Wednesday, October 24, 2012

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী : ড. ইউনূসই বিদেশি বিনিয়োগে বাধা













দেশে বিদেশি বিনিয়োগ না আসায় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেলবিজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূসকে দায়ী করেন র্অথমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিনিয়োগ তেমন বাড়েনি। সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগও (এফডিআই) কমে গেছে। বিনিয়োগের অভাবে আমরা মরে যাচ্ছি। এ সবকিছুর জন্য একমাত্র দায়ী অধ্যাপক ড. ইউনূস। বিদেশে তার মিথ্যা প্রচারণার কারণে দেশে বিনিয়োগ আসছে না। তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র সমস্যা। গতকাল রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে ষষ্ঠ-পঞ্চবাষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন-পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নসম্পর্কিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সভাশেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী প্রধান অতিথি ছিলেন। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলমের পরিচালনায় বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান এসএ সামাদ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা প্রত্যাশিত, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ না হওয়া, শিল্পায়নের অভাবে কাঙ্ক্ষিত উত্পাদন প্রবৃদ্ধি না হওয়া এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। আর বিনিয়োগ না আসার কারণ হিসেবে তারা দায়ী করেছেন সুশাসনের অভাবকে। সভাশেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি খাতে আমাদের অর্জন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ভালো। তবে আমরা পিছিয়ে আছি বিনিয়োগে। এফডিআই অনেক কমে গেছে। বিনিয়োগের অভাবে আমরা মরে যাচ্ছি। এর জন্য একমাত্র দায়ী ড. ইউনূস। একজন ব্যক্তি কীভাবে সরকারের বিরুদ্ধে এমন প্রচারণা চালাচ্ছেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘হি (ইউনূস) হ্যাজ অ্যা ওয়ান্ডারফুল পাবলিসিটি মেশিনারি। উনি যেসব কথা বলেন, তার মধ্যে পুরোপুরি সততা নেই।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংক উনার (ইউনূস) প্রতিষ্ঠান। উনি কোনোমতেই গ্রামীণ ব্যাংক ছাড়বেন না, এটাই হলো উনার সমস্যা। আর এজন্যই উনার এত কারসাজি।’
বিনিয়োগ না আসায় সুশাসনের অভাবকেও দায়ী করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, এখনও ঘুষ লেনদেন হয়। অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়া ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাময়িকী ‘ইকোনমিস্ট’ গত চার বছর সরকারের বিরুদ্ধে লেগে ছিল। তবে ইকোনমিস্ট তার অবস্থান বিরাট পরিবর্তন করেছে। তারা বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আর নেতিবাচক কোনো সংবাদ করতে পারেনি। গত সপ্তাহে ইকোনমিস্টে বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগ না হওয়ার পেছনে প্রধান সমস্যা হচ্ছেন ড. ইউনূস। বহির্বিশ্বে তিনি যেসব কথা বলেন, তা সততার সঙ্গে বলেন না।’ উল্লেখ্য, গত বছরের শুরুতে ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আইনি লড়াইয়ে হেরে যান ইউনূস। এর ফলে সরকারের সঙ্গে তার টানাপড়েন
সৃষ্টি হয়। অবশ্য ড. ইউনূস আদালতেও সুবিচার পাবেন না বলে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তাকে গ্রামীণ ব্যাংক ছাড়তে হয়েছে বলে দাবি করেছেন ড. ইউনূস।
অবশ্য গতবছরের সেপ্টেম্বরে তিন মাসের মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংকে নতুন এমডি নিয়োগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের জন্য আইন সংশোধনের পর থেকেই ড. ইউনূসের সঙ্গে সরকারের নতুন করে তিক্ততার শুরু হয়। নারী পরিচালকদের ক্ষমতা খর্ব করে এমডি নিয়োগে সরকার মনোনীত চেয়ারম্যানকে একক ক্ষমতা দেয় সরকার। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়।
নতুন আইনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের কমিটিতে ইউনূসের নাম প্রস্তাব করা হলেও তা প্রত্যাখ্যান করে সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে অর্থমন্ত্রী গত আগস্টে বলেছিলেন, তাকে নিয়োগ দিলে তিনি তার ইচ্ছামতো উত্তরসূরি নির্বাচন করবেন।
তবে এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করতে চাইছে বলে বিবৃতি দিয়েছিলেন ড. ইউনূস। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, তার এই ভুয়া প্রচারণার জন্য অনেকে চিঠি লিখে আক্রোশ প্রকাশ করছেন। অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে সরকার-সমর্থক কয়েকজন বুদ্ধিজীবী ড. ইউনূসের ব্যাপারে আপত্তিকর বিবৃতি দিয়েছেন। ড. ইউনূসের কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করছে না বলেও বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হয়েছে। এমনকি ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি নিয়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমসহ সরকারের শীর্ষ নীতিনির্ধারকরা প্রশ্ন তুলেছেন।

