ইরাকের পলাতক সুন্নি ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক আল হাশেমির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পরপরই বাগাদাদের শিয়া প্রধান এলাকাগুলোতে ধারাবাহিক বোমা হামলা হয়েছে। এতে রোববার ইরাকজুড়ে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা ১শ’ ছাড়িয়ে গেছে।
চলতি বছরের সবচেয়ে রক্তাক্ত দিনগুলোর একটি ছিল রোববার।
জ্যেষ্ঠ সুন্নি রাজনীতিবিদ হাশেমির দণ্ড ও চলমান সহিংসতার কারণে শিয়া সরকার পরিচালিত ইরাকে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করছে। নয়মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদল ইরাক ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে, সরকারকে সুন্নি বিদ্রোহীদেরও মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
গত ডিসেম্বরে শিয়া প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকির কঠোর সমালোচক হাশেমির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলে তিনি তুরস্কে পালিয়ে যান। ভাইস প্রেসিডেন্ট হাশেমির পলায়নে ইরাকে শিয়া, সুন্নি ও কুর্দিদের মধ্যে সরকারের অংশীদারিত্ব নিয়ে করা চুক্তি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
রোববার আদালতের রায় ঘোষণার পর বাগাদাদের শিয়া প্রধান ছয়টি এলাকায় গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে একটি রেস্তোরাঁ ও একটি ক্যাফে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকায় বিস্ফোরিত আরেকটি বোমার আঘাতে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।
এর আগে একই দিন ইরাকজুড়ে ১১টি বোমা হামলায় আরো অন্তত ৫৮ জন মানুষ নিহত হয়।
মালিকি সরকারের বিরুদ্ধে দেশের বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধীদলীয় সুন্নি নেতাদের দমনচেষ্টার অভিযোগ এনেছেন পলাতক হাশেমি। বিচারে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে আদালতে হাজির হতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। তুরস্ক থেকে সম্ভবত তিনি আর ফিরবেন না।
বিচার বিভাগের মুখপাত্র আব্দুল সাত্তার আল বারকদার জানান, এক নারী আইনজীবী ও এক নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগে হাশেমি ও তার জামাতাকে তাদের অনুপস্থিতে দোষী সব্যস্ত করা হয়েছে।
হাশেমির সুন্নি প্রভাবিত ইরাকিয়া পার্টির সদস্য আইনজীবী জাবের আল জাবেরি আদালতের রায়কে “রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত” বলে উল্লেখ করেছেন।
হাশেমির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে ইরাকজুড়ে ধারাবাহিক কয়েকটি বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় অন্তত ৫৮ জন নিহত হয়। ওই সময় বাগদাদের ৩শ’ কিলোমিটার দক্ষিণে নাসিরিয়া শহরে ফরাসি কনস্যুলার ভবনের বাইরেও একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
বাগদাদের বাইরে সবচেয়ে মারাত্মক হামলাটি হয় ৩শ’ কিলোমিটার দক্ষিণের আমারা শহরে। এখানে একটি শিয়া মাজারের বাইরে ও একটি বাজারে গাড়িবোমা হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত হয় বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এছাড়া কিরকুক, বাকুবা, সামরা, বসরা ও তুজ খুর্মাতো শহরে আরো কয়েকটি বোমা হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হন। |
|
No comments:
Post a Comment