Saturday, September 15, 2012

আমিও গুম হওয়ার আতঙ্কে আছি ড. কামাল


undefined
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন গুম হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, আমিও গুম হওয়ার আতঙ্কে আছি। যারা লুটপাট করেন তারা হেন কোনো কাজ নাই যা করতে পারেন না। সত্য কথা বলার জন্য হয়তো আমিও গুম হয়ে যেতে পারি। আমি গুম হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে আছি। সত্য বলার জন্য আর কত জনকে গুম করা হবে। এখন যা চলছে তা অভিশপ্ত রাজনীতি। ধানমন্ডির বিলিয়া অডিটোরিয়ামে গতকাল সাময়িকী 'সাপ্তাহিক' আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি আরও বলেন, আসলে পচন শুরু হয়েছে মাথা থেকে। দেশ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে গেছে। সাপ্তাহিকের সম্পাদক গোলাম মোর্তোজার সঞ্চালনায় আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত সাংবাদিক এবিএম মূসা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. বদিউর রহমান, অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, মামুন রশীদ, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ ও অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর। 'অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও জনস্বার্থ' শীর্ষক আলোচনায় সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল বলেন, রাষ্ট্র হলমার্ক কেলেঙ্কারির হোতাসহ নানা অপরাধীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। পুলিশের অধিকার আছে, কোনো মামলা বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই সম্পদ নিতে পারে। এভাবেও পুলিশের মাধ্যমে হলমার্কের টাকা ফেরত আনা যেতে পারে। তিনি বলেন, তিন মিনিটে যখন ঢাকা ভাগ করার আইন পাস করা যায়, সংবিধানের সংশোধনী করতে যখন কয়েক মিনিট লাগে, তখন অপরাধীর বিচার করতে এত বিলম্ব কেন? বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, এখন এতগুলো ব্যাংক অনুমোদন দেওয়ার ক্ষমতা কার? চাপের মুখে যদি গভর্নরকে এত ব্যাংকের অনুমোদন দিতে হয়, তাহলে তার পদত্যাগ করা উচিত। বিশিষ্ট সাংবাদিক এবিএম মূসা বলেন, সরকারের চোরদের চুরি করার দক্ষতা আছে। চুরি বিদ্যা বড় বিদ্যা তবে লুকানোর দক্ষতা নেই, তাই ধরা পড়ে গেছে। চুরি যেই করুন দায়িত্ব সরকারের। কারণ রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। তিনি আরও বলেন, এসব ঘটনার তদন্ত কে করবে, চোরে চোরে মাসতুতো ভাই? অর্থ কেলেঙ্কারির দোষী চিহ্নিত হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলছেন, টাকাটা বেশি নয়। তাতে বোঝা যায়, কত বড় চুরি হয়েছে। যারা দুর্নীতি করেন, তারাই তো রাজনীতি করছেন। তিনি প্রস্তাব দেন, হলমার্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে নাগরিক কমিটি করে তদন্ত করতে হবে। দেশের মানুষ সবচেয়ে সচেতন। তারা ঘাপটি মেরে থাকেন, সময় এলে জবাব দেন। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, হলমার্কের ঋণ স্বাভাবিক ঋণ না। এটি নিয়ন্ত্রক, ব্যবস্থাপক, পরিচালকদের ব্যর্থতা। সব ব্যর্থতার সঙ্গে দুর্নীতির সমন্বয় ঘটেছে। ব্যাংকিং খাতের অনেকগুলো সিস্টেমে চিড় ধরেছে। এখনই সামাল দিতে না পারলে এটা হবে অশনি সংকেত। আমাদের এই খাতে সততা ও দক্ষতার বেশ অভাব রযেছে। আমাদের দুর্ভাগ্য, ব্যাংকিং খাতের ইনোভেশন নেই। তারা বড়লোকদের টাকা দেয়, কিন্তু সাধারণ মানুষকে দেয় না।

সৈয়দ আবুল মকসুদ মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সমালোচনা করে বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে এখন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব, নোট করার মানুষ সব মিলিয়ে মন্ত্রিসভা নয়, জনসভা হবে। ৭ জন মন্ত্রীর পেছনে আরও কোটি টাকা নানাভাবে ব্যয় হবে।

No comments:

Post a Comment