Tuesday, September 18, 2012

তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের রায় প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত বিএনপি’র


তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে বিচারপতিদের প্রকাশিত রায় প্রত্যাখ্যান করবে বিএনপি। মঙ্গলবার রাতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আইনজীবী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে
বৈঠক সূত্র জানায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তথা ত্রয়োদশ সংশোধনী নিয়ে প্রকাশিত রায় পর্যালোচনার দাবি নয়, সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হবে।
এ বিষয়ে বুধবার দুপুরে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা বাংলানিউজকে জানান, সংবাদ সম্মেলন থেকেই রায় প্রত্যাখ্যানের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ন’টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দলের সিনিয়র নেতা ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়।
বৈঠকে আলোচনা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। তরে রায় রিভিউ করার আবেদন করা হবে না বলেই আমরা ঠিক করেছি।
অপর এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, সংক্ষিপ্ত রায়ের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায়ের অমিল রয়েছে যে বিষয়টি বৈঠকে গুরুত্ব পেয়েছে। তিনি বলেন, প্রকাশিত রায়ে মূল রায়কে বিকৃত করা হয়েছে।
খালেদা জিয়া ছাড়াও এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এমকে আনোয়ার, নজরুল ইসলাম খান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ভাইস-চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াও চলমান রাজনীতি, ভবিষ্যৎ কর্মসূচি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয় বলে বৈঠক সূত্র জানায়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ে বিচারপতিরা স্বাক্ষর করার পর এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনা ও করণীয় নির্ধারণের লক্ষেই এ বৈঠক ডাকা হয়।  

