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার’ মাহবুবা ইসলাম। অনুষ্ঠানে চূড়ান্ত বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন ইউনিলিভার বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ডিরেক্টর কে এস এম মিনহাজ, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিলো সেরা ১০ প্রতিযোগীর কোরিওগ্রাফি। তবে শুধু সৌন্দর্যই নয়, মেধা ও যোগ্যতাই যে সৌন্দর্যের প্রধান মাপকাঠি, তা-ও বুঝিয়ে দিলেন প্রতিযোগীরা বিভিন্ন সময়ে বিচারকদের বিচিত্র প্রশ্নের বুদ্ধিদীপ্ত জবাব দিয়ে।
প্রতিযোগিতাটি সম্মিলিতভাবে আয়োজন করেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ, এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউনিকেশনস লি. ও চ্যানেল আই।
দলে দলে ফিরছেন প্রবাসীরা : আমিরাতে সাঁড়াশি অভিযানে বাংলাদেশীদের ধরপাকড়
দলে দলে ফিরছেন প্রবাসীরা : আমিরাতে সাঁড়াশি অভিযানে বাংলাদেশীদের ধরপাকড়

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশীরা ভয়াবহ দুর্দিন কাটাচ্ছেন। এমন আতঙ্ক আর উদ্বেগ অতীতে কখনও ছিল না। বৈধ-অবৈধ বাংলাদেশীসহ বিদেশি শ্রমিকদের ব্যাপক হারে ধরপাকড় চলছে। প্রতিদিনই চলছে সাঁড়াশি অভিযান। কারাগারগুলোতে ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই অবস্থা। প্রতিদিনই শত শত বাংলাদেশীকে ধরে জেলে পুরা হচ্ছে। এ পর্যন্ত কত বাংলাদেশী গ্রেফতার হয়েছেন, তার কোনো হিসাব নেই সরকার বা আমিরাতে নিয়োজিত বাংলাদেশ মিশনের হাতে। তবে কয়েকজন প্রবাসী আমার দেশ-এ ফোন করে জানিয়েছেন, ঈদুল ফিতরের পর থেকে এ পর্যন্ত কম করে হলেও ৫ হাজার বাংলাদেশীকে গ্রেফতারের খবর তারা পেয়েছেন। আকস্মিক এই ধরপাকড়ে বৈধ ও অবৈধভাবে আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসীরা চরম আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন। যাদের বৈধ ভিসা আছে, তাদের অনেকে নির্ধারিত কোম্পানিতে কাজ না করে অন্যত্র কর্মরত থাকায় এখন অবৈধদের মতোই তাদের ধরপাকড়ের মুখে পড়তে হচ্ছে। অন্য দেশের নাগরিকরাও ধরপাকড়ের মুখে পড়ছেন, তবে ৮০ শতাংশই বাংলাদেশী। এক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই পুলিশি অভিযানে অবৈধ শত শত শ্রমিক পুলিশের হাতে ধরা পড়ছেন।
প্রবাসীদের উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে, গ্রেফতার হওয়া শ্রমিকদের কারাগারে আটক রাখার পর দূতাবাস থেকে ট্রাভেল ইস্যু হলে পরে সুযোগমত দেশে পাঠানোর
উদ্দেশ্যে বিমানে তুলে দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ও দুবাইতে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক ধরপাকড় অভিযান চলছে বলে শারজায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকরা জানিয়েছেন।
দুবাই ও উত্তর আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. আবু জাফর গণমাধ্যমকে বলেন, শারজাহ থেকে অবৈধ বাংলাদেশীদের পুলিশ গ্রেফতার করছে। এ এলাকায় অপরাধ বেশি হচ্ছে। তবে এ পর্যন্ত কতজন শ্রমিক পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেলে রয়েছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান না জানিয়ে তিনি বলেন, যারা ধরা পড়ছেন তাদের ব্যাপারে জেল কর্তৃপক্ষ ট্রাভেল পাসের জন্য আমাদের চিঠি লিখছে। আমরা জেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চিঠি পেয়ে ট্রাভেল পাস ইস্যু করছি। এরপরই তাদের জেল থেকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সোমবারও ৭০ জনের নামে ট্রাভেল পাস ইস্যু করেছি। এ কাজ অব্যাহত রয়েছে।গত সপ্তাহে শারজায় পুলিশ হঠাত্ রোলা এরিয়ায় ধরপাকড় অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানে একে একে ধরা পড়তে থাকেন অবৈধ শ্রমিকরা। এ সময় তাদের কারও হাতে ছিল মোবাইল ট্রান্সফার, কারও হাতে ফলমুল, আবার কেউবা করছিলেন হকারি। ধরা পড়ার পরই অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলতে থাকেন, এত টাকা খরচ করে এই দেশে এসেছি। টাকা তো পাঠাতে পারলাম না, এখন খালি হাতেই জেলে আটক থেকে দেশে ফিরতে হবে। কেউ কেউ আবার পুলিশের পা জড়িয়ে ধরেছিলেন। কিন্তু ক্ষুব্ধ পুলিশ এসব শ্রমিকের ব্যাপারে কোনো ধরনের করুণা না দেখিয়ে দু’জন দু’জন করে জড়ো করে শক্ত নাইলনের দড়ি দিয়ে দু’হাত বেঁধে ফেলে। খবর পেয়ে দুবাইয়ের ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এসে তাদের ছবি তুলে নিয়ে যায়। এ সময় লজ্জায় অনেকেই মাথা নিচু করে রাখেন। গ্রেফতার হওয়াদের ৮০ শতাংশই বাংলাদেশী কর্মী।
প্রসঙ্গত, গত মাসে আমিরাত সরকার বাংলাদেশী শ্রমিকদের নামে ভিসা ইস্যু ও নবায়ন বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কী কারণে দেশটির সরকার শুধু বাংলাদেশীদের ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে ব্যাপারে অফিসিয়ালি কোনো সিদ্ধান্ত কেউ জানতে পারছেন না। তবে দেশটির একটি পত্রিকায় সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেয়া হয়, ভিসা দেয়া বন্ধ হয়নি তবে এখন থেকে
তারা ভিসা দেয়ার আগে যাচাই-বাছাই করে দেবে। কিন্তু এ
বিষয়টির সুরাহা হতে না হতেই এবার শুরু হয়ে গেছে গণহারে ধরপাকড় অভিযান।
প্রবাসীদের উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে, গ্রেফতার হওয়া শ্রমিকদের কারাগারে আটক রাখার পর দূতাবাস থেকে ট্রাভেল ইস্যু হলে পরে সুযোগমত দেশে পাঠানোর
উদ্দেশ্যে বিমানে তুলে দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ও দুবাইতে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক ধরপাকড় অভিযান চলছে বলে শারজায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকরা জানিয়েছেন।
দুবাই ও উত্তর আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. আবু জাফর গণমাধ্যমকে বলেন, শারজাহ থেকে অবৈধ বাংলাদেশীদের পুলিশ গ্রেফতার করছে। এ এলাকায় অপরাধ বেশি হচ্ছে। তবে এ পর্যন্ত কতজন শ্রমিক পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেলে রয়েছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান না জানিয়ে তিনি বলেন, যারা ধরা পড়ছেন তাদের ব্যাপারে জেল কর্তৃপক্ষ ট্রাভেল পাসের জন্য আমাদের চিঠি লিখছে। আমরা জেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চিঠি পেয়ে ট্রাভেল পাস ইস্যু করছি। এরপরই তাদের জেল থেকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সোমবারও ৭০ জনের নামে ট্রাভেল পাস ইস্যু করেছি। এ কাজ অব্যাহত রয়েছে।গত সপ্তাহে শারজায় পুলিশ হঠাত্ রোলা এরিয়ায় ধরপাকড় অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানে একে একে ধরা পড়তে থাকেন অবৈধ শ্রমিকরা। এ সময় তাদের কারও হাতে ছিল মোবাইল ট্রান্সফার, কারও হাতে ফলমুল, আবার কেউবা করছিলেন হকারি। ধরা পড়ার পরই অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলতে থাকেন, এত টাকা খরচ করে এই দেশে এসেছি। টাকা তো পাঠাতে পারলাম না, এখন খালি হাতেই জেলে আটক থেকে দেশে ফিরতে হবে। কেউ কেউ আবার পুলিশের পা জড়িয়ে ধরেছিলেন। কিন্তু ক্ষুব্ধ পুলিশ এসব শ্রমিকের ব্যাপারে কোনো ধরনের করুণা না দেখিয়ে দু’জন দু’জন করে জড়ো করে শক্ত নাইলনের দড়ি দিয়ে দু’হাত বেঁধে ফেলে। খবর পেয়ে দুবাইয়ের ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এসে তাদের ছবি তুলে নিয়ে যায়। এ সময় লজ্জায় অনেকেই মাথা নিচু করে রাখেন। গ্রেফতার হওয়াদের ৮০ শতাংশই বাংলাদেশী কর্মী।
প্রসঙ্গত, গত মাসে আমিরাত সরকার বাংলাদেশী শ্রমিকদের নামে ভিসা ইস্যু ও নবায়ন বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কী কারণে দেশটির সরকার শুধু বাংলাদেশীদের ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে ব্যাপারে অফিসিয়ালি কোনো সিদ্ধান্ত কেউ জানতে পারছেন না। তবে দেশটির একটি পত্রিকায় সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেয়া হয়, ভিসা দেয়া বন্ধ হয়নি তবে এখন থেকে
তারা ভিসা দেয়ার আগে যাচাই-বাছাই করে দেবে। কিন্তু এ
বিষয়টির সুরাহা হতে না হতেই এবার শুরু হয়ে গেছে গণহারে ধরপাকড় অভিযান।
গোলটেবিলে ড. আকবর আলি খান : প্রধানমন্ত্রীকে বহাল রেখে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়
গোলটেবিলে ড. আকবর আলি খান : প্রধানমন্ত্রীকে বহাল রেখে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়

প্রধানমন্ত্রী বা বর্তমান সংসদের অধীনে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান। তিনি বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর হাতে এমন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যে তিনি অন্য ১০ জন মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নাকচ করে দিতে পারেন। তাই এত ক্ষমতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকলে তার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। সুপ্রিমকোর্টের অবসরে যাওয়া বিচারপতিদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব দেন তিনি। গতকাল এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজ (সিএসপিএস) ‘দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা : উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শাহ আবদুল হান্নান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প আরও একটি প্রস্তাব দিয়ে আকবর আলি খান বলেন, সুপ্রিমকোর্ট থেকে পাঁচ বা ১০ বছরের মধ্যে অবসরে যাওয়া বিচারপতিদের মধ্য থেকে একজনকে লটারির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচন করা যেতে পারে। অথবা ১৫-২০ জনের একটি তালিকা থেকে উভয়পক্ষের সম্মতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নির্বাচন করা যেতে পারে। এছাড়া আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সর্বশেষ পাঁচ প্রধান বিচারপতিদের মধ্য থেকে যারা উপদেষ্টা হতে রাজি হবেন তারা নির্ধারণ করবেন কে প্রধান উপদেষ্টা হবেন। এটি করতে হলে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে।
