Saturday, September 15, 2012

সুবিধা দিতে না পারায় আমাদের চোর বলছে : প্রধানমন্ত্রী


সুবিধা দিতে না পারায় আমাদের চোর বলছে : প্রধানমন্ত্রী







টেলিভিশনের টক শোতে সরকারের সমালোচকদের একহাত নিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি প্রশ্ন রাখেন- “বিএনপির পাঁচ বছর তারা কী করেছিলেন ? কী পথ দেখিয়েছিলেন ?”
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সমালোচকদের উদ্দেশে আরো বলেন, “কেউ কেউ টিভি চ্যানেলের অনুমতি চেয়েছিলেন। আমরা দিতে পারিনি বলে এখন আমাদের চোর বলছে। আমাদের চোর বলার আহবান জানাচ্ছেন।”

গণভবনে শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের প্রারম্ভিক বক্তৃতায় শেখ হাসিনা এ সব কথা বলেন।
সম্প্রতি সাংবাদিক এ বি এম মুসা একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এক অনুষ্ঠানে সরকার দলীয় লোকদের দেখলেই ‘তুই চোর’ বলার আহবান জানান।

শেখ হাসিনা প্রবীণ এই সাংবাদিকের নাম উল্লেখ না করে এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের সময়ে অনেক চ্যানেলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে বসে প্রতিনিয়নতই এমন এমন লোক কথা বলছেন।”

“উনি তো আমাদের মুরুব্বী। উনি যে মিডিয়া হাউজ করবেন- টাকা আনবেন কোথা থেকে ? চুরি করবেন?”

সাবেক আমলা এবং বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলী খান সম্প্রতি লটারি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা কারো নাম উল্লেখ না করে বলেন, “এমন অনেক সাবেক আমলা আছেন- এখন তাদের মুখ থেকেও কথা শুনতে হয়।

“এই আমলারাই ডিজিএফআইয়ের কাছে ধর্না দিয়েছেন উপদেষ্টা হওয়া যায় কিনা।”

তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন- “ওনারা দায়িত্বে থাকতে কী করেছেন ?”

এরআগে, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার সময়কার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তখন সকলেই ছিলেন। আমাদের অধীনেই কাজ করেছেন। আর, এখন আমাদের পথ দেখায়।”

মন্ত্রিসভায় আরো সদস্য অন্তর্ভুক্ত এবং রদবদল প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা জানান, ক্যাবিনেট রিশাফল রুটিন ওয়ার্ক।


মন্ত্রিত্ব গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখান করা তোফায়েল আহমদ ও রাশেদ খান মেননের নাম উল্লেখ না করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “আমাদের দুজন নেতা মন্ত্রিত্ব নিতে চান নি। একজনের অভিযোগ ‘প্রপারলি’ ডাকা হয় নি।

“এটা নতুন না। আমরা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায়। প্রথমবার যেভাবে আহ্বান জানানো হয়েছিলো- এবারো তাই করা হয়েছে। কাজেই নিয়মের ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় ঘটে নি।”

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন মন্ত্রিত্ব প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, কোনো সভ্য দেশে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে দিয়ে মন্ত্রী হওয়ার আহ্বান জানানো হয় না।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আই কে গুজরালের আত্মজীবনীর কথা উল্লেখ করে বলেন, “ইন্ডিয়া সভ্য দেশ কিনা জানি না ? আই কে গুজরাল দু’বার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তবে তিনি মন্ত্রী হয়েছিলেন ক্যাবিনেট থেকে ফোন পেয়েই। কেবিনেট ডিভিশন থেকেই তাকে ফোন করা হয়েছিল।”

তোফায়েল এবং মেননকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, “কে নেবেন, কে নেবেন না - এটা তাদের ডিসিশন। আমরা নিয়মের ব্যত্যয় ঘটাইনি।

