ডেসটিনির ১৪৩ কোটি টাকা পাচার করেছি: দিদারুল
 |
মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ডেসটিনির ১৪৩ কোটি টাকা স্থানান্তরের কথা স্বীকার করলেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম।
সোমবার ঢাকার মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট কেশব রায় চৌধুরীর কাছে দেওয়া স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে তিনি এ দায় স্বীকার করেন।
এর আগে গত ২১ অক্টোবর তাকে ৮ দিনের রিমান্ডে নেয় দুদক। রিমান্ড শেষে সোমবার তাকে আদালতে আনা হয়।
এরপর তাকে চিন্তা ভাবনা করার জন্য ৩ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়। বেলা ২টায় তার জবানবন্দি নেওয়া শুরু হয়ে বেলা পৌনে ৪টা পর্যন্ত তা একটানা চলে।
এ পর্যন্ত তিনিসহ ডেসটিনির ৩ শীর্ষ কর্মকর্তা আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিলেন।
এর আগে গত ২৫ অক্টোবর ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ অক্টোবর দুপুর পৌনে দু’টায় রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএসের ২৪ নম্বর রোডের ৩৪০ নম্বর বাসা থেকে কাফরুল থানা পুলিশের সহযোগিতায় দিদারুলকে গ্রেফতার করে দুদক।
গত ৫ সেপ্টেম্বর ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের পরিচালক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম ঢাকার মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে থেকে জামিন পান। ২৭ সেপ্টেম্বর ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইনসহ ডেসটিনির শীর্ষ কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেওয়া জামিন বাতিল করে অবিলম্বে তাদের এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন মহানগর দায়রা জজ আদালত।
ওইদিন থেকেই দিদারুল আলম পলাতক ছিলেন।
এর আগে গত ৩১ জুলাই ডেসটিনির ২২ কর্মকর্তার নামে রাজধানীর কলাবাগান থানায় ২টি মামলা করে দুদক।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ডেসটিনি ট্রি প্ল্যানটেশন ও ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে প্রায় ৪ হাজার কোটি সংগ্রহ করে। কিন্তু বর্তমানে তাদের পৃথক দুই অ্যাকাউন্টে মাত্র ৫৬ লাখ ও ৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা পাওয়া গেছে।
টক শোতে ভিন্ন দৃশ্য : হাত থাকতে মুখে কী? : উত্তেজিত হয়ে মন্ত্রী শাজাহান খান ব্যারিস্টার রফিক মিয়াকে বলে উঠলেন ‘হারামজাদা তোর চোখ উঠিয়ে ফেলব’। শাজাহান খানের সাফাই, রফিক মিয়া বেয়াদবের মতো ব্যবহার করেছে

বেসরকারি চ্যানেল আরটিভির ‘ঈদ-পূজায় নিরাপদে ঘরে ফেরা’ বিষয়ক টকশোতে ঘটেছে তুলকালাম কাণ্ড। নৌমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খান বিএনপি নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার চোখ উপড়ে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। আলোচনার একপর্যায়ে নিজ চেয়ার থেকে উঠে হাতের আস্তিন গুটিয়ে মন্ত্রী বিরোধী দলের নেতাকে মারতে উদ্যত হয়ে বলেন, আমি এর আগেও অনেকের চোখ উপড়ে ফেলেছি, শাজাহান খান সবই পারে। টিভি টকশোতে অকস্মাত্ এই নজিরবিহীন ঘটনায় অন্য অতিথি-আলোচকরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যান। হতভম্ব হয়ে তারা শ্বাসরুদ্ধকর ওই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। সারাদেশের মানুষও টেলিভিশনে এ দৃশ্য দেখে অবাক হয়েছেন।
অবিশ্বাস্য এ ঘটনা ঘটেছে গত সোমবার মধ্যরাতে। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছিল। তবে কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি সরাসরি সম্প্রচার সাময়িক বন্ধ করে দেয়। এ টকশো তেজগাঁও শিল্প এলাকায় আরটিভির নবনির্মিত বহুমাত্রিক স্টুডিও থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছিল।
আলোচক হিসেবে অংশ নেন নৌমন্ত্রী মো. শাজাহান খান, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মো. ইসরাফিল আলম, যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি গোলাম মওলা রনি, বিএনপি দলীয় এমপি রাশেদা বেগম হীরা, নিরাপদ সড়ক চাই
আন্দোলনের সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, জাতীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার এম সোহায়েল, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা স্থপতি ইকবাল হাবিব, সাংবাদিক জাকারিয়া কাজল, মনির হায়দার ও নিশাদ দস্তগীর।
অনুষ্ঠান দেখেছেন এমন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী আমার দেশ-কে জানান, রাত ১১টার পর আরটিভিতে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার শুরু হয়। আলোচনার একপর্যায়ে বক্তব্য দেন নৌমন্ত্রী মো. শাজাহান খান। তিনি নৌপথের উন্নয়নে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের পাশাপাশি গত চারদলীয় জোট সরকারের সমালোচনা করেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন, জোট সরকারের আমলে নৌপরিবহন খাতের কোনো উন্নয়ন হয়নি। তখন কেবল চাঁদাবাজি আর দুর্নীতি হয়েছে এ খাতে। তার এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, আমাদের সময় দুর্নীতি আর চাঁদাবাজি হয়েছে, এখন কি এসব বন্ধ হয়ে গেছে? এখন লোকজন আপনাদের চোর বলছে। এ সময় শাজাহান খান কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনি চুপ করুন। আমার বলা শেষ হলে আপনি বলবেন। জবাবে রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, এ অনুষ্ঠানে আমাকে দাওয়াত দেয়ার সময় বলা হয়েছিল, কোনো রকম আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেয়া হবে না। কিন্তু এখন দেখছি শুধু আমাদের আমলের বদনাম করা হচ্ছে। এ পর্যায়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে উপস্থাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, জনাব রফিকুল ইসলাম মিয়া আপনাকে বলার সুযোগ দেয়া হবে, আপনি তখন বলবেন। এখন থামুন। কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করে তিনি শাজাহান খানের কথার পিঠে কথা বলে যাচ্ছিলেন। আর এতেই প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন নৌমন্ত্রী। আপনি থেকে হঠাত্ তুমি সম্বোধন শুরু করেন তিনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় সঞ্চালক রোবায়েত ফেরদৌস প্রযোজক ও ক্যামেরাম্যানদের উদ্দেশে বলেন, ‘বন্ধ কর’, ‘ব্রেকে যাও’, ‘বর্তমান প্রজন্ম তাদের কাছে কী শিখছে’, ‘টকশো বন্ধ কর’। কিন্তু তাতেও থামছিলেন না শাজাহান খান। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া টেবিল চাপড়ে বলতে থাকেন ‘স্টপ ইট’। অন্যদিকে মন্ত্রী শাজাহান খান চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বিরোধীদলীয় নেতাকে শাসাতে থাকেন। একপর্যায়ে অনুষ্ঠানের অন্যতম আলোচক চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন চেয়ার ছেড়ে টকশো থেকে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হন। এ সময় টকশো বন্ধ হয়ে যায়।
জানা যায়, অফ এয়ারে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া টকশো স্টেজ থেকে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হন। তখন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান উচ্চস্বরে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামকে মারতে উদ্যত হয়ে বলেন, শাজাহান খানকে তোমরা চেন না। শাজাহান অনেক মানুষের চোখ উঠিয়ে ফেলেছে। তোমার চোখও উঠিয়ে ফেলব। শাজাহান খান সব পারে। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি ইসরাফিল আলমও নৌমন্ত্রীর পক্ষ নিয়ে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে বকাঝকা করতে থাকেন। তবে বাকি সবাই হতভম্ব হয়ে নীরবে দেখতে থাকেন সেই দৃশ্য। এমনকি অপর দুই এমপি গোলাম মওলা রনি এবং রাশেদা বেগম হীরাও নিজ নিজ আসনে বসে ছিলেন চুপচাপ। একপর্যায়ে রফিকুল ইসলাম মিয়া স্টুডিও থেকে বেরিয়ে যান। উঠে দাঁড়ান ইলিয়াস কাঞ্চন, মনির হায়দার ও ইকবাল হাবিব। কিন্তু আরটিভির স্টাফদের অনুরোধে তারা আবার চেয়ারে বসেন।
বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া অনুষ্ঠানে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের অবস্থা তুলে ধরে বলেন, এটি ছিল একটি রাউন্ড টেবিল আলোচনা। ‘নিরাপদ সড়ক : ঈদ ও পূজায় বাড়ি ফেরা’ শীর্ষক আলোচনায় আমরা ছাড়াও আরও বেশ ক’জন অংশ নিয়েছিলেন। আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের ক’জন বর্তমান সরকারের আমলে মহাসড়কে চাঁদাবাজি ও খানাখন্দ থাকায় জনগণের বেশ দুর্ভোগ হচ্ছে বলে শাজাহান খানের কাছে প্রশ্ন করেন। এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান অপ্রাসঙ্গিকভাবে চাঁদাবাজির জন্য বিএনপিকে দায়ী করে বলেন, ’৯৩ সাল থেকে এই চাঁদাবাজির শুরু। এর মূল হোতা হচ্ছেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
এ অবস্থায় আমি শাজাহান খানকে একটি প্রশ্ন করি—বিএনপি আমলের চাঁদাবাজির কথা বললেন, তাহলে কোন আমলে বেশি চাঁদাবাজি হচ্ছে? বিএনপি আমলে চাঁদাবাজি বেশি হচ্ছে, না বর্তমান আমলে বেশি হচ্ছে—তাও বলুন। এর জবাব দিতে গিয়ে মন্ত্রী একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দোষ চাপাতে লাগলেন। তিনি সেখানে না থেমে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে গালাগাল করতে লাগলেন। একপর্যায়ে তিনি এতই রেগে যান যে, নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে গিয়ে জোরে চিত্কার করে কথা বলতে লাগলেন।
ব্যারিস্টার রফিকুল বলেন, শাজাহান খান যখন উত্তেজিত হয়ে যা-তা বলতে লাগলেন, তখন আমিও জোরে জোরে তার বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে লাগলাম। আমি হলমার্ক, শেয়ারবাজার ও পদ্মা সেতুর দুর্নীতির কথা বলতে লাগলাম। এ পর্যায়ে আরটিভির অনুষ্ঠান সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, টিভি টকশোর সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও শাজাহান খান নিজেকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। তিনি তার চেয়ার ছেড়ে আমার দিকে তেড়ে এসে বলতে লাগলেন, শাজাহান খানকে তোমরা চেন না। শাজাহান অনেক মানুষের চোখ উঠিয়ে ফেলেছে। তোমার চোখও উঠিয়ে ফেলব। শাজাহান খান সব পারে।
তিনি বলেন, ওই আলোচনা সভায় আরও অনেকের মধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ইসরাফিল এবং গোলাম মওলা রনিও ছিলেন। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ ইসরাফিল মন্ত্রীর পক্ষ নিয়ে কথা বলতে লাগলেন। রনি ও র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ সোহায়েল চুপচাপ ছিলেন, কিছুই বলেননি। দু’জন সাংবাদিকও ছিলেন।
ব্যারিস্টার রফিকুল বলেন, মন্ত্রী শাজাহান খান যেভাবে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিলেন, আমার নিরাপত্তার স্বার্থেই আমি আর সেখানে না থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। বের হয়ে আসার সময় আরটিভি কর্তৃপক্ষের অনুরোধে আবার অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হলো।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান গতকাল আমার দেশ-কে বলেন, এটা কোনো বিষয় নয়। তবে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বেয়াদবের মতো আচরণ করেছেন। তিনি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন আমি নীরবে শুনেছি। আমার বক্তব্যের মাঝে তিনি কথা বলায় ঝগড়া হয়। তিনি বলেন, মানুষকে সম্মান দিতে না জানলে সম্মান পাওয়া যায় না। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামের চোখ উপড়ে ফেলার হুমকি প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এগুলো বোগাস কথা। মানুষকে সম্মান করতে জানতে হয়। কাউকে সম্মান দিতে না জানলে জোর করে সম্মান পাওয়া যায় না। তিনি আরও বলেন, টকশোর শেষে আমি তার সঙ্গে হাত মিলিয়েছি। কোলাকুলি করেছি। এরপর আর কোনো অভিযোগ করার কথা নয়।
টকশোতে অংশ নেয়া অপর আলোচক বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য রাশেদা বেগম হীরা আমার দেশ-কে বলেন, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান অনেক অশ্রাব্য ভাষায় বকেছেন, যা বলার মতো নয়। একপর্যায়ে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া নৌমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেছেন—আপনি একদিকে মন্ত্রী, অপরদিকে শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি। আপনাদের ছত্রছায়ায় পরিবহনে চাঁদাবাজি হচ্ছে। এমন কথা বলতেই ক্ষেপে যান নৌমন্ত্রী। তিনি অসত্য কথা বলতে থাকেন। তখন ব্যারিস্টার রফিক বলেন, ‘স্টপ ইট’। তিনি আরও বলেন, উত্তেজনার একপর্যায়ে টকশো বন্ধ করা হলে শাজাহান খান তখনও উত্তেজিত অবস্থায় ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। তিনি চেয়ার ছেড়ে তেড়ে হাতের আস্তিন গুটিয়ে ব্যারিস্টার রফিকুলকে ঘুষি মারতে উদ্যত হন।
আরেক আলোচক ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আরটিভির অনুষ্ঠানে যা হয়েছে তা লজ্জাজনক, দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আমাদের জনপ্রতিনিধিরা ওই অনুষ্ঠানে যে ধরনের আচরণ করেছেন, তা কাম্য নয় এবং এমন ধরনের আচরণ হওয়া উচিত নয়। এ অবস্থায় আমি অনুষ্ঠান থেকে চলে আসতে চাইলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অনুরোধে আমি থেকে আবার অনুষ্ঠানে অংশ নিলাম। আবার শুরু হওয়ার পর অনুষ্ঠানে আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন—না, আর কোনো ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আসলে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ভয়ে অনুষ্ঠানে আর কোনো কথা বলেননি।
অপর আলোচক সাংবাদিক মনির হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ঢাকা নিউজ এজেন্সিকে দেয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ওই ঘটনা নতুন করে আর কল্পনা করতে চাই না। এক কথায় এটি ছিল ভয়ঙ্কর এক অভিজ্ঞতা। সিনেমার দৃশ্যেও এমনটি দেখা যায় না।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক রোবায়েত ফেরদৌস এ বিষয়ে আমার দেশ-কে বলেন, টকশোতে একজনের কথা বলার সময় অন্যজনের কথা বলার নিয়ম নেই। তিনি বলেন, মন্ত্রী শাজাহান খান কথা বলছিলেন। তার মাঝখানে রফিকুল ইসলাম মিয়াও কথা বলা শুরু করেন। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। তাদের কথাবার্তা অশোভন পর্যায়ে চলে গেলে একপর্যায়ে অনুষ্ঠান সাময়িক স্থগিত করি। এরপর তাদের বুঝিয়ে আবার অনুষ্ঠান শুরু করি।
আট বিষয়ে তথ্য চেয়েছে বিশ্বব্যাংক প্যানেল
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি (চাহিদাপত্র) দিয়েছে বিশ্বব্যাংক বিশেষজ্ঞ প্যানেল। ঢাকা ত্যাগের আগে এটি তারা হস্তান্তর করেন। চিঠিতে তদন্ত-সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট আটটি বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। স্বচ্ছ, পরিপূর্ণ তদন্তের স্বার্থে তারা ওইসব তথ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন। দ্রুত তথ্যগুলো পাঠাতে বলেছেন তারা। এ জন্য ওই আটটি বিষয়ে তথ্য পাঠাতে জোরশোরে কাজ শুরু করেছে দুদক। সূত্র জানায়, গত রোব ও সোমবার দু'দিন ঢাকায় বৈঠককালে বিশেষজ্ঞ প্যানেলকে দুদকের তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। দুদক আইনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইনের সিডি প্রদর্শন করা হয় তাদের সামনে। পরে ওইসব সিডি তাদের দেওয়া হয়। দু'দিনের সফরকালে গত সোমবার রাতে এক বৈঠকে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের কাছে ওই চিঠি হস্তান্তর করা হয়। দুদকে দেওয়া ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন বিশ্বব্যাংকের তিন সদস্যের এক্সটারনাল প্যানেল অব এক্সপার্টসের চেয়ারম্যান আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাবেক প্রধান লুই গ্যাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পো। তদন্তের স্বার্থে যত দ্রুত সম্ভব ওইসব তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়। দুদকের একটি সূত্র জানায়, আগামী ১০ দিনের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের মাধ্যমে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক সদর দফতরে ওইসব তথ্য পাঠানো হবে। চিঠিতে যা চাওয়া হয় ১. তদন্তের স্বার্থে যাদের নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাদের নাম, ঠিকানা ও পরিচয়; ২. তদন্ত করতে গিয়ে ইতিমধ্যে যে ২৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাদের জবানবন্দির কপি; ৩. ওই প্রকল্পে আনা দুর্নীতির অভিযোগের ওপর এ পর্যন্ত গৃহীত সব কার্যক্রম ও দুদকের তদন্ত কমিটির ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা; ৪. দুদক তদন্ত-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য এ পর্যন্ত তথ্য, নথি চেয়ে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি দিয়েছে সেসব চিঠির কপি; ৫. পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পেতে যে ১৩ কোম্পানি ইচ্ছাপত্র পেশ করেছিল সেসব পত্রের কপি; ৬. দুদক কমিটি তদন্তের লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তার যৌক্তিক কারণ এবং এ-সংক্রান্ত আইনি বিধান; ৭. তদন্তের ক্ষেত্রে ওইসব পদক্ষেপ ছাড়া অন্য কোনো কৌশল গ্রহণ করা হয়ে থাকলে সেসব বিষয় এবং ৮. তদন্তের স্বার্থে অন্য কোন কোন ক্ষেত্রে পত্র যোগাযোগ করা হয়ে থাকলে সেসব পত্রও। জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী তদন্তের স্বার্থে ছুটিতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ও পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়ায় ইন্টেগ্রিটি অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্বে থাকা ড. মসিউর রহমানকে নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক। ড. মসিউরকে নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে অবগত রয়েছে বিশ্বব্যাংক প্যানেল। প্যানেল চেয়ারম্যান ওকাম্পোসহ তিন সদস্যের প্যানেল ঢাকা ত্যাগ করেছে গত মঙ্গলবার সকালে। গত সোমবার রাতে ওই প্যানেলের পক্ষে বিশ্বব্যাংকের ঢাকার আবাসিক প্রতিনিধি অ্যালেন গোল্ডস্টেইন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, প্যানেল আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের রিপোর্ট পেশ করবে। দুদকের তদন্তকাজ মূল্যায়নে আগামী ডিসেম্বরে ওই প্যানেলের ঢাকা আসার কথা রয়েছে। দুদক জানায়, কানাডিয়ান কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তা রমেশ সাহা ও ইসমাইল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক টিমের কানাডায় যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক প্যানেল। দুদক টিম অভিযোগের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে কানাডায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা কানাডায় গিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে কানাডিয়ান রয়্যাল পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট, লাভালিন কর্মকর্তা রমেশ ও ইসমাইলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার নথি সংগ্রহের চেষ্টা করবে। দুদকের চার সদস্যের বিশেষ তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন সিনিয়র উপ-পরিচালক আবদুল্লা-আল-জাহিদ, মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী, গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী ও মির্জা জাহিদুল আলম।
খালেদা জিয়াকে চীনা ভাইস প্রেসিডেন্ট : চীন-বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সুসম্পর্ক রয়েছে, তা নিকট ভবিষ্যতে নতুন মাত্রা পাবে বলে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে নিশ্চিত করেছেন চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জি জিংপিন। গতকাল বিকালে বেইজিংয়ের ঐতিহাসিক গ্রেট হল অব পিপলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে এক বৈঠকে চীন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) প্রভাবশালী নেতা এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বৈঠক শুরুর আগে গ্রেট হলে পৌঁছলে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তার প্রতিনিধি দলকে চীনের রীতিতে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানান তিনি।
বেগম জিয়া প্রায় এক সপ্তাহের সফরে এরই মধ্যে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আজ তার দেশের উদ্দেশে চীন ছাড়ার কথা রয়েছে। ব্যাংককে একদিন অবস্থান করে আগামীকাল দেশে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। তার সঙ্গে দলের একটি শক্তিশালী প্রতিনিধি দলও রয়েছেন। তিনি গত ১৪ অক্টোবর চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছিলেন। এইদিন ব্যাংককে অবস্থান করে পরদিন চীনে পৌঁছেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, খালেদা জিয়া ও জি জিংপিনের মধ্যকার বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও সুসংহত করার ব্যাপারে বিশেষ আলোচনা করা হয়। জি জিংপিন এ সময় বাংলাদেশ ও চীনের সুসম্পর্ক নির্মাণে সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণ করেন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে বলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে চীনের অর্থনৈতিক ও কারিগরি সাহায্য ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে খালেদা জিয়াকে আশ্বস্ত করেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়নে বেগম জিয়ার অবদানের কথাও স্মরণ করেন। জি জিংপিন বলেন, সিপিসি ও বিএনপির মধ্যে দলীয় সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হলে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে অবদান রাখবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বৈঠকে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ চীনকে তাদের বিশেষ বন্ধু মনে করে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে চীনের ভূমিকার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই সহযোগিতা ভবিষ্যতেও চীন অব্যাহত রাখবে। খালেদা জিয়া ‘এক-চীন নীতি’র প্রতিও সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি চীন ও জাপানের মধ্যে পূর্বচীন সাগরের দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে চলমান জটিলতার শান্তিপূর্ণ অবসান হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট জি জিংপিন জানান, বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে অংশ নিতে সক্রিয় বিবেচনা করবে। উভয় নেতা এই প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও তার পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে একমত পোষণ করেন। চট্টগ্রাম থেকে চীনের কুনমিং পর্যন্ত সড়ক ও রেলপথ নির্মাণে যৌথভাবে কাজ করতেও সম্মত হন তারা।
বৈঠকে কমিউনিস্ট পার্টির আসন্ন ১৮তম কংগ্রেস সফল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন খালেদা জিয়া। তিনি আরও বলেন, চীন পার্টির দক্ষ নেতৃত্বে আরও সাফল্যের পথে দ্রুত এগিয়ে যাবে।
বৈঠকে বেগম জিয়ার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও লে. জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান, ভাইস চেয়ারপার্সন বেগম সেলিমা রহমান ও শমসের মবিন চৌধুরী, উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সাবিহ উদ্দিন আহমেদ ও চেয়ারপার্সনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান।
শর্তসাপেক্ষে দুই মাসের জামিন পেলেন সাবেক সেনাপ্রধান হারুন
 |
ডেসটিনি গ্রুপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার শর্তে সাবেক সেনাপ্রধান ও গ্রুপটির প্রেসিডেন্ট লে. জেনারেল (অব.) হারুন অর রশিদকে দুই মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি ফরিদ আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ জামিন দেন।
হাইকোর্ট বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিয়ে হারুন অর রশিদের প্রতি বলেন, “দেশ ত্যাগ করবেন না; তদন্তকাজে যখন তাকে ডাকা হবে, তখনই সাড়া দেবেন; তদন্তকাজ ব্যাহত করবেন না; ডেসটিনির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না বা সম্পর্ক রাখবেন না; ডেসটিনির কারো জন্য তিনি চেষ্টা বা তদবির করবেন না; এ মামলার বিষয়ে জনসম্মুখে বক্তব্য (পাবলিক স্টেটমেন্ট) দেবেন না; নিয়মের বাইরে গিয়ে তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলবেন না বা যোগাযোগ করবেন না; তার (হারুন অর রশিদ) জামিন ডেসটিনির অন্য কারো জন্য উদাহরণ হিসেবে আনা যাবে না; এসব শর্ত যদি তিনি ভঙ্গ করেন তাহলে তার জামিন বাতিল হয়ে যাবে।”
জামিন দেওয়ার কারণ হিসেবে হাইকোর্ট বলেন, “তার স্বাস্থ্যগত কিছু সমস্যা রয়েছে। এছাড়া তিনি সাবেক সেনাপ্রধান এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। সর্বোপরি তার ব্যক্তিগত স্ট্যাটাস বিবেচনা করেই আদালত তাকে জামিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
গত ১১ অক্টোবর লে. জেনারেল (অব.) হারুন অর রশিদ, ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। সেদিনই তারা ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. জহুরুল হকের আদালতে পৃথকভাবে আত্মসমর্পণ করেন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর হারুন অর রশিদ, রফিকুল আমীন, মোহাম্মদ হোসাইনসহ ডেসটিনির শীর্ষ ২১ কর্মকর্তাকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেওয়া জামিন বাতিল করেছিলেন একই আদালত।
উল্লেখ্য, দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম গত ৩১ জুলাই মামলা দুটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ডেসটিনি ট্রি প্ল্যানটেশন ও ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। কিন্তু বর্তমানে তাদের পৃথক দুটি অ্যাকাউন্টে ৫৬ লাখ ও ৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা আছে। বাকি তিন হাজার ২৮৫ কোটি টাকা তারা মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এখনো নির্বাচন সম্ভব: ড. কামাল
 |
|
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক বিষয়ে আদালতের দুই মেয়াদে নির্বাচন করতে বলা হয়েছে। তাহলে সরকার কেন তত্ত্বাবধায়ক রাখতে চাচ্ছ্নো। আদালতের রায় অনুযায়ী এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচন সম্ভব।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দেশে গণতন্ত্র নানাভাবে বিপদগ্রস্ত। আর এ কারণে সংসদীয় গণতন্ত্রের ক্ষমতার প্রয়োগ দরকার বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনেক কথা বলে সেই কথা থেকে সরে যান।
সরকার ও বিরোধীদলের মধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্ঠি হয়েছে সে বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, আদালত ঐ রায় ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতি ১০ জন অ্যামিকাস কিউরির মতামত নিয়েছিলেন। ১০ জনের ৯ জনই তত্ত্বাবধায়ক রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। কিন্ত তাদের মতামত উপেক্ষা করে যে রায় দেওয়া হয়েছে। সেই রায়েও দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক রাখার কথা বলা আছে।
আইনমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রশ্নে বিশিষ্ট আইনজীবীদের মতামতকে কেন উপেক্ষা করা হয়েছে। আদালত দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক রাখতে বললেও কেন সরকার তড়িঘড়ি করে সংবিধানে সংশোধন এনেছে? হলমার্ক, ডেসটিনি, পদ্মাসেতু নিয়ে সংসদীয় কমিটি সরকারের কাছে ফাইলপত্র চাইতে পারে। এসব ঘটনার ব্যাখ্যা চাইতে পারে।
উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সগীর আনোয়ার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
বি. চৌধুরী ও ড. কামালের নয়া জোট গঠনের ঘোষণা ২২ অক্টোবর
 |
সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন যৌথভাবে আগামী ২২ অক্টোবর বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য ভিন্নধারার একটি রাজনৈতিক জোট গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকে ওই ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
সূত্রমতে. ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে অনুষ্ঠানিকভাবে জোটের নাম ঘোষণা করা হতে পারে।
সূত্র জানায়, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও বিশিষ্ট চিকিৎসক সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞ প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর তারা বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে ঐকমত্য পোষণ করেন।
তাদের মতে, দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এই দুই প্রবীণ রাজনীতিবিদ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- জাতীয় ঐক্য গঠনের মাধ্যমে একটি ভিন্নধারার রাজনীতির আবহ তৈরি করার, যাতে দেশ থেকে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস নির্মূল করা যায়।
এ লক্ষ্যে দুই নেতা আগামী ২২ অক্টোবর বিকাল ৪টায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গঠনের ডাক দেবেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকরা উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জানা গেছে।
সূত্রে বলা হয়, ঈদুল আযহার পর জোট প্রক্রিয়ায় যুক্ত সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে অথবা জানুয়ারির শুরুতে একটি জাতীয় কনভেনশনের মাধ্যমে ভিন্নধারার এই রাজনৈতিক জোটের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হতে পারে।
প্রাণ ড্রিংকসের সব লাইসেন্স বাতিল