ড. আকবর আলি খান বলেন, নির্বাচন কমিশনকে যতই শক্তিশালী করা হোক, বর্তমান সংসদ বহাল থাকলে তাদের পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আবার বর্তমান সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে সরকারি দল ইচ্ছা করলে ৯০ ভাগ আসন পাওয়া সত্ত্বেও ফলাফল বাতিল ঘোষণা করতে পারবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি দলের আরও চারজন এবং বিরোধী দলের থেকে পাঁচজন নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হতে পারে। তবে সরকারি দলের কারা কারা এতে থাকবে তা ঠিক করবে বিরোধী দল। অনুরূপভাবে বিরোধী দলের কোনো পাঁচজন তা ঠিক করবে সরকারি দল।
এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশনের কাছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় দেয়া হলেও ইসির নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা অন্য মন্ত্রণালয়গুলো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সক্ষম হবে না। আকবর আলি খান আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস করা এবং বর্তমানে এটি তুলে দেয়ার সময়ও সংসদে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যবস্থার স্থায়ী কোনো সমাধান হতে পারে না। এ ব্যবস্থায় কত দিন চলবে তা সময় নির্ধারণ না করা ছিল সব চেয়ে বড় ভুল। তিনি বলেন, সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী যদি বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ দিন আগে নির্বাচন দেয়া হয় ও ক্ষমতাসীনরা যদি ১০ শতাংশ আসন পায় এবং জালিয়াতির অভিযোগে ওই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করা হয়, তখন কী হবে? বিদ্যমান সংবিধানে এ সুযোগটি রয়ে গেছে। এটি সংশোধন করতে হবে। এ ছাড়া বর্তমান সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন দিলে সংসদ সদস্যরা অন্যদের চেয়ে কিছু বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবে, যা নির্বাচনে সমান সুযোগ তৈরির পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কেউই আর গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে সংঘাত ছিল, আছে ও থাকবে। তবে গত ৪০ বছরে কোনো অন্যায়, অবিচার টেকেনি। আগামী ৪০ বছরেও পারবে না। বর্তমানে যে সাংবিধানিক জটিলতা দেখা দিয়েছে, এর রাজনৈতিক সমাধান করতে হলে আগে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান রাজনৈতিক উপায়ে করতে হবে। অরাজনৈতিক উপায়ে এটি সমাধানের চিন্তা করা ঠিক হবে না। অরাজনৈতিক কোনো কিছুই বাংলাদেশসহ পৃথিবীর কোথাও টেকসই হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমান। প্রবন্ধে তিনি বলেন, অতীত অভিজ্ঞতা বলে ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতায় থেকে যে নির্বাচন করেন, সেই নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় না। এ জন্য নির্বাচন নিয়ে সরকারি দল ও বিরোধী দলের মধ্যে সঙ্কটাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যমান সঙ্কট নিরসনে নির্দলীয় সরকারের ছয়টি বিকল্প প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। প্রস্তাবগুলো হলো : এক. বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে মহাজোট সরকার পদত্যাগ করবে এবং একটি নির্দলীয় সরকার শুধু তিন মাসের জন্য দায়িত্ব নেবে। দুই. একটি ‘এলডার্স কাউন্সিল’ নির্দলীয় সরকারের দায়িত্ব নেবে, যারা শুধু নির্বাচন পরিচালনা করবে। তিন. একজন সাবেক প্রধান বিচারপতির (অথবা একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তির) নেতৃত্বে সাংবিধানিক পদে অধিকারীদের নিয়ে একটি সরকার। চার. স্পিকারের নেতৃত্বে দুটি বড় দলের পাঁচজন করে নিয়ে একটি সরকার। তবে তারা কেউই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। পাঁচ. যৌথ নেতৃত্বে (একজন বিএনপি ও একজন আওয়ামী লীগের মনোনীত) একটি নির্দলীয় সরকার, যাদের কেউই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এবং সর্বশেষ হচ্ছে রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে একটি সরকার নির্বাচনের আয়োজন করবে।
গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনায় আরও অংশ নেন সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক সচিব এসএম জহরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকুমার বড়ুয়া, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ফেরদৌস আক্তার ওয়াহিদা এমপি, দৈনিক নিউ নেশনের সম্পাদক মোস্তাফা কামাল মজুমদার, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল প্রমুখ।
আবুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ইলিয়াস আলীর গুম হওয়া ছাড়াও প্রতিনিয়তই দেশের অসংখ্য মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে। যাদের খবর আমরা জানি না। দেশে অজ্ঞাত লাশের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায় গেছে, সংবিধান ও আইনের প্রতি মানুষের আস্থা নেই। সুতরাং সব কিছুর আগে জনগণের ও বিরোধী দলের আস্থা ফিরিয়ে আনতে না পারলে দেশ সংঘাতের দিকে যাবে। আলোচনার মাধ্যমে তিনি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচনের দাবি জানান।
মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, বিদেশি সরকার, নাকি জনগণের সরকার নাকি ক্ষমতাসীন দলের সরকার দ্বারা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে জনগণ দ্বিধার মধ্যে রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা করে এ সঙ্কট সমাধান করা দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এছাড়া বৈঠকে বক্তারা বলেন, সরকার যদি ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে চায় তাহলে তারা স্বাভাবিকভাবেই আবার ক্ষমতায় আসার জন্য প্রভাব খাটাবে। এমনকি তারা প্রশাসনিক শক্তি ব্যবহার করে সংঘাতের দিকেও দেশকে ঠেলে দিতে পারে। তা ছাড়া সংসদ সদস্য পদে থেকে এ পদের জন্য নির্বাচন করা সংবিধানের পরিপন্থী। বর্তমান সরকারের অধীনে নয়, বরং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হওয়া দরকার বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজ (সিএসপিএস) ‘দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা : উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শাহ আবদুল হান্নান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প আরও একটি প্রস্তাব দিয়ে আকবর আলি খান বলেন, সুপ্রিমকোর্ট থেকে পাঁচ বা ১০ বছরের মধ্যে অবসরে যাওয়া বিচারপতিদের মধ্য থেকে একজনকে লটারির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচন করা যেতে পারে। অথবা ১৫-২০ জনের একটি তালিকা থেকে উভয়পক্ষের সম্মতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নির্বাচন করা যেতে পারে। এছাড়া আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সর্বশেষ পাঁচ প্রধান বিচারপতিদের মধ্য থেকে যারা উপদেষ্টা হতে রাজি হবেন তারা নির্ধারণ করবেন কে প্রধান উপদেষ্টা হবেন। এটি করতে হলে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে।
ড. আকবর আলি খান বলেন, নির্বাচন কমিশনকে যতই শক্তিশালী করা হোক, বর্তমান সংসদ বহাল থাকলে তাদের পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আবার বর্তমান সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে সরকারি দল ইচ্ছা করলে ৯০ ভাগ আসন পাওয়া সত্ত্বেও ফলাফল বাতিল ঘোষণা করতে পারবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারি দলের আরও চারজন এবং বিরোধী দলের থেকে পাঁচজন নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হতে পারে। তবে সরকারি দলের কারা কারা এতে থাকবে তা ঠিক করবে বিরোধী দল। অনুরূপভাবে বিরোধী দলের কোনো পাঁচজন তা ঠিক করবে সরকারি দল।
এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশনের কাছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় দেয়া হলেও ইসির নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা অন্য মন্ত্রণালয়গুলো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সক্ষম হবে না। আকবর আলি খান আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস করা এবং বর্তমানে এটি তুলে দেয়ার সময়ও সংসদে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যবস্থার স্থায়ী কোনো সমাধান হতে পারে না। এ ব্যবস্থায় কত দিন চলবে তা সময় নির্ধারণ না করা ছিল সব চেয়ে বড় ভুল। তিনি বলেন, সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী যদি বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ দিন আগে নির্বাচন দেয়া হয় ও ক্ষমতাসীনরা যদি ১০ শতাংশ আসন পায় এবং জালিয়াতির অভিযোগে ওই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করা হয়, তখন কী হবে? বিদ্যমান সংবিধানে এ সুযোগটি রয়ে গেছে। এটি সংশোধন করতে হবে। এ ছাড়া বর্তমান সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন দিলে সংসদ সদস্যরা অন্যদের চেয়ে কিছু বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবে, যা নির্বাচনে সমান সুযোগ তৈরির পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কেউই আর গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে সংঘাত ছিল, আছে ও থাকবে। তবে গত ৪০ বছরে কোনো অন্যায়, অবিচার টেকেনি। আগামী ৪০ বছরেও পারবে না। বর্তমানে যে সাংবিধানিক জটিলতা দেখা