Sunday, October 21, 2012



দিনে ২ ঘণ্টা লোডশেডিং হতেই হবে : শেখ হাসিনা














স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ভণ্ডুল করতে চায়, এমন দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যারা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে চায়, তাদের নীলনকশার ব্যাপারে দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে। সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এদের মোকাবিলা করতে হবে। যতই অপতত্পরতা চালানো হোক না কেন দেশের মানুষ সজাগ থাকলে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি কিছুই করতে পারবে না।
গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের জাতীয় সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের যারা বাঁচাতে চায়, তাদের অপতত্পরতা তো থাকবেই। এখন সময় এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সোচ্চার হতে হবে। গত দু’দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াতে ইসলামী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী গতকাল এসব মন্তব্য করেন।
বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিদ্যুত্ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি, দিনে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং হতেই হবে। এটা জরুরি বলে আমি মনে করি। লোডশেডিং কী—এটা যেন জনগণ ভুলে না যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিদ্যুতের উত্পাদন ছয় হাজার ২০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছি। কিন্তু এর জন্যও কথা শুনতে হয়, সমালোচনা করা হয়। যারা সমালোচনা করেন, তারা আবার সমালোচনা শুনতে পারেন না। আমাদের রাজনীতিবিদদেরই শুধু সমালোচনা শুনতে হবে।
বর্তমান সরকার দেশকে স্বনির্ভর করতে কাজ করে যাচ্ছে বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে চাই না। তিনি বলেন, বিএনপির নীতি ছিল, দেশে যেন খাদ্যঘাটতি থাকে। তাদের নীতি ছিল, কীভাবে সাহায্য পাওয়া যায়, ভিক্ষার চাল পাওয়া যায়।
আগামী নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলার মানুষ আবার ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে নামার ব্যবস্থা করবে কিনা এটা তারাই (জনগণ) ঠিক করবে।
আঞ্চলিক এবং দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধানেও সরকারের তত্পরতা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি চাই না। আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই।
প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে প্রকৌশলীদের আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। দাতাদের কাছ থেকে সাহায্য নিলে তাদের কথা শুনতে হয়। তারা যে টাকা দেয়, কনসালট্যান্সি করেই তার সব টাকা নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে আমাদের জয়ী হতে হবে। অন্যথায় আমাদের স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে যাবে।
এ সময়ে গাজীপুরের মেশিন টুলস কারখানার প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ওটা বন্ধ করে সেখানে হাউজিংয়ের কথা বলা হয়েছিল। সেটাও দাতাদের প্রেসক্রিপশন ছিল। আমরা মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি সেনাবাহিনীকে দিয়ে দিয়েছি। এখন সেখানে বিভিন্ন জিনিস উত্পাদন হচ্ছে।

Saturday, October 20, 2012


আমার দেশ-এর সাংবাদিকদের রিমান্ডে নিতে পুলিশের আবেদন : মিডিয়া দলনে মহাজোট সরকারের ইতিহাস সৃষ্টি