প্রাণের ফ্রুট ড্রিংকসসহ ৩১ কোম্পানির বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের সার্টিফিকেশন মার্কস (সিএম) লাইসেন্স বাতিল করেছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। একই সঙ্গে এসব পণ্যের মোড়কে বিএসটিআইয়ের লোগো ব্যবহারেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে এসব পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর সতর্ক থাকতে সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে বিএসটিআই। জানা গেছে, এসব কোম্পানি পণ্যের গুণগত মান বজায় রেখে লাইসেন্স নিলেও পরে সেই মান অব্যাহত রাখেনি। মান নিয়ন্ত্রণকারী পরীক্ষাগারের সুপারিশ অনুসারে ১৩ অক্টোবর বিএসটিআইয়ের পরিচালক মো. লুৎফর রহমান খান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশে এসব পণ্যের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। বিএসটিআই সূত্র জানিয়েছে, শিগগিরই পণ্যগুলো বাজার থেকে প্রত্যাহারে কোম্পানিগুলোকে নোটিশ দেওয়া হবে। এদিকে সমকালের প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স নিয়ে নিম্নমানের পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি অনুমোদনহীন অনেক কোম্পানি তাদের পণ্য বাজারজাত করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও জোরালো অভিযান পরিচালনা করা উচিত। এদিকে খাদ্যপণ্য, বিশেষ করে যেসব খাবার শিশুদের কাছে প্রিয়, সেসব পণ্যে ভেজালকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করে সচেতন মহল। তারা বলছেন, শুধু লাইসেন্স বাতিল করে কোম্পানিগুলোকে শাস্তি দিলে হবে না, তাদের আইনের আওতায়ও আনতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভেজাল খাদ্যপণ্য গ্রহণ জনস্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। কিছু পণ্যে ভয়াবহ মাত্রার উপাদানের তারতম্য থাকায় তা বাজার থেকে তুলে নেওয়া উচিত। এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ১ জুন হাইকোর্ট এক রায়ে খাদ্যের গুণগত মান নির্ণয়ের জন্য সারাদেশে খাদ্য আদালত গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদালতের এ রায় এখনও কার্যকর হয়নি। বিএসটিআইয়ের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের গুণগত মান বজায় রেখে বিএসটিআই থেকে লাইসেন্স নিয়েছিল। পরে ক্রেতাদের অভিযোগ এবং বিএসটিআইয়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় এসব কোম্পানির পণ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। এরপর বিএসটিআইয়ের পুনঃপরীক্ষায় লাইসেন্স নেওয়ার সময় এসব কোম্পানির যে মান ছিল, তা সমপর্যায়ে নেই বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি জানান, ভোক্তাদের এসব কোম্পানির পণ্য সম্পর্কে সচেতন করতে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাতিল হওয়া কোম্পানির পণ্যগুলো হচ্ছে_ এগ্রিকালচার মার্কেটিং কোম্পানি লিমিটেডের উৎপাদিত প্রাণ ফ্রুট ড্রিংকস (ম্যাংগো, অরেঞ্জ, লেমন, স্ট্রবেরি, লিচি, আপেল, পাইন আপেল, ফ্রুট ককটেল), প্রমি এগ্রো ফুডস লিমিটেডের ফ্রুট ড্রিংকস (লিচি, অরেঞ্জ), মডার্ন ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের মডার্ন ফ্রুট ড্রিংকস, নিউট্রি এগ্রো ফুডসের নিউট্রি ফ্রুট ড্রিংকস (অরেঞ্জ), সাফা কনজিউমার প্রোডাক্টস লিমিটেডের ফ্রুট ড্রিংকস (রকস্টার, মিক্সড ফ্রুট), ফাস্ট্রাক এগ্রো প্রোডাক্টস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কিউসি চাটনি, এলিট কনজিউমার প্রোডাক্টস (প্রা.) লিমিটেডের এলিট চাটনি, হাসেম ফুডস লিমিটেডের সেজান চাটনি, ইবনে সিনা ফুড অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ইবনে সিনা চাটনি, ঢাকা ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডায়মন্ড সেমাই, আলাউদ্দিন সেমাই ফ্যাক্টরির আলাউদ্দিন সেমাই, সার্স ফুডের নুরী সেমাই, মায়া চানাচুর ফ্যাক্টরির মদিনা সেমাই, শাহানা সেমাই ফ্যাক্টরির লাবণী সেমাই, মডার্ন হারবাল ফুড লিমিটেডের মর্ডান চাটনি, জে কে এগ্রো ফুড প্রোডাক্টসের সিনথিয়া চাটনি, স্বর্ণা ডেইরি অ্যান্ড প্রোডাক্টসের স্বর্ণা চাটনি, হক ব্রাদার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ওয়েফার বিস্কুট (অরেঞ্জ ক্রিম, চকোলেট ক্রিম, কোকোনাট, আলমন্ড অ্যান্ড হানি, ট্রটি ফ্রুটি, ডিডং), এ্যাংকর ফুড প্রোডাক্টসের এ্যাংকর ওয়েফার বিস্কুট, মায়ের অনুদান ফুড প্রোডাক্টসের জান্নাত ধনিয়া গুঁড়া, প্রক্সিম লিমিটেডের পিপিএল ধনিয়া গুঁড়া, নরসিংদী সিটি মসলা প্রোডাক্টসের নরসিংদী সিটি ধনিয়া গুঁড়া, এমএমএইচ মাল্টিকেমিক্যাল লিমিটেডের ধনিয়া গুঁড়া, আরএমপি ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাইভেট লিমিটেডের আরএমপি ফ্রুট ড্রিংকস, আরা ফুডস লিমিটেডের ফ্রুট ড্রিংকস, সিটিজি কনজিউমার প্রোডাক্টসের গৃহিণী ধনিয়া গুঁড়া, রংধনু ফুড প্রোডাক্টসের রংধনু ধনিয়া গুঁঁঁঁঁঁঁঁড়া, টিএম এগ্রো ফুড প্রোডাক্টসের এ জেড জেড ধনিয়া গুঁড়া, রহমতুল্লাহ বাণিজ্যালয়ের রান্না ধনিয়া গুঁড়া, বিপিসি ফুড প্রোডাক্টস প্রাইভেট লিমিটেডের কুকমি ভেজিটেবল ঘি, পদ্মা ইলেকট্রিক কোম্পানির পদ্মা স্ট্যাটিক ওয়াট আওয়ার মিটার। সূত্র জানায়, সরকারি পরীক্ষাগারে বিশেষজ্ঞ তত্ত্বাবধানে রাসায়নিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, লাইসেন্স বাতিল পণ্যগুলো অধিকাংশ কারখানা থেকেই উৎপাদিত, মোড়কজাত ও বাজারজাত করা হয় ভেজাল পণ্য হিসেবে, যা বিশুদ্ধ খাদ্য আইন, ১৯৫৯ (সংশোধিত ২০০৫) এবং বিশুদ্ধ খাদ্যবিধি, ১৯৬৭তে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এ কে ফজলুল আহাদ সমকালকে বলেন, 'বিএসটিআই নিজস্ব অনুসন্ধান টিমের মাধ্যমে বাজার থেকে পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। লাইসেন্স নেওয়ার পর কোম্পানিগুলো পণ্যের মান বজায় রাখছে কি-না, তা যাচাই করাই এর উদ্দেশ্য।' তিনি বলেন, 'কয়েকটি কোম্পানি লাইসেন্স নেওয়ার সময় যে মান ছিল, তা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বলে বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় উঠে এসেছে।' জনসাধারণকে সচেতনে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে কি-না_ জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তিনি বলেন, কোনো পণ্যের লাইসেন্স বাতিল হলে তার উৎপাদন বা বিপণন অবৈধ। এ ক্ষেত্রে লাইসেন্স বাতিল হলে স্বাভাবিকভাবে কোম্পানিগুলো বাজার থেকে পণ্য প্রত্যাহার করবে, এটাই প্রত্যাশিত। শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার মোয়াজ্জেম হোসেন সমকালকে বলেন, দেশের মানুষ পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবে এমনিতেই বিভিন্ন রোগে ভুগছে। সেখানে খাদ্য মানহীন হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, বাড়ন্ত শিশুদের জন্য যারা মানহীন খাদ্য বাজারজাত করছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, কোম্পানিগুলো খাদ্যের মান বজায় না রেখে এমনভাবে বিজ্ঞাপন প্রচার করে যেন শিশুরা প্রলুব্ধ হয়। ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সমকালকে বলেন, ভেজাল প্রতিরোধে যে আইন রয়েছে, তাতে ভেজালকারীদের প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভেজালকারীরা আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে সামান্য জরিমানা দিয়ে একই অপরাধ বারবার করছে। এ ছাড়া বিএসটিআই ভেজাল শনাক্তকরণে অনেক সময় ব্যর্থ হয়। মনজিল মোরসেদ জানান, হাইকোর্টের রায় অনুসারে সারাদেশে খাদ্য আদালত গঠনে ১৫ অক্টোবর সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত কোম্পানির বক্তব্য প্রাণ গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল গতকাল রাতে সমকালকে বলেন, 'বিএসটিআই থেকে লাইসেন্স বাতিলসংক্রান্ত কোনো চিঠি বা নোটিশ পাইনি। মঙ্গলবার বিষয়টি আমরা শুনেছি।' তিনি বলেন, 'প্রাণ একটি ব্র্যান্ড। আমাদের ব্যাখ্যা করার সুযোগ না দিয়ে বিএসটিআই লাইসেন্স বাতিল করবে_ এটা হওয়ার কথা নয়।' মডার্ন হারবাল ফুড লিমিটেডের অ্যাডভাইজার তারিক বিন হোসেন সমকালকে বলেন, এটা বিএসটিআইয়ের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা। আমরা স্যাম্পল জমা দিয়েছি। দু-একদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। তিনি দাবি করেন, বাতিল হওয়া মডার্ন চাটনি অনেক আগেই বাজার থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাই এ পণ্য বাতিল হলেও কিছু যায়-আসে না।
দুদককে মামলার পরামর্শ বিশ্বব্যাংক প্যানেলের
পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের অর্থছাড় নিশ্চিত করতে হলে দুর্নীতির পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হবে। বিশ্বব্যাংক প্যানেল এরকমই পরামর্শ দিয়েছে দুদককে। দুদকের দায়িত্বশীল একটি সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
সূত্রমতে, বিশ্বব্যাংক প্যানেল নথিপত্র সংগ্রহ করে নিশ্চিত হয়েছে যে এ প্রকল্পে সরকারের ভেতরের ও বাইরের কিছুসংখ্যক প্রভাবশালী ব্যক্তি দুর্নীতির ষড়যন্ত্র বা পরিকল্পনা করেছিলেন। অর্থ লেনদেন হয়েছে কি-না তা স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশের আইনে দুর্নীতির পরিকল্পনা করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ফলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। বিশ্বব্যাংক প্যানেল এ পরামর্শ দিয়েছে।
জানা গেছে, ওই প্রকল্পে কানাডার কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনকে পরামর্শক হিসেবে কাজ পাইয়ে দেওয়ার শর্তে অনৈতিক অর্থ লেনদেনের কথাবার্তা হয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন কিছু প্রভাবশালী লোক। এ বিষয়ে তথ্য-প্রমাণাদি বেরিয়ে এসেছে কানাডার রয়্যাল পুলিশের তদন্তে। বিশ্বব্যাংক প্যানেল তদন্ত কাজের গাইডলাইন দিয়েছে দুদককে। কানাডা থেকে তদন্তের নথিপত্র সংগ্রহ করে দিতে সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
সূত্র জানায়, কানাডিয়ান রয়্যাল পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট, ঘুষ লেনদেন কাজে যুক্ত এসএনসি-লাভালিন কর্মকর্তা রমেশ সাহার জবানবন্দি, রমেশের তৈরি ঘুষের তালিকা ও বাংলাদেশের প্রচলিত আইন যাচাই করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করবে দুদক।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক প্যানেল সদস্যরা ঢাকা ত্যাগ করেছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বব্যাংক সদর দফতরে তাদের মতামত দেওয়ার কথা। এরপর বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঋণ ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে জানা গেছে। এদিকে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনার জন্য আরেকটি প্রতিনিধি দল ঢাকা আসার কথা। তারা কবে আসবেন তা নিশ্চিত নয়। সূত্রমতে, প্যানেলের মত ইতিবাচক হলে খুব তাড়াতাড়ি তারা ঢাকা আসবেন। দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান গতকাল সমকালকে বলেছেন, মামলা করার মতো তথ্য-প্রমাণ
পাওয়া গেলে অভিযুক্ত যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। তিনি আরও বলেন, দুদকের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় তা হলো, মামলার পর আদালতে বিচারিক কাজে নিজেদের পক্ষে রায়ের জন্য সব ধরনের দালিলিক প্রমাণ থাকা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক প্যানেলের সদস্যরা আমাদের কাজে সন্তুষ্ট কি-না তা আপনারা ভালো বলতে পারবেন। তিনি বলেন, এখন আমরা প্যানেলের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি। তাদের প্রতিবেদনে যদি অভিযোগ প্রমাণ হয় তাহলে তা যাচাই করে অভিযুক্তদের আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে। গোলাম রহমান বলেন, বিশ্বব্যাংক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে হাজির করেনি। তবে আমাদের অনুসন্ধান করা তথ্য তাদের দেওয়া হয়েছে। এখন বিশ্বব্যাংক প্যানেল কী প্রতিবেদন দেয়, সেটিই দেখার বিষয়। তদন্ত কার্যক্রম ও প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সমান্তরাল গতিতে এগিয়ে যাওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
দুদকের একটি সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিও আসামি হতে পারেন। এ ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা করার ক্ষেত্রে প্রথমেই প্রয়োজন পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ। এ মামলা দায়েরের আগে কানাডার রয়্যাল পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। একই সঙ্গে কানাডিয়ান কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তা রমেশ সাহা ও ইসমাইল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।
দুদক আগে স্বীকার না করলেও এখন স্বীকার করছে যে, দুর্নীতির ষড়যন্ত্র করাও আইনের চোখে অপরাধ। দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যায়।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে এসএনসি-লাভালিনকে পরামর্শকের কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বাংলাদেশের কতিপয় ব্যক্তিকে অর্থ দিতে হবে বলে রমেশ সাহা তার ডায়েরিতে যাদের নাম ও টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে একটি তালিকা তৈরি করেছিলেন, সে তালিকাই এখন দুদকের তদন্তের মুখ্য বিষয়। কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বাংলাদেশের ওইসব ব্যক্তি তাদের কাছে অর্থ দাবি করেছিলেন কি-না, নাকি কাজ পাওয়ার বিনিময়ে লাভালিন খুশি হয়ে টাকা দিতে চেয়েছিল_ রমেশের কাছে এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে কানাডায় যাবে দুদকের বিশেষ তদন্ত কমিটি। মামলা দায়েরের জন্য ঘুষ লেনদেন পরিকল্পনা সম্পর্কে রমেশের বক্তব্য খুবই জরুরি বলে মনে করছে দুদক।
রমেশ যাদের নাম লিখেছিলেন তাদের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন যে ৪ জন তারা হলেন_ ছুটিতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ও পদ্মা সেতু প্রকল্পের ইন্টেগ্রিটি অ্যাডভাইজার ড. মসিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, ছুটিতে যাওয়া সেতু বিভাগের সচিব মোশাররফ হোসেন ভঁূইয়া, প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলাম, সরকারের বাইরের দু'জন হলেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী ও জাতীয় সংসদের হুইপ নূর-ই-আলম লিটনের ভাই নিক্সন চৌধুরী।
বিশ্বব্যাংক প্যানেলের গাইডলাইন অনুযায়ী দুদকের কমিটি পুরো তদন্ত কাজ পুনরায় করবে বলে জানা গেছে। এ লক্ষ্যে ড. মসিউর রহমানসহ ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এর মধ্যে ড. মসিউর ছাড়া ২৯ জনকে আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আবারও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
রফিকুল ও মোহাম্মদ হোসেনের ১৮ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর
ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন এবং চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনকে দু’টি মামলায় ৯দিন করে মোট ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তবে ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর রশিদের রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি।
বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এরফান উল্লাহ আসামিদের উপস্থিতিতে রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর ডেসটিনি গ্রুপের শীর্ষ ওই তিন কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচারক তাদের জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওই দিনই আসামিদের দু’টি মামলায় ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। গত রোববার ১৭ অক্টোবর রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুর রহমানের আদালত।
এরও আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইনসহ ডেসটিনির শীর্ষ ২১ কর্মকর্তার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেওয়া জামিন বাতিল করেছিলেন মহানগর দায়রা জজ আদালত।
অবিলম্বে তাদের এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম গত ৩১ জুলাই মামলা দুটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ডেসটিনি ট্রি প্ল্যানটেশন ও ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।
কিন্তু বর্তমানে তাদের পৃথক দুটি অ্যাকাউন্টে ৫৬ লাখ ও ৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা আছে। বাকি তিন হাজার ২৮৫ কোটি টাকা তারা মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।
বাংলাদেশকে উন্নয়ন সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি চীনের
 |