দিয়েছে, এর রাজনৈতিক সমাধান করতে হলে আগে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান রাজনৈতিক উপায়ে করতে হবে। অরাজনৈতিক উপায়ে এটি সমাধানের চিন্তা করা ঠিক হবে না। অরাজনৈতিক কোনো কিছুই বাংলাদেশসহ পৃথিবীর কোথাও টেকসই হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমান। প্রবন্ধে তিনি বলেন, অতীত অভিজ্ঞতা বলে ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতায় থেকে যে নির্বাচন করেন, সেই নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় না। এ জন্য নির্বাচন নিয়ে সরকারি দল ও বিরোধী দলের মধ্যে সঙ্কটাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যমান সঙ্কট নিরসনে নির্দলীয় সরকারের ছয়টি বিকল্প প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। প্রস্তাবগুলো হলো : এক. বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে মহাজোট সরকার পদত্যাগ করবে এবং একটি নির্দলীয় সরকার শুধু তিন মাসের জন্য দায়িত্ব নেবে। দুই. একটি ‘এলডার্স কাউন্সিল’ নির্দলীয় সরকারের দায়িত্ব নেবে, যারা শুধু নির্বাচন পরিচালনা করবে। তিন. একজন সাবেক প্রধান বিচারপতির (অথবা একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তির) নেতৃত্বে সাংবিধানিক পদে অধিকারীদের নিয়ে একটি সরকার। চার. স্পিকারের নেতৃত্বে দুটি বড় দলের পাঁচজন করে নিয়ে একটি সরকার। তবে তারা কেউই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। পাঁচ. যৌথ নেতৃত্বে (একজন বিএনপি ও একজন আওয়ামী লীগের মনোনীত) একটি নির্দলীয় সরকার, যাদের কেউই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এবং সর্বশেষ হচ্ছে রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে একটি সরকার নির্বাচনের আয়োজন করবে।
গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনায় আরও অংশ নেন সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক সচিব এসএম জহরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকুমার বড়ুয়া, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ফেরদৌস আক্তার ওয়াহিদা এমপি, দৈনিক নিউ নেশনের সম্পাদক মোস্তাফা কামাল মজুমদার, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল প্রমুখ।
আবুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ইলিয়াস আলীর গুম হওয়া ছাড়াও প্রতিনিয়তই দেশের অসংখ্য মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে। যাদের খবর আমরা জানি না। দেশে অজ্ঞাত লাশের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায় গেছে, সংবিধান ও আইনের প্রতি মানুষের আস্থা নেই। সুতরাং সব কিছুর আগে জনগণের ও বিরোধী দলের আস্থা ফিরিয়ে আনতে না পারলে দেশ সংঘাতের দিকে যাবে। আলোচনার মাধ্যমে তিনি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচনের দাবি জানান।
মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, বিদেশি সরকার, নাকি জনগণের সরকার নাকি ক্ষমতাসীন দলের সরকার দ্বারা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে জনগণ দ্বিধার মধ্যে রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা করে এ সঙ্কট সমাধান করা দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এছাড়া বৈঠকে বক্তারা বলেন, সরকার যদি ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে চায় তাহলে তারা স্বাভাবিকভাবেই আবার ক্ষমতায় আসার জন্য প্রভাব খাটাবে। এমনকি তারা প্রশাসনিক শক্তি ব্যবহার করে সংঘাতের দিকেও দেশকে ঠেলে দিতে পারে। তা ছাড়া সংসদ সদস্য পদে থেকে এ পদের জন্য নির্বাচন করা সংবিধানের পরিপন্থী। বর্তমান সরকারের অধীনে নয়, বরং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হওয়া দরকার বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
অসহনীয় গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং : রাজধানীর বাইরে বিদ্যুত্ পরিস্থিতি সবচেয়ে নাজুক
অসহনীয় গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং রাজধানীর বাইরে বিদ্যুত্ পরিস্থিতি সবচেয়ে নাজুক
শুক্রবার টঙ্গী আত-তাকওয়া জামে মসজিদের আসর ও মাগরিব নামাজের আজান এলাকাবাসী শোনেনি। মাইক ছাড়াই আজান দিতে হয়েছে। কারণ বিদ্যুত্ ছিল না। আইপিএস ছিল, কিন্তু জুমার সময় বিদ্যুত্ না থাকায় দীর্ঘ সময় আইপিএস চালাতে গিয়ে সেটিও অচল হয়ে গেছে। নতুন ব্যাটারি কিনতে হবে ২০ হাজার টাকার অধিক মূল্যে। মসজিদের ইমাম এ নিয়ে ছোটাছুটি করছেন কমিটির সভাপতিসহ অন্যদের কাছে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ডেসকোর আওতাভুক্ত টঙ্গীতে চিত্র ছিল এরকম। শুক্র ও শনিবার দিনে-রাতে ওই এলাকায় ৮ থেকে ১০ বার লোডশেডিং করা হয়েছে। এ হচ্ছে নগরচিত্র।
আর গ্রামে? চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের অধিবাসী সারওয়ার আলম জানান, প্রতিদিনই সেখানে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই, যখন তখন বিদ্যুত্ চলে যাচ্ছে। একনাগাড়ে ৬ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্তও বিদ্যুত্হীন থাকার ঘটনাও ঘটছে। সারওয়ার আলম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, তিনি সকালে এক ঘণ্টা ও বিকালে এক ঘণ্টা লোডশেডিং করার জন্য বিদ্যুত্ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন। লোডশেডিংয়ের কষ্টের কথা যাতে ভুলে না যায় সে জন্যই নাকি প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ। প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশ কি শহরের জন্য না গ্রামের জন্য তা আমরা বুঝতে পারছি না। কারণ আমাদের তো দিন-রাতের অধিকাংশ সময় লোডশেডিংয়ের অসহনীয় কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের ব্যাপকতা না কমলেও বিদ্যুত্ বিলের পরিমাণ বেড়েই চলছে। বিদ্যুত্ না থাকার পরও কেন অতিরিক্ত বিল দিতে হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না।
গত দু’দিন ধরে দেশে অসহনীয় গরম পড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুতের মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং। রাজধানীর বাইরে সারাদেশে বিদ্যুত্ পরিস্থিতি টঙ্গী ও চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ এলাকার মতোই। উচ্চমূল্যের জ্বালানি তেলনির্ভর রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুত্ কেন্দ্রের তেল সরবরাহ কমিয়ে দেয়ার ফলে বিদ্যুত্ উত্পাদন কমে এসেছে বলে মনে করেন বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলোতে তেল সরবরাহ করতে গিয়ে সরকারকে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই এখন তেল সরবরাহ কমিয়ে দিতে হচ্ছে। বিদ্যুত্ কেন্দ্রের জন্য তেল আমদানি শতকরা ২২ ভাগ কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ের লোডশেডিং প্রসঙ্গে বিদ্যুত্ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া, বাতি যাবে নিভিয়া।’ এই হচ্ছে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্রগুলোর অবস্থা। সরকার গত সাড়ে তিন বছরে পিডিবির আওতাভুক্ত দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুেকন্দ্রগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার না করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অতিমাত্রায় রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে। এসব বিদ্যুেকন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে তেল সরবরাহ করতে গিয়ে সরকারকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ভর্তুকি দিতে হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী সরকার এসব বিদ্যুেকন্দ্রে তেল সরবরাহ করলে বিদ্যুত্ পাবে। আর তেল সরবরাহ করতে না পারলে বিদ্যুেকন্দ্রগুলোকে উল্টো জরিমানা দেবে। তারা বলেন, এসব বিদ্যুেকন্দ্রের ওপর সরকারের অতিমাত্রার নির্ভরশীলতার কারণে বিদ্যুত্ খাতে বিপর্যয় নেমে আসতে বাধ্য। দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে ও ধাপ পদ্ধতি প্রয়োগসহ নানা উপায়ে মানুষের পকেট কেটেও এসব বিদ্যুেকন্দ্র বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। এতে করে লোডশেডিং আরও বাড়বে বলে মনে করেন তারা।
সরকারি হিসাবেও উত্পাদন কমেছে : বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) দেয়া তথ্য মতে গত ৫ সেপ্টেম্বর পিক আওয়ারে বিদ্যুত্ উত্পাদন হয়েছে ৫ হাজার ৬৪৯ মেগাওয়াট। অথচ ৫ দিন আগে গত ৩১ আগস্ট পিক আওয়ারে ৬ হাজার ১৬৭ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন করা হয়েছে বলে পিডিবিরই ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও পিডিবির এ হিসাবে তাদের নিজেদেরই আস্থা নেই বলে জানিয়েছেন একাধিক কর্মকর্তা। পিডিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা প্রায়ই টাকা খরচ করে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ও গ্রাহকদের মোবাইলে মেসেজ দিয়ে বলি, আজ দেশে যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে ততটুকু বিদ্যুত্ উত্পাদন হয়েছে। অর্থাত্ দেশের কোথাও লোডশেডিং হয়নি। তিনি বলেন, পিডিবির দেয়া এ তথ্য যখন আমি মোবাইলে পড়ছিলাম, তখন আমার এলাকায়ও বিদ্যুত্ ছিল না। যদিও আমরা এটাকে কারিগরি ত্রুটি বলে চালিয়ে দিচ্ছি। প্রকৃত অর্থে দেশে এখন দুই থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
