বিএনপির তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ : জঙ্গি প্রমাণ করতেই রামুর ঘটনা

কক্সবাজারের রামু, উখিয়া, টেকনাফ এবং চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৌদ্ধবিহার ও
বসতিতে হামলার ঘটনা সরকারের মদতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপির তদন্ত
দল। সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্ত করতে একজন সাবেক সিনিয়র প্রধান বিচারপতির
নেতৃত্বে একটি বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবিও করেছে দলটি। সরেজমিন তদন্তে
প্রাপ্ত সব তথ্য পর্যালোচনায় সরকারের ইন্ধনেই সাম্প্রদায়িক এ হামলার ঘটনা
ঘটেছে বলে জানায় বিএনপির তদন্ত দল। গতকাল সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয়
কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ৬৭ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে
ধরেন কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ
আহমদ। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কাছে এ
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
বিএনপির অভিযোগ, আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকারের মদতে পরিকল্পিতভাবে এ হামলা করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মওদুদ আহমদ বলেন, ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা থেকে সাড়ে নয়টার মধ্যে শ’খানেক লোক মিছিল করে। এরপর ভোররাত ৫টা পর্যন্ত অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর লুটপাট হয়। পরদিন পটিয়ায়ও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল না। সরকারের উপস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, রামুর কেন্দ্রীয় সীমাবিহার থেকে থানার দূরত্ব ছিল মাত্র আধা কিলোমিটার। জেলা পুলিশ সদরের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার আর সেনা ক্যাম্পের দূরত্ব ছিল ৪ কিলোমিটার। তারা কেউই পরিস্থিতি শান্ত বা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ভূমিকা নেয়নি। নিলে এই বর্বর নারকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। তাদের এই ব্যর্থতার কারণেই এ ঘটনা আজ জাতীয় ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আশ্চর্যের বিষয় হলো, যে উত্তম কুমার বড়ুয়ার জন্য ঘটনার সূত্রপাত, তার বাড়ির সামনে দিয়ে মিছিল হয়, আশপাশের বৌদ্ধবিহারে হামলা হয়, কিন্তু উত্তমের বাড়িতে একটি ইটও পড়েনি। তদন্ত দলের মনে এটি গভীর সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। তদন্ত দলটি ৫ ও ৬ অক্টোবর রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেখানে তারা শ’ শ’ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অন্তত ৬০ জনের বক্তব্য রেকর্ড করেন, বক্তব্যের ভিডিও দৃশ্য ধারণ করেন। তিনি বলেন, দলীয়ভাবে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা হয়েছে। কারণ বিএনপি একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিস্ট অ্যান্ড পালি বিভাগের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া এবং বিএনপি নেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, আবদুল লতিফ জনি, আবদুস সালাম আজাদ, রফিক শিকদার প্রমুখ।
সহিংসতা পূর্বপরিকল্পিত : ক্ষতিগ্রস্ত ও আক্রান্ত লোকজনের সাক্ষ্য এবং হামলার ঘটনায় গান পাউডারের ব্যবহার ও সিমেন্টের তৈরি চৌকোণা ব্লক দেখে ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলে তদন্ত দল নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়া তদন্ত দলটি অভিযোগ করে, রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার ওরফে কাজল ওই দিন বিএনপির সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মিলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তার ভাই স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাইমুন সরওয়ার ওরফে কমল এ ঘটনায় মদত দিয়েছেন। ‘রামুর ঘটনায় স্থানীয় এমপি কাজল জড়িত’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে মওদুদ বলেন, তার মতো দায়িত্বশীল পদে থেকে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই এ ধরনের কথা বলা ঠিক হয়নি। তাহলে তদন্ত করার দরকার কি? দোষী কে সেটা তো তিনি বলেই দিয়েছেন! এমপিই যদি এত ক্ষমতাবান হন, তাহলে সরকারের থাকার দরকার কি?