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন।
বেইজিংয়ে মঙ্গলবার সকালে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং জেইসি এক বৈঠকে সফররত বাংলাদেশের বিরোধী দলনেতা খালেদা জিয়াকে এ প্রতিশ্রুতি দেন বলে দলটির তরফে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ভাইস-চেয়ারম্যান শমসের মোবিন চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, ব্যক্তিগত সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।
আর চীনের পক্ষে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
চীনা কমিউন্সিট পার্টির (সিপিসি) আমন্ত্রণে গতকাল সোমবার ব্যাংকক হয়ে চীন পৌছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
সেখানে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানিয়ে নৈশভোজের আয়োজন করে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। ওই নৈশভোজের আগে দেশটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী ওয়াং জিয়ারুই এর সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের বিরোধী দলনেতা।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন খালেদা জিয়া। এ সময় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ে শুরু হওয়া বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
এ সময় খালেদা জিয়ার অনুরোধের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জন্য চীনের কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরো বাড়ানোর আশ্বাস দেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে বিশেষ বন্ধু মনে করে চীন। তাই বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে চীনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”
এ সময় বাংলাদেশকে সেতু, রাস্তা, রেল, জ্বালানি এবং নদী শাসন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ খাতে সহযোগিতা বাড়ানার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এছাড়াও বঙ্গোপসাগরে গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলার ব্যাপারেও তার সরকারের আগ্রহের কথা জানান তিনি।
বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে তার সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসবের প্রেক্ষিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান খালেদা জিয়া।
এ সময় খালেদা জিয়া চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা সাদরে গ্রহণ করেন।
বিকেলে ড. মোশাররফের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দল চীনের দরিদ্র নারীদের একটি প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
এছাড়াও চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ডেপুটি চিফের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান।
বস্তুত তার দল বিএনপির প্রতি বিভিন্ন দেশের সমর্থন আদায় ও সম্পর্ক বাড়ানোর কূটনৈতিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এশিয়ার প্রধান পরাশক্তি চীন সফর গেছেন খালেদা জিয়া।
আগামী ২০ অক্টোবর ব্যাংকক হয়ে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
এর আগে ২০১০ সালে সর্বশেষ চীন সফরে গিয়েছিলেন বিএনপি প্রধান।
এমএলএম প্রতারণা: স্ত্রীসহ ইটিভির সাংবাদিক কারাগারে
 |
মাল্টি লেভেল মার্কিটিংয়ের (এমএলএম) মাধ্যমে সাত কোটি প্রতারণা ও আত্মসাতের মামলায় বেসরকারি চ্যানেল ইটিভির সাংবাদিক মাহাথির ফারুকী ও তার স্ত্রী সিনথিয়া আলমগীরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এমএলএম কোম্পানি গ্লোবাল মানি সুইম কর্পোরেশন লিমিটেডের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে জনৈক ব্যবসায়ী মঞ্জুরুল ইসলাম গত ১৩ জুন কলাবাগান থানায় এই মামলা করেন। মামলায় বাদীসহ প্রায় ৩০০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে সাত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করা হয়।
মামলা দায়েরের পর মাহাথির ও তার স্ত্রী গত ১ জুলাই হাইকোর্ট থেকে দুই মাসের জামিন পান। ওই জামিনের মেয়াদ শেষে গত ২ সেপ্টেম্বর তারা ঢাকা সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে ফের জামিন নেন।
মঙ্গলবার ধার্য তারিখে মাহাথির ও তার স্ত্রী আদালতে হাজিরা দিতে আসেন।
অন্যদিকে জামিনে বের হয়ে আসামিরা বাদীকে হত্যার হুমকি দেয়ায় বাদীর আইনজীবী জামিন বাতিলের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত জামিন বাতিল করেন। জামিন বাতিলের আদেশ দেওয়ার পর আসামিপক্ষ তা পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে তাও নামঞ্জুর করে জামিন বাতিলের আদেশ বহাল রাখেন।
জামিন আবেদনের এক পর্যায়ে আসামিদের আইনজীবী আদালতকে বলেন, “সিনথিয়ার ছয় মাসের একটি দুগ্ধপোষ্য সন্তান রয়েছে। তাকে জামিন দেওয়া হোক।”
আদালত তার আদেশে উল্লেখ করেন, “বিধি মোতাবেক কারাগারে সন্তানকে নেওয়া যাবে।”
আসামিদের কারাগারে নেওয়ার পর তাদের আইনজীবী মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “যে প্রক্রিয়ায় আসামিদের জামিন বাতিল করা হয়েছে তা সঠিক হয়নি। আসামিরা জামিনে গিয়ে জামিনের কোনো শর্তের অপব্যবহার করেননি। বাদীকে কোনো প্রকার হুমকিও দেননি এ অবস্থায় আসামিদের জামিন বাতিল করার সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়নি।”
কলাবাগান থানায় মামলার এজহারে বলা হয়েছে, ঢাকার পান্থপথ ৬৮/৬৯ কনসেপ্ট টাওয়ারে গ্লোবাল মানি সুইম কর্পোরেশন লিমিটেডের নামে আসামিরা মিথ্যা প্রলোভন ও অসাধুভাবে মিথ্যা বর্ণনা দিয়ে আনুমানিক জনপ্রতি ন্যূনতম ১৫ হাজার টাকা করে গ্রাহকদের কাছ থেকে সর্বমোট ৭ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেছে। তারা গ্রাহকদের প্রাথমিক বিনিয়োগের পরবর্তী মাস থেকে ৬টি সমান কিস্তিতে বিনিয়োগের দ্বিগুণ টাকা পরবর্তী ৬ মাসে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ওই নামসর্বস্ব ইন্টারনেট কোম্পানির অফিসটি সুকৌশলে বন্ধ করে আকস্মিকভাবে কোম্পানির অফিসটি তালাবদ্ধ করে তারা পালিয়ে যায়।
মোবাইল ফোনে রিচার্জ নিয়ে ভোগান্তি চরমে

রিচার্জ নিয়ে মোবাইল ফোনের গ্রাহকদের ভোগান্তি চরমে। রিটেইলারদের দোকানে দোকানে গিয়েও টাকা রিচার্জ করা যাচ্ছে না। কমিশন বৃদ্ধির দাবিতে রিটেইলাররা দোকান বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করতে পারছেন না। রিচার্জকারীরা টাকা রিচার্জ করছেন না এমনকি কেউ কার্ডও বিক্রি করছেন না। কেউ কিনতে গেলে বলছেন কার্ড নেই। কার্ড শেষ। টাকা রিচার্জ না করতে পারলেও তারা স্ক্র্যাচ কার্ড কিনে টাকা ভরবেন সেটাও অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না। মোবাইল ফোনের রিটেইলারদের দাবি না মানলে ১৩ই অক্টোবর থেকে রিচার্জ না করার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা। মোবাইল ফোনের টাকা রিটেইলারদের দাবি, তাদের কমিশন বাড়াতে হবে। এখন তারা ১০০০ টাকা রিচার্জ করলে পান ২৭ টাকা। তাদের দাবি, এখন তাদের দিতে হবে প্রতি হাজারে ১০০ টাকা। কিন্তু মোবাইল ফোন অপারেটর ও ডিস্ট্রিবিউটররা এখনও এতে রাজি হননি। মোবাইল ফোন অপারেটররা বলছেন, এটি তাদের দেয়ার কথা নয়। এটা ডিস্ট্রিবিউটর ও রিটেইলারদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তারা আলোচনা করে সমাধান করে নেবেন। অপারেটররা ডিস্ট্রিবিউটরদের কমিশন দেন। তাদের কাছ থেকে রিটেইলাররা ফ্ল্যাক্সি কিনে নেন। রিটেইলাররা মনে করছেন অপারেটররা তাদের কমিশন দেবেন। আর অপারেটররা বলছেন, কমিশন দেবেন ডিস্ট্রিবিউটররা।
সূত্র জানায়, কমিশন বাড়ানো ছাড়া আরও দাবি আছে তাদের। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- এসোসিয়েশনের মাধ্যমে নতুন সিম দেয়া, টাকা রিচার্জ করতে গিয়ে অনেক সময় একটি-দু’টি ডিজিট কোন কারণে ভুল হলে তখন টাকাটা ভুল নম্বরেই রিচার্জ হয়ে যায়। তাদের দাবি, ভুল নম্বরে টাকা রিচার্জ করার পর তা যেন কোম্পানি ফেরতের ব্যবস্থা করে। অনেকেই আছেন অনুমোদন ছাড়াই টাকা রিচার্জ করছেন। তাদের দাবি, রিচার্জ ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের রিচার্জের সিম দেয়া। রিচার্জের সিমের বাধ্যতামূলক জামানত বন্ধ করা। আন্দোলনরত মোবাইল ফোন রিচার্জ ব্যবসায়ী এসোসিয়েশন বলেছে, ১৩ই অক্টোবরের মধ্যে দাবি মানা না হলে তারা আর কোন মোবাইল ফোনের রিচার্জ করবেন না। এখন অল্প-বিস্তর হলেও তখন তা-ও হবে না। অনির্দিষ্টকালের জন্য রিচার্জ বন্ধ করে দেয়া হবে। এ কারণে প্রিপেইড ফোনের গ্রাহকদের অনেকেই আগেভাগে টাকা রিচার্জের চেষ্টা করছেন। এদিকে এ ধরনের সমস্যার কথা বিবেচনা করে মোবাইল ফোন অপারেটররা তাদের কাস্টমার কেয়ারে টাকা জমা দেয়ার সুযোগ দিচ্ছেন। সেখান থেকে স্ক্র্যাচ কার্ড কেনারও সুযোগ রয়েছে। তবে কাস্টমার কেয়ারের সংখ্যা কম ও কাছাকাছি না হওয়ায় এটি সবার জন্য সহজ হচ্ছে না। রিচার্জের ক্ষেত্রে দশ টাকাও রিচার্জ করা হয়। কিন্তু কাস্টমার কেয়ারে ওই পরিমাণ টাকা জমা নেয়া হয় না। কোন কোম্পানির ২০ টাকার নিচে কোন স্ক্র্যাচ কার্ড নেই।
৭ দফা বাস্তবায়নে প্রাইমারি শিক্ষকদের আলটিমেটাম

সাত দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সরকারকে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের পদ দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড পদমর্যাদায় বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে এবং সহকারী শিক্ষকদের পদ জাতীয় বেতন স্কেলে ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণসহ সাত দফা দাবিতে শিক্ষকরা ওই সময়সীমা বেঁধে দেয়। সংগঠনটির দাবি বাস্তবায়নে আল্টিমেটাম দিয়ে তাদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে আগামী ১, ৩ ও ৪ নভেম্বর দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক ঘণ্টা কর্মবিরতি, ৫ ও ৬ নভেম্বর দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি, ৭ ও ৮ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি। এরপরও দাবি আদায় না হলে ১২ নভেম্বর থেকে হওয়া পর্যন্ত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন। সাত দফা দাবিতে গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কয়েকশ’ শিক্ষক বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এতে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবদুল আউয়াল তালুকদার, সহ-সভাপতি আবুল হোসেন, জাহিদুর রহমান বিশ্বাস, মহা-সম্পাদক সালেহা আক্তার, সহ-মহাসম্পাদক নাজমুল হক লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহা-সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন, মো. কামরুল হাছান প্রমুখ বক্তৃতা করেন। সমাবেশে শিক্ষক নেতারা বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মৌলিক শিক্ষাগত যোগ্যতা আপগ্রেড করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের শিক্ষকতা যোগ্যতা যথাক্রমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি করা হয়েছে। অথচ তাদের বেতন স্কেল অন্য পেশার একই যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মচারীদের তুলনায় নিম্নতর। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশাকে সামাজিকভাবে কাঙ্ক্ষিত মর্যাদাশীল করার জন্য উচ্চতর বেতন স্কেল বিবেচনা না করা হলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফলও আশা করা সম্ভব নয়। অবিলম্বে দাবিগুলো বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষক নেতারা বলেন, আমাদের সঙ্গে কোনো রকম টালবাহানা করলে পরিণতি ভালো হবে না। সরকার তাদের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার ওয়াদা পালন করবে এমনটি প্রত্যাশা শিক্ষকদের। শিক্ষকদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা চালু, সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির জটিলতা নিরসন করে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি কার্যকর করা, উপজেলা শিক্ষা অফিসার এন্ট্রি পদ ধরে প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার গঠন করা, প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কীয় বিভাগীয় নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সাংগঠনিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, শিশু মনোবিজ্ঞান বিবর্জিত, প্রাথমিক শিক্ষার স্বার্থে পরিপন্থী পুলিশি পরিদর্শনের কারণে শিক্ষকদের সাময়িক বরখাস্তের নিয়ম প্রত্যাহার করা।
|
|
|
|
|
সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা ম্যানেজার গ্রেফতার, অন্যরা নজরদারিতে
 |
হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এ কে এম আজিজুর রহমানকে রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে আটক করেছে র্যাব-৩। তিনি সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল (সাবেক শেরাটন) শাখার সাবেক ম্যানেজার। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, সন্দেহের তালিকায় থাকা ব্যাংকটির অন্য কর্মকর্তরা কড়া নজরদারিতে রয়েছেন। যে কোনো মুহূর্তে তাদের গ্রেফতার করা হতে পারে।
রোববার রাতে আজিজকে আটক করা হয় বলে র্যাব-৩ এর একটি সূত্র জানিয়েছে।
চলতি মাসের ৪ সেপ্টেম্বর তারিখে আজিজুর রহমানসহ হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবিরকে আসামি করে মোট ২৭ জনের নামে রমনা থানায় মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আলোচিত হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় মোট ১১টি মামলা করেছে দুদক।
মামলায় যাদের প্রধান আসামি করা হয়েছে তারা হচ্ছেন— হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ, তানভীরের স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, তানভীরের ভায়রা ও গ্রুপের জিএম তুষার আহমেদ, সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার সাবেক ডিজিএম একেএম আজিজুর রহমান, একই শাখার এসইও সাইফুল হাসান, ইও আবদুল মতিন, ব্যাংকের ডিএমডি কাজী ফখরুল ইসলাম, আতিকুর রহমান, জিএম নওশের আলী খন্দকার, মাহবুবুল হক, আনম মাসররুরুল হুদা সিরাজী, মোস্তফিজুর রহমান, ননীগোপাল নাথ, মীর মহিদুর রহমান প্রমুখ। তাদের সবাই কড়া নজরদারিতে রয়েছেন।
জানা গেছে, রূপসী বাংলা শাখা থেকে হলমার্ক গ্রুপসহ ৬টি কোম্পানি আত্মসাৎ করেছে মোট ৩ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে হলমার্ক এককভাবে আত্মসাৎ করেছে দুই হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
নাটের গুরু মুক্তিযোদ্ধা লীগের যুগ্ম সম্পাদক : দশ কোটি টাকার
জালনোট সরঞ্জামসহ গ্রেফতার ১০ : বাজারে ছাড়া হয়েছে ২০ কোটি : প্রস্তুতি ছিল
১০০ কোটির
তিনি মুক্তিযোদ্ধা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও বাংলাদেশে
জালটাকা তৈরির গুরু। তিনি ১৪ বছর ধরে জালটাকা তৈরির ব্যবসা করছেন। পুলিশের
হাতে একবার গ্রেফতারও হয়েছিলেন। কিন্তু বেশিদিন আটকে রাখা যায়নি। কিছুদিন
জেল খেটেছেন; কিন্তু জালটাকার ব্যবসা ছাড়তে পারেননি। এর মধ্যে বাজারে
ছেড়েছেন কোটি কোটি টাকা মূল্যের জালনোট। রয়েছে তার অসংখ্য শিষ্য। তারাও
গুরুর কাছে দীক্ষা নিয়ে জালটাকার ব্যবসা করছে। গোয়েন্দাদের কাছে জালটাকা
তৈরির মূল হোতা বলে পরিচিত এই ব্যক্তির নাম দুরুজ্জামান ওরফে নুরুজ্জামান
মাস্টার ওরফে জামান বিশ্বাস (৫০)। যিনি মুক্তিযোদ্ধা লীগের কেন্দ্রীয় নেতা।
তার ছোট ভাই অ্যাডভোকেট খালেদুজ্জামানকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন সংঘবদ্ধ চক্র।