পুলিশি কর্তব্যকাজে বাধার অভিযোগে সোয়া দুই বছর আগে দায়ের করা এক মামলায় আমার দেশ-এর সাংবাদিকদের জামিন বাতিল করে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। ২০১০ সালের ২ জুন দায়ের করা মামলায় আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, নির্বাহী সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, প্রধান সহকারী সম্পাদক সঞ্জীব চৌধুরী, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার আলাউদ্দিন আরিফ ও অফিস সহকারী সাইফুল ইসলামের নাম এজাহারভুক্ত করে আরও ৪০০ সাংবাদিক-কর্মচারীকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা প্রথমে হাইকোর্ট ও পরে সিএমএম কোর্ট থেকে জামিনে রয়েছেন।
কিন্তু হঠাত্ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার পরিদর্শক অপূর্ব হাসান ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জামিন বাতিল করে রিমান্ড চেয়ে ওই আবেদন জানান। তবে সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে রিমান্ড আবেদনের বাইরে রাখা হয়েছে। আজ মামলাটির হাজিরার পূর্ব নির্ধারিত তারিখ। আমার দেশ-এর সাংবাদিকদের জামিন বাতিল ও রিমান্ড আবেদনের ওপর আজ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আমার দেশ-এর সব সাংবাদিক-কর্মচারী হাজির হবেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল আমার দেশ কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, মামলাটি আড়াই বছরের পুরনো। ওই মামলায় এজাহার নামীয় প্রত্যেক আসামি হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। সিএমএম আদালত থেকেও জামিন নিয়েছেন। প্রতিমাসে নির্ধারিত হাজিরার তারিখে সিএমএম কোর্টে সশরীরে হাজির হয়ে প্রত্যেক সাংবাদিক হাজিরা দিয়েছেন। এরকম একটি মামলায় শুধু স্থায়ী ঠিকানা জানার জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। মামলায় প্রত্যেকের অফিসের ঠিকানা দেয়া রয়েছে। তারা সবাই প্রথিতযশা সাংবাদিক। এদের মধ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদও রয়েছেন। তারা নিয়মিত অফিস করছেন। ঠিকানা জানার জন্য এভাবে রিমান্ডের আবেদন বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। রিমান্ড যেন এখন ডাল-ভাতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি একটি জিডির ভিত্তিতে রিমান্ডের আবেদনের ঘটনার পর এখন নাম জানার জন্য একটি পত্রিকার এত সাংবাদিকের নামে রিমান্ড আবেদন জানানো হয়েছে। বিশ্বের ইতিহাসেও এর নজির পাওয়া যাবে না। বর্তমান মহাজোট সরকার মিডিয়া দলনের যে পথ বেছে নিয়েছে, সর্বশেষ ঘটনা তার আরেকটি বড় প্রমাণ।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি মনে করি সরকারের সংবাদপত্র দলন নীতি ও আমার দেশ পত্রিকা ফের বন্ধের চক্রান্ত হিসেবে এই রিমান্ড আবেদন জানানো হয়েছে। এর আগে আমাকে গ্রেফতার করে ১৪ দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশি কাজে বাধা দেয়ার মামলায় তিন দিন রিমাণ্ডে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে আমাকে অজ্ঞান করে ফেলা হয়েছিল। এবার সব সাংবাদিককে ভীতসন্ত্রস্ত করার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যাতে সাংবাদিকরা সরকারের অপকর্মের সংবাদ তুলে ধরতে ভয় পান। তিনি আরও বলেন, সরকার এরই মধ্যে টকশো নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছে। সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার এখনও হয়নি। এক জজ মিয়ার জায়গায় ৭ জজ মিয়া নাটক সাজানো হচ্ছে। তিনি বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। আমার দেশ-কে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে বহু আগে থেকেই ডাকা হয় না। সর্বশেষ আমার দেশ সাংবাদিকদের রিমান্ডের আবেদন বাংলাদেশের সাংবাদিকতার জন্য আরেকটি অশনি সঙ্কেত হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন।
মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ২০১০ সালের ১ জুন আমি সংবাদ সম্মেলন করে গ্রেফতারের আশঙ্কা প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। ওইদিন রাতেই শত শত পুলিশ সাদা পোশাকে ও রণসাজে সজ্জিত হয়ে আমার দেশ কার্যালয় থেকে আমাকে গ্রেফতার করে। আমাকে গ্রেফতারের সময় পুলিশের কতর্ব্যকাজে বাধা দেয়া হয়েছে অভিযোগ এনে পরদিন ২ জুন তেজগাঁও থানায় আমার দেশ-এর সিনিয়র সাংবাদিকদের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছিল। এ মামলায় এখন জামিন বাতিল করে রিমান্ড চাওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, ওই মামলার নম্বর ২, তারিখ ২/৬/২০১০ইং। মামলার ধারা দণ্ডবিধির ১৪৩/ ১৪২/ ৩৩২/ ৩৫৩/ ১৮৬/ ৫০৬/ ১১৪।
তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) অপূর্ব হাসানের করা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সুপারিশকৃত রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, ‘এজাহার নামীয় আসামি (১) সহকারী সম্পাদক সঞ্জীব চৌধুরী (৬০), পিতা-সুশীল দাস চৌধুরী, সাং-বিএসইসি ভবন (১১তলা) ১০২, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ানবাজার, থানা-তেজগাঁও, ঢাকা, (২) ক্রাইম রিপোর্টার আলাউদ্দিন আরিফ (৩৮), পিতা-মৌলভী আরিফুর রহমান, (৩) চিফ এডিটর সৈয়দ আবদাল আহমদ (৪৮), পিতা-মৃত সৈয়দ শায়েস্তা মিয়া, (৪) সিটি এডিটর জাহেদ চৌধুরী, পিতা-মৃত আবদুুর নূর চৌধুরী (৫) অফিস পিয়ন সাইফুল (৩০), পিতা-মৃত আবদুুল খায়ের সরকার গং বিজ্ঞ আদালতে উল্লিখিত কর্মস্থলের ঠিকানা উল্লেখ করে আত্মসমর্পণ করেছেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের স্থায়ী ঠিকানা আবশ্যক। এ অবস্থায় আসামিদের সঠিক ও পূর্ণ নাম-ঠিকানার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামিন বাতিলপূর্বক একদিনের পুলিশ রিমান্ড আবশ্যক।’
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের সঠিক ও পূর্ণ নাম-ঠিকানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের জামিন বাতিলপূর্বক একদিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করতে মর্জি হয়।’
জামিনে থাকা প্রায় আড়াই বছর পুরনো মামলায় জামিন বাতিল করে রিমান্ড চাওয়ার ঘটনায় আইনজীবী ও সাংবাদিক নেতারাসহ সাধারণ মানুষও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
দুপুর ১২টায় প্রেস ক্লাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি : আমার দেশ-এর সাংবাদিকদের জামিন বাতিল করে রিমান্ডে নেয়ার পুলিশের আবেদনের প্রতিবাদে আজ আমার দেশ-এর সব সাংবাদিক-কর্মচারী আদালতে বিচারিক এজলাসে উপস্থিত থাকবেন। হাজিরা শেষে আজ দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। আমার দেশসহ গণমাধ্যমের সব সাংবাদিকদের বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়ার জন্য ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের আমার দেশ-এর ইউনিট প্রধান বাছির জামাল অনুরোধ জানিয়েছেন। এছাড়া বিক্ষোভে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ সব সাংবাদিক সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেবেন।