“আমাদের তো অনেক সংসদ সদস্য। সবাইকে তো আর মন্ত্রী করা সম্ভব না। আমরা স্বাভাবিক নিয়মেই করে যাচ্ছি।”

একই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের সর্বোচ্চ সচিব ক্যাবিনেট সচিব। ক্যাবিনেট সেক্রেটারিই এটা বলবেন। যে সব দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আছে, সে সব দেশে এটাই হয়। এর বিকল্প নেই।

সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোজায় বিদ্যুতের সমস্যা হয়নি। অনেকে কুইক রেন্টাল নিয়ে সরকারের সমালোচনা করেন। কুইক রেন্টাল না হলে বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ হতো না। এটা বাস্তব- যারা বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান চায় না, তারাই এর বিরুদ্ধে বলছে।

জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে সরকারের কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা যেভাবেই হোক জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে সক্ষম হয়েছি। এটা কিন্তু সহজ কাজ নয়।”

“যেকোনো কিছু ঘটলেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। এখনো নিচ্ছি”, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, এটা কার্যনির্বাহী সংসদের নিয়মিত বৈঠক। বৈঠকে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। সাংগঠনিক সম্পাদকরা তাদের প্রতিবেদন দেবেন।

দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, যে সব সাংগঠনিক কাজ শুরু হয়ে গেছে সেগুলো ত্বরান্বিত করতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।

সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের সাথে মতবিনিময়কালে খালেদা জিয়া এক সময় আসবে যখন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হবে।



