Tuesday, September 11, 2012

নির্বিচার জাটকা নিধনে মেঘনায় ইলিশের আকাল


নির্বিচার জাটকা নিধনে মেঘনায় ইলিশের আকাল
শূন্য হাতে বাড়ি ফিরছে মতলব উত্তরের জেলেরা
মতলব উত্তর উপজেলার জেলেদের চরম দুর্দিন চলছে| জাটকা নিধন রোধে মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে লক্ষীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকায় মার্চ-এপ্রিল দু’মাস ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিলো| কিন্তু এ নিষেধ জেলেরা মানেনি| জেলেরা নির্বিচারে জাটকা নিধন করেছে| ফলে মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে লক্ষীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে দেখা দিয়েছে ইলিশ মাছের আকাল| জেলেরা শূন্য হাতে বাড়ি ফিরছে| মহাজনদের টাকার জন্য চাপ ও সংসার চালানোর অর্থ সঙ্কটের কারণে জেলে পরিবারে দেখা দিয়েছে হতাশা|

ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় সরকার ২০০৩ সালে মেঘনাসহ দেশের তিনটি নদী অঞ্চলকে মার্চ-এপ্রিল দু’মাস অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করে| এ সময় নদীতে সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়| চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে লক্ষীপুর জেলার চরআলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনার একশ’ কিলোমিটার নদী অঞ্চল দেশের অন্যতম অভয়াশ্রম অঞ্চল| অভয়াশ্রম কার্যক্রমে সময়, মূলধন, ঝুঁকি ও আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় ইলিশ, পাঙ্গাস, আইড়, বোয়ালসহ বড় প্রজাতির মাছ ধরার কোনাজাল, চাপজাল ও ডোম জাল প্রকৃত জেলেরা নদীতে ফেলা বন্ধ রাখে| এ সুযোগে এক শ্রেণীর অর্থলোভী মানুষ কারেন্ট জাল ক্রয় করে কিছু সংখ্যক অপেশাদার জেলেকে দিয়ে নদীতে জাটকা নিধন করায়| অর্থলোভীদের কারণে প্রকৃত জেলেরা পরিপক্ক ইলিশ থেকে বঞ্চিত| অভয়াশ্রম কর্মসূচি শেষে জাল নৌকার মালিকরা ধারদেনা করে ও ঋণ নিয়ে জাল নৌকা মেরামত করে ভাগিদার জেলেদের দাদন টাকা দিয়ে নদীতে নামায়| জাটকা নিধন করায়, নদীতে নাব্যতা না থাকায় এবং পানি কম হওয়ায় মেঘনায় এখন ইলিশ আসছে না| ইলিশের আকালে জেলেরা বেকার হয়ে পড়েছে|

জেলেরা জানান, তারা শূন্য হাতে ফিরে আসছে| ইলিশ ধরার একটি কোনাজাল নৌকার সারাদিন মাছ ধরতে ডিজেল ও জেলেদের খাবারসহ সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ হয়| তার মধ্যে ডিজেল বাবদ খরচ হয় এক থেকে ২ হাজার টাকা| বর্তমানে জেলেরা খরচের অর্ধেক টাকারও মাছ বিক্রি করতে পারছেন না| জেলেদের মূলধন হারাতে হচ্ছে| মালিক ও জেলেরা বাধ্য হয়ে জাল নৌকা বন্ধ রাখছে| এখন জেলেদের দুর্দিন যাচ্ছে| মেঘনায় অভয়াশ্রম ও এখন মাছের আকালের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জাল-নৌকার মালিক ও জেলেদের রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে সুদমুক্ত ঋণ, চাল ও উপকরণ সহায়তা প্রদানের জন্য জেলে পরিবারগুলো সরকারের নিকট দাবি জানান|

No comments:

Post a Comment