পিডিবির ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বিপিসি থেকে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্রেগুলোর জন্য পিডিবিকে চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহ করতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়েছে। তাছাড়া এসব বিদ্যুেকন্দ্রের জন্য ভর্তুকিজনিত লোকসানের কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পখাতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও রমজান মাসকে সামনে রেখে ভাড়াভিত্তিক যেসব বিদ্যুেকন্দ্র পুরোদমে চালানো হয়েছিল, সেগুলো এখন ঠিকভাবে চালানো যাচ্ছে না। এসব কারণেই লোডশেডিং কিছুটা বেড়েছে বলে জানান তিনি।
গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ : ৫-৬ দফা দাম বৃদ্ধি ও বিলে ধাপ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে গত সাড়ে তিন বছরে বিদ্যুতের দাম তিনগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যে গ্রাহক আগে বিদ্যুত্ বিল দিতেন ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা। এখন ওই গ্রাহক একই পরিমাণ বিদ্যুত্ ব্যবহার করে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা বিল পরিশোধ করছেন। এর ওপর আবার চলছে অসহনীয় লোডশেডিং। গত দু’দিন ধরে তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে লোডশেডিং। এ নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার অধিবাসীরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রাজধানীতে দিনে ৪-৫ বার বিদ্যুত্ আসা-যাওয়া করলেও গ্রামাঞ্চলের অবস্থা খুবই করুণ বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের অসহনীয় যন্ত্রণার শিকার গোলাপবাগ এলাকার গৃহবধূ রহিমা বেগম টেলিফোনে আমার দেশ-কে জানান, রোজার মাস থেকে শুরু করে মাঝখানে কয়েকদিন বিদ্যুত্ পরিস্থিতি ভালোই ছিল। তবে এখন অবস্থা সেই ৬ মাস আগের মতোই। প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা প্রতিদিনই হাজার হাজার মেগাওয়াটের হিসাব দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীও কিছুদিন আগে বলেছেন, দিনে দুই ঘণ্টা বিদ্যুত্ থাকবে না, বিদ্যুত্ না থাকার কষ্ট বোঝার জন্য। এখন দেখি গরমের মধ্যে ৭-৮ ঘণ্টাই কষ্ট করতে হয়।
রাজধানীর বংশাল এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল মতিন জানান, যদি কষ্টই করতে হয় তাহলে আমরা কেন তিনগুণ বেশি দামে বিদ্যুত্ কিনছি। বিদ্যুত্ দিতে পারছে না, অথচ কয়েকদিন পরপরই নানা বাহানা দিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। তিনি বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এখন ধাপ পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিল ডাবল করে দেয়া হয়েছে। সরকার মূলত আমাদের জনগণের সঙ্গে তামাশা শুরু করে দিয়েছে। এগুলো স্রেফ ফাজলামো ছাড়া আর কিছুই না- এই বলে ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি।
কাঁঠালবাগান এলাকার বাসিন্দা শামসুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে ৫-৬ বার লোডশেডিং হয়। একবার বিদ্যুত্ চলে গেলে এক ঘণ্টা পর বিদ্যুত্ আসার কথা থাকলেও বিদ্যুত্ আসে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পরে। এমনকি সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারেও লোডশেডিং হয়েছে কয়েক দফায়। বিদ্যুত্ চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেনারেটর চালু করায় এলাকায় সৃষ্টি হয় ব্যাপক শব্দদূষণ।
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জের সারওয়ার আলম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন- সাধারণ মানুষ যাতে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণার কথা ভুলে না যায় সেজন্য প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেয়া হবে। তার অর্থ হচ্ছে, এখন আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুত্ উত্পাদন হচ্ছে শুধু প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা পূরণে দৈনিক ২ ঘণ্টা লোডশেডিং হবে। যদি প্রধানমন্ত্রীর এ ইচ্ছা পূরণের জন্য শুধু ২ ঘণ্টা লোডশেডিং হতো তাতে আমরা বরং খুশিই হতাম। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের এলাকায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুত্ থাকে না। কখনো কখনো লাগাতার ১৫ ঘন্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হয় আমাদের এলাকায়। তিনি বলেন, সরকার একদিকে নানা অজুহাতে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। আবার ঠিকমত বিদ্যুত্ও দিচ্ছে না।
লোডশেডিং আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা : লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও তীব্র হবে বলে মনে করছেন বিদ্যুত্ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। বিদ্যুত্ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, লোডশেডিং আরও বাড়বে, এতে সন্দেহ নেই। কারণ সাড়ে তিন বছর আগে বিদ্যুত্ খাত নিয়ে সরকারের গ্রহণ করা পরিকল্পনা সঠিক ছিল না। ওই সময় অনেক ভাড়াভিত্তিক জ্বালানি তেলনির্ভর বিদ্যুেকন্দ্রের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। স্থায়ী পরিকল্পনা নেয়ার পরিবর্তে এসব রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের ওপর সরকার অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আর্থিক সঙ্কটের কারণে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্রগুলো সব সময় চালিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। অপরদিকে দীর্ঘমেয়াদি যেসব বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তার কোনোটাই আগামী তিন থেকে চার বছরের আগে আসবে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের লোডশেডিং বাড়ছে।
পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক ও বিদ্যুত্ বিশেষজ্ঞ বিডি রহমত উল্লাহ বলেছেন, সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির ফসল হচ্ছে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল। শুধু রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের কারণেই বিদ্যুত্ ও জ্বালানি খাতে সরকারকে ৩৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি ভর্তুকি দিতে হয়েছে। এরমধ্যে কমপক্ষে ২৮ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। তিনি বলেন, অবৈধ ও বেআইনিভাবে গড়ে উঠা এসব বিদ্যুেকন্দ্রের অধিকাংশ যন্ত্রপাতিই পরিত্যক্ত ও পুরনো। এগুলোর কোনোটাই শতভাগ চালানোর মতো নয়। ফলে যে বিদ্যুেকন্দ্রের মাধ্যমে একশ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন হওয়ার কথা সেটা এখন ত্রিশ মেগাওয়াটে নেমে এসেছে।
রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের জ্বালানি ব্যয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্যাসভিত্তিক একটি বিদ্যুেকন্দ্রের মাধ্যমে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুত্ উত্পাদন খরচ পড়ে ১ টাকা সত্তর পয়সা থেকে দুই টাকার মতো। অথচ তেলভিত্তিক একটি কেন্দ্রের মাধ্যমে সেই বিদ্যুতের উত্পাদন খরচ পড়ে ১৪ থেকে ১৬ টাকা। কাজেই জনগণের পকেট কেটে নিয়েও এ ভর্তুকি পূরণ করা সম্ভব নয়। ফলে এসব বিদ্যুেকন্দ্রের অবস্থা হচ্ছে, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া, বাতি যাবে নিভিয়া’র মতো অবস্থা। এসব কারণে সামনের দিনগুলোতে লোডশেডিং আরও তীব্র হবে বলে মনে করেন তিনি।
আর গ্রামে? চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের অধিবাসী সারওয়ার আলম জানান, প্রতিদিনই সেখানে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই, যখন তখন বিদ্যুত্ চলে যাচ্ছে। একনাগাড়ে ৬ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্তও বিদ্যুত্হীন থাকার ঘটনাও ঘটছে। সারওয়ার আলম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, তিনি সকালে এক ঘণ্টা ও বিকালে এক ঘণ্টা লোডশেডিং করার জন্য বিদ্যুত্ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন। লোডশেডিংয়ের কষ্টের কথা যাতে ভুলে না যায় সে জন্যই নাকি প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ। প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশ কি শহরের জন্য না গ্রামের জন্য তা আমরা বুঝতে পারছি না। কারণ আমাদের তো দিন-রাতের অধিকাংশ সময় লোডশেডিংয়ের অসহনীয় কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের ব্যাপকতা না কমলেও বিদ্যুত্ বিলের পরিমাণ বেড়েই চলছে। বিদ্যুত্ না থাকার পরও কেন অতিরিক্ত বিল দিতে হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না।
গত দু’দিন ধরে দেশে অসহনীয় গরম পড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুতের মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং। রাজধানীর বাইরে সারাদেশে বিদ্যুত্ পরিস্থিতি টঙ্গী ও চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ এলাকার মতোই। উচ্চমূল্যের জ্বালানি তেলনির্ভর রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুত্ কেন্দ্রের তেল সরবরাহ কমিয়ে দেয়ার ফলে বিদ্যুত্ উত্পাদন কমে এসেছে বলে মনে করেন বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলোতে তেল সরবরাহ করতে গিয়ে সরকারকে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই এখন তেল সরবরাহ কমিয়ে দিতে হচ্ছে। বিদ্যুত্ কেন্দ্রের জন্য তেল আমদানি শতকরা ২২ ভাগ কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ের লোডশেডিং প্রসঙ্গে বিদ্যুত্ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া, বাতি যাবে নিভিয়া।’ এই হচ্ছে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্রগুলোর অবস্থা। সরকার গত সাড়ে তিন বছরে পিডিবির আওতাভুক্ত দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুেকন্দ্রগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার না করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অতিমাত্রায় রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে। এসব বিদ্যুেকন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে তেল সরবরাহ করতে গিয়ে সরকারকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ভর্তুকি দিতে হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী সরকার এসব বিদ্যুেকন্দ্রে তেল সরবরাহ করলে বিদ্যুত্ পাবে। আর তেল সরবরাহ করতে না পারলে বিদ্যুেকন্দ্রগুলোকে উল্টো জরিমানা দেবে। তারা বলেন, এসব বিদ্যুেকন্দ্রের ওপর সরকারের অতিমাত্রার নির্ভরশীলতার কারণে বিদ্যুত্ খাতে বিপর্যয় নেমে আসতে বাধ্য। দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে ও ধাপ পদ্ধতি প্রয়োগসহ নানা উপায়ে মানুষের পকেট কেটেও এসব বিদ্যুেকন্দ্র বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। এতে করে লোডশেডিং আরও বাড়বে বলে মনে করেন তারা।