undefined
গতকাল শনিবার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীদের সাথে মতবিনিময় করেন -সংগ্রাম
 বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে সরকারের সকর মন্ত্রী-এমপি দুর্নীতিতে জড়িত। প্রধানমন্ত্রী পরিবার এখন কানাডা থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশেও দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে। তারা বিদেশে ডলার পাচার করছে। তাদের অনেক দূর্ণীতি আছে যা সময় মতো প্রকাশ করা হবে। আগামীতে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে ধরা হবে। মন্ত্রী সভার সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফুটো নৌকায় যত লোক উঠবে, তত ভারী হবে, ফলে নৌকা আরো তাড়াতাড়ি ডুববে।  নিদলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আগামীতে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবেনা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া আরো বলেন, সরকার যতই চেষ্টা করুক এক সময় আসবে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, যতদিন সুস্থ আছি, ভালো আছি  ইনশাআল্লাহ এ সরকারকে বিদায় করে দেশের স্বাদীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবো।
গতকাল শনিবার গুলশান চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকটি রাত ৯ টায় শুরম্ন হয়ে তিন ঘন্টা ধরে চলে। খালেদা জিয়া এক ঘন্টাব্যাপী বক্তব্য রাখেন।
খালেদা জিয়া আরো বলেন, দেশের বিরুদ্ধে ১/১১ এর সময় দেশিও ও আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্র হয়েছিলো। সে ষড়যন্ত্র এ এখনো অব্যাহত রয়েছে। একটি মুসলীম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যাতে মাথা উচু করে দাড়াতে না পারে, যাতে উন্নত না হয় সেজন্য প্রতিবেশি দেশসহ অনেক দেশ ষড়যন্ত্র করে। তারা চায় মুসলীম প্রধান এই দেশটি যাতে গরীব ও তাদের মুখাপেক্ষি থাকে। 
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সব সময় মানুষের জন্য, দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করেছে। এজন্য বিএনপি ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিলিন হতে চলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় যেতে নয় দেশ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আন্দোলন করছে। 
বেগম খালেদা জিয়া তার ঘন্টাব্যাপী বক্তব্যে দেশের আইন শৃংখলা, হলামার্ক কেলেংকারিসহ সরকারের বিভিন্ন দর্ণীতির চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সরকারের সবাই কম-বেশি দুর্নীতিবাজ। এজন্য নতুন মন্ত্রী দিয়ে কোনো লাভ হবেনা। তাদেরকে অবশ্যই চলে যেতে হবে। আর এবার চলে গেলে তারা আর ৪০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবেনা।
সরকার জনবিচ্ছন্ন হয়ে বিরোধী দলকে মিছিল মিটিং করতে দিচ্ছেনা অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকার জনবিচ্ছন্ন হয়ে গেছে্। এজন্য তারা এখন জনগনকে ভয় পায়।
সভায় সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব শওকত মাহমুদ, প্রেসক্লাব সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল আলম, বিএফইউজে সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি আব্দুস শহীদ, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, সাংবাদিক শফিক রেহমান, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আমানুলস্নাহ কবির, পিআইবির সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাভিশনের উপদেষ্টা ড. আব্দুল হাই সিদ্দিকী, কামরম্নল ইসলাম চৌধুরী, দৈনিক ইনকিলাব সহকারী সম্পাদক আব্দুর আওয়াল ঠাকুর, সমকালের যুগ্ম-সম্পাদক রাশিদুন্নবী, রকিব উদ্দিন আহমেদ, কবি আহমদ সফি, কামরম্নল ইসলাম চৌধুরী, ডিইউজে যুগ্ম-সম্পাদক অলিউলস্নাহ নোমান, সঞ্জীব চৌধুরী, মাসুদ মজুমদার, নিউনেশন সম্পাদক মোসত্মফা কামাল মজুমদার, ডিইউজে সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য জহিরম্নল আলম, জাহাঙ্গীর ফিরোজ, সাদ বিন রাবী, মেহেদী হাসান পলাশ, হারম্ননুর রশীদ, পলিটিক্যাল রিপোটার্স ফোরামের (পিআরএফ) সাধারণ সম্পাদক মোহসীন হোসেন, ডিইউজে নির্বাহী সদস্য আমিরম্নল মোমেনিক মানিক প্রমুখ।
এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মারম্নফ কামাল খান উপস্থিত ছিলেন।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, বিএনপি সরকার প্রথম আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। বিএনপি সব সময় মিডিয়া বান্ধব। কেউ যদি মিডিয়ার লাইসেন্স নিয়ে আদর্শ থেকে সওে আসে তাহলে তা দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, এ সরকারের সময়ে ১৬ সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। সাগর-রুনির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মামলা হয়েছে। তাতে আন্দোলন থেকে পিছিয়ে যাবোনা। গণতন্ত্র না থাকলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবেনা। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে। নিজেদের প্রয়োজনে স্বৈরাচার সরকারের বিরম্নদ্ধে শেষ পর্যমত্ম লড়াই করতে হবে। সরকারের অগণতান্ত্রিক কর্মকান্ডের বিরম্নদ্ধে গনতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারীপরিয়ে আনতে চহড়ামত্ম আন্দোরন করতে হবে বিএনপিকে।
শওকত মাহমুদ বলেন,  জিয়া পরিবারের চেয়ে কেউ সাংবাদিক বান্ধব নয়। জিয়া পরিবার সাংবাদিকদের জন্য আবাসন, মিডিয়াসহ অনেক কাজ করেছেন। স্বাভাবিকভাবে বর্তমান সরকার ÿমতা ছাড়বে না। প্রচন্ড ধাক্কা দিতে হবে। নিদর্লীয় নিরপেÿ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী নিবার্চন হলে তা জাতির জন্য অত্যমত্ম ÿতিকর হবে। এজন্য আন্দোলনে সাংবাদিকদেরও অংশ নিতে হবে যার যার অবস্থান থেকে। সাগর-রম্ননি হত্যা হলেও সরকার কোনো বিচার করছে না। এ সরকারের কাছে আর সাংবাদিক হত্যার বিচার চেয়ে লাভ নেই।
কামাল উদ্দিন সবুজ বলেন, দেশে এক পÿীয় সংবাদপত্রের প্রভাব চলছে। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। যদি গণতন্ত্র থাকে তাহলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবে। আগামী নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায় হবে তার দিকে পুরো জাতি তাকিয়ে রয়েছে। জিয়ার আদর্শ অনুসারে সবার জন্য কাজ করবে বিএনপি এটাই জাতির প্রত্যাশা। 
আব্দুস শহীদ বলেন, সাড়ে তিন বছরে ১৬ জন সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। অসংখ্য সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার। কোনো বিচার হচ্ছেনা। অনলাইন মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। সংবাদপত্রের কন্ঠরোধ করতে একটি ভিতিকর অবস্থা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সাগর-রম্ননির বিষয়ে আন্দোলন চলছে। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা প্রয়োজন। বিএনপির কাছে সহযোগিতা চাই।
বাকের হোসাইন বলেন, জোটের রাজনীতিকে আরো সক্রিয় করতে হবে। মিডিয়া বান্ধব করা উচিত।