এ সরকারের মেয়াদে পদ্মা সেতু হবে না : ড. মসিউর


প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর বলেছেন, এ সরকারের মেয়াদে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করা সম্ভব হবে বলে আমার মনে হয় না। তবে এটা করার মতো সঙ্গতি আমাদের আছে। চার-পাঁচ বছরে করলে গায়ে লাগবে না। গতকাল সকালে মিন্টু রোডের সরকারি বাসার সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
বিশ্বব্যাংক ও তার সহকর্মীদের ওপর একরাশ ক্ষোভ ছড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের গুপ্তচররা কাজ করছে। এই গুপ্তচরদের নাম প্রকাশ করা জরুরি।
বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে ধূম্রজাল থাকলেও এ নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি সরকারের এই
উপদেষ্টা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে ছুটি চাইবে এবং যে ছুটি মঞ্জুর করবে—তাদের মধ্যে এরকম কিছু হয়নি।
সরকারের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে আপনি গত রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক মাসের ছুটি চেয়ে আবেদন করলে প্রধানমন্ত্রী তা মঞ্জুর করেন। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মসিউর রহমান বলেন, আমার বিবেচনায় ছুটিতে যাওয়া অত্যন্ত গৌণ। এক সময় রাশিয়ায় যারা অবাঞ্ছিত ছিল, তাদের গুলাগে (সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার নির্যাতন শিবির) নিয়ে যাওয়া হতো। আমার জীবনটা গুলাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ছুটিতে গেছেন কী যাননি সাংবাদিকরা এ প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর জানতে চাইলে মসিউর বলেন, আমারটা তো খুব স্পষ্ট। যে দরখাস্ত (ছুটির) করবে, আর যিনি গ্রহণ করবেন, তারা তো কিছু বলেননি। বলেছেন অন্যরা।
আজ (মঙ্গলবার) অফিসে যাবেন কিনা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, আমি তো অফিস করি। আমার যেটা কাজ সেটা করি। আজ অফিসে যাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকরা আবারও তাকে প্রশ্ন করলে সরাসরি জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, আমি তো কাজ করছি।
এ সময় সাংবাদিকরা মসিউর রহমানকে বলেন, তাহলে আমরা কী ধরে নেবো আপনি ছুটি নিয়েছেন? তখন মসিউর রহমান বলেন, আপনাদের ধরে নেয়া না নেয়ার কোনো দরকার নেই।
গতকালের (সোমবার) মন্ত্রিসভার বৈঠকে কেন যাননি সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, এক-দু’দিন আগে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভায় আমার ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ অবস্থায় যদি মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাই তাহলে আমার উপস্থিতি উত্তেজনাকর হবে। তা এড়াতেই আমি বৈঠকে যাইনি।
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের একটি স্পাই নেটওয়ার্ক রয়েছে : বিশ্বব্যাংক প্রসঙ্গে মসিউর বলেন, এরা আমাদের দেশের কিছু লোককে গুপ্তচর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তারা বিশ্বব্যাংকের হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ড. মসিউর বলেন, এখানে বিশ্বব্যাংকের একটি স্পাই নেটওয়ার্ক রয়েছে, যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এই গুপ্তচররা বিশ্বব্যাংককে ভুল তথ্য দিয়েছে। আমার ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি গৌণ। এর চেয়েও বড় বিষয় হলো দেশের স্বার্থবিরোধী গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের নাম প্রকাশ করা। কারা এই গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে জড়িত এমন প্রশের জবাবে কারও নাম উল্লেখ করেননি তিনি। মসিউর বলেন, যারা পয়সা দেবে তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা কোনো এক সময় আমাদের দেশের কিছু লোককে গুপ্তচর হিসেবে নিয়োগ দেয়। যারা গোপনে তাদেরকে তথ্য সরবরাহ করে, যার কোনো ভিত্তি নেই। এবং তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছে কি করতে হবে। তিনি বলেন, এই যে গোপন তথ্য এবং পরামর্শদাতা, তাদের নামও সরকারের কাছে প্রকাশ করতে পারবে না। এটা হলো, যারা তাদের সহযোগিতা করেছে তাদের রক্ষা করতে হবে। আর নামগুলো প্রকাশ করলে পরবর্তীতে তারা গোপন সহযোগিতা আর পাবে না।
এই গুপ্তচরদের কিছু ই-মেইলও তার কাছে আছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা। বলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও এ বিষয়ে অবহিত। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে মসিউর বলেন, মেইলগুলো এসেছে বেনামে।
আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করুন : ছুটির বিষয় স্পষ্ট না করলেও নির্বাসনে আছেন—এমন ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, এক সময় রাশিয়ায় যারা অবাঞ্ছিত ছিল তাদের গুলাগে নিয়ে যাওয়া হতো। আমার জীবনটাও গুলাগে প্রবেশ করেছে। উপস্থিত সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, এমন অবস্থায় পড়লে হার্টফেল হতে পারে, ব্রেনস্ট্রোক হতে পারে। এ অবস্থায় আমি আপনাদের সহানুভূতি চাই। আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করুন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পর সরকারকে কয়েকটি শর্ত দেয় বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে দুর্নীতিতে জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটিতে পাঠানোর কথাও ছিল। শর্তগুলো পালন হয়নি—এমন অভিযোগে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ঋণচুক্তি বাতিল করে গত ২৯ জুন। পরবর্তীতে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে চারটি শর্ত দিয়েছিল। এর মধ্যে মসিউর রহমানের ছুটিতে যাওয়ার শর্তটি অন্যতম। প্রথম দিকে সরকার কোনো দুর্নীতি হয়নি বলে সাফাই গায় এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দেয়। চাঁদাও তোলা হয় কিছু। সাফল্যজনক কোনো রেজাল্ট না আসায় সরকার পিছু হটে। কিছু দিন ধরে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আপসরফারও চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। পদ্মা সেতুর ঋণচুক্তি পুনর্বিবেচনা শর্ত হিসেবে উপদেষ্টা মসিউর রহমানকে সরিয়ে দেয়ার কথা থাকায় বেশ কিছুদিন থেকে তার ছুটিতে যাওয়ার বিষয় আলোচনা হচ্ছিল। গত শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে জানান, মসিউর ছুটিতে গেলে বিশ্বব্যাংক সিদ্ধান্ত বদলাবে। বৈঠকে অন্যরাও একই মত দেন। এমনি পরিস্থিতিতে সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তিনি উপস্থিত না থাকায় তার ছুটিতে যাওয়ার গুঞ্জন ওঠে। সোমবার বিকালে সরকারের একাধিক সূত্র অর্থ উপদেষ্টার ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। তবে গোপনীয়তার কারণে বিষয়টি প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে সূত্র দাবি করে। উপদেষ্টা ছুটিতে গেছেন এই বার্তা নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে দূতিয়ালি করতে ওয়াশিংটনে গেছেন বলে কোনো কোনো গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা থাকলেও ড. মসিউর রহমান এ নিয়ে সরাসরি কোনো জবাব দেননি। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকেও অর্থ উপদেষ্টাকে সরিয়ে দেয়ার দাবি ওঠে।
এর আগে বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে গত ২৩ জুলাই সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। ছুটিতে পাঠানো হয় সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াকে। একইভাবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলামের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি নতুন তদন্ত দল গঠন করে।

