Wednesday, October 24, 2012

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী : ড. ইউনূসই বিদেশি বিনিয়োগে বাধা













দেশে বিদেশি বিনিয়োগ না আসায় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেলবিজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূসকে দায়ী করেন র্অথমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিনিয়োগ তেমন বাড়েনি। সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগও (এফডিআই) কমে গেছে। বিনিয়োগের অভাবে আমরা মরে যাচ্ছি। এ সবকিছুর জন্য একমাত্র দায়ী অধ্যাপক ড. ইউনূস। বিদেশে তার মিথ্যা প্রচারণার কারণে দেশে বিনিয়োগ আসছে না। তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র সমস্যা। গতকাল রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে ষষ্ঠ-পঞ্চবাষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন-পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নসম্পর্কিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সভাশেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী প্রধান অতিথি ছিলেন। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলমের পরিচালনায় বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান এসএ সামাদ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা প্রত্যাশিত, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ না হওয়া, শিল্পায়নের অভাবে কাঙ্ক্ষিত উত্পাদন প্রবৃদ্ধি না হওয়া এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। আর বিনিয়োগ না আসার কারণ হিসেবে তারা দায়ী করেছেন সুশাসনের অভাবকে। সভাশেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি খাতে আমাদের অর্জন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ভালো। তবে আমরা পিছিয়ে আছি বিনিয়োগে। এফডিআই অনেক কমে গেছে। বিনিয়োগের অভাবে আমরা মরে যাচ্ছি। এর জন্য একমাত্র দায়ী ড. ইউনূস। একজন ব্যক্তি কীভাবে সরকারের বিরুদ্ধে এমন প্রচারণা চালাচ্ছেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘হি (ইউনূস) হ্যাজ অ্যা ওয়ান্ডারফুল পাবলিসিটি মেশিনারি। উনি যেসব কথা বলেন, তার মধ্যে পুরোপুরি সততা নেই।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংক উনার (ইউনূস) প্রতিষ্ঠান। উনি কোনোমতেই গ্রামীণ ব্যাংক ছাড়বেন না, এটাই হলো উনার সমস্যা। আর এজন্যই উনার এত কারসাজি।’
বিনিয়োগ না আসায় সুশাসনের অভাবকেও দায়ী করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, এখনও ঘুষ লেনদেন হয়। অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়া ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাময়িকী ‘ইকোনমিস্ট’ গত চার বছর সরকারের বিরুদ্ধে লেগে ছিল। তবে ইকোনমিস্ট তার অবস্থান বিরাট পরিবর্তন করেছে। তারা বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আর নেতিবাচক কোনো সংবাদ করতে পারেনি। গত সপ্তাহে ইকোনমিস্টে বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগ না হওয়ার পেছনে প্রধান সমস্যা হচ্ছেন ড. ইউনূস। বহির্বিশ্বে তিনি যেসব কথা বলেন, তা সততার সঙ্গে বলেন না।’ উল্লেখ্য, গত বছরের শুরুতে ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আইনি লড়াইয়ে হেরে যান ইউনূস। এর ফলে সরকারের সঙ্গে তার টানাপড়েন
সৃষ্টি হয়। অবশ্য ড. ইউনূস আদালতেও সুবিচার পাবেন না বলে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তাকে গ্রামীণ ব্যাংক ছাড়তে হয়েছে বলে দাবি করেছেন ড. ইউনূস।
অবশ্য গতবছরের সেপ্টেম্বরে তিন মাসের মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংকে নতুন এমডি নিয়োগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের জন্য আইন সংশোধনের পর থেকেই ড. ইউনূসের সঙ্গে সরকারের নতুন করে তিক্ততার শুরু হয়। নারী পরিচালকদের ক্ষমতা খর্ব করে এমডি নিয়োগে সরকার মনোনীত চেয়ারম্যানকে একক ক্ষমতা দেয় সরকার। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়।
নতুন আইনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের কমিটিতে ইউনূসের নাম প্রস্তাব করা হলেও তা প্রত্যাখ্যান করে সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে অর্থমন্ত্রী গত আগস্টে বলেছিলেন, তাকে নিয়োগ দিলে তিনি তার ইচ্ছামতো উত্তরসূরি নির্বাচন করবেন।
তবে এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করতে চাইছে বলে বিবৃতি দিয়েছিলেন ড. ইউনূস। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, তার এই ভুয়া প্রচারণার জন্য অনেকে চিঠি লিখে আক্রোশ প্রকাশ করছেন। অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে সরকার-সমর্থক কয়েকজন বুদ্ধিজীবী ড. ইউনূসের ব্যাপারে আপত্তিকর বিবৃতি দিয়েছেন। ড. ইউনূসের কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করছে না বলেও বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হয়েছে। এমনকি ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি নিয়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমসহ সরকারের শীর্ষ নীতিনির্ধারকরা প্রশ্ন তুলেছেন।

2 comments:

  1. Thanks for taking the time and writing this post .The estimate of writing your site post is very good .The simplest language you use when writing articles is appreciated .The information you give will prove to be of great value to me, I hope that. It is our wish that you continue to write great articles in such a future. Thanks for sharing this article. Thank you

    ReplyDelete
  2. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete