Saturday, September 8, 2012

‘ঘুম নিয়ে সমস্যায় অর্ধেক নারী’

‘ঘুম নিয়ে সমস্যায় অর্ধেক নারী’
Sat, Sep 8th, 2012 12:37 pm BdST
নারীদের মধ্যে অর্ধেকই ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন বলে সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে।
৪০০ জন নারীকে ঘুমের সময় পর্যবেক্ষণ করে এবং তাদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে এ জরিপ চালায় সুইডেনের উমিয়া ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অর্ধেকেরই ‘স্লিপ এপনিয়া’র সমস্যা রয়েছে।

ঘুমের মধ্যে রোগীর অজান্তেই নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যাকে স্লিপ এপনিয়া বলা হয়। সাধারণত স্লিপ এপনিয়ায় আক্রান্তদের ঘুমের মধ্যে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড পর্যন্ত নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে থাকতে পারে। এ ঘটনা ঘণ্টায় পাঁচ থেকে ৩০ বা তার চেয়েও বেশি বার ঘটতে পারে।

সুইডিশ গবেষকরা ১০ হাজার নারীর মধ্যে থেকে ২০ থেকে ৭০ বছর বয়সী ৪০০ জনকে এ জরিপে অন্তর্ভুক্ত করেন। তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ঘুমের সময় শরীরে সেন্সর লাগিয়ে পর্যবেক্ষণ চালানো হয়।

সেন্সরগুলো তাদের হৃদপিণ্ডের গতি, ঘুমের সময় চোখ ও পায়ের নড়াচড়া, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা, শ্বাসপ্রশ্বাস ও মস্তিষ্কে তরঙ্গ প্রবাহ পরিমাপ করে। যে কোনো ১০ সেকেন্ড দীর্ঘ নিঃশ্বাস বন্ধ থাকা এবং রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার ঘটনাকে এপনিয়ার লক্ষণ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

অংশগ্রহণকারীদের কারো প্রতি ঘণ্টায় গড়ে পাঁচটি অথবা তার চেয়েও বেশি নিঃশ্বাস বন্ধ থাকলে তাকে স্লিপ এপনিয়ায় আক্রান্ত বলে ধরে নেওয়া হয়।

এ জরিপে অর্থ যোগানদাতা প্রতিষ্ঠান সুইডিশ হার্ট লাং ফাউন্ডেশন জানায়, তাদের গবেষণা অনুযায়ী বয়স্কদের মধ্যে স্লিপ এপনিয়া বেশি দেখা যায়।

সাম্প্রতিক গবেষণাটির প্রধান গবেষক ড. কার্ল ফ্রাঙ্কলিন জানান, ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে এক চতুর্থাংশের স্লিপ এপনিয়া রয়েছে। ৪৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ এবং ৫৫ থেকে ৭০ বছর বয়সীদের ৭৫ শতাংশের এ রোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, গবেষণায় ব্যবহৃত যন্ত্রাংশগুলো নতুন, তাই নিঃশ্বাসের যে কোনো বিঘœ এতে আরো সহজে ধরা পড়ে। এতে দেখা যায় যে, ঘণ্টায় ৩০ বার বা তার চেয়েও বেশি বার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায় সবার মধ্যেই রয়েছে। একে তীব্র স্লিপ এপনিয়া বলা হয়েছে।

৪৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ৫৫ থেকে ৭০ বছর বয়সীদের ১৪ শতাংশের তীব্র স্লিপ এপনিয়া রয়েছে।

হাইপারটেনশন ও অতিরিক্ত ওজনের নারীদের মধ্যে এপনিয়ার লক্ষণ বেশি পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৮০ থেকে ৮৪ শতাংশের স্লিপ এপনিয়া রয়েছে।

হাইপারটেনশন আছে এমন নারীদের ১৪ শতাংশের এবং অতিরিক্ত ওজনের ১৯ শতাংশ নারীদের স্লিপ এপনিয়া রয়েছে। সাধারণভাবে বেশির ভাগ নারীরই হালকা এপনিয়া রয়েছে বলে গবেষণায় পাওয়া গেছে।

ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের স্কুল অব মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথের অধ্যাপক টেরি ইয়ং বলেন, হালকা স্লিপ এপনিয়া পরবর্তীতে তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।

তিনি জানান, স্লিপ এপনিয়ার কারণে স্ট্রোক, হার্টঅ্যাটাক ও অল্প বয়সে মৃত্যুর আশঙ্কা বেড়ে যায়। এছাড়া সাম্প্রতিক গবেষণাটিতে দেখা যায়, স্লিপ এপনিয়ায় আক্রান্ত অন্তত এক শতাংশ নারীদের স্মৃতিশক্তি বিষয়ক সমস্যা ও ডিমেনশিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইয়ং বলেন, সাধারণত পুরুষদের স্লিপ এপনিয়া বেশি হয় বলে ধরে নেওয়া হত। তবে সাম্ú্রতিক এ গবেষণায় তা ভুল প্রমাণিত হলো। 

No comments:

Post a Comment