শাহজালাল বিমানবন্দরে ২৬ কেজি হেরোইন আটক



হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রপ্তানি কার্গোতে থাকা তিনটি কার্টন থেকে ২৬ কেজি ২০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে।

আকিজ বিড়ির কার্টন থেকে এসব হেরোইন উদ্ধার করে কাস্টসম এবং আমর্ড পুলিশ বেটালিয়ন (এপিবিএন)।

এপিবিএন’এর সরকারি পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম জানান, মালয়শিয়া পাঠানোর জন্য কর্গোতে রক্ষিত আকিজ বিড়ির ৯টি কার্টনে তল্লাশি চালিয়ে তিনটি কার্টন থেকে এই হেরোইন উদ্ধার করা হয়। বিড়ির নামে এগুলো রোববার থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে করে পাঠানোর জন্য আনা হয়েছিল।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা এসে প্রাথমিক পরীক্ষা করে এগুলোকে যে হেরোইন তা নিশ্চিত করেছেন বলেও জানান তিনি।

এসব হেরোইন একটি ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়াডিং এজেন্টের (সিঅ্যান্ডএফ) মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। 

আমিও গুম হওয়ার আতঙ্কে আছি ড. কামাল


undefined
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন গুম হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, আমিও গুম হওয়ার আতঙ্কে আছি। যারা লুটপাট করেন তারা হেন কোনো কাজ নাই যা করতে পারেন না। সত্য কথা বলার জন্য হয়তো আমিও গুম হয়ে যেতে পারি। আমি গুম হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে আছি। সত্য বলার জন্য আর কত জনকে গুম করা হবে। এখন যা চলছে তা অভিশপ্ত রাজনীতি। ধানমন্ডির বিলিয়া অডিটোরিয়ামে গতকাল সাময়িকী 'সাপ্তাহিক' আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি আরও বলেন, আসলে পচন শুরু হয়েছে মাথা থেকে। দেশ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে গেছে। সাপ্তাহিকের সম্পাদক গোলাম মোর্তোজার সঞ্চালনায় আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত সাংবাদিক এবিএম মূসা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. বদিউর রহমান, অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, মামুন রশীদ, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ ও অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর। 'অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও জনস্বার্থ' শীর্ষক আলোচনায় সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল বলেন, রাষ্ট্র হলমার্ক কেলেঙ্কারির হোতাসহ নানা অপরাধীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। পুলিশের অধিকার আছে, কোনো মামলা বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই সম্পদ নিতে পারে। এভাবেও পুলিশের মাধ্যমে হলমার্কের টাকা ফেরত আনা যেতে পারে। তিনি বলেন, তিন মিনিটে যখন ঢাকা ভাগ করার আইন পাস করা যায়, সংবিধানের সংশোধনী করতে যখন কয়েক মিনিট লাগে, তখন অপরাধীর বিচার করতে এত বিলম্ব কেন? বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, এখন এতগুলো ব্যাংক অনুমোদন দেওয়ার ক্ষমতা কার? চাপের মুখে যদি গভর্নরকে এত ব্যাংকের অনুমোদন দিতে হয়, তাহলে তার পদত্যাগ করা উচিত। বিশিষ্ট সাংবাদিক এবিএম মূসা বলেন, সরকারের চোরদের চুরি করার দক্ষতা আছে। চুরি বিদ্যা বড় বিদ্যা তবে লুকানোর দক্ষতা নেই, তাই ধরা পড়ে গেছে। চুরি যেই করুন দায়িত্ব সরকারের। কারণ রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। তিনি আরও বলেন, এসব ঘটনার তদন্ত কে করবে, চোরে চোরে মাসতুতো ভাই? অর্থ কেলেঙ্কারির দোষী চিহ্নিত হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলছেন, টাকাটা বেশি নয়। তাতে বোঝা যায়, কত বড় চুরি হয়েছে। যারা দুর্নীতি করেন, তারাই তো রাজনীতি করছেন। তিনি প্রস্তাব দেন, হলমার্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে নাগরিক কমিটি করে তদন্ত করতে হবে। দেশের মানুষ সবচেয়ে সচেতন। তারা ঘাপটি মেরে থাকেন, সময় এলে জবাব দেন। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, হলমার্কের ঋণ স্বাভাবিক ঋণ না। এটি নিয়ন্ত্রক, ব্যবস্থাপক, পরিচালকদের ব্যর্থতা। সব ব্যর্থতার সঙ্গে দুর্নীতির সমন্বয় ঘটেছে। ব্যাংকিং খাতের অনেকগুলো সিস্টেমে চিড় ধরেছে। এখনই সামাল দিতে না পারলে এটা হবে অশনি সংকেত। আমাদের এই খাতে সততা ও দক্ষতার বেশ অভাব রযেছে। আমাদের দুর্ভাগ্য, ব্যাংকিং খাতের ইনোভেশন নেই। তারা বড়লোকদের টাকা দেয়, কিন্তু সাধারণ মানুষকে দেয় না।

সৈয়দ আবুল মকসুদ মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সমালোচনা করে বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে এখন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব, নোট করার মানুষ সব মিলিয়ে মন্ত্রিসভা নয়, জনসভা হবে। ৭ জন মন্ত্রীর পেছনে আরও কোটি টাকা নানাভাবে ব্যয় হবে।