সরকারি হিসাবেও উত্পাদন কমেছে : বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) দেয়া তথ্য মতে গত ৫ সেপ্টেম্বর পিক আওয়ারে বিদ্যুত্ উত্পাদন হয়েছে ৫ হাজার ৬৪৯ মেগাওয়াট। অথচ ৫ দিন আগে গত ৩১ আগস্ট পিক আওয়ারে ৬ হাজার ১৬৭ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন করা হয়েছে বলে পিডিবিরই ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও পিডিবির এ হিসাবে তাদের নিজেদেরই আস্থা নেই বলে জানিয়েছেন একাধিক কর্মকর্তা। পিডিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা প্রায়ই টাকা খরচ করে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ও গ্রাহকদের মোবাইলে মেসেজ দিয়ে বলি, আজ দেশে যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে ততটুকু বিদ্যুত্ উত্পাদন হয়েছে। অর্থাত্ দেশের কোথাও লোডশেডিং হয়নি। তিনি বলেন, পিডিবির দেয়া এ তথ্য যখন আমি মোবাইলে পড়ছিলাম, তখন আমার এলাকায়ও বিদ্যুত্ ছিল না। যদিও আমরা এটাকে কারিগরি ত্রুটি বলে চালিয়ে দিচ্ছি। প্রকৃত অর্থে দেশে এখন দুই থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
পিডিবির ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বিপিসি থেকে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্রেগুলোর জন্য পিডিবিকে চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহ করতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়েছে। তাছাড়া এসব বিদ্যুেকন্দ্রের জন্য ভর্তুকিজনিত লোকসানের কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পখাতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও রমজান মাসকে সামনে রেখে ভাড়াভিত্তিক যেসব বিদ্যুেকন্দ্র পুরোদমে চালানো হয়েছিল, সেগুলো এখন ঠিকভাবে চালানো যাচ্ছে না। এসব কারণেই লোডশেডিং কিছুটা বেড়েছে বলে জানান তিনি।
গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ : ৫-৬ দফা দাম বৃদ্ধি ও বিলে ধাপ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে গত সাড়ে তিন বছরে বিদ্যুতের দাম তিনগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যে গ্রাহক আগে বিদ্যুত্ বিল দিতেন ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা। এখন ওই গ্রাহক একই পরিমাণ বিদ্যুত্ ব্যবহার করে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা বিল পরিশোধ করছেন। এর ওপর আবার চলছে অসহনীয় লোডশেডিং। গত দু’দিন ধরে তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে লোডশেডিং। এ নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার অধিবাসীরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রাজধানীতে দিনে ৪-৫ বার বিদ্যুত্ আসা-যাওয়া করলেও গ্রামাঞ্চলের অবস্থা খুবই করুণ বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের অসহনীয় যন্ত্রণার শিকার গোলাপবাগ এলাকার গৃহবধূ রহিমা বেগম টেলিফোনে আমার দেশ-কে জানান, রোজার মাস থেকে শুরু করে মাঝখানে কয়েকদিন বিদ্যুত্ পরিস্থিতি ভালোই ছিল। তবে এখন অবস্থা সেই ৬ মাস আগের মতোই। প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা প্রতিদিনই হাজার হাজার মেগাওয়াটের হিসাব দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীও কিছুদিন আগে বলেছেন, দিনে দুই ঘণ্টা বিদ্যুত্ থাকবে না, বিদ্যুত্ না থাকার কষ্ট বোঝার জন্য। এখন দেখি গরমের মধ্যে ৭-৮ ঘণ্টাই কষ্ট করতে হয়।
রাজধানীর বংশাল এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল মতিন জানান, যদি কষ্টই করতে হয় তাহলে আমরা কেন তিনগুণ বেশি দামে বিদ্যুত্ কিনছি। বিদ্যুত্ দিতে পারছে না, অথচ কয়েকদিন পরপরই নানা বাহানা দিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। তিনি বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এখন ধাপ পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিল ডাবল করে দেয়া হয়েছে। সরকার মূলত আমাদের জনগণের সঙ্গে তামাশা শুরু করে দিয়েছে। এগুলো স্রেফ ফাজলামো ছাড়া আর কিছুই না- এই বলে ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি।
কাঁঠালবাগান এলাকার বাসিন্দা শামসুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে ৫-৬ বার লোডশেডিং হয়। একবার বিদ্যুত্ চলে গেলে এক ঘণ্টা পর বিদ্যুত্ আসার কথা থাকলেও বিদ্যুত্ আসে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পরে। এমনকি সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারেও লোডশেডিং হয়েছে কয়েক দফায়। বিদ্যুত্ চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেনারেটর চালু করায় এলাকায় সৃষ্টি হয় ব্যাপক শব্দদূষণ।
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জের সারওয়ার আলম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন- সাধারণ মানুষ যাতে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণার কথা ভুলে না যায় সেজন্য প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেয়া হবে। তার অর্থ হচ্ছে, এখন আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুত্ উত্পাদন হচ্ছে শুধু প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা পূরণে দৈনিক ২ ঘণ্টা লোডশেডিং হবে। যদি প্রধানমন্ত্রীর এ ইচ্ছা পূরণের জন্য শুধু ২ ঘণ্টা লোডশেডিং হতো তাতে আমরা বরং খুশিই হতাম। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের এলাকায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুত্ থাকে না। কখনো কখনো লাগাতার ১৫ ঘন্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হয় আমাদের এলাকায়। তিনি বলেন, সরকার একদিকে নানা অজুহাতে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। আবার ঠিকমত বিদ্যুত্ও দিচ্ছে না।
লোডশেডিং আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা : লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও তীব্র হবে বলে মনে করছেন বিদ্যুত্ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। বিদ্যুত্ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, লোডশেডিং আরও বাড়বে, এতে সন্দেহ নেই। কারণ সাড়ে তিন বছর আগে বিদ্যুত্ খাত নিয়ে সরকারের গ্রহণ করা পরিকল্পনা সঠিক ছিল না। ওই সময় অনেক ভাড়াভিত্তিক জ্বালানি তেলনির্ভর বিদ্যুেকন্দ্রের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। স্থায়ী পরিকল্পনা নেয়ার পরিবর্তে এসব রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের ওপর সরকার অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আর্থিক সঙ্কটের কারণে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুেকন্দ্রগুলো সব সময় চালিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। অপরদিকে দীর্ঘমেয়াদি যেসব বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তার কোনোটাই আগামী তিন থেকে চার বছরের আগে আসবে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের লোডশেডিং বাড়ছে।
পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক ও বিদ্যুত্ বিশেষজ্ঞ বিডি রহমত উল্লাহ বলেছেন, সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির ফসল হচ্ছে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল। শুধু রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের কারণেই বিদ্যুত্ ও জ্বালানি খাতে সরকারকে ৩৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি ভর্তুকি দিতে হয়েছে। এরমধ্যে কমপক্ষে ২৮ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। তিনি বলেন, অবৈধ ও বেআইনিভাবে গড়ে উঠা এসব বিদ্যুেকন্দ্রের অধিকাংশ যন্ত্রপাতিই পরিত্যক্ত ও পুরনো। এগুলোর কোনোটাই শতভাগ চালানোর মতো নয়। ফলে যে বিদ্যুেকন্দ্রের মাধ্যমে একশ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন হওয়ার কথা সেটা এখন ত্রিশ মেগাওয়াটে নেমে এসেছে।
রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের জ্বালানি ব্যয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্যাসভিত্তিক একটি বিদ্যুেকন্দ্রের মাধ্যমে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুত্ উত্পাদন খরচ পড়ে ১ টাকা সত্তর পয়সা থেকে দুই টাকার মতো। অথচ তেলভিত্তিক একটি কেন্দ্রের মাধ্যমে সেই বিদ্যুতের উত্পাদন খরচ পড়ে ১৪ থেকে ১৬ টাকা। কাজেই জনগণের পকেট কেটে নিয়েও এ ভর্তুকি পূরণ করা সম্ভব নয়। ফলে এসব বিদ্যুেকন্দ্রের অবস্থা হচ্ছে, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া, বাতি যাবে নিভিয়া’র মতো অবস্থা। এসব কারণে সামনের দিনগুলোতে লোডশেডিং আরও তীব্র হবে বলে মনে করেন তিনি।
আপনার বাচ্ছা যখন হাতে একটি ফুল পায় তখন কতটা আনন্দিত হয় নিশ্চই আপনি তা জানেন!!
