Sunday, September 9, 2012

খবির হত্যা মামলার প্রধান আসামীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য বেরিয়ে আসছে


খবির হত্যা মামলার প্রধান আসামীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান
চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য বেরিয়ে আসছে
সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত মতলবের এমপি এম রফিকুল ইসলামের পিএস যুবলীগ নেতা খবির হোসেন প্রধানের ঘাতক সাগর দেওয়ান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে| খবির হত্যা মামলার প্রধান আসামী এমপি রফিকুল ইসলামের ভাতিজা সাগর দেওয়ানকে গতকাল রোববার চাঁদপুর আদালতে হাজির করা হয়| সে আদালতে খবির হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে| তার জবানবন্দিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে| আদালত তার এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করে|

চাঞ্চল্যকর খবির হত্যা মামলার এক নম্বর আসামী এমপির ভাতিজা সাগর দেওয়ানকে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার জামালপুর বাজার এলাকাস্থ জনৈক শাহাবুদ্দিন চেয়ারম্যানের মেস থেকে শুক্রবার দিবাগত রাত ৪টায় আটক করা হয়| মতলব দক্ষিণ থানার পরিদর্শক (তদনত&ধসঢ়;দ) ও খবির হত্যা মামলার তদনত&ধসঢ়;দকারী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন| তার সাথে ছিলেন মতলব থানার ক’জন অফিসার ছাড়াও কালীগঞ্জ থানার বেশ কিছু পুলিশ| আটক সাগর দেওয়ানকে শনিবার মতলব থানায় নিয়ে আসা হয়| শনিবার রাতে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোঃ আমির জাফর মতলব থানায় গিয়ে আসামীর সাথে কথা বলেন| এ সময় আসামী সাগর পুলিশের কাছে খবির হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে|

গতকাল রোববার বিকেলে সাগর দেওয়ানকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অসীম কুমার দের খাস কামরায় হাজির করা হয়| সাগর আদালতের কাছে খবির হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে, এমনকি তার সাথে কে কে ছিলো, কী কারণে খবিরকে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মমভাবে কোপানো হয়েছে এবং এ হত্যা মিশনের নেপথ্যে কারা ছিলো সবই সাগরের জবানবন্দিতে বেরিয়ে এসেছে বলে সংশিস্নষ্ট বিশ্বসত&ধসঢ়;দ সূত্রে জানা গেছে| তার এ জবানবন্দি আদালতের বিচারক ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করেন| মামলার তদনত&ধসঢ়;দের স্বার্থে এবং আসামী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা বিবেচনায় আসামীর জবানবন্দির স্পর্শকাতর বিষয়গুলো এখন প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে সূত্রটি জানায়|

খবির হত্যার ঘটনায় এ পর্যনত&ধসঢ়;দ তিন জনকে আটক করা হয়| এর মধ্যে মামলায় এজাহারভুক্ত আসামী হচ্ছে দুই জন| প্রধান আসামী সাগর দেওয়ান ছাড়াও এজাহারভুক্ত আরেক আসামী নজরম্নল ইসলামকে ঘটনার পরদিন অর্থাৎ ৩০ আগস্ট আটক করা হয়| আটক নজরম্নল ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে| এ ছাড়া নূরম্নন্নবী নামে সন্দেহভাজন আরেকজনকেও আটক করা হয়| এরা সবাই বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে|

উলেস্নখ্য, গত ২৯ আগস্ট রাত আনুমানিক ১২টায় মতলব টিএন্ডটি অফিসের সামনে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা খবির হোসেনকে নির্মমভাবে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে| ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় উপর্যুপরি কোপানো হয়| আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে মতলব থেকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়| সেখান থেকে ওই রাতেই তাকে ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার ধানমণ্ডিস্থ গ্রীন লাইফ হাসপাতালে| সেখানে খবিরকে লাইফ সাপোর্টে বাঁচিয়ে রাখা হয়| ঘটনার দু’ দিনের মাথায় খবির বলতে গেলে ক্লিনিকেলি ডেড হয়ে যায়| তারপরও তাকে চিকিৎসার নামে হাসপাতালে রেখে দেয়া হয়| আর এরই মধ্যে ঘটনার নেপথ্য খলনায়করা খবিরের স্ত্রীর একাউন্ট থেকে ২০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়| এতেও তারা ক্ষানত&ধসঢ়;দ হয়নি| খবিরের মৃতু্যকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এবং খুনিদের বাঁচাতে হাসপাতাল থেকে খবিরের মৃতু্যকে ’হার্ট অ্যাটাক জনিত মৃতু্য’ উলেস্নখ করে ডেথ সার্টিফিকেট দেয়া হয়| এ মিথ্যা ডেথ সার্টিফিকেটের পেছনেও ওই খলনায়কদের হাত ছিলো| পরে অবশ্য এ ডেথ সার্টিফিকেট পরিবর্তন করে আঘাতজনিত কারণে খবিরের মৃতু্য হয়েছে উলেস্নখ করে সার্টিফিকেট দেয়া হয়| মতলববাসী এসব ঘটনার জন্য স্থানীয় এমপির পরিবারের সদস্য এবং এমপির ঘনিষ্ঠ ক’জন শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতাকে দায়ী করছে| মতলববাসী আশা করেছে, ঘটনার নেপথ্য গডফাদাররা যেনো কোনোভাবেই ছাড় না পায়, নিরপেক্ষ এবং সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত তদনত&ধসঢ়;দে যেনো গডফাদারদের নাম বেরিয়ে আসে, তাদেরও যেনো আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়|

No comments:

Post a Comment