হাসিনার অবিবেচনাপ্রসূত বক্তব্যে ফের পিছিয়ে গেছে বিশ্বব্যাংক: মোশাররফ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবিবেচনাপ্রসূত বক্তব্যের কারণে পদ্মাসেতু
প্রকল্পে অর্থায়নের চিন্তা থেকে বিশ্বব্যাংক ফের পিছিয়ে গেছে বলে দাবি
করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সোমবার
সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ও সাবেক
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মতিন চৌধুরীর স্মরণসভায় দেওয়া প্রধান অতিথির
বক্তব্যে তিনি এ দাবি করেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির আয়োজনে স্মরণসভার সভাপতিত্ব করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরো
বক্তৃতা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ড. আব্দুল মঈন
খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান,
সংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শায়রুল কবির খোকন,
যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
ড. মোশাররফ বলেন,
“পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংক পুনরায় অর্থ দেওয়ার যে চিন্তা করছিলো
প্রধানমন্ত্রীর অবিবেচনাপ্রসূত বক্তব্যের কারণে তা থেকে পিছিয়ে গেছে। এরই
মধ্যে বিশ্বব্যাংক থেকে একটি টিম বাংলাদেশে আসার কথা ছিলো। তারা আর আসবে না
তা বলে জানিয়ে দিয়েছে।”
সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,
“প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক
সংস্কারের যে প্রস্তাব দিয়েছেন তাতে বিশ্বব্যাংক আরও নাখোশ হয়েছে,
অসন্তুষ্ট হয়েছে। সে কারণে বিশ্বব্যাংক পুনরায় অর্থ দেওয়ার যে চিন্তা
করছিলো তা আবারও বন্ধ হয়ে গেলো।”
মোশাররফ বলেন, “এ সরকার ক্ষমতায়
আসার পর সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতা তো আছেই, দুর্নীতি আর লুটপাটে দুর্নীতির দেশ
হিসেবে সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে পরিচিত করেছে। এজন্যই দেশ-বিদেশে
তাদের কোন সমর্থন নেই। তাই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায়
যেতে চায়। কিন্তু এ ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ হবে না। তত্ত্বাবধায়কের অধীনেই
নির্বাচন দিতে হবে।”
মতিন চৌধুরীর রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি লক্ষ্য
রেখে আগামী আন্দোলন-সংগ্রামে সবাইকে শরিক হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন,
“মতিন চৌধুরী নিষ্ঠাবান, অনুগত, দেশপ্রেমিক, সৎ, লোভ-লালসাহীন রাজনৈতিক
কর্মী ছিলেন। দলের আদর্শের প্রতি তার ছিলো অবিচল বিশ্বাস। দেশপ্রেম ছিলো
অসীম। কর্মীদের সঙ্গে ছিলো তার বন্ধুর মতো সম্পর্ক। পূর্ণাঙ্গ রাজনীতিকের
গুণ ছিলো মতিন চৌধুরীর চরিত্রে। তিনি অন্যায় প্রশ্রয় দিতেন না। দেশ ও
রাজনীতির প্রতি ছিলেন শ্রদ্ধাশীল। গণতন্ত্র ও ভোটের অধীকার ফিরিয়ে আনতে
স্বৈরাচারবিরোধী সব আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিলো অপরিসীম। দুর্নীতির বিরুদ্ধে
তিনি ছিলেন প্রতিবাদী কণ্ঠ।”
সভাপতির বক্তব্যে “মতিন চৌধুরী তার
রাজনৈতিক জীবনের সবটুকুই মানুষের জন্য ব্যয় করেছেন” মন্তব্য করে মির্জা
ফখরুল বলেন, “তিনি দক্ষ সংগঠন ও একজ গণতন্ত্রমনা মানুষ ছিলেন। তিনি
মানুষকে দিয়েছেন, কিন্তু কারো কাছ থেকে কিছু নেননি। রাজনীতি ও মানুষের
প্রতি তার ছিলো অকৃত্রিম ভালোবাসা।”
“কাপাসিয়ার উপ-নির্বাচনে ভোটার
বিহীন সাজানো নাটকে আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছে” মন্তব্য
করে ফখরুল আরও বলেন, “এ কমিশনের অধীনে কোন নির্বাচন হতে পারে না।”
মতিন চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে চলমান আন্দোলনে সবাইকে শরিক হয়ে বিজয়ের পথে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান তিনি।