আইন করে সংসদ বর্জন বন্ধের সুপারিশ টিআইবির

আইন করে সংসদ বর্জন বন্ধ করার সুপারিশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে সংসদীয় উন্মুক্ততার ঘোষণাপত্র প্রকাশ অনুষ্ঠানে টিআইবি এই সুপারিশ করে।
আজ শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি এই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে। এতে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল ও নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, টানা ৩০ কার্যদিবসের বেশি সংসদ বর্জন করা যাবে না এবং একবার সংসদে যোগ দিলে সাত কার্যদিবসের আগে সংসদ বর্জন করা যাবে না। অন্যথায় সদস্যপদ থাকবে না।
সংসদীয় উন্মুক্ততার ঘোষণাপত্র পড়ে শোনান ইফতেখারুজ্জামান। এতে বলা হয়, গত ৩০ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন দেশের সংসদীয় পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠানের সম্মেলনে সংসদীয় উন্মুক্ততার ঘোষণাপত্র গ্রহণ করা হয়। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ইতালির রাজধানী রোমে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ই-পার্লামেন্ট সম্মেলনে আজ ঘোষণাপত্রটি প্রকাশ করা হয়। বিশ্বের ৬০টি দেশের ৮৫টি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান এই ঘোষণাপত্রে সমর্থন দিয়েছে। টিআইবি গবেষণাপত্রটি প্রণয়নের সঙ্গে শুরু থেকে জড়িত।
টিআইবির সুপারিশে বলা হয়েছে, সংসদ কার্যকর ও গণমুখী করা এবং সংসদের মালিকানায় জনগণের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য বিদ্যমান আইন ও চর্চাকে ঘোষণাপত্রের আলোকে সংগতিপূর্ণ করতে হবে। জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য সংসদের কার্যবিবরণী এবং সাংসদদের আয় ও সম্পদের বিবরণী নিয়মিত প্রকাশ করতে হবে। আইন করে সংসদ বর্জন বন্ধ করা, আইন প্রণয়ন ও সংসদীয় কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করা এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে তথ্য সংরক্ষণ করে তা সহজলভ্য করার কথাও সুপারিশে বলা হয়েছে।
প্রস্তাব তুলে ধরে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের মতো সংসদ বর্জনের দৃষ্টান্ত বিশ্বের অন্য কোনো দেশে নেই। পঞ্চম সংসদ থেকে এই ধারা চলে আসছে। সে সময় এই বর্জনের হার ছিল ৩৪ শতাংশ, যা নবম সংসদে এসে ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। সংবিধানের বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী টানা ৯০ কার্যদিবস সংসদে অনুপস্থিতির সুযোগ থাকায় বিরোধী দল অবিরাম সংসদ বর্জন করছে।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, সংসদের স্থায়ী কমিটির কোনো কাজ প্রকাশ্য না হওয়ায় সাংসদ ও কমিটির ভূমিকা জনগণের কাছে অস্পষ্ট থেকে যাচ্ছে। কমিটিতে আলোচিত প্রতিরক্ষাবিষয়ক তথ্য কখনো প্রকাশ করা হয় না। আইন প্রণয়নে নাগরিক সমাজের ভূমিকা বিরল। কোনো রকম বৈষম্য বা প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই সংসদবিষয়ক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব সংসদের। কিন্তু বাংলাদেশের সংসদে তা অনুপস্থিত।
টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেন, ‘সংসদের মতো জায়গায় সাংসদদের যে ভাষা মানুষকে লজ্জায় ফেলে, সে ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়। সবকিছুতে আমরা দুই নেত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকি। তাঁরা যা বলবেন, তা-ই হবে। এটা তো গণতন্ত্র হতে পারে না। কারণ, এতে জনমতের প্রতিফলন নেই।’
সুলতানা কামাল আরও বলেন, সংবিধান অনুযায়ী জনগণ ক্ষমতার মালিক। এটা প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সংসদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। জনজীবন কীভাবে যাপিত হবে, তা ঠিক করবে সংসদ। তা না হলে সংসদ জনগণের হবে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সুলতানা কামাল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকা অবস্থায় যে দল হেরে গেছে, তারাই বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে লাভ কী?’


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম খা আলমগীর, তথ্যে ইনু, সাহারা টেলিযোগাযোগে, রেলে মুজিবুল


 মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের পর পদ বণ্টনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মহীউদ্দীন খান আলমগীর। সাহারা খাতুনকে পাঠানো হয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে।
শনিবার নতুন মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টনের পাশাপাশি পুরনো কয়েকজন মন্ত্রীর দপ্তর রদবদল হয়েছে।
নতুন মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু তথ্য, মুজিবুল হক রেলপথ, এ এইচ মাহমুদ আলী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ, মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন।
নতুন প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে ওমর ফারুক চৌধুরী শিল্প এবং আব্দুল হাই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন।
পুরনোদের মধ্যে রাজিউদ্দিন আহম্মেদ রাজুকে টেলিযোগাযোগ থেকে সরিয়ে শ্রমমন্ত্রী করা হয়েছে। খন্দকার মোশাররফ হোসেন এখন শুধু প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সামলাবেন।
খন্দকার মোশাররফের মতোই আব্দুর রাজ্জাক এখন শুধু খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন।
ইনুকে তথ্যমন্ত্রী করায় আবুল কালাম আজাদের হাতে থাকল শুধু সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়