
প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর বলেছেন, এ সরকারের মেয়াদে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করা সম্ভব হবে বলে আমার মনে হয় না। তবে এটা করার মতো সঙ্গতি আমাদের আছে। চার-পাঁচ বছরে করলে গায়ে লাগবে না। গতকাল সকালে মিন্টু রোডের সরকারি বাসার সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
বিশ্বব্যাংক ও তার সহকর্মীদের ওপর একরাশ ক্ষোভ ছড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের গুপ্তচররা কাজ করছে। এই গুপ্তচরদের নাম প্রকাশ করা জরুরি।
বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে ধূম্রজাল থাকলেও এ নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি সরকারের এই
উপদেষ্টা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে ছুটি চাইবে এবং যে ছুটি মঞ্জুর করবে—তাদের মধ্যে এরকম কিছু হয়নি।
সরকারের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে আপনি গত রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক মাসের ছুটি চেয়ে আবেদন করলে প্রধানমন্ত্রী তা মঞ্জুর করেন। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মসিউর রহমান বলেন, আমার বিবেচনায় ছুটিতে যাওয়া অত্যন্ত গৌণ। এক সময় রাশিয়ায় যারা অবাঞ্ছিত ছিল, তাদের গুলাগে (সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার নির্যাতন শিবির) নিয়ে যাওয়া হতো। আমার জীবনটা গুলাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ছুটিতে গেছেন কী যাননি সাংবাদিকরা এ প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর জানতে চাইলে মসিউর বলেন, আমারটা তো খুব স্পষ্ট। যে দরখাস্ত (ছুটির) করবে, আর যিনি গ্রহণ করবেন, তারা তো কিছু বলেননি। বলেছেন অন্যরা।
আজ (মঙ্গলবার) অফিসে যাবেন কিনা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, আমি তো অফিস করি। আমার যেটা কাজ সেটা করি। আজ অফিসে যাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকরা আবারও তাকে প্রশ্ন করলে সরাসরি জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, আমি তো কাজ করছি।
এ সময় সাংবাদিকরা মসিউর রহমানকে বলেন, তাহলে আমরা কী ধরে নেবো আপনি ছুটি নিয়েছেন? তখন মসিউর রহমান বলেন, আপনাদের ধরে নেয়া না নেয়ার কোনো দরকার নেই।
গতকালের (সোমবার) মন্ত্রিসভার বৈঠকে কেন যাননি সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, এক-দু’দিন আগে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভায় আমার ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ অবস্থায় যদি মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাই তাহলে আমার উপস্থিতি উত্তেজনাকর হবে। তা এড়াতেই আমি বৈঠকে যাইনি।
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের একটি স্পাই নেটওয়ার্ক রয়েছে : বিশ্বব্যাংক প্রসঙ্গে মসিউর বলেন, এরা আমাদের দেশের কিছু লোককে গুপ্তচর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তারা বিশ্বব্যাংকের হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ড. মসিউর বলেন, এখানে বিশ্বব্যাংকের একটি স্পাই নেটওয়ার্ক রয়েছে, যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এই গুপ্তচররা বিশ্বব্যাংককে ভুল তথ্য দিয়েছে। আমার ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি গৌণ। এর চেয়েও বড় বিষয় হলো দেশের স্বার্থবিরোধী গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের নাম প্রকাশ করা। কারা এই গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে জড়িত এমন প্রশের জবাবে কারও নাম উল্লেখ করেননি তিনি। মসিউর বলেন, যারা পয়সা দেবে তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা কোনো এক সময় আমাদের দেশের কিছু লোককে গুপ্তচর হিসেবে নিয়োগ দেয়। যারা গোপনে তাদেরকে তথ্য সরবরাহ করে, যার কোনো ভিত্তি নেই। এবং তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছে কি করতে হবে। তিনি বলেন, এই যে গোপন তথ্য এবং পরামর্শদাতা, তাদের নামও সরকারের কাছে প্রকাশ করতে পারবে না। এটা হলো, যারা তাদের সহযোগিতা করেছে তাদের রক্ষা করতে হবে। আর নামগুলো প্রকাশ করলে পরবর্তীতে তারা গোপন সহযোগিতা আর পাবে না।
এই গুপ্তচরদের কিছু ই-মেইলও তার কাছে আছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা। বলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও এ বিষয়ে অবহিত। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে মসিউর বলেন, মেইলগুলো এসেছে বেনামে।
আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করুন : ছুটির বিষয় স্পষ্ট না করলেও নির্বাসনে আছেন—এমন ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, এক সময় রাশিয়ায় যারা অবাঞ্ছিত ছিল তাদের গুলাগে নিয়ে যাওয়া হতো। আমার জীবনটাও গুলাগে প্রবেশ করেছে। উপস্থিত সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, এমন অবস্থায় পড়লে হার্টফেল হতে পারে, ব্রেনস্ট্রোক হতে পারে। এ অবস্থায় আমি আপনাদের সহানুভূতি চাই। আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করুন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পর সরকারকে কয়েকটি শর্ত দেয় বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে দুর্নীতিতে জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটিতে পাঠানোর কথাও ছিল। শর্তগুলো পালন হয়নি—এমন অভিযোগে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ঋণচুক্তি বাতিল করে গত ২৯ জুন। পরবর্তীতে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে চারটি শর্ত দিয়েছিল। এর মধ্যে মসিউর রহমানের ছুটিতে যাওয়ার শর্তটি অন্যতম। প্রথম দিকে সরকার কোনো দুর্নীতি হয়নি বলে সাফাই গায় এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দেয়। চাঁদাও তোলা হয় কিছু। সাফল্যজনক কোনো রেজাল্ট না আসায় সরকার পিছু হটে। কিছু দিন ধরে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আপসরফারও চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। পদ্মা সেতুর ঋণচুক্তি পুনর্বিবেচনা শর্ত হিসেবে উপদেষ্টা মসিউর রহমানকে সরিয়ে দেয়ার কথা থাকায় বেশ কিছুদিন থেকে তার ছুটিতে যাওয়ার বিষয় আলোচনা হচ্ছিল। গত শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে জানান, মসিউর ছুটিতে গেলে বিশ্বব্যাংক সিদ্ধান্ত বদলাবে। বৈঠকে অন্যরাও একই মত দেন। এমনি পরিস্থিতিতে সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তিনি উপস্থিত না থাকায় তার ছুটিতে যাওয়ার গুঞ্জন ওঠে। সোমবার বিকালে সরকারের একাধিক সূত্র অর্থ উপদেষ্টার ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। তবে গোপনীয়তার কারণে বিষয়টি প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে সূত্র দাবি করে। উপদেষ্টা ছুটিতে গেছেন এই বার্তা নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে দূতিয়ালি করতে ওয়াশিংটনে গেছেন বলে কোনো কোনো গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা থাকলেও ড. মসিউর রহমান এ নিয়ে সরাসরি কোনো জবাব দেননি। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকেও অর্থ উপদেষ্টাকে সরিয়ে দেয়ার দাবি ওঠে।
এর আগে বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে গত ২৩ জুলাই সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। ছুটিতে পাঠানো হয় সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াকে। একইভাবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলামের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি নতুন তদন্ত দল গঠন করে।
বিশ্বব্যাংক ও তার সহকর্মীদের ওপর একরাশ ক্ষোভ ছড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের গুপ্তচররা কাজ করছে। এই গুপ্তচরদের নাম প্রকাশ করা জরুরি।
বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে ধূম্রজাল থাকলেও এ নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি সরকারের এই
উপদেষ্টা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে ছুটি চাইবে এবং যে ছুটি মঞ্জুর করবে—তাদের মধ্যে এরকম কিছু হয়নি।
সরকারের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে আপনি গত রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক মাসের ছুটি চেয়ে আবেদন করলে প্রধানমন্ত্রী তা মঞ্জুর করেন। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মসিউর রহমান বলেন, আমার বিবেচনায় ছুটিতে যাওয়া অত্যন্ত গৌণ। এক সময় রাশিয়ায় যারা অবাঞ্ছিত ছিল, তাদের গুলাগে (সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার নির্যাতন শিবির) নিয়ে যাওয়া হতো। আমার জীবনটা গুলাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ছুটিতে গেছেন কী যাননি সাংবাদিকরা এ প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর জানতে চাইলে মসিউর বলেন, আমারটা তো খুব স্পষ্ট। যে দরখাস্ত (ছুটির) করবে, আর যিনি গ্রহণ করবেন, তারা তো কিছু বলেননি। বলেছেন অন্যরা।
আজ (মঙ্গলবার) অফিসে যাবেন কিনা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, আমি তো অফিস করি। আমার যেটা কাজ সেটা করি। আজ অফিসে যাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকরা আবারও তাকে প্রশ্ন করলে সরাসরি জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, আমি তো কাজ করছি।
এ সময় সাংবাদিকরা মসিউর রহমানকে বলেন, তাহলে আমরা কী ধরে নেবো আপনি ছুটি নিয়েছেন? তখন মসিউর রহমান বলেন, আপনাদের ধরে নেয়া না নেয়ার কোনো দরকার নেই।
গতকালের (সোমবার) মন্ত্রিসভার বৈঠকে কেন যাননি সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, এক-দু’দিন আগে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভায় আমার ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ অবস্থায় যদি মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাই তাহলে আমার উপস্থিতি উত্তেজনাকর হবে। তা এড়াতেই আমি বৈঠকে যাইনি।