সুপারিশ : তদন্ত প্রতিবেদনে কয়েকটি সুপারিশও করা হয়েছে। স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় যাদের নাম এসেছে, তাদের গ্রেফতার করে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা যথাসময়ে দায়িত্ব পালন করেনি, তাদের যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। এই ঘটনাকে পুঁজি করে সরকার বিরোধী দলের উপরে যে মিথ্যা অভিযোগ ও হয়রানি করেছে তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং সরকারের তদন্তের আগেই বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য লুত্ফর রহমান কাজলকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রত্যাহার করতে হবে। ওইসব জনপদে বসবাসকারী সব জনগোষ্ঠীর দ্রুত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। ধ্বংস হওয়া বিহার, প্যাগোডা, মন্দির ও বসত বাড়ি নির্মাণে যত কোটি টাকা লাগুক পুনর্নির্মাণ করে দিতে হবে। স্বর্ণের মূর্তি যেগুলো চুরি হয়েছে সেগুলো উদ্ধার করে তাদের ফেরত দিতে হবে। পুড়ে যাওয়া ত্রিপিটক সংগ্রহ করে দিতে হবে। ১৫টি বিহার, মন্দির ও প্যাগোডা বানিয়ে দিতে হবে। আশপাশের পুড়ে যাওয়া ১৮টি বাড়িসহ ক্ষতিগ্রস্ত সব বাড়ি পুনর্নির্মাণের সহায়তা দিতে হবে।
মওদুদ বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার যে অংশ এই ঘটনায় মদত দিয়েছে, তাদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। কারণ প্রকৃত ঘটনা তারও জানত।
বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি : ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য একজন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে অতিদ্রুত একটি তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করে প্রকৃত দায়ীদের শাস্তির বিধান করতে হবে। আগামীতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ১৪ জন সাবেক প্রধান বিচারপতি বেঁঁচে আছেন। তাদের মধ্য থেকে সিনিয়র একজনকে এ দায়িত্ব দিতে হবে। যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জনগণ গ্রহণ করবে না। ওই কমিটির তদন্ত রিপোর্ট হবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে নির্দোষ ঘোষণার মতো।
নানা প্রশ্ন : সংবাদ সম্মেলনে মওদুদ আহমদ বলেন, এ ঘটনায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিদেশে থাকলেও ৫ মিনিটের মধ্যে এ খবর জেনে যাওয়ার কথা। তিনি যদি না জানেন তাহলে মনে করতে হবে ওই সময় দেশে কোনো সরকার ছিল না। আর জানলে তিনি তাত্ক্ষণিকভাবে কেন ব্যবস্থা নেননি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত থাকাকালে পাশের থানায় কীভাবে হামলা হলো? তখন পুলিশ কি করেছে? তাহলে কি পুলিশের মধ্যকার চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে? শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া এ ঘটনা সঙ্গে সঙ্গে জানলেও তিনি কেন কোনো ব্যবস্থা নেননি? সব স্থানে একই ধরনের হামলা হয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব? যে গান পাউডার দিয়ে আগুন জ্বালানো হয়েছে তা কোথা থেকে, কারা এনেছে? ঘটনার মূলসূত্র উত্তম বড়ুয়ার বাড়ির সামনে দিয়ে মিছিল গেলেও তার বাড়িতে হামলা হলো না কেন?
বিএনপির অভিযোগ, আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকারের মদতে পরিকল্পিতভাবে এ হামলা করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মওদুদ আহমদ বলেন, ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা থেকে সাড়ে নয়টার মধ্যে শ’খানেক লোক মিছিল করে। এরপর ভোররাত ৫টা পর্যন্ত অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর লুটপাট হয়। পরদিন পটিয়ায়ও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল না। সরকারের উপস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, রামুর কেন্দ্রীয় সীমাবিহার থেকে থানার দূরত্ব ছিল মাত্র আধা কিলোমিটার। জেলা পুলিশ সদরের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার আর সেনা ক্যাম্পের দূরত্ব ছিল ৪ কিলোমিটার। তারা কেউই পরিস্থিতি শান্ত বা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ভূমিকা নেয়নি। নিলে এই বর্বর নারকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। তাদের এই ব্যর্থতার কারণেই এ ঘটনা আজ জাতীয় ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আশ্চর্যের বিষয় হলো, যে উত্তম কুমার বড়ুয়ার জন্য ঘটনার সূত্রপাত, তার বাড়ির সামনে দিয়ে মিছিল হয়, আশপাশের বৌদ্ধবিহারে হামলা হয়, কিন্তু উত্তমের বাড়িতে একটি ইটও পড়েনি। তদন্ত দলের মনে এটি গভীর সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। তদন্ত দলটি ৫ ও ৬ অক্টোবর রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেখানে তারা শ’ শ’ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অন্তত ৬০ জনের বক্তব্য রেকর্ড করেন, বক্তব্যের ভিডিও দৃশ্য ধারণ করেন। তিনি বলেন, দলীয়ভাবে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা হয়েছে। কারণ বিএনপি একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিস্ট অ্যান্ড পালি বিভাগের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া এবং বিএনপি নেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, আবদুল লতিফ জনি, আবদুস সালাম আজাদ, রফিক শিকদার প্রমুখ।
সহিংসতা পূর্বপরিকল্পিত : ক্ষতিগ্রস্ত ও আক্রান্ত লোকজনের সাক্ষ্য এবং হামলার ঘটনায় গান পাউডারের ব্যবহার ও সিমেন্টের তৈরি চৌকোণা ব্লক দেখে ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলে তদন্ত দল নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়া তদন্ত দলটি অভিযোগ করে, রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার ওরফে কাজল ওই দিন বিএনপির সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মিলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তার ভাই স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সাইমুন সরওয়ার ওরফে কমল এ ঘটনায় মদত দিয়েছেন। ‘রামুর ঘটনায় স্থানীয় এমপি কাজল জড়িত’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে মওদুদ বলেন, তার মতো দায়িত্বশীল পদে থেকে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই এ ধরনের কথা বলা ঠিক হয়নি। তাহলে তদন্ত করার দরকার কি? দোষী কে সেটা তো তিনি বলেই দিয়েছেন! এমপিই যদি এত ক্ষমতাবান হন, তাহলে সরকারের থাকার দরকার কি?