তাদের রয়েছে জালটাকা তৈরির একাধিক কারখানা। দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্যিকভাবে
জালটাকার ব্যবসা চালিয়ে আসছিল ওই চক্রটি।
১০ কোটি টাকার জালনোট ও সরঞ্জামসহ নুরুজ্জামান বিশ্বাস এবং তার ৯ সহযোগীকে
গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার বিকাল থেকে রাত
১১টা পর্যন্ত রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে
তাদের গ্রেফতার করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সাড়ে ২৩ হাজার কোটি টাকার জালনোট
বাজারে ছাড়ার মুখ্য সময়টাকেই বেছে নিয়েছিল জালনোট তৈরির চক্রটি। গতকাল
আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা বাজারে ছাড়া হয়। এর ঠিক একদিন আগেই
গ্রেফতার হলো ১০ কোটি টাকার জালনোটসহ প্রতারক চক্রটি। গ্রেফতার করাদের
মধ্যে চারজন নারী সদস্যও রয়েছে। এরা হলো—দুরুুজ্জামান ওরফে নুরুজ্জামান
ওরফে জামান বিশ্বাস, তার ছোট ভাই অ্যাডভোকেট খালেদুজ্জামান, মো. বাবু মিয়া
ওরফে তোতলা বাবু, সুজন ওরফে ডেসটিনি সুজন, মো. মঞ্জুরুল কামাল ওরফে কামাল
মাস্টার, জালাল উদ্দিন, শান্তা ওরফে শাবানা, মোসা. মাকসুদা, লিমা আক্তার ও
আ. রহমান। তাদের কাছ থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ ২২ হাজার বাংলাদেশী জালটাকা, ৮৮
হাজার ভারতীয় জাল রুপি, প্রায় ৮ কোটি টাকার জালনোটের খসড়া, একটি ডেক্সটপ,
একটি মনিটর, ৩টি ল্যাপটপ, ৬টি প্রিন্টার, বিভিন্ন রঙের ১২ হাজার কার্টিস,
বাংলাদেশ ব্যাংকের জলছাপ, বঙ্গবন্ধুর ছবির জলছাপের স্ক্রিনপ্রিন্ট করার
স্ক্রিন, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ১০০০ লেখা ২ ব্যাগ নিরাপত্তা সুতা, বিভিন্ন
ধরনের বোর্ড ৫৭টি, স্ক্রিনপ্রিন্টের রঙ টানার রাবার ৬০টি, জালটাকা ছাপানোর
কাজে ব্যবহৃত নেগেটিভ, কাটার ব্লেট ৬০টি, সাদা, সোনালি, সবুজ ও লালসহ
বিভিন্ন ধরনের রঙের ১২০টি কৌটা, ফেবিকল এপ্রিটন ব্যান্ডের আঠা ৭৫ কৌটা, তরল
রিডিউচার ২২ বোতল, বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ৩০ বোতল, স্টিলের স্কেল ৩৫টি,
বিভিন্ন ধরনের আর্ট ব্রাশ ২৭টি, বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়ান মুদ্রার ডাইস ২টি,
বঙ্গবন্ধু/শাপলা/বাংলাদেশ ব্যাংক/১০০০ ও ৫০০ টাকার জলছাপ সংবলিত কাগজ ৪০
প্যাকেট, হাতুড়ি ৫টি, পার্স ৫টি, টাকা কাটার স্কেল মেশিন ১টি, নিরাপত্তা
সুতা বানানোর জন্য ফয়েল পেপার ১ রোলসহ জালটাকা তৈরির আরও বিপুল পরিমাণ
যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
নুরুজ্জামান বিশ্বাস গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে অকপটে জালনোট তৈরির কথা
স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ১০০ কোটি টাকার
জালটাকা বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি ছিল। এরই মধ্যে ২০ কোটি জালটাকা বাজারে
ছাড়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি (উত্তর) মাহবুবুর রহমান
জানান, আটকদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। দেশে জালটাকা তৈরির মূল
হোতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এ চক্রের অন্যদেরও গ্রেফতারের
চেষ্টা চলছে। গতকাল গ্রেফতার করাদের ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের
সামনে হাজির করা হয়। এসময় নুরুজ্জামান নিজেকে আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগের
কেন্দ্রীয় কমিটির জয়েন্ট সেক্রেটারি বলে দাবি করেন। সঙ্গে থাকা দলীয়
পরিচয়ের ভিজিটিং কার্ডও প্রদর্শন করেন তিনি।
জানা যায়, গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি মশিউর রহমান ও এসি মাহবুব রহমানের
নেতৃত্বে ডেমরা এলাকার বাঁশেরপুলের পাশে আমিনবাগ এবং কামরাঙ্গীরচরের পশ্চিম
রসুলপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুটি নকল টাকা তৈরির কারখানার সন্ধান পান।
এরপর ওই কারখানায় অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এডিসি মশিউর
রহমান জানান, তার নেতৃত্বে শনিবার বিকালে ডেমরার বাঁশেরপুলে ফরমান খাঁ
মার্কেটের পাশের ৩১ নম্বর আমিনবাগের একটি বাসার ৫ম তলায় অভিযান চালিয়ে ১
কোটি ৩০ লাখ জাল টাকা এবং ৫ কোটি টাকার জালনোট তৈরি করার বিভিন্ন ধরনের
সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেন। এরপর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জালনোট
কেনাবেচার অন্যতম হোতা ও কারখানার মালিক লিয়াকত হোসেন ওরফে জাকির মাস্টারকে
গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জালাল, শান্তাসহ অপর ৭
জনকে গ্রেফতার করা হয়। জাকির মাস্টার জানান, তারা রাজধানীর যাত্রাবাড়ী,
শ্যামপুর, ডেমরাসহ বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে জালটাকার ব্যবসা করে
আসছিলেন। আর শান্তা ওরফে শাবানা তার অন্যতম কারিগর হিসেবে কাজ করে।
গ্রেফতারদের তথ্যের ভিত্তিতে কামরাঙ্গীরচর পশ্চিম রসুলপুরের একটি ৫ তলা
বাড়ির ২য় তলায় অভিযান চালিয়ে ৮৮ হাজার জাল ইন্ডিয়ান রুপি, ১ কোটি ২০ লাখ ২২
হাজার জালটাকাসহ আরও ৩ কোটি জালটাকা তৈরির উপকরণসহ বাংলাদেশী জালটাকা
তৈরির প্রধান হোতা দুরুজ্জামান ওরফে মাস্টার ওরফে জামান বিশ্বাস ও তার ছোট
ভাই অ্যাডভোকেট খালেদুজ্জামানকে গ্রেফতার করেন। দুরুজ্জামান কুষ্টিয়া এবং
ফরিদপুর থেকে সারাবছর জালটাকার ব্যবসা করলেও আসন্ন ঈদ উপলক্ষে চলতি মাসের
শুরুতে তার অন্যতম পাইকার কামাল মাস্টারের কামরাঙ্গীরচরের বাসায় এসে
জালটাকা তৈরি শুরু করেন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, দুরুজ্জামান ওরফে মাস্টার ওরফে জামান বিশ্বাস
বাংলাদেশে জালটাকার সূচনা করেন। প্রথম জীবনে তিনি রাজশাহীতে আকবর নামের এক
ব্যক্তির সঙ্গে একসঙ্গে আর্ট করতেন। ১৯৯৮ সালে আকবর তাকে সাদা-কালো ১০০
টাকার একটি নোট কালার করতে দিলে তিনি তা করে দেন। এরপর থেকে তিনি জালটাকা
তৈরির পরিকল্পনা নেন। ’৯৯ সালের প্রথমদিকে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডির
জিগাতলায় বাসা ভাড়া করেন এবং ৭০-৮০ হাজার টাকা দিয়ে একটি কালার ফটোকপি
মেশিন ক্রয় করেন। এরপর তারা কালার ফটোকপি দিয়ে নোটের উভয় পাশে ফটোকপি করার
পর স্ক্রিনপ্রিন্টের মাধ্যমে তাতে বাঘের মাথার জলছাপ দিয়ে জালটাকা তৈরি
শুরু করেন। প্রথমে কালার ফটোকপি দিয়ে নোটের উভয় পাশে ফটোকপি করার পর
স্ক্রিনপ্রিন্টের মাধ্যমে তাতে বাঘের মাথার জলছাপ দেয়া হতো। পরে ফয়েল কাগজে
হিট দিয়ে সিকিউরিটি সুতা বসানো হতো। জামান বিশ্বাস আরও জানান, তখন এক লাখ
জালটাকার বান্ডিল ১০-১২ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। এখন প্রতিলাখ জালটাকা ৫
থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। বর্তমানে দেশে ৮-১০টি জালনোট তৈরির সক্রিয়
গ্রুপ রয়েছে। জামান বলেন, ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে ঢাকায় গোয়েন্দা পুলিশ
জালটাকা বিক্রেতা হেলালকে গ্রেফতার করে। তার মাধ্যমে জামান বিশ্বাসকে কালার
ফটোকপি মেশিন ও জাল টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়। সে মামলায় ২১ মাস জেল খাটার
পর জামান জামিনে বের হয়ে আবার সরঞ্জামাদি কিনে দেশে বাণিজ্যিকভাবে জালটাকা
তৈরির বাণিজ্য শুরু করেন। জামান জানান, তার শিষ্যদের মধ্যে অন্যতম হলো—ছগির
মাস্টার, হুমায়ুন, রাশিদুল, কাওছার, জাকির, আ. হামিদ, সেলিম, ইমন ও সুমন
প্রমুখ। তারা জামানের কাছ থেকে জালটাকার দীক্ষা নিয়ে নিজেরাই জালটাকা তৈরি
শুরু করে। জামান গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানান, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা
উপলক্ষে তারা ১০০ কোটি টাকা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতার করাদের বিরুদ্ধে ডেমরা ও কামরাঙ্গীরচর থানায় বিশেষ
ক্ষমতা আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের গতকাল ১০ দিনের
রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
‘৯৭% সাংসদ নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িত’
|
|
|
|
|
|
দেশের অর্ধেক সংসদীয় আসনের
সদস্যদের ওপর ‘গবেষণা’ চালিয়ে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি
ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, সংসদ সদস্যদের ৯৭ শতাংশই বিভিন্ন
‘নেতিবাচক কার্যক্রমে’ জড়িত।
এই নেতিবাচক কার্যক্রমের মধ্যে
প্রশাসনিক কাজে প্রভাব বিস্তার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ, উন্নয়ন
বরাদ্দের অপব্যবহার, অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত হওয়ায় সমর্থন, সরকারি ক্রয়
সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব বিস্তার, নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন, মিথ্যা
তথ্য দিয়ে প্লট বরাদ্দ পাওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে টিআইবির প্রতিবেদনে।
‘নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের’ কারণে সাংসদদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংসদে ‘আচরণবিধি বিল’ পাসেরও দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার
রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে নবম জাতীয় সংসদ সদস্যদের ইতিবাচক ও নেতিবাচক
ভূমিকা পর্যালোচনা শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন
টিআইবি সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিচার্স অ্যান্ড পলিসি) শাহজাদা এম
আকরাম।
টিআইবি ট্রাস্টিবোর্ড চেয়ারপার্সন অ্যাডভোকেট সুলতানা
কামাল, নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান ও ট্রাস্টি এম হাফিজ উদ্দিন খান
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “সংসদ সদস্য
পদকে একটি লাভজনক আয়ের উৎস হিসেবে গণ্য করায় সাংসদরা মূল দায়িত্বের বাইরে
উন্নয়নকাজে এ ধরনের নেতিবাচক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েছেন।”
শাহজাদা
এম আকরাম সংবাদ সম্মেলনে জানান, এ গবেষণার জন্য দেশের ৪২ জেলায় ৪৪টি দলগত
আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে শিক্ষক ব্যবসায়ী, আইনজীবী, অন্যান্য পেশাজীবী,
গণমাধ্যমকর্মীসহ ৬০০ আলোচক অংশ নেন।
তারা আলোচনা করেন ১৪৯ আসনের
সংসদ সদস্যদের নিয়ে, যাদের মধ্যে ১৩৬ জন ক্ষমতাসীন দলের এবং ১৩ জন বিরোধী
দলের সাংসদ। ২৭ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীও আছেন এদের মধ্যে।
ওই আলোচকদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তথ্য ও মতামত নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে টিআইবি কর্মকর্তা জানান।
তিনি
বলেন, এই সংসদ সদস্যদের ৯৭ শতাংশই বিভিন্ন ‘নেতিবাচক কার্যক্রমে’ জড়িত,
যাদের মধ্যে নারী সদস্য সাতজন ও বিরোধী দলের পাঁচ সাংসদ রয়েছেন। এছাড়া
মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী পদে রয়েছেন এদের মধ্যে ২৭ জন।
অন্যদিকে
ওই ১৪৯ জন সাংসদদের ৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ কোনো না কোনো ধরনের ‘ইতিবাচক
কার্যক্রমে’ জড়িত। এদের মধ্যে নারী সাংসদ ছয় জন, বিরোধী দলের ৫ জন। এছাড়া
১৯ জন মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী।
স্বাস্থ্য বা শিক্ষাখাতে অবদান,
বিরোধীদের সঙ্গে সদ্ভাব, কৃষি ও স্থানীয় অবকাঠামো নির্মাণে অবদান,
ব্যক্তিগত কার্যক্রম, আইন শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা, নারীর ক্ষমতায়নের মতো
বিষয়গুলোকে ‘ইতিবাচক কার্যক্রম’ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে প্রতিবেদন তৈরির
ক্ষেত্রে।
শাহজাদা এম আকরাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০০৯ সালের
জানুয়ারি থেকে এ বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ের দৈনিক
সংবাদপত্রগুলোতে নবম সংসদের ১৮১ জন সদস্যের (৫১ দশমিক ৭) বিভিন্ন নেতিবাচক
কার্যক্রমের সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রথম থেকে সপ্তম অধিবেশন
পর্যন্ত সংসদ কার্যক্রম পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিবেশনে সাংসদদের গড়
উপস্থিতি ৬৭ শতাংশ। অধিবেশনের মোট সময়ের ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যয় হয়
প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের প্রশ্নোত্তর পর্বে। আর আইন প্রণয়নে সময় লাগে ৯
দশমিক ২ শতাংশ।
পাঁচ বছর পরপর নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়া সংসদের
জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কোনো আইনি ব্যবস্থা নেই বলেও উল্লেখ করা হয়
টিআইবির প্রতিবেদনে।
শাহজাদা এম আকরাম বলেন, “বড় রাজনৈতিক দলের
স্থানীয় পর্যায়ে দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়া, সম্মেলন না হওয়া, পরবর্তী নেতৃত্ব
তৈরি না হওয়া এবং নেতিবাচক কাজে জড়িত সাংসদদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না
নেওয়ায় ‘শাস্তি না হওয়ার সংস্কৃতি’ বিকশিত হয়েছে। এতে সংসদ সদস্যরা
নেতিবাচক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার কোনো বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ছেন না।”
টিআইবির
নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “নেতিবাচক কর্মকাণ্ড থেকে
সাংসদদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতীয় সংসদে উত্থাপিত আচরণবিধি
বিল আইনে পরিণত করতে হবে।”
তিনি সংসদে বিরোধী দলের কার্যকর ও
ন্যায়ভিত্তিক অংশগ্রহণ নিশ্চিতের সুপারিশ করেন এবং সংসদ সদস্যদের অধিবেশনে
উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়া ৩০ দিন এবং এক টানা সাত
দিনের বেশি অনুপস্থিতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
দুর্নীতির মামলা না তুললে প্রধানমন্ত্রীর ১০৮ বছর জেল হতো -মওদুদ
: মুক্তিযুদ্ধে হাসিনার চেয়ে আতাউস সামাদ পরিবারের অবদান বেশি - মাহমুদুর
রহমান
সাবেক আইনমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ
আহমদ গতকাল এক শোকসভায় বলেন, ‘ক্ষমতায় এসে নিজের দুর্নীতির ১৪টি মামলা
প্রত্যাহার না করলে এবং দেশের প্রচলিত আইনে বিচার হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার ১০৮ বছরের সাজা হতো। আপাদমস্তক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত তার সরকারকে
বিশ্বচোর হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তার মুখে দুর্নীতির কথা শোভা
পায় না। দুর্নীতির মামলায় তিনিও জেল খেটেছেন’। রামু, উখিয়া ও পটিয়ায় বৌদ্ধ
সমপ্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির তদন্ত দলের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তাকে
নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কটূক্তির কড়া ও যুক্তিপূর্ণ জবাব দেন সভার প্রধান
অতিথি মওদুদ। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে কুরুচিপূর্ণ, বিভ্রান্তিকর উল্লেখ
করে বিএনপি তদন্ত দলের প্রতিবেদনের সত্যতা তুলে ধরে মওদুদ বলেন, ‘সরকারের
মদতেই ওই ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী এই সত্য যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করতে
না পেরে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছেন। যুক্তিতে না পারলে ব্যক্তিগত আক্রমণ
করা আওয়ামী লীগের পুরনো সংস্কৃতি। প্রতিবেদনে আমরা বৌদ্ধদের ওপর বর্বরোচিত
হামলার ঘটনার সত্যতা তুলে ধরেছি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর সরকারই হামলা
করে জঙ্গি কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা
করছে।’
সভার প্রধান বক্তা দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও পাঠকনন্দিত
