Wednesday, September 19, 2012

উপদেষ্টাদের মা-বাপ নেই


সরকারের কঠোর সমালোচনা করে মহাজোটের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাংসদ রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘উপদেষ্টাদের কোনো  মা-বাপ নেই। তাঁদের কোনো জবাবদিহি নেই। নিজেদের স্বার্থে তাঁরা দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে তত্পর।’
আজ বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চার দফা দাবিতে সাতটি বাম সংগঠনের বিক্ষোভ সমাবেশে রাশেদ খান মেনন এসব কথা বলেন। সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, আদিবাসীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা-অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এ সমাবেশ ডাকা হয়।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বিদ্যুতের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের মাধ্যমে লুটপাট করা হয়েছে। এই বোঝা চেপেছে জনগণের ওপর। সরকার ছয়বার বিদ্যুতের দাম বাড়াল।’ তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ভারতের দিকে তাকিয়ে দেখুন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণে সরকার পড়ে যাচ্ছে।’
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘সরকার ক্ষমতায় আসার পর শেয়ারবাজার থেকে শুরু করে হলমার্ক পর্যন্ত একের পর এক লুটপাট হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী শেয়ারবাজারকে বললেন দুষ্ট মার্কেট; আর সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা তাঁর কাছে কিছুই না। ব্যাংকের টাকা এভাবে লুট হয়ে যাবে আর অর্থমন্ত্রী এ ধরনের কথা বলবেন, তা হতে পারে না। জনগণ এটা বরদাশত করবে না।’
মেনন বলেন, ‘আমরা বারবার হোঁচট খাই। বিজয় বারবার ব্যর্থ হয়। এবারও সেই বিজয় ব্যর্থ হতে চলেছে বলে রাজপথে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছি। পার্বত্যাঞ্চলবাসীর দাবি শুধু তাদের নয়, এ দাবি রাষ্ট্রীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পরও শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়নি। চার বছর তো পার হয়ে যাচ্ছে। কবে বাস্তবায়ন হবে?’ তিনি বলেন, ‘আদিবাসীদের ভূমির অধিকার নেই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নস্যাত্ করতে সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। এগুলো আর কত দেখতে হবে? সরকারকে বলতে চাই, সমস্যার সমাধান করুন। বাংলাদেশের মানুষ কিছুই ভুলে যায় না।’ 
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘এসব দাবি নিয়ে আমরা বহুদিন ধরে সংগ্রাম করছি। বাস্তবায়ন করা হয়নি। সমস্যার সমাধান করতে হলে সব বাম গণতান্ত্রিক শক্তিকে একত্র হয়ে রাজপথে নামতে হবে।’ 
গণ আজাদী লীগের সভাপতি আবদুস সামাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণ ঐক্যের আহ্বায়ক পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সাম্যবাদী দলের পলিট ব্যুরোর সদস্য আবু আহমেদ সাহাবুদ্দিন, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের নেতা অসিত বরণ প্রমুখ।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল, গণ আজাদী লীগ, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, গণ ঐক্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

No comments:

Post a Comment