Monday, October 1, 2012

৯ দিনের সফর শেষে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে তার ৯ দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। তিনি মঙ্গলবার সকাল আটটা ৪৭ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট নিউইয়র্কের স্থানীয় সোমবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে জনএফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসে।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন ও সিনিয়র কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।

ঢাকায় আসার পথে প্রধানমন্ত্রী দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করেন। শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যান। গত ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনে ভাষণ দেন এবং এ সফরকালে উচ্চ পর্যায়ের বেশ কয়েকটি বৈঠকে যোগ দেন।

ডেসটিনি কর্মকর্তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই গ্রেফতার

মাল্টি লেভেল মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান ডেসটিনির অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের গ্রেফতারে মাঠে নামছে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান গোলাম রহমান আজ মঙ্গলবার বিকেলে এক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, ডেসটিনির পরিচালকদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে দুদক। তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই গ্রেফতার করা হবে।
আজ আদালতে ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন ও পরিচালক সাবেক সেনা প্রধান হারুন অর রশীদসহ ২২ কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশের প্রেক্ষিতে দুদক চেয়ারম্যান প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ডেসটিনি আমাদের দৃষ্টিতে অপরাধ করেছে। কারণ, ডেসটিনি  ৮ লাখেরও বেশি মানুষের টাকা আত্মসাৎ করেছে। তিনি বলেন, ডেসটিনির পরিচালকরা পলাতক রয়েছেন। তাদের খুঁজে বের করে আইনের হাতে সোপর্দ করতে দুদক চেষ্টা করছে। তাদের জামিন বাতিল হওয়ায় তারা পলাতক রয়েছেন ধরতে হবে।




মতলব উত্তরের ফরাজিকান্দির পীর শায়খ মানযূর আহমাদ আর বেঁচে নেই

দেশবরেণ্য আলেমে দ্বীন, আধ্যাত্মিক প্রাণপুরুষ, একজন খাঁটি রাসূল প্রেমিক, বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের প্রেসিডিয়াম সদস্য, মতলব উত্তরের ফরাজীকান্দি দরবার শরীফের পীর সাহেব ও নেদায়ে ইসলামের চেয়ারম্যান আল্লামা শায়খ ড. মানযূর আল-আহমাদী উয়েসী রিফায়ী আর বেঁচে নেই| তিনি পবিত্র মদিনা শরীফে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিলল্লাহে....রাজেউন)| তিনি পবিত্র হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে মদিনায় অবস্থান করছিলেন| ওফাতকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৭১ বছর| তাঁর এই আকস্মিক ইন্তেকালে দেশব্যাপী ভক্তবৃন্দ তথা মতলবের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে| গতকাল বাদ আসর মদিনা শরীফে তাঁর জানাজা নামাজ শেষে জান্নাতুল বাকীতে তাঁকে সমাহিত করা হয়| বিষয়টি যেনো যাঁর প্রেমিক তাঁর কাছেই শুয়ে গেলেন এই নির্ভেজাল রাসূল প্রেমিক|

তাঁর পারিবারিক ও ভক্তদের সূত্রে জানা যায়, তিনি গেলো রমজান মাসে মদিনা শরীফে মসজিদে নববীতে ইতেকাফে ছিলেন| এরপর ১৫/২০ দিন আগে তিনি দেশে এসেছেন| গত ৩/৪ দিন আগে তিনি হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে আবার সৌদি আরব যান| সৌদি আরব গিয়েই তিনি মদিনা শরীফ চলে যান এবং রাসূল পাক (সাঃ)-এর রওজার পাশে অবস্থান করছিলেন| আর এ অবস্থায়ই তিনি ইহজগত ত্যাগ করেন| তাঁর ভক্তরা আরো জানান, হুজুর কেবলা দয়াল নবীজীর শানে অসংখ্য নাতে রাসূল ও কাসীদা লিখেছেন এবং তিনি নিজেই সুর করেছেন| তিনি সব সময় রাসূল (সাঃ)কে উদ্দেশ্য করে এই পংক্তি সুর দিয়ে পাঠ করতেন ’দিওনা রাসূলাল্লাহ দিওনা বিদায়, ভুলনা হাবীবাল্লাহ ভুলনা আমায়|’ আল্লাহ তাঁর মনের এই বাসনাই কবুল করলেন| তিনি এই পংক্তিটি যখন পাঠ করতেন তখন তাঁর চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরতো|

আল্লামা শায়খ ড. মানযূর আল-আহমাদী উয়েসী রিফায়ী শুধু ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিতই ছিলেন না, আধুনিক সব ধরনের শিক্ষাই তিনি গ্রহণ করেন| তিনি একজন আধ্যাত্মিক সাধকও ছিলেন| বিভিন্ন&ধসঢ়; বিভাগের শিক্ষা গ্রহণে তিনি ছিলেন বরাবরই প্রথম স্থান অধিকারী| তিনি বিএ (অনার্স), এলএলবি (ফার্স্ট ক্লাস), মমতাজুল মোহাদ্দেসীন, মমতাজুল ফোকাহা (ফার্স্ট ক্লাস), ডিপ্লোমা (ইউএল), এফসিটি (ফার্স্ট ক্লাস), এমএ (ফার্স্ট ক্লাস), পিএইচডি (গবেষক) ডিগ্রি লাভ করেন|

শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ফরাজীকান্দি উয়েসীয়া কামিল মাদ্রাসা| ফরাজীকান্দির মতো নিভৃত এক পল্লীতে তিনি গড়ে তোলেন বিশাল কমপ্লেক্স| নারী শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন নেদায়ে ইসলাম মহিলা ফাযিল মাদ্রাসা| তাঁর প্রচেষ্টাতেই প্রক্রিয়াধীন আছে নেদায়ে ইসলাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়| সাড়ে ৩ শতাধিক এতিমদের লালন-পালনের জন্যে নির্মিত হয় আল-আমিন এতিমখানা| চিকিৎসার জন্যে তিনি তৈরি করেন খাজা গরীবে নেওয়াজ হাসপাতাল ও ফ্রি ফ্রাইডে ক্লিনিক| এতিমদের পুঁথিগত বিদ্যা শিক্ষার পাশাপাশি টেকনিক্যাল শিক্ষারও ব্যবস্থা করে দেন তিনি| এ ছাড়াও কৃষি, মৎস্য, পোল্ট্রি, গো পালনসহ বিভিন্ন কাজে হাতে-কলমে পারদর্শী করে গড়ে তুলতেন এই এতিমদের|

শিক্ষা বিস্তার ও মানব কল্যাণে এক অনন্য ভূমিকা পালন করার মধ্য দিয়ে তিনি চাঁদপুর জেলাতে এক অনন্য ইতিহাস স্থাপন করেছেন|

আজ মঙ্গলবার ঐতিহাসিক ফরাজীকান্দি কমপ্লেক্সে শায়খ মানযূর আহমাদের ইন্তেকালে দিনব্যাপী কোরআনখানি, মিলাদ, ফাতেহা, বিভিন্ন খতম ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে|

হাসিনার অবিবেচনাপ্রসূত বক্তব্যে ফের পিছিয়ে গেছে বিশ্বব্যাংক: মোশাররফ



 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবিবেচনাপ্রসূত বক্তব্যের কারণে পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়নের চিন্তা থেকে বিশ্বব্যাংক ফের পিছিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মতিন চৌধুরীর স্মরণসভায় দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি করেন।

কেন্দ্রীয় বিএনপির আয়োজনে স্মরণসভার সভাপতিত্ব করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আরো বক্তৃতা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, সংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শায়রুল কবির খোকন, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।

ড. মোশাররফ বলেন, “পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংক পুনরায় অর্থ দেওয়ার যে চিন্তা করছিলো প্রধানমন্ত্রীর অবিবেচনাপ্রসূত বক্তব্যের কারণে তা থেকে পিছিয়ে গেছে। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক থেকে একটি টিম বাংলাদেশে আসার কথা ছিলো। তারা আর আসবে না তা বলে জানিয়ে দিয়েছে।”

সাবেক  এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক সংস্কারের যে প্রস্তাব দিয়েছেন তাতে বিশ্বব্যাংক আরও নাখোশ হয়েছে, অসন্তুষ্ট হয়েছে। সে কারণে বিশ্বব্যাংক পুনরায় অর্থ দেওয়ার যে চিন্তা করছিলো তা আবারও বন্ধ হয়ে গেলো।”

মোশাররফ বলেন, “এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতা তো আছেই, দুর্নীতি আর লুটপাটে দুর্নীতির দেশ হিসেবে সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে পরিচিত করেছে। এজন্যই দেশ-বিদেশে তাদের কোন সমর্থন নেই। তাই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায় যেতে চায়। কিন্তু এ ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ হবে না। তত্ত্বাবধায়কের অধীনেই নির্বাচন দিতে হবে।”

মতিন চৌধুরীর রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি লক্ষ্য রেখে আগামী আন্দোলন-সংগ্রামে সবাইকে শরিক হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, “মতিন চৌধুরী নিষ্ঠাবান, অনুগত, দেশপ্রেমিক, সৎ, লোভ-লালসাহীন রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। দলের আদর্শের প্রতি তার ছিলো অবিচল বিশ্বাস। দেশপ্রেম ছিলো অসীম। কর্মীদের সঙ্গে ছিলো তার বন্ধুর মতো সম্পর্ক। পূর্ণাঙ্গ রাজনীতিকের গুণ ছিলো মতিন চৌধুরীর চরিত্রে। তিনি অন্যায় প্রশ্রয় দিতেন না। দেশ ও রাজনীতির প্রতি ছিলেন শ্রদ্ধাশীল। গণতন্ত্র ও ভোটের অধীকার ফিরিয়ে আনতে স্বৈরাচারবিরোধী সব আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিলো অপরিসীম। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন প্রতিবাদী কণ্ঠ।”

সভাপতির বক্তব্যে “মতিন চৌধুরী তার রাজনৈতিক জীবনের সবটুকুই মানুষের জন্য ব্যয় করেছেন” মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “তিনি দক্ষ সংগঠন ও একজ গণতন্ত্রমনা মানুষ ছিলেন।  তিনি মানুষকে দিয়েছেন, কিন্তু কারো কাছ থেকে কিছু নেননি। রাজনীতি ও মানুষের প্রতি তার ছিলো অকৃত্রিম ভালোবাসা।”

“কাপাসিয়ার উপ-নির্বাচনে ভোটার বিহীন সাজানো নাটকে আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছে” মন্তব্য করে ফখরুল আরও বলেন, “এ কমিশনের অধীনে কোন নির্বাচন হতে পারে না।”

মতিন চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে চলমান আন্দোলনে সবাইকে শরিক হয়ে বিজয়ের পথে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান তিনি।