মতলব উত্তরের মজিব হত্যা মামলাআসামীদের হুমকিতে এতিম চার শিশু সনত্দান নিয়ে মরিয়মের রাত কাটছে শঙ্কায় ও হতাশায়
মাহবুব আলম লাভলু
মতলব উত্তর উপজেলার ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নের পূর্ব নাউরী গ্রামের মজিবুর রহমান ঢালী হত্যা মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখনও কোনো আসামী গ্রেফতার হয়নি। আসামীদের হুমকিতে এতিম চার শিশু সনত্দান নিয়ে মরিয়মের রাত কাটছে শঙ্কায় ও হতাশায়। সোমবার বিকেলে জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিকরা সরজমিনে গেলে নিহত মজিব ঢালীর স্ত্রী মরিয়ম বেগম স্বামীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, চার শিশু নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটে, চোখে ঘুম আসে না সনত্দানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে। আসামী পক্ষ বিভিন্নভাবে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। একটি মহল আসামীদের সহযোগিতা করছে। মামলার বাদী নিহত মজিবের ছোট ভাই তৈয়ব আলী জানান, ভাই মারা যাবার পর থানায় মামলা করা হয়। এখনো কোনো আসামী ধরা পড়েনি। আসামীরা মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। একটি প্রভাবশালী মহল মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেষ্টা করছে। সাংবাদিকদের কথা শুনে এলাকাবাসী ছুটে আসে। তারাও মজিব হত্যাকারীদের বিচার দাবি করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য রেহান উদ্দিন ঢালী, সমাজসেবক মজিবুর রহমান ভঁূইয়া, জয়নাল আবেদীন দর্জি, মোস্তফা দেওয়ান, খলিল ঢালী, জলিল দেওয়ান, ফয়েজ দর্জি, রফিক খলিফাসহ গ্রামের নারী-পুরুষ। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৩ জুন মতলব উত্তর উপজেলার পূর্ব নাউরী গ্রামে মজিবুর রহমান ঢালী নিজ বাড়ির বসতঘরের উপরে গাছের ডালা পরিষ্কার করার সময় পাশের বাড়ির ইদ্রিস মিজি ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। ইটের আঘাতে মজিব গুরুতর আহত হন। তাকে প্রথমে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েচিকিৎসা দেয়া হয়। পরে তার অবস্থা বেগতিক দেখে চিকিৎসক ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্যে রেফার করেন। ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসকরা মজিবুর রহমানকে মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে পাঠায়। নিহতের আত্মীয়স্বজনরা জানান, ইটের আঘাতে মজিবের মাথায় গুরুতর জখম হয়। তারপর তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। ২৯ আগস্ট সকালে মজিব তার শ্বশুরালয় নারায়ণগঞ্জে মারা যান। জুন মাসে সংঘর্ষের পর মতলব উত্তর থানায় অভিযোগ করা হয়েছিলো। কয়েকবার স্থানীয়ভাবে সালিস করেও কোনো সুরাহা হয়নি। নিহত মজিবের ছোট ভাই তৈয়ব আলী বাদী হয়ে ২৯ আগস্ট বুধবার রাতে মতলব উত্তর থানায় ইদ্রিস আলী মিজিকে প্রধান আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত বৃহস্পতিবার মজিবের ময়না তদন্ত শেষে পূর্ব নাউরী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত মজিবুর রহমান ঢালীর ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে মাহবুব ঢালী ও বড় মেয়ে নাজমিন ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে, ছোট মেয়ে মারুফা ১ম শ্রেণীতে এবং ছোট ছেলে ফাহাদ কোলের শিশু। তারা এখন অসহায়। জীবনের পথ চলায় এখন তাদের সামনে শুধু অন্ধকার। তাদের চাওয়া বাবার বিচার ও পথ চলার সহযোগিতা।

No comments:
Post a Comment