Thursday, October 18, 2012

যুক্তরাষ্ট্রে মিডিয়ার খবর নাফিসের ঘটনা : সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নতুন ফ্রন্ট বাংলাদেশ : সহযোগী সন্দেহে এক মার্কিনি গ্রেফতার

নাফিসকে গ্রেফতারের পর যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাস ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বাংলা-দেশকে সন্ত্রাস-বিরোধী যুদ্ধের নয়া ফ্রন্ট মনে করছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত টিভি স্টেশন সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।
সিবিএস নিউজ বলেছে, সন্ত্রাস বিশেষজ্ঞরা ফেডা-রেল রিজার্ভ ভবন উড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনাকে বিভিন্ন কারণে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন। এর মধ্যে সন্দেহভাজন কাজী নাফিস বাংলাদেশী হওয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে বাংলাদেশকে নতুন ফ্রন্ট হিসেবে উল্লেখ করেছেন তারা।
সিবিএস নিউজের বরাত দিয়ে নিউজওয়ার্ল্ড জানায়, নিউইয়র্কে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী আক্রমণের পরিকল্পনা ফাঁস হলেও বাংলাদেশী নাফিসের পরিকল্পনা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। সবকিছু দেখে মনে হয়েছে সে তার উদ্দেশ্য সাধনে ছিল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ভয়াবহ জিহাদ সংঘটনই ছিল তার মূল চিন্তা ও চেতনা। ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী ঘটনার চেয়েও ভয়াবহ ছিল
তার পরিকল্পনা। নিউইয়র্ক সিটির জন জে কলেজ অব ক্রিমিনাল জাস্টিসের শিক্ষক ড. মাকি হ্যাবারফিল্ড বলেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই নাফিসের পরিকল্পনা ছিল বড় কিছু একটা করার। সিবিএস নিউজ বলেছে, কথিত সন্ত্রাসী ঘটনা ব্যর্থ হলেও এর ফলে অনেক নতুন ঘটনা ঘটতে পারে। আরও অনেক তরুণ এতে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার কথিত পরিকল্পনার অভিযোগে বুধবার নাফিসকে গ্রেফতার করে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় অপরাধ তদন্ত ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নাফিসের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যবহার ও জঙ্গি সংগঠন আল কায়দাকে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
নাফিস বলত, প্রকৃত মুসলমান সহিংসতায় বিশ্বাস করে না : সন্ত্রাসবাদী পরিকল্পনার অভিযোগে নিউইয়র্কে বাংলাদেশী যুবক কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিস এফবিআইর হাতে গ্রেফতার হওয়ায় বিস্মিত হয়েছেন তার মার্কিন সহপাঠীরা। নাফিসের ভূয়সী প্রশংসা করে তারা বলেছেন, ‘নাফিস ছিল ভদ্র ও বিনয়ী। সে বলত, প্রকৃত মুসলমান কখনও সহিংসতায় বিশ্বাস করে না।’ ফক্স নিউজ এ খবর দিয়েছে।
গতকাল মার্কিন টিভি চ্যানেল ফক্স নিউজের অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর নাফিস প্রথমে ভর্তি হন সাউথইস্ট মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে তার সহপাঠী ডিয়ন ডানকান বলেন, ‘নাফিস ছিলেন ভালো মানুষ। তার মধ্যে কখনও মার্কিন বিরোধিতা দেখিনি। সে ছিল বিশ্বস্ত ও সত্ লোক। ডানকান বলেন, ‘নাফিস ছিল ভদ্র ও বিনয়ী। সে ছিল পরোপকারী। একজন ভালো মুসলিমের কাছ থেকে আপনি যেমনটা আশা করেন, সে ছিল তেমনই। সে দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত।’
ওই ইউনিভার্সিটিতে তার আরেক সহপাঠী ডাউ বলেন, ‘নাফিস লাদেনের প্রশংসা করেছে ঠিকই। তবে সে বলেছে, লাদেন টুইন টাওয়ারে হামলা করেছে বলে সে বিশ্বাস করে না। নাফিস বলত, লাদেন ছিল ধর্মপরায়ণ এবং একজন ধার্মিক লোক কখনও এ কাজ করতে পারে না।’ ডাউ বলেন, নাফিস তাকে এক কপি কোরআন শরিফ উপহার দিয়ে তা পড়তে বলেছিল। তবে কোরআন পড়ার জন্য সে কখনও পীড়াপীড়ি করেনি।’
নাফিসের পরিবারও একই ধরনের কথা বলেছে। তারা বলেছেন, নাফিস এফবিআইর সাজানো নাটকের শিকার। নাফিস শিশুর মতো সরল মনের অধিকারী বলে মন্তব্য করেছে তার পরিবার ও নিকটজনরা।
এফবিআই যে কৌশল নিয়ে এভাবে সম্ভাব্য অপরাধীদের গ্রেফতার করে তা নিয়ে মার্কিন মুল্লুকেও প্রশ্নও উঠেছে। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের ভাষ্যমতেই এফবিআইর এজেন্ট ও ইনফরমার এ ধরনের অপারেশন চালাতে নাফিসকে উত্সাহিত করেছেন, তাকে নির্দেশনা দিয়েছেন, অর্থ দিয়েছেন, এমনকি হামলা চালাতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পর্যন্ত সরবরাহ দিয়েছেন। সমালোচকরা মনে করছেন, উপযুক্ত সরকারি সহায়তা ছাড়া এমন একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারত না নাফিস।
এক্ষেত্রে নিউইয়র্ক টাইমস ২০০৯ সালের একটি ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছে। ওই বছর বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ব্রনক্সে রিভারডেল সেকশনে একটি উপাসনালয়ের সামনে বাসায় তৈরি বোমা স্থাপন করেছিল। ওই ঘটনায় ৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তাতেও সরকারি ইনফরমারের ভূমিকা ছিল। এ মামলাটি যে বিচারক দেখছিলেন, তিনি এতে আইন প্রয়োগকারী এজেন্টদের ভূমিকার সমালোচনা করেন। ওই এজেন্টরা ওই ব্যক্তিদের বোমা পাতার পরিকল্পনা সামনে এগিয়ে নিতে সহায়তা করেছিল। বিচারক তাই সমালোচনায় বলেছিলেন, ‘দ্য গভর্নমেন্ট মেড দেম টেররিস্টস’ (সরকার তাদের সন্ত্রাসী বানিয়েছে।’
নাফিসের সহযোগী সন্দেহে এক মার্কিনি গ্রেফতার : নাফিসের সঙ্গে ই-মেইলে যোগাযোগের সূত্র ধরে ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো থেকে এক মার্কিন নাগরিককে গ্রেফতার করেছে এফবিআই। তার নাম হাওয়ার্ড উইলি কারটার। গতকাল নিউইয়র্ক টাইমসে এ খবর প্রকাশিত হয়।
কারটারের বাসা থেকে অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌন সম্পর্কের ৩০টি ভিডিও এবং সহস্রাধিক ছবি জব্দ করা হয় বলেও এসব প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তবে আদালতের বরাত দিয়ে এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, কারটারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে লিপ্ত থাকার কোনো অভিযোগ এখনও দায়ের করা হয়নি।

Wednesday, October 17, 2012


আমু ও জলিল মন্ত্রী হচ্ছেন! 






