কলামিস্ট মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আতাউস সামাদের মতো এতো বড়মাপের একজন
মানুষের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় যারা আছেন তারা নীরবতা দেখিয়েছেন।
স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর পুরুষ, আপাদমস্তক নিরপেক্ষ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়
বিশ্বাসী সাংবাদিক আতাউস সামাদের মৃত্যুর পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মতো
অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক শোকসভায়ও আওয়ামী লীগের কেউ
আসেননি। তাকে যারা অবহেলা করতে পারেন তারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করেন
না। মুক্তিযুদ্ধে তার এক ভাতিজা শহীদ হয়েছেন, তার দুই ভাতিজা বীর
মুক্তিযোদ্ধা, তার বড় ভাইকে পাকিস্তানিরা ক্যাম্পে ধরে নিয়ে ১১ দিন পর্যন্ত
অমানুষিক নির্যাতন করেছে। আতাউস সামাদের ছোট ভাইও মুক্তিযোদ্ধা।
মুক্তিযুদ্ধে শেখ হাসিনার চেয়ে আতাউস সামাদের পরিবারের অবদান অনেক বেশি।
স্বাধীনতায় বিশ্বাসী মানুষেরা দেশে থাকুক, আওয়ামী লীগ এটা চায় না’।
দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কটূক্তি প্রসঙ্গে মাহমুদুর
রহমান বলেন, ‘সম্মানিত মানুষের চরিত্র হনন করার নামই হচ্ছে শেখ হাসিনা। গত
চার বছরে বিএনপি যেসব ভালো কাজ করেছে, বৌদ্ধদের ওপর হামলার পর তাদের
প্রতিবেদনও এগুলোর মধ্যে একটি। বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ
করার সরকারের দুরভিসন্ধি ওই তদন্ত প্রতিবেদন ব্যর্থ করে দেবে’।
গতকাল সকালে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের আইডিইবি
ব্যাংকার্স হলরুমে জিয়া পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত শোকসভায়
তারা এসব কথা বলেন। সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক ও দৈনিক আমার দেশ-এর উপদেষ্টা
সম্পাদক আতাউস সামাদ এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও
ইসলামিক টিভির চেয়ারম্যান মেজর (অব.) সাঈদ এস্কান্দারের স্মৃতির প্রতি
শ্রদ্ধা জানাতে এ শোকসভার আয়োজন হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয়
প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কবীর মুরাদ।
শুক্রবার গণভবনে শ্রমিক লীগের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যারিস্টার মওদুদকে নিয়ে করা সমালোচনার জবাবে
গতকাল মওদুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া যেভাবে
জানিয়েছেন, তাতে মনে হয় আমরা সত্যি কথাই বলেছি। আমরা একটা নিরপক্ষে তদন্ত
কমিটি করে রামু, উখিয়ার বৌদ্ধদের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনার সত্যতা তুলে
ধরতে চেয়েছি, প্রতিবেদনে সত্য কথা বলেছি। জঙ্গি বলে দেশকে প্রচার করলে
আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়া যায়। এজন্যই এ কৌশল অবলম্বন করে শত বছরের
ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। জঙ্গিবাদের ভয় বিদেশিদের দেখিয়ে আর কোনো
লাভ হবে না। এবার রামুর ঘটনায় ধরা পড়ে গেছে সরকার। বিদেশিরাও দেখেছেন ২৯
তারিখ রাত নয়টা থেকে পরবর্তী আট ঘণ্টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে প্রশাসনের কারও
উপস্থিতি ছিল না। কেন উপস্থিত ছিলেন না, এসব জবাব প্রধানমন্ত্রী দিতে
পারেননি’।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘কোনো রাষ্ট্রপতির কাছে আমি ক্ষমার
আবেদন করিনি। ক্যাঙ্গারু কোর্টে আমার দুটি গাড়ির বিষয়ে মামলার রায়ে
বিচারকরা বলেছিলেন, এটা একটা ফালতু মামলা। তখন সরকার মামলাটি প্রত্যাহার
করতে বাধ্য হয়েছিল। আপনি আমাকে প্রতারক বলেছেন। কিন্তু আমি দেশের
প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যাবাদী ও প্রতারক বলে অপমান করতে চাই না। এতে আপনার
সম্মান বাড়বে না। আপনার আত্মসম্মানবোধ আমরা দেখতে চাই। আপনার ভাষা ব্যবহারে
সংযত হওয়া উচিত। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এমন বক্তব্য মানুষ আশা করেন না।
আপনার লাগামহীন বক্তব্যে শুধু দেশের জনগণ নয়, আপনার দলেরও অনেকে বিব্রতবোধ
করেন’। মওদুদ বলেন, ‘ক্ষমতায় গেলে দেশের মাটিতে সব দুর্নীতির বিচার অবশ্যই
হবে। বিরোধী দলের সরকারবিরোধী আন্দোলন সফল হবে। এ আন্দোলন এখন জনগণের
আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এদেশে জনগণের কোনো আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি। নির্দলীয়
সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকার বাধ্য হবে। অন্য কোনো উপায় নিতে চাইলে
তাদের ক্ষতি বেশি হবে’।
সভায় মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বর্ষীয়ান
সাংবাদিক ও আপাদমস্তক আওয়ামী লীগ সমর্থক এবিএম মূসা, বরেণ্য আইনজীবী
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খান ও
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজে কটূক্তি
করেছেন। টিভি চ্যানেলের টকশো অনুষ্ঠানগুলোয় অতিথি হিসেবে অংশ নেন বিভিন্ন
অঙ্গনের সম্মানিত ব্যক্তিত্বরা। প্রধানমন্ত্রী টকশোর অতিথিদের তুলনা করেছেন
সিঁধকাটা চোরের সঙ্গে। দেশে প্রধানমন্ত্রীর মতো বিকৃত চিন্তার আর কোনো
দ্বিতীয় মানুষ পাওয়া যাবে না, যিনি টকশো অতিথিদের সিঁধকাটা চোরের সঙ্গে
তুলনা করবেন। এমন রুচিবহির্ভূত বিষোদ্গার তার জন্যই শোভা পায়। সরকার ও শেখ
হাসিনার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকে এভাবে অপমান মেনে নিতে হবে। এটাই
বর্তমান অবস্থা। দেশে কোনো আইন নেই। পেনাল কোড ও আইনের সব রকমের অপব্যবহার
করছে সরকার। সুশাসনকে সরকার নির্বাসনে পাঠিয়েছে।
মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুতে সরকার দুর্নীতি করেনি
বলে চ্যালেঞ্জ করেছেন। এরপরও মন্ত্রী, সচিবকে সরালেন, উপদেষ্টাকে ছুটিতে
পাঠালেন। বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতিবিরোধী প্রতিনিধি দলও বাংলাদেশে আসছে। এতে
দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন হবে বলে নাগরিক হিসেবে আমি খুশি। কিন্তু
স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য বিদেশ থেকে দুর্নীতিবিরোধী প্রতিনিধি দল
আসাটা লজ্জাজনক। দুর্নীতি এখন এমনভাবে ছড়িয়েছে, পুরো দেশ লুটেপুটে খাচ্ছে
সরকার।’ তিনি বলেন, ‘উত্তম কুমার বড়ুয়ার ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ
(সা.) সম্পর্কে আপত্তিকর ছবি ছিল, তার এখন খোঁজ নেই। তার বাড়ি ও
আত্মীয়স্বজনের ওপর কোনো আক্রমণ হয়নি। এর পেছনেও দুরভিসন্ধি আছে।’
আতাউস সামাদের মূল্যায়ন ও স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘যে ক’জন সাংবাদিকের
নাম নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি, তাদের মধ্যে আতাউস সামাদ অন্যতম। ১/১১-এর পর
দৈনিক আমার দেশ যখন সঙ্কটে পড়ে, সাংবাদিকদের বেতন বন্ধ ছিল, তখন তিনি
আমাকে নিয়ে আসেন। আমার সরাসরি সাংবাদিকতায় আসার ক্ষেত্রে অবদান তারই।’ সাইদ
এস্কান্দার প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘তিনি বয়সে আমার সমসাময়িক
ছিলেন। বুয়েটে পড়াকালে আমার কয়েক সহপাঠী ছিলেন তার কলেজের সহপাঠী। তাদের
মাধ্যমে আমি সাইদ এস্কান্দারকে জানতাম। তিনি বাংলাদেশে বড় কাজটি করেছেন
ইসলামিক টিভির প্রতিষ্ঠা করে। এ চ্যানেল ইসলামী মূল্যবোধ প্রচারে বিশেষ
ভূমিকা রাখছে।’
সভায় কবীর মুরাদ বলেন, ‘আতাউস সামাদ ছিলেন সাংবাদিকতা জগতের উজ্জ্বল
নক্ষত্র। তিনি ছিলেন সততা, নৈতিকতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে। তার লেখা
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আমাদের উদ্দীপ্ত করেছে,
সাহস জুগিয়েছে আর আমাদের চেতনাকে শানিত করেছে। সাইদ এস্কান্দার ছিলেন
নিবেদিতপ্রাণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।’ সভায় আলোচকরা দুই মরহুমের রুহের
মাগফেরাত কামনা করে তাদের শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা,
সহমর্মিতা জানান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব
আবদুল্লাহিল মাসুদ, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব একেএম মনসুর,
অ্যাডভোকেট দেওয়ান মাহফুজুর রহমান ফরহাদ, ঢাকা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক
শফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মাজহারুল আলম, কৃষিবিদ মনোয়ারুল ইসলাম
এনাম, তোফাজ্জেল হোসেন বুলু, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এমতাজ
হোসেন, জিয়া পরিষদের বরিশাল বিভাগীয় নেতা অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহার প্রমুখ।
জাবিতে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলা : ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
বাসে আগুন, উদ্বেগ উত্কণ্ঠায় প্রথম দিনের ভর্তি পরীক্ষা ব্যাহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রথম দিনে ভর্তিচ্ছু
শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে মিছিল বের করলে ছাত্রলীগ
নেতাকর্মীরা মিছিলে হামলা চালিয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়
ডেইরি সংলগ্ন কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া ছাত্রলীগের
দুই হলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কথাকাটাকাটিকে কেন্দ্র করে ধাওয়া-পাল্টা
ধাওয়ায় ৪ নেতাকর্মী আহত হয়। এ ঘটনায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে
দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে বলে
ধারণা করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক
(সম্মান) শ্রেণীর ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়
শাখার ছাত্রদল সভাপতি জাকির ও সেক্রেটারি আবু সাঈদ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে মিছিল
বের করা হলে ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মহিবুল্লাহ তাদের ব্যানার কেড়ে নেয়।
এসময় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহমেদ রাসেলের নেতৃত্বে ২০-২৫ ছাত্রলীগ
নেতাকর্মী রড, পাইপ, হাতুড়ি আর লাঠি দিয়ে তাদের ধাওয়া করে। তখন ছাত্রদল
নেতাকর্মীরা ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস থেকে পিছু হটে। এসময় ছাত্রলীগ সাধারণ
সম্পাদক ছাত্রদল নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমি কত ভয়ঙ্কর তা তোরা জানিস
না। এসময় ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতঙ্কিত হয়ে দিগ্বিদিক
ছোটাছুটি শুরু করেন। পরে দুপুর ১২টায় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে
বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রেডিও কলোনি এলাকায় গুলিস্তান-ধামরাইয়ের একটি বাসে
আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় সাভার পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা
ঘটে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহমেদ রাসেল বলেন, ছাত্রদল
পরিকল্পিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করতে ষড়যন্ত্র করছে। এজন্য আমরা তাদের
প্রতিহত করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সভাপতি জাকিরুল ইসলাম জাকির বলেন, ভর্তিচ্ছু
শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করতে গেলে
ছাত্রলীগ সশস্ত্র অবস্থায় আমাদের ওপর হামলা চালায়।
বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক
সামছুল আলম সেলিম বলেন, ছাত্রলীগ একের পর এক শিক্ষাঙ্গনে অস্থিতিশীল পরিবেশ
সৃষ্টি করছে। এরই ধারাবাহিকতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের
শান্তিপূর্ণ মিছিলে তারা হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সহাবস্থান দাবি করছি।
এদিকে দুপুর ২টার দিকে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা নিয়ে কথা
কাটাকাটির জের ধরে মওলানা ভাসানী হল ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাত্রলীগ
নেতাকর্মীদের মধ্যে আবারও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে। ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতার
জন্য স্থাপিত ছাত্রলীগের ভর্তি সহায়তা কেন্দ্রে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে
ছাত্রলীগের জুনিয়র কর্মীদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। এসময় শহীদ
রফিক-জব্বার হলের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী সীমান্তের সঙ্গে ভাসানী হলের নূর
নবীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তারা হলে পৌঁছে সংগঠিত হয়ে
অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ গ্রুপের ওপর হামলা চালায়। শহীদ রফিক-জব্বার
হলের ৪০-৫০ জনকে নিয়ে নেতৃত্ব দেয় ছাত্রলীগের বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক মিঠুন
কুমার কুণ্ডু। অপরদিকে মওলানা ভাসানী হলের ৩০-৪০ জনকে নিয়ে নেতৃত্ব দেন
জাহাঙ্গীর আলম অর্ণব, ফেরদৌস আহমেদ ও সোহেল রানা। সংঘর্ষে রফিক-জব্বার হলের
লিঙ্কন (আইটি, ৪০তম ব্যাচ), মনির (ম্যানেজমেন্ট, ৪০তম ব্যাচ), সীমান্ত
(আইবিএ, ৪০তম ব্যাচ), সজীব (ম্যানেজমেন্ট, ৪০তম ব্যাচ) আহত হন। তাদের
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিত্সাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়া হয়েছে। পরে
প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে যে কোনো সময়
ছাত্রলীগের দুই হলের মধ্যে সংঘর্ষ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্তমানে ক্যাম্পাসে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন
রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা জানান, বর্তমানে ক্যাম্পাস শান্ত। সব পক্ষকে নিয়ে ঘটনার সুরাহা করা হবে।
‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য বিভ্রান্তিকর’
|
|
|
|
|
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও
মেহেরুন রুনি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে
‘অস্পষ্ট’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে অভিহিত করেছেন সাংবাদিক নেতারা।
বুধবার
জাতীয় প্রেসক্লাবে বৈঠক শেষে মন্ত্রীর বক্তব্যের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া
জানান বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি ইকবাল সোবহান
চৌধুরী।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সাংবাদিকদের চার সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ইকবাল
সোবহান বলেন, “সাংবাদিক নেতারা মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য
অনেকাংশে অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর। এ বক্তব্যে হত্যা রহস্যের জট খোলেনি।
নেতৃবৃন্দ আশা করছে, সাগর-রুনির প্রকৃত খুনিরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সনাক্ত
হবে।”
পাশাপাশি বিশ্বাসযোগ্য ‘মোটিভের’ সন্ধান পাওয়া যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গত
১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে নিজের বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা
সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি।
ঘটনার
প্রায় আট মাসের মাথায় মঙ্গলার ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন সাতজনকে
‘সনাক্তের’ পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন
খান আলমগীর। গ্রেপ্তার সাতজনের মধ্যে সাংবাদিক দম্পতির পারিবারিক বন্ধু
তানভীর ছাড়াও তাদের বাড়ির এক পাহারাদার রয়েছেন।