ছবির এই বাচ্ছাটির হাতেও অনেক ফুল! কিন্তু বাচ্ছাটির মুখে এতটুকু হাসি নেই কেন জানেন???বাচ্ছাটি এতদিনে বুঝে গেছে এই ফুল তার না!! কিছুক্ষনের মধ্যেই অন্যের হাতে তুলে দিতে হবে জীবন বাঁচাতে!! কয়টি টাকা সংগ্রহ করতে হবে শুধু দু মুঠো অন্নের জন্য!! এ কারনেই ফুল হাতে পেয়েও তার নেই এতটুকু অনুভূতি!! আছে শুধুই আতংক!! কখন না জানি
ছবির এই বাচ্ছাটির হাতেও অনেক ফুল! কিন্তু বাচ্ছাটির মুখে এতটুকু হাসি নেই কেন জানেন???বাচ্ছাটি এতদিনে বুঝে গেছে এই ফুল তার না!! কিছুক্ষনের মধ্যেই অন্যের হাতে তুলে দিতে হবে জীবন বাঁচাতে!! কয়টি টাকা সংগ্রহ করতে হবে শুধু দু মুঠো অন্নের জন্য!! এ কারনেই ফুল হাতে পেয়েও তার নেই এতটুকু অনুভূতি!! আছে শুধুই আতংক!! কখন না জানি
ব্যতিক্রমী উদযাপন
| ||||||||
|
মতলব উত্তরে বাফুফে’র খেলোয়াড় বাছাই
মতলব উত্তরে বাফুফে’র খেলোয়াড় বাছাই

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন তৃণমূল পর্যায় থেকে ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে খেলোয়াড় বাছাই কার্যক্রম শুরু করেছে| গতকাল মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত খেলোয়াড়দের মাঝ থেকে অনূর্ধ্ব-১৪ ও অনূর্ধ্ব-১৮ দলের ১০ জনকে বাছাই করা হয়| বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)-এর কোচ, খেলোয়াড় নির্বাচক ও সাবেক ফুটবলার মোহাম্মদ মাহমুদ আলম পুলক সিলেট ফুটবল একাডেমীর জন্য খেলোয়াড় বাছাই করেন| এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের সাবেক ফুটবলার আনোয়ার হোসেন, বোরহান খান ও জাহাঙ্গীর গাজী, মতলব উত্তর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ফুটবলার একেএম আজাদ, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক রেফায়েত উল্ল্যাহ দর্জি, ফুটবলার শরীফুল ইসলাম, আশেক মাহমুদ সংগ্রাম ও রাজীব|
অনূর্ধ্ব-১৮ দলে যারা মনোনীত হয় তারা হলো ঃ মেহেদী শুভ, মাহবুবুল হক বাবু, মিন্টু, বাঁধন, রনি ও অপেক্ষমান হিসেবে গোলকিপার জসিম| অনূর্ধ্ব-১৪ দলে ইমরান, কাউছার, নবীন ও রাকিবকে মনোনীত করা হয়|
অনূর্ধ্ব-১৮ দলে যারা মনোনীত হয় তারা হলো ঃ মেহেদী শুভ, মাহবুবুল হক বাবু, মিন্টু, বাঁধন, রনি ও অপেক্ষমান হিসেবে গোলকিপার জসিম| অনূর্ধ্ব-১৪ দলে ইমরান, কাউছার, নবীন ও রাকিবকে মনোনীত করা হয়|
‘কঠোর কীভাবে হতে হয়, জানা আছে’
| ||||||||||
|
ইকনোমিস্টের প্রতিবেদন বাংলাদেশে কোনো নির্বাচিত সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ী হয়নি
ইকনোমিস্টের প্রতিবেদন
বাংলাদেশে কোনো নির্বাচিত সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ী হয়নি
বাংলাদেশে চীনের বড় বিনিয়োগ ঠেকাতে তৎপর ভারত; পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে আনার আগে ইউনূসকে শায়েস্তা করা হবে; পদ্মা সেতু এখন পানসে সরকারের কাছে
লন্ডন থেকে প্রকাশিত বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ইকনোমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে কোনো নির্বাচিত সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ী হয়নি। সে হিসেবে আগামী নির্বাচনে বিএনপির ক্ষমতা গ্রহণ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে ‘এই সম্ভাবনাই বাস্তব’ (দ্যাট প্রসপেক্ট ইজ রিয়্যাল)।
গতকাল প্রকাশিত ইকনোমিস্টের চলতি সংখ্যায় বাংলাদেশের পদ্মা সেতু বিষয়ে ‘ট্রাবল্ড ওয়াটারস, এ ফরেন ফান্ডেড ব্রিজ ইস হস্টেজ টু মার্কি লোকাল পলিটিক্স’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে পদ্মা সেতু এখন যথেষ্ট পানসে হয়ে গেছে। কারণ নির্বাচিনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৩ সালের আগে তারা এটি আর নির্মাণ করতে পারবে না। আবার শেখ হাসিনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি যদি আগামী নির্বাচনে ক্ষমতা গ্রহণ করে এবং পদ্মা সেতুর কৃতিত্ব নিজেদের ব্যাগে ভরে তা হলে সেটা হবে আওয়ামী লীগের জন্য আরো বেদনাদায়ক।
এরপর ইকনোমিস্টের প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘এই প্রত্যাশাই বাস্তব : বাংলাদেশে কোনো নির্বাচিত সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনে জয়ী হয়নি। সুতরাং পরিশেষে এখন আর এ বিষয়ে শেখ হাসিনার কোনো জোরালো আগ্রহ নেই বিশ্বব্যাংকে প্রশমিত করার বিষয়ে। তবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থের দিকটি ভিন্ন কথা।’
‘ঘোলা পানি, অন্ধকার স্থানীয় রাজনীতির কবলে বিদেশী অর্থায়নের একটি ব্রিজ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, চীনের রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট কোনো কোম্পানি পদ্মা সেতু বিনিয়োগ প্রকল্প ছিনিয়ে নিক কোনো পশ্চিমা সরকার তা চায় না (শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের বন্দর নির্মাণের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে)। পাশের এ দেশটির অর্থনীতির ক্ষেত্রে চীন যাতে বড় রকমের কোনো ভূমিকা পালন করতে না পারে সে জন্য ভারত সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
ইকনোমিস্টের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে আনতে রাজি হতে পারে। তবে তার আগে তারা তাদের মনের শত্রু প্রফেসর ইউনূসকে শায়েস্তা করবে।
প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, শেখ হাসিনা বলেছেন বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের কাছে ভিক্ষা মাগবে না। বাংলাদেশের নিজস্ব সম্পদে সেতু নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশের জাতীয় মর্যাদা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেÑ এমন অনুভূতি জাগিয়ে তুলছে এ অকার্যকর ধারণা। তাই সেতুর অর্থ জোগানোর জন্য সরকার কর আরোপের চিন্তা করছে।
শেখ হাসিনার এ চিন্তার একমাত্র প্রকাশ্য বিরোধী হলেন অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত, যিনি একসময় বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। মুহিত এমনপর্যায়ের নেতা যার প্রধানমন্ত্রীকে ‘বড় বোন’ সম্বোধনের প্রয়োজন হয় না। তিনি জানেন, এ কাজে বাংলাদেশের বহুপক্ষীয় সংস্থার সহায়তা দরকার। এ বছরের শুরুতে আইএমএফ এক বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়ে সমস্যা উত্তরণে সহায়তা করেছে সরকারকে। বাংলাদেশে যেসব প্রকল্প রয়েছে তার বিরাট অংশ বিদেশী সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এ সহায়তা ছাড়া এসব প্রকল্প চলবে না। ব্যাংক ছাড়া কোনো ব্রিজ হতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দাতাগোষ্ঠীর স্বপ্নের ফসল হলো পদ্মা সেতু। এ সেতু হলে বাংলাদেশের তিন কোটি জন-অধ্যুষিত পশ্চাৎপদ দণি-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে রাজধানীর বিচ্ছিন্ন অবস্থার অবসান হবে। পদ্মার বিশাল পানিরাশির কারণে রাজধানীসহ গোটা দেশের সাথে বর্তমানে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে পুরো দণি-পশ্চিমাঞ্চল। বিচ্ছিন্ন এই দণি-পশ্চিমাঞ্চলের এক দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবেড়া এবং দক্ষিণে সুন্দরবন যেখানে রয়েছে বাঘের বসতি। প্রস্তাবিত ৬ কিলোমিটার (৩.৮ মাইল) লম্বা এই সেতু ভারতের জন্যও একটি প্রবেশদ্বার হতে পারে। এ সেতু ঢাকা-কলকাতার সাথে সংযোগ স্থাপন করবে। এমনকি বাংলাদেশ-মিয়ানমার হয়ে দণি এশিয়ার সাথে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধের যে উচ্চাকাক্সা তা পূরণেও ভূমিকা পালন করবে, যা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ভৌগোলিক দিক থেকে। এ সেতু নির্মিত হলে বাংলাদেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১.২ শতাংশ হারে বেড়ে যাবে বলে হিসাব করা হয়েছে।
ইকনোমিস্টের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, রাজধানী থেকে ৪০ কিলোমিটার দণি-পশ্চিমে নির্মিতব্য পরিকল্পিত এই সেতুতে চারটি যানবাহন লেন রাখা হয়েছে। যার মধ্যে রেল এবং গ্যাস পাইপলাইনও রয়েছে। পদ্মার জটিল পানিপ্রবাহের ধারা অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু হায়, পাঁচ কিলোমিটার প্রশস্ত এই পদ্মার পানি নিয়ন্ত্রণ করা যত না কঠিন তার চেয়ে বেশি কঠিন এ প্রকল্প থেকে রাজনীতিবিদদের হস্ত সরিয়ে নেয়া।
বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত জুনে বিশ্বব্যাংক ১.২ বিলিয়ন ডলার ঋণচুক্তি বাতিল করেছে। পদ্মা সেতু দুর্নীতির সাথে জড়িত অনেক কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করেছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের দৃষ্টিতে প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান এর সাথে জড়িত বলে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে রিপোর্ট করেছে। ড. মসিউর বলেছেন, তিনি কোনো অপরাধ করেননি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেই কেবল তিনি পদত্যাগ করবেন। মসিউর রহমানের কেস বাদ দিন। বাংলাদেশে দায়মুক্তির সংস্কৃতি চালু আছে। দুর্নীতির কারণে এ দেশে একজন মাত্র প্রবীণ রাজনীতিকের জেল হয়েছে এবং তিনি হলেন সাবেক এক স্বৈরশাসক।
বাংলাদেশ সরকারের জন্য উল্লাস বয়ে আনার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের চেয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক অধিক প্রস্তুত হয়ে আছে। তারা প্রকল্পটি পুনরায় শুরুর ব্যাপারে আগ্রহী। এ প্রকল্পের আরেকটি বড় অংশীদার জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশনের (জাইকা) মতো তারাও দরজা খোলা রেখেছে। যা হোক, এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে আনতে হলে বাংলাদেশ সরকারের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তাকে পদত্যাগ করতে হবে। সম্ভবত সরকার টেবিলে ফিরে আসবে। কিন্তু তার আগে সরকারের ধারণামতে এর প্রধান শত্রুকে শায়েস্তা করা হবে। পদ্মা সেতু থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে দাঁড়ানোর পেছনে ুদ্রঋণের জনক নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়ী করেছেন
লন্ডন থেকে প্রকাশিত বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ইকনোমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে কোনো নির্বাচিত সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ী হয়নি। সে হিসেবে আগামী নির্বাচনে বিএনপির ক্ষমতা গ্রহণ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে ‘এই সম্ভাবনাই বাস্তব’ (দ্যাট প্রসপেক্ট ইজ রিয়্যাল)।
গতকাল প্রকাশিত ইকনোমিস্টের চলতি সংখ্যায় বাংলাদেশের পদ্মা সেতু বিষয়ে ‘ট্রাবল্ড ওয়াটারস, এ ফরেন ফান্ডেড ব্রিজ ইস হস্টেজ টু মার্কি লোকাল পলিটিক্স’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে পদ্মা সেতু এখন যথেষ্ট পানসে হয়ে গেছে। কারণ নির্বাচিনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৩ সালের আগে তারা এটি আর নির্মাণ করতে পারবে না। আবার শেখ হাসিনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি যদি আগামী নির্বাচনে ক্ষমতা গ্রহণ করে এবং পদ্মা সেতুর কৃতিত্ব নিজেদের ব্যাগে ভরে তা হলে সেটা হবে আওয়ামী লীগের জন্য আরো বেদনাদায়ক।