আরেক দফায় সম্প্রসারণ হচ্ছে মন্ত্রিসভা। তবে ঠিক কবে নাগাদ সম্প্রসারণ হবে, তা কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও কমপক্ষে দু'জন মন্ত্রিসভায় আসছেন বলে সমকালকে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। আলোচনায় পুরোভাগে রয়েছেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের দুই সদস্য আমির হোসেন আমু ও আবদুল জলিল। বর্ষীয়ান এ দুই নেতা ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। আমির হোসেন আমু খাদ্যমন্ত্রী ও আবদুল জলিল ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের কয়েকজন
নীতিনির্ধারক নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, সরকারের শেষ বেলায় অনাগ্রহ থাকলেও আমন্ত্রণ জানানো হলে মন্ত্রী হিসেবে শেষের খেয়ার যাত্রী হতে তাদের আপত্তি থাকবে না। ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, দল ও দলনেত্রীর প্রতি আনুগত্যের প্রমাণ দিতে মন্ত্রিত্বের আমন্ত্রণে এ দু'জন নেতা সম্মত হবেন। তবে এ দুই নেতার বিকল্প হিসেবে নতুন দু'জনের কথাও ভেবে রাখা হয়েছে।
মন্ত্রিসভা সম্প্রসারিত হলেও কারোর বাদ পড়ার সম্ভাবনা নেই। প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যেও কারও পদোন্নতির সম্ভাবনা কম। তবে কোনো কোনো মন্ত্রীর দায়িত্ব কমিয়ে আলাদাভাবে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে নতুনদের। ঈদের আগে না হলেও নভেম্বর মাসে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের তিন সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও আবদুল জলিলকে দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে আরও সক্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি ইতিমধ্যে এই তিন নেতাকে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় পরিষদ সদস্য করেছেন।
এ অবস্থায় অনেকেই মনে করছেন, আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় দলের জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও আবদুল জলিলকে গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবিতে ফিরিয়ে আনবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কাঠগড়ায় আ'লীগের তিন সাংগঠনিক সম্পাদক
সোমবার আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠকের পর দলের তিন সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ভূঁইয়া মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ও আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে ডেকে আনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানতে চান, সাংগঠনিক সম্পাদকদের উদ্ধৃতি দিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে ভুল সংবাদ কীভাবে প্রচার হচ্ছে। এ সময় সাত সাংগঠনিক সম্পাদকের পক্ষে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন আহমদ হোসেন, ভূঁইয়া মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ও আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। তারা বলেছেন, যা বলা হয়নি তা-ও প্রকাশ পেয়েছে কয়েকটি গণমাধ্যমে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাংগঠনিক সম্পাদকদের বক্তব্য বিকৃত করে প্রকাশ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমে প্রতিবাদও পাঠানো হয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী গণমাধ্যমে সতর্ক হয়ে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন।
বৈঠকে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও গৃহায়ন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান উপস্থিত ছিলেন।

Tuesday, October 16, 2012


ঢাকাসহ দেশব্যাপী ১৮ দলীয় জোটের বিশাল গণমিছিল : ব্যর্থতার ভারেই সরকারের পতন ঘটবে - মওদুদ