বাকি পাঁচজন হলেন ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নিতাই হত্যা মামলার আসামি।
হত্যারহস্য
উদ্ঘাটনে র্যাব ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করছে এবং তাতে পাওয়া ফলাফলে নতুন কেউ
চিহ্নিত হলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন মন্ত্রী।
বৈঠকে
হওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে ইকবাল সোবহান জানান, ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিক সমাজের
সিদ্ধান্ত হল, সাগর-রুনি হত্যা রহস্যের জট উন্মোচন, দেশজুড়ে সাংবাদিক
হত্যা, নিপীড়ন বন্ধ, সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার এবং মুক্ত গণমাধ্যম
প্রতিষ্ঠার দাবিতে সাংবাদিকদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
আগামী ১৫ অক্টোবর সকাল ১১টায় ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিক সম্মেলন থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান বিএফইউজের এই নেতা।
এ
ছাড়া সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের আট মাস পূর্তিতে ১১ অক্টোবর সকাল ১১টায় তাদের
স্মরণে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্মরণসভার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
বৈঠকে
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএফইউজে’র একাংশের সভাপতি রুহুল আমীন গাজী,
দুই অংশের মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূইয়া ও শওকত মাহমুদ, ডিইউজের দুই অংশের
সভাপতি আব্দুস শহীদ ও ওমর ফারুক, দুই অংশের সাধারণ সম্পাদক মো. বাকের
হোসাইন ও শাবান মাহমুদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ,
সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি
সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত আলম খান তপু।
সরকারের সবাই কালো বিড়াল হলে দেশ চলবে কিভাবে? : মুফতী আমিনী
ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির আমীর মুফতী ফজলুল হক আমিনী বলেছেন, দেশবাসীর মনে নতুন করে প্রশ্ন জাগছে, দফতর বিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তই কি একমাত্র কালো বিড়াল? নাকি এই মন্ত্রী পরিষদ ও উপদেষ্টা পরিষদের সবাই কালো বিড়াল? সরকারের সবাই যদি কালো বিড়াল হয় তাহলে দেশ চলবে কিভাবে? একের পর এক যেভাবে সরকারের কেলেঙ্কারীর খবর ফাঁস হচ্ছে তাতে জনগণের মনে এই ধরনের আশংকা দানা বাধাটাই স্বাভাবিক। কারণ,সম্প্রতি আলোড়ন সৃষ্টিকারী প্রতিটি কেলেঙ্কারীতেই দেখা যায় যে, কোন না কোন মন্ত্রী জড়িত আছেন। গায়ের জোরে নমরুদী কায়দায় ফেরাউনী অস্ত্র ব্যবহার করে আলেমদের নির্যাতন, নিপীড়ন চালিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শেষ রক্ষা হবে না। আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আল্লাহর পাকড়াও থেকে কেউ বাঁচতে পারবে না। আল্লাহ যখন কাউকে ধরেন তখন সে আলোর কোনো দিশা পায় না। কাকে সমাধান মনে করে তাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমান সরকারের জন্য অবস্থা অনুরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে যাকেই সমাধান হিসেবে গ্রহণ করছে তাই তাদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার বাদ আসর লালবাগস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ইসলামী ঐক্যজোট কেন্দ্রীয় কমিটির জরুরী বৈঠকে তিনি একথা বলেন। জোটের চেয়ারম্যান মুফতী আমিনীর সভাপতিত্বে অুনষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, যুগ্ম মহাসচিব মুফতী তৈয়্যেব, অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল করীম, মুফতী ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আবুল কাশেম, মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াছেল, মাওলানা যুবায়ের আহমদ, মাওলানা জসীম উদ্দীন, মাওলানা আহমদ আলী, মাওলানা ফজলুল করীম, মাওলানা শওকত আমীন, মাওলানা ফারুক আহমদ, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন প্রমুখ।
সুরঞ্জিতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি মোশাররফের
 |
সরকারের প্রতি রেলের দশ কোটি টাকার দুর্নীতিতে জড়িত থাকার দায়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
“সুরঞ্জিতের মতো স্বীকৃত দুর্নীতিবাজদের সঠিক বিচারের আওতায় আনা উচিত” মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, “রেলে দশ কোটি টাকার দুর্নীতিতে সুরঞ্জিত জড়িত। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।”
সোমবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও অন্যান্য অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার এবং নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা ও ২ অক্টোবর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মহনগর বিএনপি এ বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে।
সুরঞ্জিতের মতো দুর্নীতিবাজ কাউকে ক্লিন সার্টিফিকেট না দেওয়ার জন্যও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি আহবান জানান তিনি।
ড. মোশাররফ বলেন, “রামুর ঘটনায় সরকার জড়িত। এর পেছনে সরকারের হাত রয়েছে। নইলে এতো বড় ঘটনা ঘটতে পারতো না। তাছাড়া পুলিশ-প্রশাসন সক্রিয় থাকলেও এতো বড়ো ঘটনা ঘটতো না।”
তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাংক আন্তর্জাতিক কমিশন গঠন করেছে। এতে প্রমাণ হয়েছে যে, পদ্মাসেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। তা না হলে বিশ্বব্যাংক কমিশন গঠন করতো না।”
“সোনালী ব্যাংকের একটি শাখার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা সরাতে পারার কথা না” মন্তব্য করে মোশাররফ বলেন, “এ ব্যাপারে সব শাখায় জরিপ হওয়া উচিত। পরিচালনা পরিষদের নামে মামলা হওয়া উচিত।”
“সোনালী ব্যাংকের এমডিসহ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে” মন্তব্য করে দোষীদের বাঁচাতে নানারকম টালবাহানা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মোশাররফ আরো বলেন, “মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে এ সরকারের সবাই দুর্নীতিতে জড়িত।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, “দলীয় কমিটি হলেও রামুর ঘটনায় আমাদের তদন্ত নিরপেক্ষ হয়েছে। আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ পরে জানাবো।”
তিনি বলেন, “পদ্মাসেতু নিয়ে এ সরকারের লজ্জা হওয়া উচিত। তারা বলেছে- দুর্নীতি হয়নি। এখন বিদেশি বিশেষজ্ঞরা এ দুর্নীতির তদন্ত করবে।”
ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, দলের যুগ্ম-মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আল, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, মহিলা দল সেক্রেটারি শিরিন সুলতানা প্রমুখ।
‘মোবাইল সিম কিনতে জাতীয় পরিচয়পত্র কেন লাগবে’
|
|
|
|
|
|
মোবাইল সিম কার্ড কিনতে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শনের নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে উচ্চ আদালত।
একটি রিট আবেদনে সোমবার এই প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি সিম কার্ড কেনার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি দাখিলের বিকল্প ব্যবস্থা রাখার অন্তর্র্বতীকালীন নির্দেশও দিয়েছে হাই কোর্ট।
বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি মো. হাবিবুল গণির দেয়া রুলে মোবাইল ফোনের সিম কার্ড কেনার জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি সংযুক্তির বিধান সংশোধনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
চার সপ্তাহের মধ্যে টেলিযোগাযোগ সচিব ও বিটিআরসি চেয়ারম্যানকে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বর্তমানে মোবাইল ফোনের সিম কিনতে জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি দাখিল করতে হয়। গত ১২ এপ্রিল বিটিআরসি এটি বাধ্যতামূলক করে।
এই বিধান চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম চৌধুরী রোববার রিট আবেদনটি করেন, যিনি জাতীয় পরিচয়পত্র পাননি বলে জানান তার আইনজীবী অনীক আর হক।
অনীক হক বলেন, “রিটকারী ৬ মাস আগে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করেও পাননি। জাতীয় পরিচয়পত্র আইন অনুসারে পরিপূর্ণ জাতীয় ডাটাবেজ তৈরি হওয়ার পূর্বে এমন কোনোভাবে এটাকে বাধ্যতামূলক করে কোনো নাগরিককে কোনো সেবা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।” |
|
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল হারুনসহ ডেসটিনির শীর্ষ কর্তারা আত্মগোপনে
দুর্নীতি দমন কমিশনের দুদক মামলায় জামিন বাতিল হওয়ার পর পালিয়ে
বেড়াচ্ছেন ডেসটিনির প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধান লে. জে. হারুন অর রশিদ ও
ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিনসহ পরিচালকরা। এরই মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার
সহযোগিতায় দুদকের অনুসন্ধান টিম কয়েকটি অভিযান চালিয়েও তাদের কাউকে
গ্রেফতার করতে পারেনি। এমনকি তাদের অবস্থানও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এদিকে
চলতি সপ্তাহের মধ্যে ডেসটিনির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে বলে
জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মো. গোলাম হোসেন।
দুদকের অনুসন্ধান টিম সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের মোবাইল বন্ধ। গোপনে তারা
বিকল্প নম্বর ব্যবহার করছেন, ওইসব নম্বর না পাওয়ায় মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের
মাধ্যমেও তাদের অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছে না।
কয়েকদিন ধরে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগের
চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যক্তিগত মোবাইল গত তিনদিন ধরে
বন্ধ রয়েছে। এছাড়া তার অফিসিয়াল নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে।
লে. জে. হারুন অর রশিদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে
কল রিসিভ করেন তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা। তিনি কর্নেল আতিক বলে পরিচয় দেন।
লে. হারুনকে চাওয়া হলে বিনয়ের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘উনি অপরিচিত কারও সঙ্গে
কথা বলেন না।’ এছাড়া ডেসটিনির অন্য পরিচালকদের মোবাইলে যোগাযোগ করেও পাওয়া
যায়নি।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ডেসটিনির ২২ পরিচালককে ধরতে এরই মধ্যে দুদক সোর্স
লাগানো হয়েছে। দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, ‘আসামিরা বেশিদিন গা ঢাকা
দিয়ে থাকতে পারবেন না। তাদের ধরা দিতেই হবে।’ দুদকের বিশেষ অভিযান অব্যাহত
থাকবে বলেও তিনি জানান।
দুদকের তদন্ত টিম ডেসটিনির যে ২২ আসামিকে গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে, যাদের
রিবুদ্ধে অভিযান চলছে, তারা হচ্ছে, সাবেক সেনা প্রধান হারুন অর রশিদ,
রফিকুল অমিন, মোহাম্মদ হোসেন, দিদারুল আলম, গোফরানুল হক, মোহাম্মদ
সাঈদ-উর-রহমান, মেজবাহ উদ্দিন, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, ইরফান আলী, রফিকুল
আমীনের স্ত্রী ফারাহ দীবা, জমসেদ আরা চৌধুরী, শেখ তৈয়বুর রহমান, নেপাল
চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসেন, আজাদ রহমান, আকবর হোসেন, শিরিন আকতার, রফিকুল
ইসলাম সরকার, মজিবুর রহমান, সুমন আলী খান, সাইদুল ইসলাম খান ও আবুল কালাম
আজাদ।
৩১ জুলাই ডেসটিনির শীর্ষ ২২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদক থেকে পৃথক দুটি মানি
লন্ডারিং মামলা করে। ৬ আগস্ট ডেসটিনির সভাপতি ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং
তিন পরিচালকসহ ৫ আসামি ঢাকার সিএমএম আদালতের একজন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে
জামিন নেন। এরপর বাকি ১৭ আসামিকেও জামিন দেন অপর এক ম্যাজিস্ট্রেট।
এই জামিন দেয়ার ঘটনায় দুদক আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জহুরুল
হকের আদালতে রিভিশন মামলা করে। সেই থেকে গত ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২২
আসামির জামিন বহাল রাখা না রাখা নিয়ে অনেক নাটকীয় ঘটনা ঘটে। ভারপ্রাপ্ত
মহানগর দায়রা জজ ড. আখতারুজ্জামান ২২ আসামির জামিন বাতিল করেন। এর একদিন পর
বিচারক জহুরুল হক ওই জামিন আদেশ স্থগিত করেন। এরপর তিনি জামিন বিষয়ে
শুনানির জন্য দিন তারিখ ধার্য করেন।
২৭ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত ২২ আসামির জামিন বাতিল করেন।
দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত লিখিত আদেশের জন্য অপেক্ষা করেন।
রোববার তারা আদেশের কপি হাতে পেয়ে ওইদিন রাত থেকেই ২২ আসামিকে গ্রেফতারে
অভিযান শুরু করেন বলে জানা গেছে।
এরআগে সোমবার ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ২২ কর্মকর্তার ৫৩৩টি
ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দেয় আদালত। দুদকের দুই তদন্ত কর্মকর্তা
উপ-পরিচালক মোজাহার আলী সরদার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকের
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ ও মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হক
ওই নির্দেশ দেন।
ডেসটিনির শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদক ৩ হাজার ২৮৫ কোটি টাকার মানি
লন্ডারিং ও অর্থ আত্মসাত্ মামলা করে। ডেসটিনি মাল্টিপারপাসের হিসাব থেকে
২৭০ কোটি ৫২ লাখ ৪২ হাজার ৮২৪ টাকা ঋণ হিসেবে ১৪টি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে
স্থানান্তর করা হয়েছে বলে মামলার আবেদন সূত্রে জানা যায়। একইভাবে ডেসটিনি
২০০০-এর হিসাব থেকে হারুন অর রশিদের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর
করা হয়েছে ১৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এর মধ্যে তোলা হয়েছে ১৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা
এবং ব্যাংকে রয়ে গেছে পাঁচ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
চলতি সপ্তাহেই ডেসটিনির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে - বাণিজ্য
সচিব: চলতি সপ্তাহের মধ্যেই ডেসটিনি গ্রুপের অনিয়মসংক্রান্ত চূড়ান্ত ও
পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মো. গোলাম
হোসেন। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের
সঙ্গে এ-সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক
অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ডেসটিনি গ্রুপের অনিয়ম তদন্তে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠন
করা তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে ডেসটিনি বিষয়ে অনুষ্ঠিত
বৈঠকে ডেসটিনি গ্রুপের অনিয়মসংক্রান্ত চূড়ান্ত ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত
প্রতিবেদন তৈরির জন্য দুই মাস সময় বাড়িয়ে নিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে
রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদফতরের রেজিস্ট্রার
আহমেদুর রহিমকে প্রধান করে ডেসটিনি গ্রুপের সবক’টি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম
তদন্তে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ৭ সদস্যের একটি তদন্তের তিন দফা প্রতিবেদন দিলেও
সবক’টি প্রতিবেদনই অপূর্ণাঙ্গ বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ফেরত পাঠায়।
মহাখালীর সাততলা বস্তির আড়াই শ’ ঘর পুড়ে ছাই, নিখোঁজ অনেক