এরপর ইকনোমিস্টের প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘এই প্রত্যাশাই বাস্তব : বাংলাদেশে কোনো নির্বাচিত সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনে জয়ী হয়নি। সুতরাং পরিশেষে এখন আর এ বিষয়ে শেখ হাসিনার কোনো জোরালো আগ্রহ নেই বিশ্বব্যাংকে প্রশমিত করার বিষয়ে। তবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থের দিকটি ভিন্ন কথা।’
‘ঘোলা পানি, অন্ধকার স্থানীয় রাজনীতির কবলে বিদেশী অর্থায়নের একটি ব্রিজ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, চীনের রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট কোনো কোম্পানি পদ্মা সেতু বিনিয়োগ প্রকল্প ছিনিয়ে নিক কোনো পশ্চিমা সরকার তা চায় না (শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের বন্দর নির্মাণের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে)। পাশের এ দেশটির অর্থনীতির ক্ষেত্রে চীন যাতে বড় রকমের কোনো ভূমিকা পালন করতে না পারে সে জন্য ভারত সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
ইকনোমিস্টের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে আনতে রাজি হতে পারে। তবে তার আগে তারা তাদের মনের শত্রু প্রফেসর ইউনূসকে শায়েস্তা করবে।
প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, শেখ হাসিনা বলেছেন বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের কাছে ভিক্ষা মাগবে না। বাংলাদেশের নিজস্ব সম্পদে সেতু নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশের জাতীয় মর্যাদা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেÑ এমন অনুভূতি জাগিয়ে তুলছে এ অকার্যকর ধারণা। তাই সেতুর অর্থ জোগানোর জন্য সরকার কর আরোপের চিন্তা করছে।
শেখ হাসিনার এ চিন্তার একমাত্র প্রকাশ্য বিরোধী হলেন অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত, যিনি একসময় বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। মুহিত এমনপর্যায়ের নেতা যার প্রধানমন্ত্রীকে ‘বড় বোন’ সম্বোধনের প্রয়োজন হয় না। তিনি জানেন, এ কাজে বাংলাদেশের বহুপক্ষীয় সংস্থার সহায়তা দরকার। এ বছরের শুরুতে আইএমএফ এক বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়ে সমস্যা উত্তরণে সহায়তা করেছে সরকারকে। বাংলাদেশে যেসব প্রকল্প রয়েছে তার বিরাট অংশ বিদেশী সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এ সহায়তা ছাড়া এসব প্রকল্প চলবে না। ব্যাংক ছাড়া কোনো ব্রিজ হতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দাতাগোষ্ঠীর স্বপ্নের ফসল হলো পদ্মা সেতু। এ সেতু হলে বাংলাদেশের তিন কোটি জন-অধ্যুষিত পশ্চাৎপদ দণি-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে রাজধানীর বিচ্ছিন্ন অবস্থার অবসান হবে। পদ্মার বিশাল পানিরাশির কারণে রাজধানীসহ গোটা দেশের সাথে বর্তমানে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে পুরো দণি-পশ্চিমাঞ্চল। বিচ্ছিন্ন এই দণি-পশ্চিমাঞ্চলের এক দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবেড়া এবং দক্ষিণে সুন্দরবন যেখানে রয়েছে বাঘের বসতি। প্রস্তাবিত ৬ কিলোমিটার (৩.৮ মাইল) লম্বা এই সেতু ভারতের জন্যও একটি প্রবেশদ্বার হতে পারে। এ সেতু ঢাকা-কলকাতার সাথে সংযোগ স্থাপন করবে। এমনকি বাংলাদেশ-মিয়ানমার হয়ে দণি এশিয়ার সাথে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধের যে উচ্চাকাক্সা তা পূরণেও ভূমিকা পালন করবে, যা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ভৌগোলিক দিক থেকে। এ সেতু নির্মিত হলে বাংলাদেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১.২ শতাংশ হারে বেড়ে যাবে বলে হিসাব করা হয়েছে।
ইকনোমিস্টের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, রাজধানী থেকে ৪০ কিলোমিটার দণি-পশ্চিমে নির্মিতব্য পরিকল্পিত এই সেতুতে চারটি যানবাহন লেন রাখা হয়েছে। যার মধ্যে রেল এবং গ্যাস পাইপলাইনও রয়েছে। পদ্মার জটিল পানিপ্রবাহের ধারা অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু হায়, পাঁচ কিলোমিটার প্রশস্ত এই পদ্মার পানি নিয়ন্ত্রণ করা যত না কঠিন তার চেয়ে বেশি কঠিন এ প্রকল্প থেকে রাজনীতিবিদদের হস্ত সরিয়ে নেয়া।
বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত জুনে বিশ্বব্যাংক ১.২ বিলিয়ন ডলার ঋণচুক্তি বাতিল করেছে। পদ্মা সেতু দুর্নীতির সাথে জড়িত অনেক কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করেছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের দৃষ্টিতে প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান এর সাথে জড়িত বলে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে রিপোর্ট করেছে। ড. মসিউর বলেছেন, তিনি কোনো অপরাধ করেননি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেই কেবল তিনি পদত্যাগ করবেন। মসিউর রহমানের কেস বাদ দিন। বাংলাদেশে দায়মুক্তির সংস্কৃতি চালু আছে। দুর্নীতির কারণে এ দেশে একজন মাত্র প্রবীণ রাজনীতিকের জেল হয়েছে এবং তিনি হলেন সাবেক এক স্বৈরশাসক।
বাংলাদেশ সরকারের জন্য উল্লাস বয়ে আনার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের চেয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক অধিক প্রস্তুত হয়ে আছে। তারা প্রকল্পটি পুনরায় শুরুর ব্যাপারে আগ্রহী। এ প্রকল্পের আরেকটি বড় অংশীদার জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশনের (জাইকা) মতো তারাও দরজা খোলা রেখেছে। যা হোক, এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে আনতে হলে বাংলাদেশ সরকারের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তাকে পদত্যাগ করতে হবে। সম্ভবত সরকার টেবিলে ফিরে আসবে। কিন্তু তার আগে সরকারের ধারণামতে এর প্রধান শত্রুকে শায়েস্তা করা হবে। পদ্মা সেতু থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে দাঁড়ানোর পেছনে ুদ্রঋণের জনক নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়ী করেছেন
একের পর এক কেলেঙ্কারির ঘটনায় বিপর্যস্ত সরকার : আগামী নির্বাচনে ফলাফল নিয়ে শঙ্কা
একের পর এক কেলেঙ্কারির ঘটনায় বিপর্যস্ত সরকার : আগামী নির্বাচনে ফলাফল নিয়ে শঙ্কা
একের পর এক কেলেঙ্কারির ঘটনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সরকার। সরকারের মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের দুর্নীতি, অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ একাধিক কেলেঙ্কারির ঘটনা নিয়ে মেয়াদের এক বছর আগে সরকার খুবই বেকায়দায় পড়েছে। ইস্যুর পর ইস্যুতে জর্জরিত হচ্ছে সরকার। একটা ঘটনাকে সামাল দেয়ার আগেই সামনে হাজির হচ্ছে আরেকটি ইস্যু। এসব ঘটনা বেশিরভাগই সরকারের মধ্য থেকেই সৃষ্টি করা হচ্ছে। শেষ মুহূর্তে এসে এসব জ্বলন্ত ইস্যু সরকারকে আগামী নির্বাচনে ফলাফল নিয়ে শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।
এসব ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগকে সমালোচনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। সরকারের মধ্যকার একটি মহল থেকে এসব ঘটনার জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ষড়যন্ত্র বলে চালানোর চেষ্টা হলেও সাধারণ জনগণ তো দূরের কথা, সরকারি দলের লোকজনকেও বিশ্বাসে আনা যাচ্ছে না, বরং তারা মনে করছে, প্রতিটি ইস্যুর সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীর বিচার টেনে এনে সরকারের অবস্থান দুর্বল করা হচ্ছে।
এদিকে ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিকদের পক্ষ থেকেও এসবের জন্য প্রধান শরিক আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হচ্ছে। তারা সরকারকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, সরকারের কোনো অপকর্মের দায়-দায়িত্ব তারা নেবে না।
অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, সরকার যদি মানুষের প্রত্যাশাকে ধারণ করে দুর্নীতি-অনিয়মের প্রতিটি ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে জাতীয় নির্বাচনে এর চড়া মাশুল দিতে হবে। এসব প্রতিটি কেলেঙ্কারি নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিডিআর বিদ্রোহের মাধ্যমে সমস্যার সূত্রপাত হয়। একে একে বিদ্যুত্ সমস্যা, হত্যা-গুমসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, যানজট, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, নোবেলবিজয়ী ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অপসারণ, রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, ঢাকাকে দু’ভাগ, কুইট রেন্টালের নামে ২০ হাজার কোটি টাকার লুটপাট, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অচলাবস্থা, মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতিসহ সরকারের সামনে সমস্যার পাহাড় জমতে থাকে। এর মধ্যে জাতীয় সংসদ ও বিচার বিভাগের মধ্যে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব, এপিএসের অর্থ কেলেঙ্কারির রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পদত্যাগ, পদ্মা সেতু নিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের দুর্নীতির অভিযোগ ও এ কারণে পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়া, একই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানকে সরাতে বিশ্বব্যাংকের চাপ এবং সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ ও এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বেফাঁস মন্তব্য সরকারকে চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
এসব ঘটনার জন্য খোদ সরকারি দল থেকে সমালোচনা করা হচ্ছে। হলমার্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার সংসদে মহাজোটের সিনিয়র সদস্যরা আলোচনার ঝড় তোলেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রীতিমত দলীয় সদস্যদের তোপের মুখে পড়েন। সরকারি দলের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, আবদুল জলিল, শেখ ফজলুল করিম ও ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননসহ মহাজোটের একাধিক সদস্য অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন। মন্ত্রী বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার সংসদে তার বেফাঁস মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। নিজেদের দেশের ঘৃণিত ব্যক্তি বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তার বক্তব্যের কারণে দুর্নীতিবাজরা উত্সাহিত হতে পারে।
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, এই ঘটনা সরকার ও দলের জন্য সর্বনাশ ডেকে এনেছে। দলের জন্য এটা খুবই বিব্রতকর। এ ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