রাজধানীতে গতকাল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের বিশাল গণমিছিল থেকে ঘোষণা করা হয়, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। মিছিল-পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এমপি বলেন, ব্যর্থতার ভারেই সরকারের পতন হবে। এ সরকারের দুর্নীতি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এখন আন্তর্জাতিকভাবেই শেখ হাসিনার সরকারকে বিশ্বচোর হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যান, ঘাবড়াবেন না। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ও সরকারের নির্যাতনের প্রতিবাদে ১৮ দলীয় জোটের উদ্যোগে দেশব্যাপী মহানগর ও জেলা সদরে গণমিছিলের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিকাল সোয়া ৪টায় গণমিছিল শুরু হয়। পরে মগবাজার মোড়ে গিয়ে তা শেষ হয়। গণমিছিল শেষে ছাত্রশিবির মৌচাক মোড়ে সমাবেশ করে। এতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতারা বক্তৃতা করেন।
পূর্বে ফকিরেরপুল বাজার থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত নয়াপল্টনের দীর্ঘ সড়ক কানায় কানায় পূর্ণ ছিল মিছিলে। এর ৫ মিনিটের মাথায় নয়াপল্টনের আনন্দভবন কমিউনিটি সেন্টারের বিপরীত দিকে সড়কের পাশে ট্রান্সফরমারে বিকট শব্দ হলে নেতাকর্মীরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। এতে মিছিলের নেতাকর্মীদের মাঝে ভয়-আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। অনেক নেতাকর্মী ভয়ে অলিগলিতে ঢুকে যায়। অনেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে। দৌড়াদৌড়ির সময়ে অনেক নেতাকর্মী আহত হয়। নেতাকর্মীরা অনেকে আইল্যান্ডের ব্যানার-ফেস্টুনের বাঁশ-লাঠি নিয়ে এগুতে থাকে। পেছনের অংশটিতে জামায়াতে ইসলামীসহ জোটের শরিক দলের কর্মীরা ছিলেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি শান্ত হয়। অলিগলিতে থাকা নেতাকর্মীরা আবার মিছিলে অংশ নেয়। এ সময়ে রাস্তার দুই পাশে পুলিশ ও র্যাব স্থিরভাবে দাঁড়িয়েছিল।
গণমিছিলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এমপি, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, সহ-সভাপতি সাদেক হোসেন খোকা, আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, কেন্দ্রীয় নেতা আমানউল্লাহ আমান, রবকতউল্লাহ বুলু, অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী, ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম, আবদুল লতিফ জনি, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুর রহমান শাহীন, যুবদলের অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের হাবিব-উন নবী খান সোহেল, মীর সরফত আলী সপু, শফিউল বারী বাবু, মহিলা দলের শিরিন সুলতানা, ছাত্রদলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশিদ হাবিব, নিলোফার চৌধুরী মনি এমপি ও হেলেন জেরিন খানসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গণমিছিলে ১৮ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর অধ্যাপক মজিবুর রহমান, মিয়া গোলাম পরওয়ার, অধ্যাপক তাসনীম আলম, হামিদুর রহমান আযাদ এমপি, মাওলানা আবদুল হালিম, নুরুল ইসলাম বুলবুল, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, সেলিম উদ্দিন ও মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির শামীম আল মামুন, খেলাফত মজলিসের মাওলানা শফিক উদ্দিন, শেখ গোলাম আজগর ও নোমান মাজহারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির খন্দকার গোলাম মুর্তজা, ন্যাপের জেবেল রহমান ঘানি, ইসলামিক পার্টির আবদুল মবিন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর শেখ আনোয়ারুল হক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সাইফুদ্দিন মনি, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন প্রমুখ। এছাড়াও গণমিছিলে ছাত্রশিবিরের সভাপতি দেলাওয়ার হোসাইন ও সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল জব্বার উপস্থিত ছিলেন।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিকাল সোয়া ৪টার গণমিছিল শুরু হয়ে মগবাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। নির্দলীয় সরকারের দাবিতে সর্বশেষ গণমিছিলটি হয়েছিল ৩০ জানুয়ারি। ওই মিছিলে নেতৃত্ব দেন দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
দুপুর আড়াইটা থেকে মহানগরের ১০০টি ওয়ার্ডে থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে সমবেত হয়। বিকাল সাড়ে তিনটার মধ্যে ফকিরেরপুল মোড় থেকে শুরু করে বিজয়নগরের নাইটেঙ্গল ছাড়িয়ে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত পুরো এলাকা নেতাকর্মীদের উপস্থিতি জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
কর্মীদের হাতে নানা রঙের উত্সব পতাকা, ব্যানার-ফেস্টুন ছিল। গণমিছিলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতিকৃতিও স্থান পায়। জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা মঞ্চের বাঁদিকে অবস্থান নেয়। তারা দলীয় ক্যাপ পরে ব্যাপক শোডাউন করে। এছাড়াও ১৮ দলীয় জোটের শরিক খেলাফত মজলিস, এলডিপি, বাংলাদেশ ন্যাপ ও লেবার পার্টিসহ অন্য দলগুলোও গণমিছিলে শরিক হয়।
গণমিছিল উপলক্ষে ফকিরেরপুল, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ ও মগবাজার মোড়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি ছিল।
গণমিছিল শুরুর আগে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। মহানগর আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা এতে সভাপতিত্ব করেন। ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার সংসদকে অকার্যকর করে রেখেছে। তারা ৪ বছর ধরে একদলীয়ভাবে সংসদ চালিয়ে যাচ্ছে। কেবল তাই নয়, কর্মকমিশন, নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর হয়ে আছে। চার বছরে সরকারের ব্যর্থতার হিসাব এতো বেশি যে বলে শেষ করা যাবে না। এই ব্যর্থতার ভারে তাদের পতন ঘটবে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেই এদের বিদায় করব।
দুর্নীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার দুর্নীতিতে ডুবে গেছে। পদ্মা সেতুর দুর্নীতিতে বিশ্বের কাছে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়েছে। লজ্জায় মুখ দেখানো যায় না। আমি সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন তোমাদের দেশে কেন এতো বড় দুর্নীতি হয়। আমি এর জবাব দিতে পারিনি।
পদ্মা সেতুর দুর্নীতি পর্যবেক্ষণে বিশ্বব্যাংকের তদন্ত দলের ঢাকায় আগমনকে লজ্জাজনক অভিহিত করে সাবেক আইনমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। তারা আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমার বিশ্বাস বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতি পর্যবেক্ষণ টিম এ বিষয়টি বুঝতে পারবে। তখন তারা হতাশ হবেন।
গণমাধ্যমের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুনেছি প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান বেসরকারি কোনো টেলিভিশন ও সংবাদপত্রকে কাভার করতে দিচ্ছে না। তাদের ব্যর্থতার খবর সব গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে বলে সরকার অসহনশীল হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালেও আওয়ামী লীগ সংবাদপত্র দমন একদলীয় শাসন কায়েম করেছিলো। এবারও তারা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ জনগণ বরদাশত করবে না।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। জনগণও ওই নির্বাচনে অংশ নেবে না।
রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ায় বৌদ্ধবিহারে হামলার ঘটনার জন্য সরকারকে দায়ী করে মওদুদ বলেন, বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র বানিয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের জন্য সরকার পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