রাজধানীর মহাখালীতে সাততলা বস্তির আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে।
আগুনে বস্তির প্রায় ২শ’ থেকে আড়াইশ’ টিনের ঘর পুড়ে গেছে। বস্তির অনেকই তাদের ছেলে মেয়ে স্বজনদের খুঁজে পাচ্ছেন না। স্থানীয়রা ৩০ থেকে ৩৫ জনের নিখোঁজ হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক আবু নাইম মো: শহিদুল্লাহ ঘটনাস্থল থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের ডিজি জানান, প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করলেও পরে আরও চারটি ইউনিট যোগ হয়েছে। এখনও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।
বস্তির মাঝখানে একটি কাঠের দোতলা ঘরের গ্যাসের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে।
বস্তির অনেকেই অভিযোগ করেছেন, সরকার দলীয় আলমাস, জালাল, ফজলু ও আশরাফ নামের চার ব্যক্তি বস্তিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়েছিল। অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণেই এ আগুন লেগেছে।
ওই বস্তির আছিয়া বেগম তার রবিন ও রাহাত নামের দুই ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছে না বলে জানান।
সাততলা বস্তির বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ জানান, তিনি এক গার্মেন্টসে কাজ করেন। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তিনি বাসায় আসার পথে জানতে পারেন আগুন লেগেছে। পরে তিনি বস্তিতে এসে দেখেন পুরোটাই জ্বলছে।”
ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোলরুম বাংলানিউজকে জানানো হয়, সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা সাততলা বস্তিতে আগুন লাগে।
দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সত্ নেতৃত্ব চাই
ভা ষা সৈ নি ক আ ব দু ল ম তি ন

দুর্নীতি একটি জাতির জন্য অভিশাপস্বরূপ। এই অভিশাপ একটি রাষ্ট্রকে ব্যর্থ করে দিতে পারে। দুর্নীতি একটি জাতিকে সৃজনশীলতা থেকে বিমুখ করে ফেলে। দেশপ্রেম ও মেধাবিমুখ জনসমষ্টিতে পরিণত করতে পারে রাষ্ট্রকে। তরুণসমাজের বুকে লালিত স্বপ্নকে ভেঙে দিতে পারে। এজন্যই সভ্যসমাজে সব মানুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন বোনে সভ্য মানুষেরা।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র জন্মলগ্ন থেকেই ‘দুর্নীতি’ নামক অভিশাপ মাথায় নিয়ে এগিয়ে চলছে। সব সরকারের সময়েই এ অভিশাপ বাঙালি জাতিকে কম-বেশি গ্রাস করেছে। স্বাধীনতার পর পুরো সরকারকাঠামো তথা শাসকশ্রেণীর নেতৃত্বে দুর্নীতি হয়েছে। যার ফলে অর্থনৈতিকভাবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি একটি করুণ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল। সময়ের আবর্তে এই শতাব্দীর শুরুতে এসে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন দেখানো হয়েছিল।
আমরা তাতে লজ্জিত হয়েছিলাম। এ লজ্জা থেকে রক্ষা পেতে তখন সবাই যেন নড়েচড়ে বসেছিল। তবে সে নড়াচড়া ছিল অনেকটা মুখে-স্লোগানে। বাস্তবে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান আমরা সবাই নিতে পারিনি। বিশেষ করে বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলগুলোর কর্তাব্যক্তিরা, নেতাকর্মীরা কম সময়ে অধিক অর্থবিত্তের মালিক বনে যেতে দুর্নীতিকেই প্রধান উপায় হিসেবে গ্রহণ করেছে। সে ধারায় আদর্শবাদী রাজনৈতিক দলের নেতারাও জোট বেঁধেছে। সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমের বদৌলতে যতটুকু জানতে পারি, তাতে ছোট-বড় কয়েকটি দুর্নীতির ঘটনায় এমন তথ্যই স্পষ্ট।
এক পদ্মা সেতু প্রকল্প আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে ভয়াবহ কলঙ্কের মুখোমুখি করেছে। এই ইস্যুতে আমরা একজন মন্ত্রী ও একজন উপদেষ্টাকে অপসারণের ঘটনা দেখেছি। ব্যবস্থা নিতে হয়েছে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও। সেখানে সরকারপ্রধানের আচরণ দুর্নীতি-সহায়ক ছিল বলেই জাতি মনে করছে। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বলেই বিশ্বব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী যোগাযোগমন্ত্রীকে অপসারণের পাশাপাশি তাকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রচারণার ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এরপর বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ ঋণদাতা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সংস্কার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে দুর্নীতিবাজরা উত্সাহিত হয়েছে।
সাম্প্রতিক হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনা গা শিউরে ওঠার মতো দুর্নীতির ঘটনা। এতসব দুর্নীতির মাঝে স্বাভাবিক ও অনিয়ম-দুর্নীতিমুক্ত থেকে সমাজে বাস করাই কঠিন হয়ে উঠেছে। আশার বিষয় হলো—এর মাঝেও দুর্নীতি যে ভালো নয়, সে ধারণাটি আমরা সবাই অনুধাবন করি। বিশেষ করে তরুণরা কখনোই দুর্নীতির পক্ষে ছিল না। এখনও নেই। তরুণরাই আমাদের ভরসা। তরুণসমাজ ঐক্যবদ্ধ হলে যে কোনো চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সফল হতে পারে।
দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তারুণ্যের ঐক্য গড়ে উঠবে বলে আশা করি। তাতে সময় লাগতে পারে। তবে হতাশ হওয়া যাবে না। সময়ের আবর্তে আমরা নিশ্চয়ই সত্ ও দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব পাব। বাংলাদেশ রাষ্ট্র দুর্নীতির অভিশাপমুক্ত হবে। এ প্রত্যাশা আমি সব সময়ই পোষণ করি। ভবিষ্যতেও করব। তরুণদের প্রতি আমার এ বার্তা পৌঁছাতে চাই। তারুণ্যের জয়গান হোক, স্বপ্ন হোক, প্রত্যয় হোক—‘দুর্নীতিমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’। হ
অনুলিখন : মাহাবুবুর রহমান
এ যেন পুলিশি রাষ্ট্র: রিজভী
|
|
|
|
|
|
সরকার প্রধান বিরোধী দলের কার্যালয়ের সামনে তিন দিন ধরে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করে রেখে এক ‘অস্বস্তিকর পরিবেশ’ সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এভাবে নজরদারি কোনো স্বাভাবিক পরিবেশের দৃষ্টান্ত হতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক দেশে নয়, পুলিশি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে হতে পারে।”
বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে অবিলম্বে পুলিশ সরিয়ে নেয়ার দাবি জানান তিনি।
নেত্রকোনায় সংঘর্ষ এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার পল্টনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশ বাধা দিলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয়।
সংঘর্ষের পর গ্রেপ্তার এড়াতে শতাধিক নেতা-কর্মী বিএনপি কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে। এর পর থেকে ওই কার্যালয় ঘিরে রাখে পুলিশ।
সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের চার শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করে তিনটি মামলা করে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন যুব দল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
মঙ্গলবারের মতো বুধবারও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কার্যালয়ের ভেতরে রাত কাটান রুহুল কবির রিজভী।
সকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “কারো বিরুদ্ধে মামলা থাকলে তা আদালতে সুরাহা হবে। তাই বলে দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের নির্বিঘ্নে আসা-যাওয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”
এদিকেস বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনিসহ কয়েকজন নেতা দলীয় কার্যালয়ের আসেন।
কার্যালয়ের নিচে অবস্থানকারী পুলিশ কর্মকর্তারা ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভেতরে এজহারভুক্ত আসামিরা থাকায় তাদের গ্রেপ্তারের জন্য বাইরে পুলিশ অপেক্ষা করছে।
রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিটা এমন যে কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা আতঙ্কের মধ্যে আছেন। বুধবার দলীয় কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পরপরই মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর থেকে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক আরো বেড়ে গেছে।”
সংঘর্ষের ঘটনায় গাড়ি পোড়ানো ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে পুলিশের দায়ের করা মামলা ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী দাবি করেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল ঘটনার দিন সংগঠনের কাজে বান্দরবানে ছিলেন। অথচ তাকেও পুলিশ আসামি করেছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় যুব দলের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম আজাদ, যুগ্ম সাধারণ সস্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজকেও রিজভীর সঙ্গে দেখা যায়। |
|
কর্মসূচি স্থগিত, শিক্ষকদের সঙ্গে বসছেন প্রধানমন্ত্রী
 |
প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে শুক্রবারের বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীরা। আগামী সোমবার প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে বসবেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি এশারত আলী শুক্রবারের কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়ে এতথ্য জানান।
এর আগে পৌনে তিনটার দিকে নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ তাপস কুমার কুণ্ডুকে ফোনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বৈঠকে বসার কথা জানান তার সহকারী একান্ত সচিব-২ (এপিএস-২) সাইফুজ্জামান শেখর।
শেখর বাংলানিউজকে বলেন, “শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার জন্য আবেদন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এতে সম্মতি দিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব তাদের সঙ্গে তিনি বসবেন।” তবে তিনি বৈঠকের দিনক্ষণ বিষয়ে কিছু জানাননি।
শুক্রবার শিক্ষক-কর্মচারীদের নেতারা নিজেদের মধ্যে বসবেন বলে এশারত আলী জানান।
বৃহস্পতিবার তাপস কুমার কুণ্ডু বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর এপিএস আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী দু’একদিনের মধ্যেই শিক্ষকদের সঙ্গে বসবেন।” এরপরই তিনিও বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন স্থগিত করার আহ্বান জানান।
টানা চারদিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের মারধর ও লাঞ্ছনার শিকার হয়ে বিক্ষোভকারী শিক্ষকরা শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন।
হলমার্ক কেলেঙ্কারি
তানভীরের বিরুদ্ধে মামলা করছে দুদক
|
|
|
|
|
|
হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ ও সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক কে এম আজিজুর রহমানকে প্রধান আসামি করে বৃহস্পতিবার মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
নিয়ম ভেঙে হলমার্ক গ্রুপের সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার ঘটনায় ১১ মামলায় মোট ২৭ জনকে আসামি করা হবে বলে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান জানিয়েছেন।
বুধবার দুদক কার্যালয়ে গোলাম রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে সোনালী ব্যাংক রূপসী বাংলা শাখা থেকে ১ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঋণ নেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেই অনুযায়ী তদন্ত দল কমিশন বরাবর ১১টি মামলার সুপারিশ করেছে এবং কমিশন আজ তা অনুমোদন করেছে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলাগুলো হবে বলে তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন,“অনুসন্ধানী দলের রিপোর্টের সোনালী ব্যাংক রূপসী বাংলা শাখার অংশটি মঙ্গলবার বিকেলে কমিশনে দাখিল হয়েছে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী হলমার্ক গ্রুপের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ এবং সোনালী ব্যাংক রূপসী বাংলা শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক এ কে এম আজিজুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মোট ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে।”
কোন থানায় মামলাগুলো করা হবে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরেই তা আপনারা জানতে পারবেন।”
মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে নিয়ম ভেঙে সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ।
সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক এ কে এম আজিজুর রহমানকে ইতোমধ্যে বরাখাস্ত করা হয়েছে।
২০১০ সাল থেকে ২০১২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা কার্যালয় সহ একাধিক কার্যালয় থেকে অবৈধভাবে ৩ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা সরানোর অভিযোগ রয়েছে হলমার্ক গ্রুপ, নকশি নিট কম্পোজিট, খান জাহান আলী স্যুয়েটার্স এবং ডিএন স্পোর্টস সহ ৬টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে হলমার্ক গ্রুপ একাই সরিয়েছে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে আমলে নেয় দুদক। এরপর সোনালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুরোধে এই অর্থ কারসাজির প্রাথমিক অনুসন্ধান কাজ শুরু করে কমিশন। দুদকের উপপরিচালক মীর জয়নুল আবেদিন শিবলীর নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি বিশেষ দল তদন্ত চালাচ্ছে।
এই অর্থ কারসাজির ঘটনায় এ পর্যন্ত তানভীর মাহমুদ, এ কে এম আজিজুর রহমান, হলমার্ক গ্রুপের জিএম তুষার আহমেদ, চেয়ারম্যান জেসমিন আহমেদ, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের তৎকালীন সদস্যসহ মোট ৭৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।
সোনালী ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সদস্যদের বেশিরভাগই গণমাধ্যমের সামনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। অন্যদিকে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা অভিযোগ করেন, এই আর্থিক অনিয়মের জন্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষই দায়ী।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রাথমিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এখনও পর্যন্ত পরিচালনা পর্ষদের কোনো প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের তৎকালীন চেয়ারম্যানসহ সব সদস্যের সম্পদের পরিমান অনুসন্ধান করা হচ্ছে।” যোগ করেন গোলাম রহমান।
হলমার্কের অর্থ কারসাজির ঘটনার আদৌ তাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কী না তা জানার জন্যই অনুসন্ধান কার্যক্রম চলছে বলে তিনি জানান।
হলমার্কের অর্থ কারসাজির ঘটনায় ভবিষ্যতে আরো মামলা করার প্রস্তুতি রয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,“ সোনালী ব্যাংক ছাড়াও ২৬ টি ব্যাংকের ৬১টি শাখা এর সাথে যুক্ত। এই ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হওয়ার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা পড়লে পরবর্তীতে আরও মামলা করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুই মহাব্যবস্থাপকসহ ২০ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। কেলেঙ্কারির ঘটনায় নাম আসায় প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। |
|
এমপিওর দাবিতে সচিবালয় ঘেরাও করবেন শিক্ষকরা
|
| |
|
|
|
No comments:
Post a Comment