এর আগে শেয়ার কেলেঙ্কারিতে ৩২ লাখ বিনিয়োগকারীর ৪২ হাজার কোটি টাকা লুটে নেয়া খলনায়কদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ দূরে থাক, তাদের কেশাগ্র স্পর্শ করা যায়নি। দোর্দণ্ড দাপটের সঙ্গে তারা পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। কুইক রেন্টালের নামে বিদ্যুত্ খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ মিডিয়া পল্লী থেকে রাজনীতির অঙ্গন মাতিয়ে রাখছে। পদ্মা সেতুর দুর্নীতির বিতর্ক দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশে ঠাঁই নেয়। এত সব বিতর্কের মুখে রেলের কালো বিড়াল ধরতে আসা রেলমন্ত্রী (সাবেক) সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার ও রেল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মধ্যরাতে পাওয়া টাকার বস্তা সরকারকে বিব্রতই করেনি, বিতর্কের ঝড়ে ফেলে চরম ইমেজ সঙ্কটের দিকেও ঠেলে দিয়েছে। এই কেলেঙ্কারিতে থলের বিড়াল বেরিয়ে এলেও ধরা হয়নি। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পদত্যাগে বাধ্য হলেও দফতরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে বড়গলায় কথা বলে যাচ্ছেন। সরকার এই রহস্য উদ্ঘাটনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি, বরং সুরঞ্জিত সেনকে দেয়া হয়েছে সততার সার্টিফিকেট। এদিকে যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের পদত্যাগকে খোদ প্রধানমন্ত্রী সততার দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেছেন।
দলবাজি ও সরকারের নাম ভাঙানো, একটা শ্রেণীর স্বেচ্ছাচারিতা ও নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলো। প্রতিবাদে ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকরাও আন্দোলনে নামছেন। রক্তপাতের মতো ঘটনা ঘটার পরও সরকার দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখছে না। নিয়োগবাণিজ্য, ভর্তিবাণিজ্য, ফলাফল কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত বুয়েট ভিসি-প্রোভিসির পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে দু’মাস ধরে অচল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। বুয়েট পরিস্থিতির আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শরীফ এনামুল কবীরকে পদত্যাগে বাধ্য করতে ছাত্র-শিক্ষকরা আন্দোলনকে উত্তাল করেছিলেন। সেখানে পানি অনেক গড়ানোর পর সরকার ভূমিকা রাখে। ভিসি এনামুলকে পদত্যাগ করে চলে যেতে হয়।
সরকারের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক নেতার মতে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গত সাড়ে তিন বছরে যেসব উন্নয়ন ও সফলতা দেখিয়েছে, কিছু ব্যক্তির কারণে সরকারের সে অর্জনগুলো ম্লান হয়ে যাচ্ছে, যার মাশুল নির্বাচনের সময় দলকে দিতে হতে পারে। সাধারণভাবে মানুষের মধ্যে এসব কারণে সরকারের নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হচ্ছে বলে তারা মনে করছেন।
একের পর এক কেলেঙ্কারির ঘটনায় বিপর্যস্ত সরকার : আগামী নির্বাচনে ফলাফল নিয়ে শঙ্কা

এসব ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগকে সমালোচনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। সরকারের মধ্যকার একটি মহল থেকে এসব ঘটনার জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ষড়যন্ত্র বলে চালানোর চেষ্টা হলেও সাধারণ জনগণ তো দূরের কথা, সরকারি দলের লোকজনকেও বিশ্বাসে আনা যাচ্ছে না, বরং তারা মনে করছে, প্রতিটি ইস্যুর সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীর বিচার টেনে এনে সরকারের অবস্থান দুর্বল করা হচ্ছে।
এদিকে ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিকদের পক্ষ থেকেও এসবের জন্য প্রধান শরিক আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হচ্ছে। তারা সরকারকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, সরকারের কোনো অপকর্মের দায়-দায়িত্ব তারা নেবে না।
অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, সরকার যদি মানুষের প্রত্যাশাকে ধারণ করে দুর্নীতি-অনিয়মের প্রতিটি ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে জাতীয় নির্বাচনে এর চড়া মাশুল দিতে হবে। এসব প্রতিটি কেলেঙ্কারি নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিডিআর বিদ্রোহের মাধ্যমে সমস্যার সূত্রপাত হয়। একে একে বিদ্যুত্ সমস্যা, হত্যা-গুমসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, যানজট, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, নোবেলবিজয়ী ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অপসারণ, রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, ঢাকাকে দু’ভাগ, কুইট রেন্টালের নামে ২০ হাজার কোটি টাকার লুটপাট, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অচলাবস্থা, মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতিসহ সরকারের সামনে সমস্যার পাহাড় জমতে থাকে। এর মধ্যে জাতীয় সংসদ ও বিচার বিভাগের মধ্যে প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব, এপিএসের অর্থ কেলেঙ্কারির রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পদত্যাগ, পদ্মা সেতু নিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের দুর্নীতির অভিযোগ ও এ কারণে পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়া, একই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানকে সরাতে বিশ্বব্যাংকের চাপ এবং সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ ও এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বেফাঁস মন্তব্য সরকারকে চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
এসব ঘটনার জন্য খোদ সরকারি দল থেকে সমালোচনা করা হচ্ছে। হলমার্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার সংসদে মহাজোটের সিনিয়র সদস্যরা আলোচনার ঝড় তোলেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রীতিমত দলীয় সদস্যদের তোপের মুখে পড়েন। সরকারি দলের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, আবদুল জলিল, শেখ ফজলুল করিম ও ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননসহ মহাজোটের একাধিক সদস্য অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন। মন্ত্রী বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার সংসদে তার বেফাঁস মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। নিজেদের দেশের ঘৃণিত ব্যক্তি বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তার বক্তব্যের কারণে দুর্নীতিবাজরা উত্সাহিত হতে পারে।
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, এই ঘটনা সরকার ও দলের জন্য সর্বনাশ ডেকে এনেছে। দলের জন্য এটা খুবই বিব্রতকর। এ ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
এর আগে শেয়ার কেলেঙ্কারিতে ৩২ লাখ বিনিয়োগকারীর ৪২ হাজার কোটি টাকা লুটে নেয়া খলনায়কদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ দূরে থাক, তাদের কেশাগ্র স্পর্শ করা যায়নি। দোর্দণ্ড দাপটের সঙ্গে তারা পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। কুইক রেন্টালের নামে বিদ্যুত্ খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ মিডিয়া পল্লী থেকে রাজনীতির অঙ্গন মাতিয়ে রাখছে। পদ্মা সেতুর দুর্নীতির বিতর্ক দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশে ঠাঁই নেয়। এত সব বিতর্কের মুখে রেলের কালো বিড়াল ধরতে আসা রেলমন্ত্রী (সাবেক) সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার ও রেল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মধ্যরাতে পাওয়া টাকার বস্তা সরকারকে বিব্রতই করেনি, বিতর্কের ঝড়ে ফেলে চরম ইমেজ সঙ্কটের দিকেও ঠেলে দিয়েছে। এই কেলেঙ্কারিতে থলের বিড়াল বেরিয়ে এলেও ধরা হয়নি। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পদত্যাগে বাধ্য হলেও দফতরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে বড়গলায় কথা বলে যাচ্ছেন। সরকার এই রহস্য উদ্ঘাটনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি, বরং সুরঞ্জিত সেনকে দেয়া হয়েছে সততার সার্টিফিকেট। এদিকে যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের পদত্যাগকে খোদ প্রধানমন্ত্রী সততার দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেছেন।
দলবাজি ও সরকারের নাম ভাঙানো, একটা শ্রেণীর স্বেচ্ছাচারিতা ও নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলো। প্রতিবাদে ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকরাও আন্দোলনে নামছেন। রক্তপাতের মতো ঘটনা ঘটার পরও সরকার দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখছে না। নিয়োগবাণিজ্য, ভর্তিবাণিজ্য, ফলাফল কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত বুয়েট ভিসি-প্রোভিসির পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে দু’মাস ধরে অচল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। বুয়েট পরিস্থিতির আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শরীফ এনামুল কবীরকে পদত্যাগে বাধ্য করতে ছাত্র-শিক্ষকরা আন্দোলনকে উত্তাল করেছিলেন। সেখানে পানি অনেক গড়ানোর পর সরকার ভূমিকা রাখে। ভিসি এনামুলকে পদত্যাগ করে চলে যেতে হয়।
সরকারের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধিক নেতার মতে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গত সাড়ে তিন বছরে যেসব উন্নয়ন ও সফলতা দেখিয়েছে, কিছু ব্যক্তির কারণে সরকারের সে অর্জনগুলো ম্লান হয়ে যাচ্ছে, যার মাশুল নির্বাচনের সময় দলকে দিতে হতে পারে। সাধারণভাবে মানুষের মধ্যে এসব কারণে সরকারের নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হচ্ছে বলে তারা মনে করছেন।
লটারি করে প্রধান উপদেষ্টা চান আকবর আলি
লটারি করে প্রধান উপদেষ্টা চান আকবর আলি
|
![]() |
![]() |
||
|
![]() |
তার মত, সরকার গঠনের ২/১ দিন আগে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন চূড়ান্ত করা হোক।
নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি পুনর্বহাল নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের বিপরীত অবস্থানের মধ্যে শনিবার এক গোলটেবিল আলোচনায় এই প্রস্তাব তুলে ধরেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরর সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি।
তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে নির্বাচনের সময়ের সরকার নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কট দূর হতে পারে।
আকবর আলি বলেন, “নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হলে অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিশেষ করে দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা হতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে এমন ফর্মুলা তৈরি করতে হবে, যাতে কোনোভাবে কে প্রধান উপদেষ্টা হবেন, তা প্রকাশ না পায়।
“ব্যবস্থা এমন হতে হবে- প্রধান উপদেষ্টা ওই সরকারটি গঠনের শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত হবে। এক্ষেত্রে বিগত ১০ অথবা ৫ বছরের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতিদের একটি তালিকা করে সেখান থেকে ১৫ জনকে ঠিক করতে হবে। ওই তালিকা থেকে লটারির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন করা যেতে পারে,” বলেন তিনি।
Subscribe to:
Posts (Atom)