৩০ হাজার হজযাত্রীর যাত্রা অনিশ্চিত : সোমবার পর্যন্ত ফ্লাইটসূচির বিপর্যয়


ফ্লাইট বিপর্যয়, টিকিট সিন্ডিকেট ও সৌদি আরবে বাড়িভাড়াসহ বড় ধরনের বিভিন্ন সমস্যা থেকে রেহাই পেতে অবিলম্বে থার্ড ক্যারিয়ার ওপেন করার জোর দাবি জানিয়েছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। অন্যথায় বাড়িভাড়ার শিডিউল অনুযায়ী প্রায় ৩০ হাজার হজযাত্রী যথাসময়ে অর্থাত্ প্রথম ১০ দিনের মধ্যে সৌদি আরব যেতে পারবেন না এবং এতে হজ এজেন্সিগুলোর কোটি কোটি টাকা ক্ষতির পাশাপাশি হাজীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। গতকাল হাব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা জানিয়ে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হাব সভাপতি জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সৌদি সরকারের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে হজযাত্রীদের জন্য বাড়িভাড়া করতে হয় বলে বিমান মন্ত্রণালয়ের হজ ফ্লাইট চূড়ান্ত করার আগেই বাড়িভাড়া করতে বাধ্য হয়েছেন হজ এজেন্টরা। কিন্তু চূড়ান্ত ফ্লাইট শিডিউল পাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ এজেন্সি যে সময়সীমার জন্য বাসা ভাড়া করেছেন, তাতে হজ ফ্লাইট শুরুর প্রথম দশ দিনের মধ্যে ৬০ হাজারের বেশি হজযাত্রীকে সৌদি আরবে পৌঁছতে হবে।
অথচ সরকার নির্ধারিত বিমান, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স ও নাস এয়ার—এ তিন বিমান পরিবহন সংস্থা যে ফ্লাইটসূচি দিয়েছে, তাতে ওই সময়ের মধ্যে ৩০ হাজার হজযাত্রীকে সৌদি আরবে পৌঁছানো সম্ভব হবে না। এরই মধ্যে বিমানের ফ্লাইট বিপর্যয়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম ১০ দিন তথা ১৭-২৭ সেপ্টম্বরের মধ্যে ৬০ হাজার হজযাত্রী সৌদি পাঠাতে না পারলে ৩০ হাজার যাত্রীর জন্য নতুন করে বাড়িভাড়া করতে হবে। এতে এজেন্সিগুলোর যেমন অতিরিক্ত কোটি কোটি টাকা গুণতে হবে, তেমনি হাজীদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে। জামাল উদ্দিন বলেন, বিমানের তেলেসমাতিতে ভরসা না করে সরকার এখনও যদি তৃতীয় কোনো বিমান পরিবহন সংস্থাকে (থার্ড ক্যারিয়ার) হজযাত্রী পরিবহনের দায়িত্ব দেয়, তাহলেও হয়তো হজযাত্রীদের সময়মতো নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। তাছাড়া থার্ড ক্যারিয়ার না থাকায় টিকিট সিন্ডিকেটের কবলে পড়ছে এজেন্সিগুলো। সিন্ডিকেটের চক্রের হাতে টিকিট থাকায় তা চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। এতেও খরচ ও ভোগান্তি বাড়ছে।
এদিকে সম্প্রতি সরকার নতুন করে যে পাঁচ শতাধিক হজ এজেন্সির লাইসেন্স দিয়েছে, তাতে হজ ব্যবস্থাপনায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করেছেন হাব নেতারা। তিনি বলেন, বর্তমানে ৪০৩টি হজ এজেন্সির মধ্যে ৩৫৪টি এজেন্সি এবার হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। অথচ হঠাত্ করে ৫০০ এজেন্সিকে লাইসেন্স দেয়া রহস্যজনক। এই লাইসেন্স দেয়ায় অবশ্যই দুর্নীতি হয়েছে। এতে হজ ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা হবে। তাই এখনই নতুন ৫০০ এজেন্সির লাইসেন্স দেয়া স্থগিত করার দাবি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, সৌদি আরব সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত হজযাত্রী পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি অনুসারে এ বছর কোনো তৃতীয় বিমান সংস্থা বা থার্ড ক্যারিয়ারকে হজযাত্রী পরিবহনের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। থার্ড ক্যারিয়ার না থাকায় হজযাত্রী পরিবহনে বিশৃঙ্খলা হতে পারে—আগে থেকেই এমন দাবি করে আসছে হজ এজেন্সিগুলো।