সুপারিশ : তদন্ত প্রতিবেদনে কয়েকটি সুপারিশও করা হয়েছে। স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় যাদের নাম এসেছে, তাদের গ্রেফতার করে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা যথাসময়ে দায়িত্ব পালন করেনি, তাদের যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। এই ঘটনাকে পুঁজি করে সরকার বিরোধী দলের উপরে যে মিথ্যা অভিযোগ ও হয়রানি করেছে তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং সরকারের তদন্তের আগেই বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য লুত্ফর রহমান কাজলকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রত্যাহার করতে হবে। ওইসব জনপদে বসবাসকারী সব জনগোষ্ঠীর দ্রুত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। ধ্বংস হওয়া বিহার, প্যাগোডা, মন্দির ও বসত বাড়ি নির্মাণে যত কোটি টাকা লাগুক পুনর্নির্মাণ করে দিতে হবে। স্বর্ণের মূর্তি যেগুলো চুরি হয়েছে সেগুলো উদ্ধার করে তাদের ফেরত দিতে হবে। পুড়ে যাওয়া ত্রিপিটক সংগ্রহ করে দিতে হবে। ১৫টি বিহার, মন্দির ও প্যাগোডা বানিয়ে দিতে হবে। আশপাশের পুড়ে যাওয়া ১৮টি বাড়িসহ ক্ষতিগ্রস্ত সব বাড়ি পুনর্নির্মাণের সহায়তা দিতে হবে।
মওদুদ বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার যে অংশ এই ঘটনায় মদত দিয়েছে, তাদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। কারণ প্রকৃত ঘটনা তারও জানত।
বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি : ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য একজন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে অতিদ্রুত একটি তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করে প্রকৃত দায়ীদের শাস্তির বিধান করতে হবে। আগামীতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ১৪ জন সাবেক প্রধান বিচারপতি বেঁঁচে আছেন। তাদের মধ্য থেকে সিনিয়র একজনকে এ দায়িত্ব দিতে হবে। যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জনগণ গ্রহণ করবে না। ওই কমিটির তদন্ত রিপোর্ট হবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে নির্দোষ ঘোষণার মতো।
নানা প্রশ্ন : সংবাদ সম্মেলনে মওদুদ আহমদ বলেন, এ ঘটনায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিদেশে থাকলেও ৫ মিনিটের মধ্যে এ খবর জেনে যাওয়ার কথা। তিনি যদি না জানেন তাহলে মনে করতে হবে ওই সময় দেশে কোনো সরকার ছিল না। আর জানলে তিনি তাত্ক্ষণিকভাবে কেন ব্যবস্থা নেননি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত থাকাকালে পাশের থানায় কীভাবে হামলা হলো? তখন পুলিশ কি করেছে? তাহলে কি পুলিশের মধ্যকার চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে? শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া এ ঘটনা সঙ্গে সঙ্গে জানলেও তিনি কেন কোনো ব্যবস্থা নেননি? সব স্থানে একই ধরনের হামলা হয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব? যে গান পাউডার দিয়ে আগুন জ্বালানো হয়েছে তা কোথা থেকে, কারা এনেছে? ঘটনার মূলসূত্র উত্তম বড়ুয়ার বাড়ির সামনে দিয়ে মিছিল গেলেও তার বাড়িতে হামলা হলো না কেন?
No comments:
Post a Comment