Monday, October 15, 2012


ঝুলে গেল পদ্মা সেতুর ঋণ : ডিসেম্বরে আবার আসবে বিশ্বব্যাংক প্যানেল : তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে দুদককে পরামর্শ

পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান পর্যবেক্ষণে আসা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশ্বব্যাংক গঠিত শক্তিশালী প্যানেল অব ইনভেস্টিগেটিভ এক্সপার্টের সদস্যরা গতকাল ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে তারা দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তারা জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরে তারা আবার আসবেন। এছাড়া দুদককে তারা তদন্তের জন্য কিছু ‘সাজেশন’ দিয়েছেন।
প্যানেলের কর্মসূচি নিয়ে গতকাল দুদক বা বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়। তারা কোথায় কখন বৈঠক করবেন, কী নিয়ে আলোচনা করবেন—এসব বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে গোপন রাখা হয়। উল্টো দুদকের উপ-পরিচালক জনসংযোগ পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে গতকাল প্যানেলের সদস্যরা দুদকে যাচ্ছেন না। দুদক চেয়ারম্যান এবং কমিশনাররাও অফিস থেকে বাইরে চলে যান। এ অবস্থায় সন্ধ্যায় ৭টার দিকে প্যানেলের সদস্যরা দুদকে প্রবেশ করেন। তার আগেই চেয়ারম্যান, কমিশনার, দুদুকের প্রধান আইন উপদেষ্টা ও অনুসন্ধান টিমের কর্মকর্তারা দুদকে উপস্থিত হন।
দুপুরে বাইরে যাওয়ার আগে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, রোববারের বৈঠকটি ছিল পরিচিতিমূলক। তারা আরও পর্যবেক্ষণ শেষে ফিরে যাবেন। পরে প্রয়োজনে আবার আসতে পারেন। তবে এখানেই তারা পর্যবেক্ষণ সমাপ্ত করবেন না আরও বসবেন, সে বিষয়টি প্যানেলের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে। ওই সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে কমিশন যে অনুসন্ধান করছে, সেটি এখনও কারও বিরুদ্ধে মামলার পর্যায়ে পৌঁছেনি।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি ও দুর্নীতির ষড়যন্ত্র বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের দুটি অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। প্রাথমিক তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঋণ দেয়ার বিষয়টি গত ২৯ জুন বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। পরে সরকার ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতার প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাংক তিন সদস্যের একটি প্যানেল ঘোষণা করে। প্যানেলের তিন সদস্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাবেক প্রধান প্রসিকিউটর লুই গাব্রিয়েল মোরেনো ওকাম্পো, হংকংয়ের দুর্নীতিবিরোধী স্বাধীন কমিশনের সাবেক কমিশনার টিমোথি টং ও যুক্তরাজ্যের গুরুতর প্রতারণা দমন কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক রিচার্ড অল্ডারম্যান রোববার বাংলাদেশে আসেন। এছাড়া বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে বাংলাদেশে আসেন বিশ্বব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত বিষয়ক প্রধান জিমারম্যান ও বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ বিষয়ক আইন উপদেষ্টা প্রিরালি মালিক। এ ৫ বিশেষজ্ঞ ও বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশে কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যালেন গোলস্টেইন গতকালও দুদকের বৈঠকে অংশ নেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞ প্যানেল গতকাল এসএনসি-লাভালিনের তিন সাব-কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান প্রকল্প প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল হাসান খান, বেটস কনসালটিং লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম ও বিসিএল অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের পরিচালক ড. এম এ আজিজসহ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। এছাড়া তারা প্রথম দিনের বৈঠকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করেছেন। সেখানে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, এসব বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
এর আগে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতির অভিযেগের তদন্ত বাংলাদেশের আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী হবে, সে ব্যাপারে উভয়পক্ষ একমত হয়েছে। পাশাপাশি পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের আইনই অনুসরণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তারা তদন্তের যেসব তথ্য-উপাত্ত চেয়েছিলেন তাদেরকে সেটা দেয়া হয়েছে। তারা যদি এগুলোতে সন্তুষ্ট থাকেন, তবে আজই তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন। সাংবাদিকদের অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের অনুসন্ধান এখনও মামলা করার পর্যায়ে পৌঁছেনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান প্যানেলের সদস্যদের কোনো ধরনের গাইডলাইন দেয়ার বিষয়েও অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, রাতে যে বৈঠক হবে, সেখানে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।