
গতকাল শনিবার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীদের সাথে মতবিনিময় করেন -সংগ্রাম
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে সরকারের সকর মন্ত্রী-এমপি দুর্নীতিতে জড়িত। প্রধানমন্ত্রী পরিবার এখন কানাডা থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশেও দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে। তারা বিদেশে ডলার পাচার করছে। তাদের অনেক দূর্ণীতি আছে যা সময় মতো প্রকাশ করা হবে। আগামীতে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে ধরা হবে। মন্ত্রী সভার সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফুটো নৌকায় যত লোক উঠবে, তত ভারী হবে, ফলে নৌকা আরো তাড়াতাড়ি ডুববে। নিদলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আগামীতে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবেনা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া আরো বলেন, সরকার যতই চেষ্টা করুক এক সময় আসবে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, যতদিন সুস্থ আছি, ভালো আছি ইনশাআল্লাহ এ সরকারকে বিদায় করে দেশের স্বাদীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবো।
গতকাল শনিবার গুলশান চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকটি রাত ৯ টায় শুরম্ন হয়ে তিন ঘন্টা ধরে চলে। খালেদা জিয়া এক ঘন্টাব্যাপী বক্তব্য রাখেন।
খালেদা জিয়া আরো বলেন, দেশের বিরুদ্ধে ১/১১ এর সময় দেশিও ও আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্র হয়েছিলো। সে ষড়যন্ত্র এ এখনো অব্যাহত রয়েছে। একটি মুসলীম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যাতে মাথা উচু করে দাড়াতে না পারে, যাতে উন্নত না হয় সেজন্য প্রতিবেশি দেশসহ অনেক দেশ ষড়যন্ত্র করে। তারা চায় মুসলীম প্রধান এই দেশটি যাতে গরীব ও তাদের মুখাপেক্ষি থাকে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সব সময় মানুষের জন্য, দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করেছে। এজন্য বিএনপি ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিলিন হতে চলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় যেতে নয় দেশ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আন্দোলন করছে।
বেগম খালেদা জিয়া তার ঘন্টাব্যাপী বক্তব্যে দেশের আইন শৃংখলা, হলামার্ক কেলেংকারিসহ সরকারের বিভিন্ন দর্ণীতির চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সরকারের সবাই কম-বেশি দুর্নীতিবাজ। এজন্য নতুন মন্ত্রী দিয়ে কোনো লাভ হবেনা। তাদেরকে অবশ্যই চলে যেতে হবে। আর এবার চলে গেলে তারা আর ৪০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবেনা।
সরকার জনবিচ্ছন্ন হয়ে বিরোধী দলকে মিছিল মিটিং করতে দিচ্ছেনা অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকার জনবিচ্ছন্ন হয়ে গেছে্। এজন্য তারা এখন জনগনকে ভয় পায়।
সভায় সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব শওকত মাহমুদ, প্রেসক্লাব সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল আলম, বিএফইউজে সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি আব্দুস শহীদ, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, সাংবাদিক শফিক রেহমান, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আমানুলস্নাহ কবির, পিআইবির সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাভিশনের উপদেষ্টা ড. আব্দুল হাই সিদ্দিকী, কামরম্নল ইসলাম চৌধুরী, দৈনিক ইনকিলাব সহকারী সম্পাদক আব্দুর আওয়াল ঠাকুর, সমকালের যুগ্ম-সম্পাদক রাশিদুন্নবী, রকিব উদ্দিন আহমেদ, কবি আহমদ সফি, কামরম্নল ইসলাম চৌধুরী, ডিইউজে যুগ্ম-সম্পাদক অলিউলস্নাহ নোমান, সঞ্জীব চৌধুরী, মাসুদ মজুমদার, নিউনেশন সম্পাদক মোসত্মফা কামাল মজুমদার, ডিইউজে সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য জহিরম্নল আলম, জাহাঙ্গীর ফিরোজ, সাদ বিন রাবী, মেহেদী হাসান পলাশ, হারম্ননুর রশীদ, পলিটিক্যাল রিপোটার্স ফোরামের (পিআরএফ) সাধারণ সম্পাদক মোহসীন হোসেন, ডিইউজে নির্বাহী সদস্য আমিরম্নল মোমেনিক মানিক প্রমুখ।
এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মারম্নফ কামাল খান উপস্থিত ছিলেন।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, বিএনপি সরকার প্রথম আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। বিএনপি সব সময় মিডিয়া বান্ধব। কেউ যদি মিডিয়ার লাইসেন্স নিয়ে আদর্শ থেকে সওে আসে তাহলে তা দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, এ সরকারের সময়ে ১৬ সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। সাগর-রুনির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মামলা হয়েছে। তাতে আন্দোলন থেকে পিছিয়ে যাবোনা। গণতন্ত্র না থাকলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবেনা। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে। নিজেদের প্রয়োজনে স্বৈরাচার সরকারের বিরম্নদ্ধে শেষ পর্যমত্ম লড়াই করতে হবে। সরকারের অগণতান্ত্রিক কর্মকান্ডের বিরম্নদ্ধে গনতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারীপরিয়ে আনতে চহড়ামত্ম আন্দোরন করতে হবে বিএনপিকে।
শওকত মাহমুদ বলেন, জিয়া পরিবারের চেয়ে কেউ সাংবাদিক বান্ধব নয়। জিয়া পরিবার সাংবাদিকদের জন্য আবাসন, মিডিয়াসহ অনেক কাজ করেছেন। স্বাভাবিকভাবে বর্তমান সরকার ÿমতা ছাড়বে না। প্রচন্ড ধাক্কা দিতে হবে। নিদর্লীয় নিরপেÿ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী নিবার্চন হলে তা জাতির জন্য অত্যমত্ম ÿতিকর হবে। এজন্য আন্দোলনে সাংবাদিকদেরও অংশ নিতে হবে যার যার অবস্থান থেকে। সাগর-রম্ননি হত্যা হলেও সরকার কোনো বিচার করছে না। এ সরকারের কাছে আর সাংবাদিক হত্যার বিচার চেয়ে লাভ নেই।
কামাল উদ্দিন সবুজ বলেন, দেশে এক পÿীয় সংবাদপত্রের প্রভাব চলছে। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। যদি গণতন্ত্র থাকে তাহলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবে। আগামী নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায় হবে তার দিকে পুরো জাতি তাকিয়ে রয়েছে। জিয়ার আদর্শ অনুসারে সবার জন্য কাজ করবে বিএনপি এটাই জাতির প্রত্যাশা।
আব্দুস শহীদ বলেন, সাড়ে তিন বছরে ১৬ জন সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। অসংখ্য সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার। কোনো বিচার হচ্ছেনা। অনলাইন মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। সংবাদপত্রের কন্ঠরোধ করতে একটি ভিতিকর অবস্থা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সাগর-রম্ননির বিষয়ে আন্দোলন চলছে। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা প্রয়োজন। বিএনপির কাছে সহযোগিতা চাই।
বাকের হোসাইন বলেন, জোটের রাজনীতিকে আরো সক্রিয় করতে হবে। মিডিয়া বান্ধব করা উচিত।
No comments:
Post a Comment