
টেলিভিশনের টক শোতে সরকারের সমালোচকদের একহাত নিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি প্রশ্ন রাখেন- “বিএনপির পাঁচ বছর তারা কী করেছিলেন ? কী পথ দেখিয়েছিলেন ?”
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সমালোচকদের উদ্দেশে আরো বলেন, “কেউ কেউ টিভি চ্যানেলের অনুমতি চেয়েছিলেন। আমরা দিতে পারিনি বলে এখন আমাদের চোর বলছে। আমাদের চোর বলার আহবান জানাচ্ছেন।”
তিনি প্রশ্ন রাখেন- “বিএনপির পাঁচ বছর তারা কী করেছিলেন ? কী পথ দেখিয়েছিলেন ?”
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সমালোচকদের উদ্দেশে আরো বলেন, “কেউ কেউ টিভি চ্যানেলের অনুমতি চেয়েছিলেন। আমরা দিতে পারিনি বলে এখন আমাদের চোর বলছে। আমাদের চোর বলার আহবান জানাচ্ছেন।”
গণভবনে শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের প্রারম্ভিক বক্তৃতায় শেখ হাসিনা এ সব কথা বলেন।
সম্প্রতি সাংবাদিক এ বি এম মুসা একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এক অনুষ্ঠানে সরকার দলীয় লোকদের দেখলেই ‘তুই চোর’ বলার আহবান জানান।
শেখ হাসিনা প্রবীণ এই সাংবাদিকের নাম উল্লেখ না করে এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের সময়ে অনেক চ্যানেলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে বসে প্রতিনিয়নতই এমন এমন লোক কথা বলছেন।”
“উনি তো আমাদের মুরুব্বী। উনি যে মিডিয়া হাউজ করবেন- টাকা আনবেন কোথা থেকে ? চুরি করবেন?”
সাবেক আমলা এবং বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলী খান সম্প্রতি লটারি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা কারো নাম উল্লেখ না করে বলেন, “এমন অনেক সাবেক আমলা আছেন- এখন তাদের মুখ থেকেও কথা শুনতে হয়।
“এই আমলারাই ডিজিএফআইয়ের কাছে ধর্না দিয়েছেন উপদেষ্টা হওয়া যায় কিনা।”
তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন- “ওনারা দায়িত্বে থাকতে কী করেছেন ?”
এরআগে, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার সময়কার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তখন সকলেই ছিলেন। আমাদের অধীনেই কাজ করেছেন। আর, এখন আমাদের পথ দেখায়।”
মন্ত্রিসভায় আরো সদস্য অন্তর্ভুক্ত এবং রদবদল প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা জানান, ক্যাবিনেট রিশাফল রুটিন ওয়ার্ক।
মন্ত্রিত্ব গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখান করা তোফায়েল আহমদ ও রাশেদ খান মেননের নাম উল্লেখ না করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “আমাদের দুজন নেতা মন্ত্রিত্ব নিতে চান নি। একজনের অভিযোগ ‘প্রপারলি’ ডাকা হয় নি।
“এটা নতুন না। আমরা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায়। প্রথমবার যেভাবে আহ্বান জানানো হয়েছিলো- এবারো তাই করা হয়েছে। কাজেই নিয়মের ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় ঘটে নি।”
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন মন্ত্রিত্ব প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, কোনো সভ্য দেশে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে দিয়ে মন্ত্রী হওয়ার আহ্বান জানানো হয় না।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আই কে গুজরালের আত্মজীবনীর কথা উল্লেখ করে বলেন, “ইন্ডিয়া সভ্য দেশ কিনা জানি না ? আই কে গুজরাল দু’বার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তবে তিনি মন্ত্রী হয়েছিলেন ক্যাবিনেট থেকে ফোন পেয়েই। কেবিনেট ডিভিশন থেকেই তাকে ফোন করা হয়েছিল।”
তোফায়েল এবং মেননকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, “কে নেবেন, কে নেবেন না - এটা তাদের ডিসিশন। আমরা নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাইনি।
“আমাদের তো অনেক সংসদ সদস্য। সবাইকে তো আর মন্ত্রী করা সম্ভব না। আমরা স্বাভাবিক নিয়মেই করে যাচ্ছি।”
একই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের সর্বোচ্চ সচিব ক্যাবিনেট সচিব। ক্যাবিনেট সেক্রেটারিই এটা বলবেন। যে সব দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আছে, সে সব দেশে এটাই হয়। এর বিকল্প নেই।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোজায় বিদ্যুতের সমস্যা হয়নি। অনেকে কুইক রেন্টাল নিয়ে সরকারের সমালোচনা করেন। কুইক রেন্টাল না হলে বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ হতো না। এটা বাস্তব- যারা বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান চায় না, তারাই এর বিরুদ্ধে বলছে।
জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে সরকারের কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা যেভাবেই হোক জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে সক্ষম হয়েছি। এটা কিন্তু সহজ কাজ নয়।”
“যেকোনো কিছু ঘটলেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। এখনো নিচ্ছি”, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, এটা কার্যনির্বাহী সংসদের নিয়মিত বৈঠক। বৈঠকে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। সাংগঠনিক সম্পাদকরা তাদের প্রতিবেদন দেবেন।
দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, যে সব সাংগঠনিক কাজ শুরু হয়ে গেছে সেগুলো ত্বরান্বিত করতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।