নিয়মিত ফ্লাইটসূচিতে বিপর্যয়ের মধ্যেই সোমবার বাংলাদেশ বিমানের হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে। ভোর ৫টায় ৪১৯ জন হজযাত্রী নিয়ে একটি বোয়িং-৭৭৭ ঢাকা ছাড়ার পর সারাদিনে ছেড়ে গেছে মোট পাঁচটি ফ্লাইট। মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত ফ্লাইটসূচি অনুসারে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত হজযাত্রী পরিবহনের কথা রয়েছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থার। বিমান ফিরতি ফ্লাইট শুরু করবে ১ নভেম্বর থেকে, শেষ হবে আগামী ২৯ নভেম্বর। নাস এয়ারের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ৩০ অক্টোবর, শেষ হবে ২৮ নভেম্বর। সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স হজ-পরবর্তী ফিরতি ফ্লাইট শুরু করবে ৩০ অক্টোবর এবং শেষ হবে ৩০ নভেম্বর।
এ বছর মোট ১ লাখ ১২ হাজার ৫৬৮ জন হজ করতে যাওয়ার অনুমোদন পেয়েছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছেন ২ হাজার ৯৬৫ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছেন ১ লাখ ৯ হাজার ৬০৩ জন। এর মধ্যে বিমান পরিবহন করছে ৫৬ হাজার ২৮৪ জন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে হাব মহাসচিব এম এ রশিদ শাহ সম্রাট, নির্বাহী কমিটি সদস্য ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামে ১০ হাজার হজযাত্রীর চরম দুর্ভোগ : চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম থেকে হজ ফ্লাইট বাতিলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বিএনপি নেতারা। গতকাল এক বিবৃতিতে নেতারা অবিলম্বে হজ ফ্লাইট চালুর দাবি জানিয়ে বলেন, সরকারের হঠকারি সিদ্ধান্তের কারণে এবছর কোনো হজযাত্রী চট্টগ্রাম থেকে পবিত্র হজে যেতে পারছে না। ফলে বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রায় ১০ হাজার হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনে মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। নেতারা আরও বলেন, শুধু হজ ফ্লাইট নয়, সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণে ইদানিং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ফ্লাইট চট্টগ্রাম থেকে বাতিল ও বিমানের সিডিউল পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসকারী অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে, অনেক বাংলাদেশী শ্রমিক মারাত্মক সঙ্কটে পড়েছেন। সম্প্রতি ঘোষণা ছাড়া বিমানের সিডিউল পরিবর্তনের কারণে ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা সব হারিয়ে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বিক্ষোভ ও বিমান অফিসে হামলা চালায়। তারপরও ভয়াবহ এ সঙ্কট উত্তরণে সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দেশের সিংহভাগ রেমিট্যান্স মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের কাছ থেকে এলেও তাদের সমস্যা সমাধানে সরকার একেবারেই নিশ্চুপ। অবিলম্বে বিশেষ বিমানযোগে হলেও এসব প্রবাসীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
বিবৃতিদাতারা হলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ জাফরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সহ-সভাপতি আলহাজ সামশুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, আলহাজ ইদ্রিস মিয়া, এনামুল হক, আলহাজ আলমগীর কবির চৌধুরী, আলহাজ আলী আব্বাস।
অবিলম্বে চট্টগ্রাম-জেদ্দা হজ ফ্লাইট চালুর দাবি : চট্টগ্রাম-জেদ্দা সরাসরি বিমান চালুর আশ্বাস দেয়ার পরও বিমান কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে পরে আবার বাতিল করে দেয়। ফলে চট্টগ্রামের ১০ হাজার হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনে যেতে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হবে। কারণ চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি জেদ্দা যেতে সময় লাগে মাত্র ৭ ঘণ্টা। সেখানে ঢাকা থেকে যেতে সময় লাগবে ৩৬ থেকে ৪০ ঘণ্টা পর্যন্ত। অবিলম্বে চট্টগ্রাম-জেদ্দা সরাসরি হজ ফ্লাইট চালুর দাবিতে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) ও হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) গতকাল এক যৌথ প্রতিবাদ সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আটাব কার্যালয়ে আটাব চট্টগ্রাম জোন চেয়ারম্যান আলহাজ এমএস আলম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, সরাসরি হজ ফ্লাইট বন্ধ করে বিমান কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করেছে। নেতারা এ ব্যাপারে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে হাজীদের দাবি আদায় করা হবে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের হজ যাত্রীদের নিয়ে যারা অবজ্ঞা আর অবহেলা করে তাদের পরিণতি ভালো হবে না।
সভায় বক্তৃতা করেন হাব চেয়ারম্যান শেখ মুহাম্মদ মুবিনুল হক, আটাব সচিব আলহাজ মো. শাহ আলম, হাব সচিব মোহাম্মদ মোরশেদুল আলম, আলহাজ মো. আবুল কাশেম, আলহাজ মুহাম্মদ আবদুল খালেক, মো. ইয়াছিন, এ.কে.এম.এন. আনোয়ার, আলহাজ এইচএম মুজিবুল হক শুক্কুর, মো. নজরুল ইসলাম, মাহবুবুল আলম, মো. নুরুল আমিন, মো. এনামুল ইসলাম, ফারুক আহমদ শাহীন, বখতেয়ারুল ইসলাম চৌধুরী, এসএম শহিদুল্লাহ, মো. লুত্ফুর রহমান, শহীদুল হক, নুরুল আবছার দুলাল, মাহফুজুর রহমান ও মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী প্রমুখ।
বিমানের ফ্লাইট সূচি বিপর্যয় চলবে সোমবার পর্যন্ত : এদিকে বিডিনিউজ জানায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সূচি বিপর্যয় আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর সোমবার পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ভাড়ায় আনা একটি বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই ১২ সেপ্টেম্বর চলে যাওয়ায় নিয়মিত ফ্লাইট সূচি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি। এরপর এই প্রথম এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিলো বিমান।
গতকাল রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমান সদর দফতর বলাকায় বিমানের বিপণন ও বিক্রয় বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই একটি ভাড়ায় আনা উড়োজাহাজ চলে যাওয়ার কারণে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য বিমান কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছে। আমরা পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছি। তবে ২৪ সেপ্টেম্বরের আগে তা সম্ভব হবে না।
তিনি জানান, এ বছর শুধু হজযাত্রী পরিবহনে একটি ভাড়ায় আনা বোয়িং ৭৪৭, দুটি নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭ এবং একটি ডিসি ১০ উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলো দিয়ে কোনো নিয়মিত যাত্রী বহন করা হচ্ছে না। সুতরাং প্রভাব পড়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।
অবশ্য শাহ নেওয়াজের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য এবং এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহেদুল আলম। তিনি বলেন, সিডিউল অপারেশন বাদ দিয়ে চার্টার অপারেশন করার নজির বিশ্বের কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। অনেক সঙ্কট সত্ত্বেও দেশের মানুষের কাছে বিমানের একটি আলাদা কদর ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক এ ঘটনার কারণে বিমান তা পুনরুদ্ধারে সক্ষম হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ফ্লাইট সূচি বিপর্যয়ের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের যাত্রীদের ভোগান্তি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ফ্লাইট সূচি সামলাতে আটটি নিয়মিত ফ্লাইটের বিলম্ব হয়েছে। সরেজমিন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেখা যায়, ফ্লাইট বিলম্ব হওয়ায় অপেক্ষা করছেন কয়েকশ’ যাত্রী। এদের অনেকেই অভিযোগ করেন, ২/১ দিনের মধ্যে যেতে না পারলে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তাদের।