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের একটি স্পাই নেটওয়ার্ক রয়েছে : বিশ্বব্যাংক প্রসঙ্গে মসিউর বলেন, এরা আমাদের দেশের কিছু লোককে গুপ্তচর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তারা বিশ্বব্যাংকের হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ড. মসিউর বলেন, এখানে বিশ্বব্যাংকের একটি স্পাই নেটওয়ার্ক রয়েছে, যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এই গুপ্তচররা বিশ্বব্যাংককে ভুল তথ্য দিয়েছে। আমার ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি গৌণ। এর চেয়েও বড় বিষয় হলো দেশের স্বার্থবিরোধী গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের নাম প্রকাশ করা। কারা এই গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে জড়িত এমন প্রশের জবাবে কারও নাম উল্লেখ করেননি তিনি। মসিউর বলেন, যারা পয়সা দেবে তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা কোনো এক সময় আমাদের দেশের কিছু লোককে গুপ্তচর হিসেবে নিয়োগ দেয়। যারা গোপনে তাদেরকে তথ্য সরবরাহ করে, যার কোনো ভিত্তি নেই। এবং তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছে কি করতে হবে। তিনি বলেন, এই যে গোপন তথ্য এবং পরামর্শদাতা, তাদের নামও সরকারের কাছে প্রকাশ করতে পারবে না। এটা হলো, যারা তাদের সহযোগিতা করেছে তাদের রক্ষা করতে হবে। আর নামগুলো প্রকাশ করলে পরবর্তীতে তারা গোপন সহযোগিতা আর পাবে না।
এই গুপ্তচরদের কিছু ই-মেইলও তার কাছে আছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা। বলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও এ বিষয়ে অবহিত। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে মসিউর বলেন, মেইলগুলো এসেছে বেনামে।
আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করুন : ছুটির বিষয় স্পষ্ট না করলেও নির্বাসনে আছেন—এমন ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, এক সময় রাশিয়ায় যারা অবাঞ্ছিত ছিল তাদের গুলাগে নিয়ে যাওয়া হতো। আমার জীবনটাও গুলাগে প্রবেশ করেছে। উপস্থিত সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, এমন অবস্থায় পড়লে হার্টফেল হতে পারে, ব্রেনস্ট্রোক হতে পারে। এ অবস্থায় আমি আপনাদের সহানুভূতি চাই। আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করুন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পর সরকারকে কয়েকটি শর্ত দেয় বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে দুর্নীতিতে জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটিতে পাঠানোর কথাও ছিল। শর্তগুলো পালন হয়নি—এমন অভিযোগে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ঋণচুক্তি বাতিল করে গত ২৯ জুন। পরবর্তীতে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে চারটি শর্ত দিয়েছিল। এর মধ্যে মসিউর রহমানের ছুটিতে যাওয়ার শর্তটি অন্যতম। প্রথম দিকে সরকার কোনো দুর্নীতি হয়নি বলে সাফাই গায় এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দেয়। চাঁদাও তোলা হয় কিছু। সাফল্যজনক কোনো রেজাল্ট না আসায় সরকার পিছু হটে। কিছু দিন ধরে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আপসরফারও চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। পদ্মা সেতুর ঋণচুক্তি পুনর্বিবেচনা শর্ত হিসেবে উপদেষ্টা মসিউর রহমানকে সরিয়ে দেয়ার কথা থাকায় বেশ কিছুদিন থেকে তার ছুটিতে যাওয়ার বিষয় আলোচনা হচ্ছিল। গত শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে জানান, মসিউর ছুটিতে গেলে বিশ্বব্যাংক সিদ্ধান্ত বদলাবে। বৈঠকে অন্যরাও একই মত দেন। এমনি পরিস্থিতিতে সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তিনি উপস্থিত না থাকায় তার ছুটিতে যাওয়ার গুঞ্জন ওঠে। সোমবার বিকালে সরকারের একাধিক সূত্র অর্থ উপদেষ্টার ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। তবে গোপনীয়তার কারণে বিষয়টি প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে সূত্র দাবি করে। উপদেষ্টা ছুটিতে গেছেন এই বার্তা নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে দূতিয়ালি করতে ওয়াশিংটনে গেছেন বলে কোনো কোনো গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা থাকলেও ড. মসিউর রহমান এ নিয়ে সরাসরি কোনো জবাব দেননি। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকেও অর্থ উপদেষ্টাকে সরিয়ে দেয়ার দাবি ওঠে।
এর আগে বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে গত ২৩ জুলাই সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। ছুটিতে পাঠানো হয় সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াকে। একইভাবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলামের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি নতুন তদন্ত দল গঠন করে।
No comments:
Post a Comment