Friday, September 28, 2012

নির্দলীয় সরকার পুনর্বহাল না হলে ১/১১-র চেয়েও ভয়াবহ অবস্থা হতে পারে : ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া

নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন না হলে ওয়ান-ইলেভেনের চেয়েও ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে বলে সরকারকে হুশিয়ার করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া।
‘দেশ আর এক-এগারোতে ফিরে যেতে চায় না’—নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল সকালে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের পরের সরকার তত্ত্বাবধায়ক ছিল না, তা ছিল সেনা সমর্থিত সরকার। তাই ওই সময়ের অবস্থা আর যাতে না হয়, সেজন্য অবিলম্বে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মেনে নিন। নইলে এক-এগারোর চেয়ে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। আমরা গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক শাসন বলবত্ রাখতে চাই। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষে লগি-বৈঠা দিয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস সৃষ্টি ও সব শেষে নির্বাচন বর্জনে দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর সমর্থনে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয় ড. ফখরুদ্দীন নেতৃত্বাধীন সরকার। ওই সরকারের দুই বছরে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতা খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাসহ বহু রাজনীতিবিদকে কারাগারে যেতে হয়।
সে সময়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার নিউইয়র্কে এক নাগরিক সংবর্ধনায় বলেন, দেশের মানুষ আর ওয়ান-ইলেভেনের অবস্থায় ফিরে যেতে চায় না। ওই সময়ে ফখরুদ্দীন আহমদের সরকার ক্ষমতা আকড়ে রাখতে চেয়েছিল। এজন্য তারা অনেক ষড়যন্ত্র করেছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপে তারা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বদেশ জাগরণ পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন না হলে জনগণ তা মানবে না।
সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলে সুপ্রিমকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের সমালোচনা করে আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল বলেন, সংক্ষিপ্ত রায়ের সঙ্গে ১৬ মাস পরে দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ের কোনো মিল নেই। এ রকমভাবে রায় পাল্টানোর নজির বিশ্বে নেই। এতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাও খর্ব হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান সরকার সংবিধানে সংযোগ করেছে। এ বিধানে নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না।
‘প্রতিহিংসার রাজনীতি : অতীত ও বর্তমান প্রেক্ষাপটে নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বদেশ জাগরণ পরিষদের সভাপতি কামরুজ্জামান সেলিম। এতে আরও আলোচনা করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আ ন হ এহছানুল হক মিলন, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, সাবেক সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
নির্দলীয় সরকারের দাবি না মানলে আন্দোলনেই ফয়সালা : জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে যুব জাগপার উদ্যোগে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার, বিচারিক রায়, নির্বাচনের ভবিষ্যত্ : দেশ আজ কোনো পথে’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বলেন, নির্দলীয় সরকারের দাবি সরকার না মানলে আন্দোলনেই এর ফয়সালা হবে।
তিনি বলেন, এ সরকারকে জনগণ সমুচিত জবাব দেবে।
জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বলেন, ব্রিটিশ আদালতের রায়ে পাকিস্তান হয়নি; তেমনি পাকিস্তান আদালতের সম্মতিতেও বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়নি। রাজনীতির ফয়সালা ইনশাল্লাহ রাজনীতির ময়দানেই হবে। সরকারকে নির্দলীয় সরকারের দাবি মানতে বাধ্য করা হবে।
সংগঠনের সভাপতি ইনসান আলম আক্কাসের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তৃতা করেন জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুত্ফর রহমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মহাসচিব ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপা সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন বাবলু, আবু মোজাফফর মোহাম্মদ আনাস, আসাদুর রহমান খান, ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

No comments:

Post a Comment