সরকার দেড় মাসেও হলমার্কের বিরুদ্ধে মামলা দেয়নি: মেনন


সরকারে কঠোর সমালোচনা করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বিদ্যুৎ বিল অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশের তেল ও গ্যাস বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। শেয়ারবাজারে কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী সর্বস্ব  হারিয়েছে। ডেসটিনি ইউনিপেসহ এমএলএম কোম্পানি মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা লুট করে নিচ্ছে। হলমার্ক এতো টাকা লুট করলো, অথচ দেড় মাসেও সরকার কোনো মামলা দেয়নি।

মঙ্গলবার সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তেন বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর ২য় জেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

১৪ দলের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বার বার বলার পর সরকারে ১৪ দলের কোনো ভূমিকা নেই। আওয়ামী লীগকে ১৪ দল শক্তিশালী করার কথা বললে তারা বলে আমরা যথেষ্ট শক্তিশালী আছি, আর শক্তিশালী করা লাগবে না।”

মেনন বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর এখন আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বির্তক-বিরোধ করে লাভ নেই। নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে, যাতে বাইরের কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করা যায়।”

 রাশেদ খান মেনন বলেন, “পঞ্চদশ সংশোধনীর ব্যাপারে বিএনপি ও জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে অবস্থান তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য। এর সঙ্গে জনগণের ভোটের অধিকার, নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন সংযোগ নেই।”

রাশেদ খান মেনন বলেন, “বিএনপি ও জামায়াত যদি কোনভাবে ক্ষমতায় ফিরে আসে তবে এ দেশে বিপর্যয় ঘটবে।”

দেশের যুব সমাজের উদ্দেশ্যে মেনন বলেন, “বিএনপি নেতা তারেক রহমান এ দেশের যুব সমাজের নৈতিকতায় যে ধস নামিয়ে দিয়েছেন তা থেকে যুব সমাজকে উদ্ধার করতে হবে।”

বাংলাদেশ যুব মৈত্রী সিলেট জেলার সভাপতি সিরাজ আহমদের সভাপতিত্বে এবং শফিক আহমদের পরিচালনায় সম্মেলন উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কিশোর রায়।

আরও বক্তব্য দেন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড সিকান্দার আলী, সিলেট জেলা সম্পাদক কমরেড আবুল হোসেন, যুব মৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আলমগীর রতন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ মিনার, কেন্দ্রীয় কমিটির নারী ও মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মোর্শেদা আক্তার ডেইজি প্রমুখ।